নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'\'আবার কবে হবে বোধের বাজারদর কাঙ্খিত সীমানায়\'\' সেই হিসেব কষতে থাকা একজন বোহেমিয়ান।

শুভ্রনীল শুভ্রা

আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়, আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি আমারি তিয়াসী বাসনায়।

শুভ্রনীল শুভ্রা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কেন এমন অমানবিক হচ্ছি?

১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ৭:২৪



বাংলাদেশের কোনো এক গ্রামের কথা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার জন্য কয়েকটি বাড়ি পুরোপুরি লক-ডাউন করে দেয়া হয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে আক্রান্ত মানুষজন সবার চক্ষুশূল হয়ে গেছে। যেন মহাপাপ করে ফেলেছে! তাই, তাদের একঘরে করে ফেলা হয়েছে। তারা বাইরে বের হতে পাচ্ছেনা। ওদিকে ঘরে খাবার ফুরিয়ে গেছে। আত্মীয়-স্বজন কেউ ফোন ধরেনা। পাড়া -প্রতিবেশীরাও তাদের ডাকে সাড়া দেয়না। একরকম না খেয়ে থাকবার উপক্রম। শেষমেশ, গ্রামের মেম্বার জানতে পেরে তাদের প্রয়োজনীয় বাজার সদাই করে দিয়ে এসেছে। ঘটনাটা শুনার পর বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। করোনা হবার দায়ে মানুষজনকে তো দেখছি না খেয়ে মরতে হবে!

মানুষ কেন এমন নিষ্ঠুর আচরণ করছে এসব নিয়ে ভাবতে গেলে যে দিকটি উঠে আসে সেটি হলো -আতংক। কখন কে কোথায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে, তা ঠাওর করতে পারা যাচ্ছেনা। দেখা যাচ্ছে, বড়ো বড়ো কর্তাব্যক্তিরাও আক্রান্ত হচ্ছে। আবার ভাইরাসটি ছোঁয়াচেও বটে! তাই, মানুষ স্বভাবতই ভয় পাচ্ছে এবং আক্রান্ত মানুষ থেকে দূরে থাকছে। সেক্ষেত্রে, সবাইকে বুঝাতে হবে যে করোনায় আক্রান্ত হওয়া কোনো অপরাধ নয়। নিরাপদ দূরত্বে থেকে সঠিক সুরক্ষা কৌশল অবলম্বন করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো যেতে পারে। অন্ততঃ তাদের মৌলিক চাহিদাগুলোর যোগান দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করা যেতে পারে। যেমন: আপনার প্রতিবেশী পরিবার কোয়ারেন্টাইনে থাকলে আপনি বাজারে যাবার সময় দূর থেকে জিজ্ঞেস করে নিতেই পারেন তার কোনোকিছু কেনার প্রয়োজন আছে কিনা। তবে, অবশ্যই আপনাকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আরেকটা কারণ হতে পারে- স্বার্থপরতা। মানুষ হিসেবে আমরা ভীষণ রকমের স্বার্থপর, সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সবসময় নিজের ভালোটা বুঝি; তাতে অন্যরা চুলোয় যাক। গুজবে কান দিয়ে জিনিসপত্র স্টক করে বাজার খালি করার প্রবণতা, সেই স্বার্থপর দিকটা স্পষ্ট ইঙ্গিত করে। 'আমি বাঁচলে বাপের নাম' প্রবাদে বিশ্বাসী আমরা সর্বদায় নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। সেজন্য অন্যের বিপদে সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে পালিয়ে বেড়াতে আমাদের বাধেনা।

মানুষ কিন্তু নিষ্ঠুর হয়ে জন্মায়না। তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন উপাদান তাকে অমানবিক করে, কখনো কখনো হিংস্র করে তোলে। কিছুক্ষেত্রে অমানবিক আচরণ আসে অসহায়ত্ব থেকে। দেশের যে চিকিৎসা ব্যবস্থা তাতে করে সাধারণ জনগণ আক্রান্ত হলে সঠিক চিকিৎসার অভাবে দুর্বিষহ কষ্টের সম্মুখীন হতে হবে একথা সবার জানা। আর জেনেশুনে কেউ নিশ্চয় বিষপান করতে চাইবেনা। বলা হয়ে থাকে যে যেকোন মানুষকে পরিস্থিতির চাপে ফেললে সে অন্যায় করবে, নিষ্ঠুর আচরণ করবে। তাই, প্রচলিত সিস্টেম এবং পরিবেশ -পরিস্থিতি মানুষকে এমন নিষ্ঠুর আর কঠোর হবার জন্য নিদারুন অসহায় করেছে এমনটি বলা যেতেই পারে।

