নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্যামল সোম

আমিও এক জন সামান্য লেখক, কবিতা,গল্প,রম্যরচনা, প্রবন্ধ লিখে থাকি।

শ্যামল সোম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মজা

১৫ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৪১

আত্মজা

শ্যামল সোম

মা, ও মা, মাগো, তুমি কথা বলছো না কেন? কি হয়েছে ? মা তুমি কা বলো। বাপি ও বাপি মা কথা বলছে কেন? মায়ের কি হয়েছে ?
আমি মনে খুব জোর এনে, কান্না গিলে বলি, এসো আমার কাছে এসো, সুমিতা কোলে করে সে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই। মায়ার বোনেরা আমার বাড়ির অনেকে এখন মায়াকে, লাল বেনারসী, আলতা, সিঁদুর, ফুলের মালা দিয়ে শেষ বিদায়ের সাজে সাজিয়ে দিতে শেষ যাত্রার জন্য প্রস্তুত করে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
আমার ঘরে সুমিকে কোলে করে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে ভাবছি এই চার বছরের মায়ার নয়নে মনি আমার বড় আদরের সুমিকে কি করে বলি, তার মা আর কোনদিন কথা বলবে না। তাকে জড়িয়ে আর কোন দিন তার মা আদর করবে না।
বার বার মনে মনে বলছি মায়া এটা তুমি ঠিক করলে না, তোমাকে চির দিনের মতো হারানোর দুঃখ হয়তো কোনদিন ভুলতে পারবো না।
কিন্তু এখন এই করুন পরিস্থিতির কি ভাবে সামলাবো তোমার চোখের মণিকে ? এইটুকু মেয়েকে আমি বাপ হয়ে কি ভাবে বলি?
বাপি কি হয়েছে তুমি কাঁদছে কেন?
জোর করে হেসে বলি কৈ কাঁদছি না তো, তোমার মা ঘুমিয়ে পড়েছে।
ঘুমের দেশে বেড়াতে গেছে, ফিরবে তোমার জন্য একটি বারবি ডল পরী আনতে গেছে।
কিন্তু মা তো শুয়ে গেলো কি করে?

