![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল শিক্ষক দিবস গেলো। শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের নিয়ে কিছু লেখার প্রাসঙ্গিকতা অনুভব করছি। সেকারণেই আজ এ লেখার অবতারণা।
আমার সাথে আমার শিক্ষকদের সম্পর্ক বরাবরই ভালো, বোধহয় ভালো ছাত্র ছিলাম এককালে সেজন্যেই :p জন্মের পর থেকে বাবাকে দেখেছি কলেজের প্রিন্সিপাল হিশেবে, বড়ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে দেখলাম কলেজে পড়াকালীন সময়ে। শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য আমার চেয়ে ভালো আর কেই বা বুঝবে! ছোটবেলা থেকেই একটা শিক্ষকপরিবেষ্টিত পরিবেশ ছিলো আমার চারপাশে। শিক্ষকদের দেখেছি খুব কাছ থেকে।
তবে, আজকে লিখবো একটু ভিন্নরকম শিক্ষকদের নিয়ে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার বাইরে যা কিছু যারা আমাকে শিখিয়েছিলেন, তাদের নিয়ে। আমরা জানি, যারা আমাদের শিক্ষা দেন, তারাই শিক্ষক। সে শিক্ষা যে পাঠ্যপুস্তক সম্পর্কিতই হতে হবে এটা কোনো বাইবেল-কোরানে নেই বলেই জানি। আজকের লেখা অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় আমাকে শিক্ষিত করা আমার প্রিয় শিক্ষকদের নিয়ে।
আমাকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন আমার বাবা, প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো পর্যন্ত লেখাপড়াও করিয়েছেন তিনি। কিন্তু, আমার কাছে সাঁতার শেখার তাৎপর্যই বেশি। প্রাইমারি স্কুলের সব পড়াশোনা হয়তো ভুলে গিয়েছি, সাঁতার এখনো ভুলিনি। সুতরাং, তাৎপর্য বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
আউটবই পড়া শিখিয়েছিলো আমার বড়ভাই। প্রাইমারি স্কুলে পড়ি, বাইরের দুনিয়ার কোনো খবর রাখিনা। স্কুলে যাই, ক্লাস করি, বাসায় এসে সেই পড়া কমপ্লিট করি... এই তখন প্রতিদিনের একঘেয়ে রুটিন। সেই রুটিনে বৈচিত্র্য এলো বড়ভাইয়ের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে। বই কিনে দিতো, বই পড়ার অভ্যাসটা গড়ে দিলো। শুধু বই-ই বা বলছি কেন, সিনেমা, গানসহ বাদবাকি যা আছে, সবই শিখলাম বড়ভাইয়ের কাছ থেকে, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।
লিকার, রং ঠিক রেখে চা বানাতে শেখালো মা। খিচুড়ি রান্না করতে শেখালো বড়ভাই, ব্যাংকে কীভাবে একাউন্ট খুলতে হয় শিখিয়ে দিলো বাবা।
বন্ধুবান্ধবরাও অনেককিছু শিখিয়েছে। একটা সময়ে চলন্ত সিঁড়িতে উঠতে ভয় পেতাম, সেই ভয় কাটালো এক বন্ধু। বাসে উঠে ভাড়া না দিয়ে নেমে যাওয়ার টেকনিক শেখালো আরেকজন। দোকানে গিয়ে কীভাবে দরদাম করতে হয়, তাও শিখলাম এক বন্ধুর কাছ থেকে। তাদের শেখানোর গতি এখনো অব্যাহত আছে, আমিও শিখছি।
ইউটিউব, গুগল, বিং প্রতিনিয়ত শিখিয়ে যাচ্ছে বহুকিছু, বিশেষ করে ইউটিউব তো এককাঠি ওপরে। হাতে-কলমে (ভিডিও'র মাধ্যমে) অনেকবিষয়ে দক্ষ করে দিচ্ছে। চুল আঁচড়ানো, টাই বাঁধা, ল্যাপটপের সমস্যা... এগুলোর কথা আগেও বলেছি। প্রতিদিন সমস্যায় পড়ছি, এদের পেছনে মেগাবাইট ঢালছি, এরাও উপায় বাৎলে দিচ্ছে।
এবার আসি, আমার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শিক্ষকদের নিয়ে। তাদের নিয়ে আজকে লিখবোনা, লেখার শুরুতেই বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ায় আমার শিক্ষকদের অবদান আসলে এক-দুই লেখায় শেষও হবেনা। সে চেষ্টাও করছিনা। যদি কোনোদিন বিখ্যাত হই, একটা বই লিখবো আমার জীবনের "শিক্ষক" নামধারী মহীরুহদের নিয়ে, যাদের ছায়ায় নির্বিঘ্নে পার হয়ে এসেছি এতটা বছর, যারা গনগনে সূর্যের আঁচ আমার গায়ে লাগতে দেননি কখনো, যতটা সম্ভব মসৃণ করেছে আমার যাপিত জীবন। তাদের অবদান কম কথায় লিখলে চলবে কেন?
আমার চলার পথের প্রত্যেক শিক্ষককে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। সাথে সাথে এটাও কামনা করি, দেশটা ভরে উঠুক প্রকৃত শিক্ষকসম্প্রদায়ে। অর্থলোলুপ, কামলোলুপ, নৈতিকতাবিবর্জিত শিক্ষকদের নোংরা হাত থেকে মুক্তি পাক এদেশের শিক্ষাঙ্গন। বলা হয়ে থাকে, শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরুদণ্ডে পচন ধরলে, মেরুদণ্ড সোজা করে আর দাঁড়ানো যাবেনা। প্রত্যাশা এটাই, দেশের মেরুদণ্ডগুলো দৃঢ় থাকুক যেকোনো সংকটে, যেকোনো বিপর্যয়ে।
ভালো থাকুক, মানুষ গড়ার কারিগরেরা।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২৬
কূপমন্ডূক বলেছেন: ভালো থাকুক তারা
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭
অবনি মণি বলেছেন: ভালো থাকুক, মানুষ গড়ার কারিগরেরা।