সবাই অমানবিক আচরণ করছে এমন বললে ভুল হবে। পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে যেমন দেখতে পাচ্ছি, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে তার পরিবার দূরে ফেলে দিচ্ছে আবার এও দেখতে পাচ্ছি কিছু মানবিক মানুষ পরম মমতা আর ভালোবাসা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। গরিব, অসহায় মানুষদের সাহায্য করার জন্য অবিরাম ছুটে যাচ্ছে দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। এসব ভালো খবর আমাদের আশা জাগায়। পক্ষান্তরে, আপন মানুষ হয়ে, প্রতিবেশী হয়ে মানুষের সাথে পাষন্ডের মতো আচরণের সংবাদ আমাদের অন্তরে পীড়া দেয়। ভয় হয়, তবে কী মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর যে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য আমাদের আছে তা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে! এমন দ্বিধান্বিত ভাবনা থেকেই আসলে মনে প্রশ্ন জাগে যে আমরা এমন অমানবিক হলাম কবে? আমাদের শাশ্বত চিরন্তন পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের সাথে তো এমন আচরণ ঠিক যায়না।

মানুষের মানবিক পরিচয়ের চেয়ে সত্য আর সুন্দর কী হতে পারে! আশাবাদী মানুষ আমি, তাই খুব সহজে হতাশ হতে চাইনা। যদিও নিদারুন হতাশাবোধ থেকে এই পোস্টের অবতারণা। তবুও আমরা ভালোবাসা ও মানবিকতার মশাল জ্বালিয়ে হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা আর অমানবিকতার অমানিশা দূর করার দৃঢ় মানসিকতা গড়ে তুলবো এমন একরাশ আশা নিয়ে লিখাটি শেষ করতে চাই। সবাই ভালো থাকুন। চারপাশটা ভালোর আলোয় ভরিয়ে দিন।

ফটো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:২৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: করোনাকালে অনেক দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছ, এটা সত্যি কাম্য নয়।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আমাদের মানবিক ভাবনা বৃদ্ধি করা দরকার।

২| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:৫৬

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: ৪০-৫০-৬০ এর দশকে কি আমরা অমানবিক ছিলাম না?

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫০

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: প্রতিবেশীর বিপদে এগিয়ে আসার মতো মানবিক ছিলাম হয়তো।

৩| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৪৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই যত সংবাদ দেখি মনটা বিষাদে হয় পূর্ণ
আমরা কতটা নিষ্ঠুর হয়ে পড়েছি এই মহামারি কালে

আল্লাহ আমাদের মাঝে মানবতবোধ দিন

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫১

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: হ্যাঁ আপু। এর জন্য সঠিক জ্ঞানের অভাবটা ই হয়তো মুখ্য।

৪| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: এই রাষ্ট্র, রাষ্ট্রনীতি দেশের মানূষকে অমানবিক করে তুলছে অজান্তেই।

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: সমাজ কাঠামো ও রাষ্ট্রব্যবস্থা একটি আরেকটির উপর নির্ভরশীল। সমাজের মানুষগুলোর স্বতন্ত্র আচরণগুলোও দায়ী বললে হয়তো ভুল হবেনা।

৫| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: যারা দেশ চালায় তারা সকাল হতে রাত পর্যন্ত মিথ্যা বললে আমজনতা অমানবিক হবেই

১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: একটি সমাজের নেতা সেই সমাজের মানুষের তৈরী। তাই, ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের জন্য সমাজের মানুষগুলোকে আগে পরিবর্তিত হতে হবে।

৬| ১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪২

আহলান বলেছেন: এর থেকে পরিত্রানের কি কোন উপায় আছে? এলাকার মেম্বারকে ধন্যবাদ ... !!

