নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অতি সাধারণ

সু মন

ভাই অতি সাধারণ মানুষ আমি

সু মন › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘টাকা খরচ করে পড়াশোনা করা অপরাধ?’

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

নিজের খরচে ও পরিবারের সহযোগিতায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে শিক্ষার্থীরা। এতে ভ্যাট আরোপ করা মানেই উচ্চশিক্ষার পথে বাধা এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে অনেক শিক্ষার্থী- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য গোলাম রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ভ্যাট আরোপ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার বিকাশে অন্তরায়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব খরচ সরকার বহন করে, সেখানে শিক্ষার্থীদের নামমাত্র খরচ হয়। সরকারি আইন মোতাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলছে। ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক বেশি নজরদারী করছে এবং অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে ভ্যাট আরোপ করা মানে শিক্ষাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, ব্যয়বহুল করা। শুরুতে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের অনেকেও ঝরে পড়বে।’

গোলাম রহমান আরও বলেন, ‘যেখানে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বৃত্তি ও প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন সেখানে উল্টোটা হচ্ছে। এটা সরকারের ভ্রান্ত নীতি। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করছে না। তারা মনে করছে এই ভ্যাট বিশ্ববিদ্যালয় দেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভ্যাট ধরা হয়েছে টিউশন ফির ওপর। এই বিভ্রান্তি থেকে সরকারকে সরে আসতে অনুরোধ করবো।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপকে চরম বৈষম্যমূলক এবং অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) প্রোভিসি ড. জহিরুল হক‌ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার মনে হয় এ নিয়ে সরকার এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব নন গভর্নমেন্ট ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশের বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে। তা ছাড়া দেশের সুশীল সমাজ, অভিবাবক এবং গণমাধ্যম থেকেও চাপ রয়েছে সরকারের প্রতি।’

ড. জহিরুল হক আরও বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়তে হয়। এখন যদি আবার ভ্যাট দিতে হয় তাহলে এটা শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। বাংলাদেশের ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় আড়াই লাখ ছাত্র-ছাত্রী আছে। এদের শতকরা ৯০ ভাগই মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির। এরা কষ্ট করে লেখাপড়া করে।’ জহিরুল হক প্রশ্ন রাখেন, টাকা খরচ করে পড়াশুনা করা কি অপরাধ?

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভ্যাট আরোপের বিষয় সংক্রান্ত এনবিআরের দেওয়া চিঠির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গতকাল মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বৈঠক করে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সচিব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করবো। কীভাবে এই ভ্যাট রহিত করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে। মন্ত্রণালয়ে আমরা আগেও গিয়েছি। আগামী ১৩ আগস্ট ইউজিসি'তে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে আমাদের মিটিং রয়েছে। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করবো এই ভ্যাট আরোপ হলে কী কী সমস্যার মুখে পড়তে হবে।’

এ বিষয়ে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা যে কোনও শিক্ষার্থীও এককভাবে আইনি পদক্ষেপ (লিগ্যাল অ্যাকশন) নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করতে পারে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে 'নো ভ্যাট অন এডুকেশন' নামে একটি ফেসবুক পেইজ খোলা হয়েছে। পেইজের আহ্বায়ক ফারহান হাবিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারের বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য অনেক খাত থাকতে পারে। কিন্তু শিক্ষার মতো একটি জায়গায় কেন হাত দেওয়া হচ্ছে তা একেবারেই বোধগম্য নয়। শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করার শেষ প্রক্রিয়া হতে যাচ্ছে এই ভ্যাট।’

এ নিয়ে প্রায় প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীরা আজ বুধবার বিক্ষোভ করেছে এবং কাল ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানান ফারহান।

উল্লেখ্য, এই প্রথমবারের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ১৫ আগস্টের মধ্যে ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশনা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত ১ জুলাই এনবিআর এই সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) জারি করে।
সংগ্রহঃ
view this link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.