ঘুমের ঘোরে, তোমার মায়ের মন মেঘের খেলা বেয়ে বহে চলে গেলো।

ছোট ছোট হাতে আমাকে জড়িয়ে বলে আমিও যাব মায়ের কাছে।

নিশ্চয়ই--যাবে, আমি নিয়ে যাবো সঙ্গে করে এখন এইটা দুধটা খেয়ে নাও।
সুমিতা আমার গলা জড়িয়ে শুয়ে আছে।নিস্তব্ধ রাত ঘুম নেই চোখে।
কাশী মিত্রের গঙ্গার পাড়ে শ্মশানে চিত্র আগুনে মায়া, যে ছিলো আমার স্বপন চারিনী, মায়ার সাথে পরিচয় হয়, আমি যে কলেজে পড়াতাম সেই কলেজে মামায়া জয়েন করলো, ওর সংবেদনশীল মন, সৌজন্য বোধ, মমতা, সহমর্মিতা আমাকে মুগ্ধ করলো, দীর্ঘ তিন বছর প্রেম, ভালোবাসা, শেষে বিবাহ। দেশ বিদেশে পাহাড়ে সমুদ্রে বেড়াতে যাওয়া।সুমি এলো চাঁদের আলোয় ভরে উছলে উতলে উঠলো সংসার।
সুখ সহিল না, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, রোগ ধরার আগেই সবাই শেষ।
আমি মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে বিপত্নীক হয়ে একা সম্পূর্ণ কাজের মেয়ে মিনতীর সহায়তায় সুমিকে তিল তিল বড় করে তুলছি, প্রথম প্রথম আমাকে স্নান ও খাইয়ে নিতে হতো।কলেজের তাড়া, নিজের পড়াশোনা, বন্ধু বান্ধব সব সব বিসর্জন দিয়ে এক মাত্র সুমিকে নিয়ে আমার দিন কাটতো, সুমি ছিলো ঠিক ওর মা-মায়ার মতো দেখতে, সুমির মধ্যে আমিও মায়াকে পেয়ে গেলাম। আনমনে মাঝে কখন কখন শরীরের স্বাভাবিক কারণে কিংবা ভালোবাসার স্পর্শ, নারীর সঙ্গ, সান্নিধ্য, যৌন আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতাম।অস্বীকার করবো না, কিন্তু তার জন্য কোন নারীকে অসম্মান, বা ছলনা, প্রতারণা করিনি।
বহু নারী সহানুভূতি, সহমর্মিতা, ভালোবাসা নিয়ে খুব কাছেও এসেছিল,
সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়েছি, ভালোবেসে, ভালো ভাবে, কোন তিক্ততা, অভিযোগ, আমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব অমলিন থেকে গেছে।
সান্ধ্য কালিন নৈশ আসরে সেবন করার পর সংযত, সহৃদয় ব্যবহারে, আবেগের সাথে স্বরচিত কবিতা পাঠ শুনে বিমোহিত নারী বিমুগ্ধ নয়নে যখন বন্ধু পত্নীরা চেয়ে থাকতো, অনেককে বলতো, " রজত তুই বিয়ে না চির কাল প্রেমিক রয়েছিরয়েছি আজও, আমারা আসামী হয়ে সংসারে জেল ঘাটছি।
আমার সুখে দুঃখে কোন আত্মীয় স্বজনের কোন সাহায্য পাইনি কিন্তু যখনই কোন সমস্যা, বিপদে পড়েছি পরম সুহৃদ মতো বিকাশ, অতসী, সৌভিক তার বউ শেলী, অনেকে ছুটে এসেছে। কখন সুমির অসুখে, আমার দুর্ঘটনায়, অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায়। আমিও কৃতজ্ঞ, ওরাই ছিল আমার পরম আত্মীয় -আত্মা কাছাকাছি বাস।
আজ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবি, সুমি যে ছিলো আমার আত্মার এত কাছের, একান্ত আপন জন, কত আদরের আমার সুমিতা, মা মা -রে তোতোর কি একবার ও মনে হলো তুই এই ভাবে না বলে কয়ে পালিয়ে গেলি ঐ একটা নিখিল নিকৃষ্ট, নোংরা, রাজনীতির মার্শাল ম্যান ঘৃণ্য অপরাধী সঙ্গে !
মায়া তোমার ছবি ফুলের মালা সাজিয়ে, তোমার পছন্দের ধূপ জেলে দিলাম, তোমার কাছে আমি নতজানু হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করছি, আমায় মাপ করে মায়া ! তোমার আদরের সুমি, সুমিতাকে ঠিক মানুষ করতে পারলাম না। জানি এ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবুও তুমি যদি কৃপা সমহিমায় ক্ষমা করো, আমি মনে শান্তি পাবো।
দুচোখ জল নিয়ে মোমবাতির আলোয় দেখছি, মায়া আজ তাঁর জন্ম দিনে
আমার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে হাসছে, ঐ হাসিতে ঝরে পড়ছে,"আমায় ক্ষম হে ক্ষম "।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৪৫