১১ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: সবাইকে বুঝাতে হবে যে করোনা রোগী হলেই অচ্ছুৎ হয়না। সাবধানতা অবলম্বন করে তাদের সাহায্য করা যায়।
আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনকালে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যেটা ওই গ্রামের মেম্বর মহোদয় করে দেখিয়েছেন।

৭| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবন বোধ যখন ভোগবাদী, স্বার্থপরতার, ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার
তখন তার প্রকাশও এমন নিষ্ঠুর!
করোনা না এলে হয়তো এত নগ্ন ভাবে সামনে আসতো না।

আমাদের সঠিক জীবন দর্শন বেছে নিতে হবে।
মানবিক, সামষ্টিক, সামগ্রিক, ইহ পর এবং প্রকৃত ঐশি সত্য দর্শন।
প্রেম এবং মানবিকতা, ভালবাসা ও পরিপূর্নতায় ।

১১ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: খুব সুন্দর ও জ্ঞানগর্ভ কথা বলেছেন। পুরো লিখার সারমর্ম খুব অল্প কথায় দারুণভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৮| ১২ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:২৪

রাকু হাসান বলেছেন:

সুন্দর আলোচনা করেছেন । মানুষ কিন্তু অমানবিক হয়ে জন্মায় না । --একদম ঠিক বলেছেন । অশিক্ষা-কুশিক্ষা ,নৈতিকতা ও সামাজীকরণের অভাবই আমাদের অমানবিক করছে। হয়তো আরও অনেক অমানবিকতার উদাহারণ সৃষ্টি করবো আমরা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:০০

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: আপনি বলেছেন - ''হয়তো আরও অনেক অমানবিকতার উদাহারণ সৃষ্টি করবো আমরা।''
এমন শঙ্কা এবং হতাশা আমার মাঝেও কাজ করেছে। তাই মনে হয়েছে যে এসব নিয়ে লিখবার দরকার আছে। মানুষের বিবেককে প্রশ্নের মুখোমুখি করবার দরকার আছে। উৎসাহমূলক মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৯| ১২ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৪০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



একজন মানুষ, একটি পরিবার এবং একটা রাষ্ট্র যখন সংকটে পড়ে তখন সামাজিক দায়িত্বশীলতা খুবই দরকার পড়ে। গড়ে তুলতে হয় একটি মানবিক সমাজ। আমরা কি পারছি? আমাদের চারিপাশটা কি আসলেই দায়িত্বশীল আর উদারমনা? উত্তর হচ্ছে না। এই করোনা কালে সমাজের এই দিকটি ফুটে উঠেছে ভয়াবহভাবে। সামাজিক বৈষম্য আর অন্যকে পিষ্ট করে নিজের আখের গোছাতে যে জাতি সদা জাগ্রত সেখানে মানবিক আচরণ আশা করা দূরুহ।

ভালো থাকুন।

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:১১

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: আমরা এতো করে বলছি যে মানবিক মানুষ দরকার। মানবিক সমাজ গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের সমাজে শিক্ষার হার তো বেড়েই চলেছে। তবুও কেন আমরা শিক্ষিত মানুষগুলো মানবিকতা ছড়িয়ে দিতে পাচ্ছিনা ? এর মূল কারণ কী হতে পারে জানা থাকলে জানাবেন।
'বৈষম্য' ব্যাপারটা নিয়ে বিশেষ করে বলার কিছুই নাই। শ্রেণীবৈষম্য দূর করা আদৌ সম্ভবপর হবে বলে মনে হয়না।

১০| ১২ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৩

শের শায়রী বলেছেন: স্বার্থপরতা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। সামান্য করোনায় মানুষের মাঝে এমন ভীতি জাগিয়ে তুলছে যে মনে হয় হাশরের মাঠ, বাবা ছেলের লাশ নেয় না, স্ত্রী স্বামীকে বন্ধ রুমে আটকে রাখে সেখানে সে ছটফট করে মারা যাচ্ছে, হাত চোখকে বিশ্বাস করে না মানে হাত দিয়ে যে চোখ ঢলব তাতেও ভয় না জানি চোখের মাধ্যমে করোনা ঢুকে যায়। আমাদের আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের স্বার্থপরতার মুল বলে মনে হয়।

