নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খাপ খোলা কলমে শাণিত হোক মঞ্চ...

কূপমন্ডূক

জানা ভালো, না জানা খারাপ, ভুল জানা অপরাধ

কূপমন্ডূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু কথা

১৬ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

কিছু কথাঃ

আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে CUDS এর একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন Everjobs এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাবিরুল ইসলাম। সাবিরুল ইসলামকে চেনেন আপনি? যদি চিনে থাকেন, তাহলে ভালো। না চিনলে সার্চইঞ্জিন গুগল বা তথ্যভাণ্ডার উইকিপিডিয়ায় ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন। তিনি এসেছিলেন আজ আমাদের মাঝে, অনেক সুন্দর একটা মোটিভেশনাল স্পীচ তিনি আমাদের উপহারও দিয়েছেন।

তিনি যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই ঘটলো বিড়ম্বনা। ঝাঁকেঝাঁকে ছাত্রছাত্রীরা ছুটে গিয়ে তাঁর সাথে সেলফি তুলতে শুরু করলো। জানি, বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম "সেলফি" নামক ভাইরাসে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত, আমি নিজেও ব্যতিক্রম নই। সেলফি তুলতে আমারও ভালো লাগে, মোবাইল কিনতে গেলে আগে খোঁজ করি সামনের ক্যামেরা ভালো কী না, কত মেগাপিক্সেল, সেলফি এক্সপার্ট কী না। সেটা সমস্যা না, সমস্যা অন্য জায়গায়।

সাবিরুল ইসলাম কে? তিনি একজন রক্তমাংসের মানুষ। আপনিও রক্তমাংসের মানুষ। তাহলে আপনি কেন সাবিরুল ইসলামের পেছনে একটা "সেলফি" তোলার জন্যে হন্যে হয়ে ছুটছেন? সাবিরুল ইসলাম মাত্র একটা উদাহরণ, কিছুদিন আগে এসেছিলেন এলিটা করীম, সালমান মুক্তাদির, ওয়ারফেজ, সোলস, সামিনা চৌধুরী। এদের সাথে সেলফি তোলার জন্য ওঁত পেতে ছিলো আমাদের তরুণেরা। কেন এরকম হবে? বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এ ঘটনাগুলো ঘটে। পরিচিত কেউ ক্যাম্পাসে এলেই সবাই নেমে পড়ে সেলফি শিকারে। সবার মধ্যে তৈরী হয় অলিখিত প্রতিযোগিতা, অমীমাংসিত যুদ্ধ। আমি জানি, এরা নক্ষত্র। এরা মাটিতে নেমে এলে অনেকেরই শখ জাগে, তাদের সাথে কিছু মুহূর্ত মুঠোফোনে বন্দী করে রাখতে। কিন্তু, আপনারা, যারা নক্ষত্রদের সাথে সেলফি তোলার জন্য সারাদিন উন্মুখ হয়ে থাকেন, তারা একটু ভাববেন তো, এরকম আচরণ আপনাদের মানায় কী না! "সেলফি" তোলার জন্য আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে এরকম প্রতিযোগিতায় আপনাদের কেন লিপ্ত হতে হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সেলেব্রিটি প্রায়শই আসেন, আগামীতে আরো অনেকেই আসবেন। আপনাদের এ অপরিপক্ব আচরণের কারণে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের যে একটা নেগেটিভ ইম্প্রেশন তৈরি হয় তাদের কাছে, তা আপনারা বোঝেন?

পশ্চিম বাংলার জনপ্রিয় কমেডি শো "মীরাক্কেল"এর উপস্থাপক মীর একবার একটি ঘটনা শেয়ার করেছিলেন। মীরের মেয়ে মুসকান টেনিস ভালো খেলে। মীর একবার কথাচ্ছলে তার এক কলিগকে বলেছিলেন, আমার মেয়েকে ২য় শারাপোভা বানাবো। সেই কলিগ তখন বিস্মিত হয়ে বলেছিলেন, "Why 2nd Sharapova, Why not 1st Muskan?"
বিষয়টা এরকমই, অন্যের সাথে সেলফি তুলে, অন্যের সাথে লেজুড়বৃত্তি করে কেন আপনাকে বিখ্যাত হতে হবে? আপনার ভেতরে কী কোনো প্রতিভাই নেই? আপনি কী এতটাই অক্ষম যে আপনাকে অন্যের সাথে পরগাছা হয়ে জনপ্রিয় হতে হবে?

আমি কিন্তু তা মনে করিনা। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের প্রত্যেকের ভেতরেই নির্দিষ্ট কিছু প্রতিভা রয়েছে যা আপনাকে করে তুলতে পারে সবার মাঝে আলাদা, সবার মাঝে সেরা। সেটাই খুঁজে বের করুন, সেটার চর্চা চালিয়ে যান। আপনাকে কারো পেছনে ছুটতে হবে না, আপনার পেছনেই অনেকে ছুটবে "সেলফি" তোলার জন্যে, গ্যারান্টি দিচ্ছি।

তাই, নিজের ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখুন, নিজেকে সম্মান দিন, অন্যের পেছনে নির্লজ্জের মত দৌড়ে নিজেকে অসম্মান করবেন না, নিজের প্রতিষ্ঠানকে অসম্মান করবেন না। দিনশেষে, আপনার "হিডেন ট্যালেন্ট"কে আপনার হয়ে কথা বলতে দিন। আপনি পরিচিত হবেন আপনার স্বকীয় পরিচয়ে, আপনার অর্জনে গর্বিত হবে গোটা দেশ। নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকুক সে লক্ষ্য পূরণে, এটাই কামনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.