শ্যামল সোম বলেছেন: স্বদেশে নি র্বাসিত
শ্যা ম ল সো ম
স্বদেশে নি র্বাসনে আছি, আমার দেশের গৃহহারা ক্ষুধা র্তু জনতার সপ ক্ষে
সং গ্রামে সামীল হয়ে গেয়েছিলাম গান,
" উ র্দ্ধ গগনে বাজে মাদল চলরে
নোওজোয়ান শোনরে পাতিয়া কান--" কবির গান এবার মরা গাঙ্গে তোর-
-বান এসেছে--"
গান শুনেই ধরে নিয়ে এসে কয়েদ করে রেখেছে এই
প্রাচীর ঘেরা সমু দ্রের আ ন্দামানের সেলুলার জেলে,
বিদেশী বণিকের
ছ্দ্মবেশে এসে দখল আমার দেশ লু ন্ঠন শোষণ কঠোর শাসনে সারা
দেশবাসীর উ ঠছে নাভীশ্বাস,
আমার মা ! আমার দেশ জননী শৃ ঙ্খলিত আজ।
আকাশ যায় না দেখা, সূয্যোর আলোও আসেনা এই চার বাই চার
আবদ্ধ ঘরে, বহুকাল বহে গেছে পাখীদের গান, গাছের ছায়ায় বসা,
পুকুরে জলে স্নান, ভরা নদীর বুকে বৈ ঠা বেয়ে ভেসে যাওয়া,
গাজনেয় মেলায় আমার প্রিয় দেশবাসী !
গত রা ত্রে স্ব প্নে দেখে ছিলাম তাহাদের মুখ, স ন্ত্র স্থ চোখে,
বেদনা নীলাভ শরীর।
হায় নিরাভরণ প্রিয় স্বদেশ আমার দুশো-বছরের অমানবিক অত্যাচারে,
লা ঞ্ছনায় অনাদরে
অভিমানে নত শীর, কাঁপে বুক, জমা ট কা ন্না ব্যাথার উ প্তাপে গলে চোখে আসে জল।
সেলের বাহিরে ফৌজের হাঁক শোনা যায়, " হু-শি-য়া-র "
তারা পেটের টানে, কাকে গুলি করে ?
শেষ রাতে দুজন সেনানী এসে ধরে নিয়ে গেল, কমরেড অনুপম সেন প্রিয়
ব ন্ধু আমার ! ভোরের ক্ষীণ আলো এলো ঐ ঘুলঘুলি দিয়ে, তখনই আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে
শোনা গেলো এক টি গুলির আওয়াজ !
নৈঃশ ব্দে ভয়াবহ নিঃস্ত ব্ধতায় বধির সময়, বাতাসে বারুদের গ ন্ধ
ভেসে আসে স ন্তর্পনে স্মরি
অমোক ম ন্ত্র " ইনকেলাব জি ন্দাবাদ ! বন্দেমাতারম !"স্বদেশে নি র্বাসিত
শ্যা ম ল সো ম
স্বদেশে নি র্বাসনে আছি, আমার দেশের গৃহহারা ক্ষুধা র্তু জনতার সপ ক্ষে
সং গ্রামে সামীল হয়ে গেয়েছিলাম গান,
" উ র্দ্ধ গগনে বাজে মাদল চলরে
নোওজোয়ান শোনরে পাতিয়া কান--" কবির গান এবার মরা গাঙ্গে তোর-
-বান এসেছে--"
গান শুনেই ধরে নিয়ে এসে কয়েদ করে রেখেছে এই
প্রাচীর ঘেরা সমু দ্রের আ ন্দামানের সেলুলার জেলে,
বিদেশী বণিকের
ছ্দ্মবেশে এসে দখল আমার দেশ লু ন্ঠন শোষণ কঠোর শাসনে সারা
দেশবাসীর উ ঠছে নাভীশ্বাস,
আমার মা ! আমার দেশ জননী শৃ ঙ্খলিত আজ।
আকাশ যায় না দেখা, সূয্যোর আলোও আসেনা এই চার বাই চার
আবদ্ধ ঘরে, বহুকাল বহে গেছে পাখীদের গান, গাছের ছায়ায় বসা,
পুকুরে জলে স্নান, ভরা নদীর বুকে বৈ ঠা বেয়ে ভেসে যাওয়া,
গাজনেয় মেলায় আমার প্রিয় দেশবাসী !
গত রা ত্রে স্ব প্নে দেখে ছিলাম তাহাদের মুখ, স ন্ত্র স্থ চোখে,
বেদনা নীলাভ শরীর।
হায় নিরাভরণ প্রিয় স্বদেশ আমার দুশো-বছরের অমানবিক অত্যাচারে,
লা ঞ্ছনায় অনাদরে
অভিমানে নত শীর, কাঁপে বুক, জমা ট কা ন্না ব্যাথার উ প্তাপে গলে চোখে আসে জল।
সেলের বাহিরে ফৌজের হাঁক শোনা যায়, " হু-শি-য়া-র "
তারা পেটের টানে, কাকে গুলি করে ?
শেষ রাতে দুজন সেনানী এসে ধরে নিয়ে গেল, কমরেড অনুপম সেন প্রিয়
ব ন্ধু আমার ! ভোরের ক্ষীণ আলো এলো ঐ ঘুলঘুলি দিয়ে, তখনই আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে
শোনা গেলো এক টি গুলির আওয়াজ !
নৈঃশ ব্দে ভয়াবহ নিঃস্ত ব্ধতায় বধির সময়, বাতাসে বারুদের গ ন্ধ
ভেসে আসে স ন্তর্পনে স্মরি
অমোক ম ন্ত্র " ইনকেলাব জি ন্দাবাদ ! বন্দেমাতারম !"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.