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:১৯

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: ভাইয়া, এসব খবর পড়ে রীতিমতো গা শিউরে ওঠে। নিজেকে ভালোবাসতে শিখতে হবে কিন্তু তারমানে এই না যে পাশের মানুষকে কষ্ট দিয়ে, ঠকিয়ে শুধু নিজের তল্পিতল্পা ঠিক রাখতে হবে। আমরা তো সমাজের ই অংশ। নিজেদের ভালো থাকার জন্যে হলেও তো আশেপাশের মানুষগুলোকে নিয়ে ভাবতে হবে। কেন জানি এসব বুঝতে পারিনা। অদ্ভুত সিস্টেমে পড়ে গেছি। সবখানেই সবাই শুধু 'আমার আমার' করতে ব্যস্ত।

১১| ১২ ই জুন, ২০২০ রাত ২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি দুই চোখে অমানবিক আর হৃদয়হীণ মানূষ দেখতে পারি না।

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:২১

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: খারাপকে ঘৃণা করতে পারাটা অনেক বড় ব্যাপার। সবাই এমনটি করলে মানুষের খারাপ কাজ করার প্রবণতা কমে যাবে।

১২| ১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৪:২৯

রুদ্র নাহিদ বলেছেন: এই অমানবিকতার দায় তো সমাজের একার না। মানুষ সেটারই ভয় পায়, যেটা সম্পর্কে মানুষের ধারনা নাই। করোনা সবার কাছেই অপরিচিত রোগ। প্রথম থেকেই সঠিক তথ্যের অভাব আর ভাইরাস নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিবর্গের অগুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যে সাধারণ মানুষের মনে স্বাভাবিক ধোঁয়াশা তো আসবেই। যেখানে তথ্যের পর্যাপ্ত বরাদ্দ নাই সেখানে গুজবের হাত পা ছড়ায়। জীবনের নিশ্চয়তা না থাকলে অমানবিক না হয়ে উপায় কি?

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:২৫

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: বেশ গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। সঠিক তথ্য জানতে পারা খুব জরুরি। কিন্তু সবসময় কিছু অসাধু মানুষজন সব ব্যাপারেই গুজব রটায়।

১৩| ১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:৩৫

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: তারা ক্লিকবাজ ছিলো। মেয়ের বয়স ১০ হলেই বিয়ের জন্য কথা শোনাত। ১৬ বছর পর্যন্ত আবিয়েত্তা থাকলে খবর করে ফেলতো। বৌ পেটালে সমাজে সম্মান জানাতো। সরকারী গম চুরী করে বড় লোক হলে বা হজ্ব করে হাজী হলে তার সম্মান থাকতো সবার ওপর এবং যার যত টাকা তার সম্মান তত বেশী। পাটক্ষেতে ধর্ষিতার লাশ পাওয়া যেতো, বৌ পিটিয়ে মেরে ফেলে কবর দিলে তার খোজও কেউ নিতো না। এরকম আরও স হস্র ঘৃন্য প্রথা চালু ছিলো। তার কিছু অংশ গ্রামে থাকার বদৌলতে দেখেছি। কেমন লাগে যখন পাটক্ষেতে খেলতে গিয়ে একটা ন গ্ন মেয়ের যোনিপথ চেড়া বর্নহীন বিকৃত লাশ দেখেন, এবং সে লাশের কবর দেয়ার নামে শ্রেফ পুতে ফেলে তার ওপর গাছ লাগিয়ে দেয়া হয়। পুলিশের এসবে ভ্রুক্ষেপ ছিলো না, কে জানে কার মেয়ে ছিলো সেই মেয়েটি। সনটা ১৯৮৫ সাল

১২ ই জুন, ২০২০ ভোর ৬:১৭

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: আমার লিখার বিষয়বস্তু ছিল করোনাকালীন অমানবিক আচরণ নিয়ে। কেন এমন হতে পারে তার সম্ভাব্য কারণ সামান্য আকারে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। আপনি হয়তো 'আমরা এমন অমানবিক কবে হলাম' এই লাইনের প্রেক্ষিতে ৫০-৬০ এর দশকের প্রসঙ্গ এনেছেন। মুরুব্বিদের থেকে যতদূর শুনেছি এবং ছোটবেলায় দেখা অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু মনে করতে পারি, আগে পড়শীর বিপদে সবাই ছুটে আসার উদার ঐতিহ্য ছিল। সে থেকেই কথাটা বলেছি যে এখন তবে এমন হচ্ছে কেন!

