![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালোবাসার এক রূপকথা
শ্যা ম ল সো ম
১৯৬৫ সালের মে মাসের এক গ্রীস্মের কলেজের ছুটিতে,
মাসীদের গ্রাম মু ক্তগাছা মৈয়মন সিংহে কোলকাতা থেকে
রেলগা ড়ি, প্রথম বিশাল পদ্মা নদী ঐ ভয়ংকর সু ন্দর রূপে
মুগ্ধ লঞ্চে পার হওয়ার বিস্ময়ে হতবাক হয়ে উদ্বেল আনন্দে
বুকের মধ্যে সেতারের ঝংকার। এরপর বাসে নৌকোয় সবুজ
বিস্তৃর্ণ ধান ক্ষেত, বিশাল বিল মাথা উপর খোলা নীল আকাশে
সাদা মেঘেদের ভেসে যাওয়া; এক হাঁটু ধুলো নিয়ে বিরাট বড়
টিনের ছাওয়া দোতলা বাড়ির সদরের কাছে আসতেই পথ সঙ্গী
বসীর মিঁয়া মেসো মশাইকে হাঁক ডাকে পাড়া তোলপার, " ও কর্তা,
ও ঘোষ মশাই আয়েন- কলকাইতা থিকা আপনের আপন জন আইছেন।"
মেসোমশাই মাসতুত ভাইয়েরা আমায় দেখে আল্লাদে জড়িয়ে
হাত ধরে ভেতরে নিয়ে গিয়ে উঠোনে মাটির দাওয়ায় বসিয়েছে,
দাশু মাথায় করে এক খান চেয়ার এনে কয়, কোন কান্ড জ্ঞান নাই
শহর সেই কোলকাইতার বাবু মশাই আয়েন বয়েন। পদধূলি নিতেই,
মেসোমশাই বুকে জড়িয়ে ধরলেন, মাসী আলু থালু বেশে ছুটে এসে
ঝাঁপিয়ে পড়ে সবাইর কাছ থেকে আমায় কেড়ে নিয়ে গভীর আলিঙ্গণে
কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।
হাত মুখ ধুয়ে নিচ্ছি, পাতকূয়া থেকে জল ঢেলে উপু হয়ে বসে এক কৈশোর
উর্ত্তিনা যুবতী ভালো ভাবে পা ধূয়ে লজ্জায় পালিয়ে আসতে গেলে হাত
জোর করে আঁকড়ে ধরলো, মাসী হাতে গামছা সাবান নিয়ে দাঁড়িয়ে,
" কোথায় পালাচ্ছিস কমল ? আহাহা ঐ বকুলকে আবার কি লজ্জা ?
" বকুল, পোলাটারে সাবুন দিয়ে ডলে, " মাসীর মুখের কথা কেড়ে নিয়ে,
" আয় গরু তোর গা ধূইয়ে দি ! হা হা হি হি কাকী ! তোমার কমলরে এক্কারে স্নান কইরে দি "
এক কলস জল ঢালতে গিয়ে, বকুল হাসি ফোওয়ারা ছুটিয়ে দিলো।
সেদিন চৈত্র মাস তোমার চোখে দেখে ছিলাম আমর সর্বনাশ
( কাল্পনিক- বিতর্কিত গল্প)
শ্যামল সোম
চৈতী হাওয়ায় গাছের ঝরা শুক পাতা উড়ে যায়। শুকনো পাতার উপর মর মর শব্দে বনের নিস্তব্ধতা ব্যহত হয়। একটা কাঠবিড়ালী তর তর করে উঠে গেল পাতা বিহীন গাছ বেয়ে, গাছের কঠোর বাসায় ডিমের ওপর বসে মা পাখী তা দিচ্ছে। গিরগিটিটা সবুজ থেকে হলুদ রঙ ধরে ইতি উতি চাইছে।
গাছের আড়াল থেকে সূর্যাস্ত শেষ আলো এসে পড়েছে।
বসন্তের ছোঁয়ায় লালে লাল আগুন ফুটছে পলাশ গাছে, আর ঐ কৃষ্ণ চূড়া- রাধা চূড়া গাছে গাছে।
স্বপ্না আর রঞ্জনের মাথায় ওপর ঝরে পড়লো শুকনো পাতা। দুজনে এক সঙ্গে হেসে ওঠে।রঞ্জন পাতাটা নিয়ে স্বপ্না সারা মুখে বোলাতে থাকে।
আমার ভীষণ ভয় করে রঞ্জন ?