হ্যাঁ, প্রাচীনকালে অনেক কুসংস্কার, কুপ্রথা ছিল যেগুলো সময়ের সাথে সাথে কমেছে কিন্তু একদম নি:শেষ হয়ে যায়নি। ১৯৮৫ সালের যে ঘটনা বলেছেন সেটা তো আমার জন্মের আগের। কিন্তু বুদ্ধি হবার পর থেকে এখন পর্যন্ত বর্বর আচরণের ঘটনা যে শুনিনি তা না। সর্বকালেই অবশ্যই বর্বর ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির কিছু মানুষ ছিল, আছে এবং হয়তো থাকবেও। আপনি যেসব বিষয়ের আলোকপাত করেছেন সেসব ন্যাক্কার ঘটনা তো বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বহন করে। তাদেরকে 'নিকৃষ্ট' বলাটা ই যথার্থ মনে হয় আমার কাছে।

১৪| ১২ ই জুন, ২০২০ সকাল ৭:৫৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন।আতংক এবং স্বার্থপরতা মানুষকে চরমপন্থা অবলম্বন করতে বাধ্য করে।যেটাকে আমাদের কাছে অমানবিক বলে মনে হচ্ছে তা আসলে মানুষের এক আদিম প্রবৃত্তি।এটা অতীতেও বড় দূর্যোগের সময় দেখা গেছে।আমাদের বুঝতে হবে আতংক কোন কাজের জিনিস না।ভয় পাওয়া ঠিক আছে।ভয় থেকে আমরা জানার চেষ্টা করি।কিন্তু আতংকিত মানুষ কিছু জানার চেষ্টাও করে না।উলটো নিজের এবং আশেরপাশের মানুষের বিপদ ডেকে আনে।স্বার্থপরতাও দূর করা সম্ভব না।সমাজে কিছু মানুষ স্বার্থহীনভাবে কাজ করতে পারেন।কিন্তু সবাইকে স্বার্থহীন হতে বলা অবাস্তবিক ব্যাপার।কিন্তু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো সম্ভব।নিজের স্বার্থের জন্যেই আসলে আশেপাশের মানুষকে সাহায্য করা জরুরি।জাতিগতভাবে এই শিক্ষা অর্জন করা খুব দরকার।

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:২৯

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: আমার লিখার যথার্থ মর্মার্থ বুঝতে পারার জন্য এবং সুন্দর বিশ্লেষণী মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। জাতিগতভাবে এই শিক্ষা অর্জনের জন্য পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

১৫| ১২ ই জুন, ২০২০ সকাল ৮:১২

শাহ কিবরিয়া বলেছেন: আমরা সবস,প্যেই অমাবিঙ্কিক ছিলাম না ?

১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩২

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: দুঃখিত, আপনার মন্তব্য বুঝতে পারিনি। সম্ভবত বলতে চেয়েছেন যে আমরা সবসময় অমানবিক ছিলাম না? হ্যাঁ, ছিলাম। কিন্তু কাছের মানুষদের, পাশের মানুষদের বিপদে সাহায্য করার মতো ন্যূনতম মানসিকতা আগে ছিল। এই করোনার সময় আপন মানুষগুলোও কেমন যেন বদলে গেছে ! আর সেটার ই কারণ খুঁজার চেষ্টা করেছি।

১৬| ১৩ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০৫

জাফরুল মবীন বলেছেন: যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যখন নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি তৈরি হচ্ছিল তখনই স্বার্থপরতা ও মানসিক দূরত্বের ক্ষেত্র উর্বর হচ্ছিল।আমাদের সেদিনের সেই নির্বুদ্ধিতার ফল এতটাই পরিপক্ক হয়েছে যে আজ এসব অমানবিক ঘটনা দেখতে হচ্ছে।আমি অবাক হইনি।বরং মুখোশের আড়ালে থাকা আপন অমানুষটা দৃশ্যমান হচ্ছে।মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব,অমানুষ সৃষ্টির নিকৃষ্টতম জীব।