খুব স্বাভাবিক, তুমি নন্দিনী আহমেদ, আমি রঞ্জন মুখার্জি, আমাদের ধর্ম আলাদা--
কিন্তু আমাদের ভালোবাসা, পাঁচ বছরের প্রেম?
হা হা হা - ওদের কাছে কানাকড়ি দাম নেই--নন্দিনী
কিন্তু রঞ্জন তোমাকে ছেড়ে আমি---কি -কি করে আমি? হায় ঈশ্বর!
এখনই চোখের জল ফেলে না , পরে অনেক কাঁদে হবে--
পরস্পরকে ভালোবেসে আমরা কোন অন্যায় করিনি
কিন্তু আমাদের মধ্যে ভাষা ও সংস্কৃতির বিশাল ফারাক--
কি সব পাগলের মতো বলছো তুমি ? আমারা দুজনে বাঙালি, বাংলাভাষী
নন্দিনী! সত্য রে লহ সহজে ! আমাদের দুজনের - না আমাদের দুই সম্প্রদায় বড় প্রিয় কবি বলেছেন, সত্য কে --
হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি ?
প্রীতি, ভালোবাসা, অবশ্যই ধর্মের অনুশাসন মেনে -সামাজিক দায় স্বীকার করে--
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা?
ভাষার মধ্যে ও অনেক অমিল, আমারা বলি জল তোমরা বল পানি, অথচ কি সেই একই বস্তু আমাদের তৃষ্ণা মেটায়।একই ঈশ্বর, একই সৃষ্টি কর্তা। তবু একে অপরের ধর্মে প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস নেই- প্রীতি নেই - এইটা বাস্তব- নন্দিনী! গৌর কিশোর ঘোষের " প্রেম নেই" উপন্যাস পড়ছো?
না, না -প্লিজ রঞ্জন, চুপ কর --দোহাই চুপ কর--
কাঁদলে -তোমায় ভীষণ সুন্দর দেখায় নন্দিনী !
কাঁদাবে বলেই কী তুমি তাহলে এত বছর তুমি আমাকে--
কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে -- এ গান তো তুমি আমায় বহুবার শুনিয়েছো--
কেন! কেন! কেন ! রঞ্জন কেন এত আমাকে ভালোবেসে ছিলে?
আমার নলিনী! কখন কবে যে তোমাকে এত ভালোবেসে ফেললাম !তা আমি-আ-আমি নিজেই জানতে পারি নি--
আমি থানায় যাবো, কোর্টে হাজির বলবো আমরা পরিনত বয়স্ক ! দেশে আইন আছে--
আইন মোতাবেক ব্যবস্থা পুলিশ করবে।তারপর ওদের নির্যাতন অত্যাচার--আর আইন-- হে-হ-
আইনত নিষিদ্ধ নয় আমাদের সম্পর্ক
নন্দিনী আইনের অনুমোদনের বহু যুগ আগে ধর্মীয় অনুশাসন, আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালন হয়ে আসছে। স্বেচ্ছাচার বা ব্যভিচার, ধর্ম বিরুদ্ধ চারণ করে বাহবা হাততালি পাওয়া যায় কিন্তু বাস্তব জীবন ভীষণ কঠিন--
রঞ্জন আজ এত বছর পরে এখন এ সব --আমি কিছু বুঝতে পারছি না--
এখন এই কথা বলছি কারণ পরবর্তী সময়ে আমাদের বিবাহিত জীবনে সমস্যা আসবে-আসবে-আমাদের সন্তানেরা কোনদিনই ভালো ভাবে ঈদ বা দুর্গা পূজা কোন আনন্দ ঠিক মতো উপভোগ করতে পারবে না। কাউকে হেসে বলতে পারবে না ঈদ মোবারক বা শুভ ব
©somewhere in net ltd.