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৫

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: পরিবার প্রথা ভেঙে যাবার ফল (প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ যেটাই বলুন) হিসেবে মানুষ অমানবিক হচ্ছে এটার সাথে পুরোপুরি একমত হতে পাচ্ছিনা। কেননা, আমি যে দেশে থাকি এরা প্রায় সবাই নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে বেড়ে ওঠা কিন্তু তবুও তো অমানবিক ঘটনার খবর শোনা যায়না (থাকলেও খুব নগন্য হয়তো এবং তা আমার অভিজ্ঞতার বাইরে) যতটা আমাদের দেশে অহরহ ই হচ্ছে। অন্তত এই দুর্যোগের সময় মানুষকে এই দেশে না খেয়ে এবং মৌলিক সাহায্য (যেমন: সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা) না পেয়ে থাকতে হবেনা, এটা মোটামুটি নিশ্চিত করে বলতে পারি।

আমার পোস্টের বাইরে গিয়ে যদি অমানবিকতার কথা চিন্তা করি তাহলে অসংখ্য উদাহরণ চোখে পড়ে। গতকাল ই একটা সংবাদ পড়লাম যে মৃত স্বামীকে ঢাকা থেকে বাড়ি নিতে যাবার জন্য স্ত্রী নবম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়েকে একা রেখে গেছে। অমানুষেরা সুযোগ বুঝে দিনের আলোতে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলেছে। এর চেয়ে নিষ্ঠুর অমানবিকতা আর কী হতে পারে !! এমন অসংখ্য ঘটনা প্রতিদিন ঘটে যাচ্ছে যেগুলোর খবর হয়তো আমরা জানতেও পাচ্ছিনা। আর এগুলো আগে থেকেই ঘটে আসছে যেটা ব্লগার উদাসী স্বপ্ন ভাইয়ার মন্তব্যেও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

আপনার শেষ কথাটা ''মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব,অমানুষ সৃষ্টির নিকৃষ্টতম জীব।'' এর চেয়ে বড় কথা আর থাকতে পারেনা। এই বোধ'টা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।

১৭| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:০০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: মানবিকতাই দূর্লভ হয়ে যাচ্ছে ইদানিং।

দুঃখজনক!

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৬

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগের বিষয় !

১৮| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৫৯

মুবিন খান বলেছেন: হ্যাঁ, মানুষ ভীষণ স্বার্থপর। মানুষ তো জন্মগতভাবে স্বার্থপর নয়- এও সত্য। মানুষ তো ছয়টি রিপু নিয়ে জন্মায়। এই রিপুদেরকে তার জয় করা লাগে। কেউ পারেন, কেউ পারেন না। যারা পারেন না তাদের সংবাদগুলো খুব প্রকটভাবে আমাদের আঘাত করে। আর যারা পারেন, তাঁরা নিভৃতচারী। ফলে তাদের এই পারার খবরগুলো আমরা খুব কমই জানতে পাই। বেশীরভাগই পাই না।

তবে আমি বিশ্বাস করি এদেশে এখনও ভালোমানুষের সংখ্যাই বেশী। যদি তা না হতো, তাহলে দেশটা ধ্বংস হয়ে যেত। খারাপ মানুষদের দৌরাত্ম্য সবসময় বেশী বলেই আপনার লেখার বর্ণনার দৃশ্যগুলো তৈরি হয়। নইলে বাঙালি তো অতিথিপরায়ণ জাতি। নিজে না খেয়ে অতিথিকে খাওয়ায় এ জাতি।

আমি আশাবাদী মানুষ। হতাশ হতে আমার ভালো লাগে না। আপনিও হতাশ হতে চান নি। এটা ভালো লেগেছে। হতাশ হবেন না।

আপনার গদ্য চমৎকার। ভালো লেগেছে।

২০ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: আমারও বিশ্বাস যে এখনো ভালো লোকের সংখ্যা বেশি। এটাও সত্য যে তারা নিভৃতে দেশের জন্য, দশের জন্য কাজ করে যান। চারদিকে খারাপ লোকদের দৌরাত্ম বেশি। এদের থেকে যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম ভুল মেসেজ না পায়, সেজন্য খারাপ মানুষের দিকে আঙ্গুল তুলে লিখার দরকার আছে।

হ্যাঁ, আমি হতাশ নই। হতে চাইনা। আমাকে অনুপ্রাণিত করবার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.