নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ বিশ্বাসী................... স্রোতের বিপরীতে একজন।

সাইদুর রহমান সিদ্দিক

স্রোতের বিপরীতে একজন

সাইদুর রহমান সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঝুনঝুনি

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৩২

সত্য গল্পঃ -ঝুনঝুনি

পারলে উত্তর দিন দেখি...কোন বিষয়ে এটা লেখা...

এক সময় কোন একটা রাজ্য ছিলো..সেই রাজ্যের রাজা ছিলো খুবেই মিথ্যুক এবং সার্থপর।

আর রাজ্যের প্রজারাও ছিল অনেক আজব ধরনের এবং অলস প্রকৃতির.....কিন্তুু বুদ্ধিবল ছিলও অলস।

সেই রাজ্যে সব সময় গান বাজনা ও মেলা চলতো,আর সেখেনেই সবার আত্নীয়র সাথে দেখা হতো কথা হতো আর হতো আড্ডা। আর প্রজারা সব সময়েই হাল্কা কাজের পর সেই মেলায় গিয়ে কেউ বাজাতো গান, কেউ বা নাচতো আর কেউ বা 'ঝুনঝুুনি' বাজিয়ে সবাইকে একত্র করে তাদের সাথে মজা লুটতো আর আনন্দ ফূর্তি করে রাজার বদনাম গাইতো এবং সবাইকে বদনাম শুনিয়ে নিজেকে বড় করে তুলতো আর সবার চোখে বড় হয়ে যেতে চাইতো..

...সেখানে প্রতিদিন সবাই কিন্তু ঐ ঝুনঝুুনি বাজিয়ে সবাইকে একত্র করে প্রতিযোগিতা করতো..কি ভাবে রাজার বদনাম গেয়ে বড় হওয়া যায়।

সেই মেলার সব ঘটনার চাল-চিত্র কিন্তুু রাজার কানে পৌছাতো..এবং রাজা তা দেখে মুচকি মুচকি হাসতো আর মনে মনে ভাবতো...আমি পেয়েছি অনেক প্রজা যারা হুজুগ ও নিজেকে বড় মনে করে তোলার জন্যই মেলার মত মিডিয়া বসিয়ে সেখানে আমার গীবত গায়।

এই সুযোগটাই আমার সব চেয়ে বড় সুযোগ.... ঐ কে আসিছ..আজ থেকে প্রতিদিন একটা একটা করে দেশের সব কিছুই ধংব্ষ করবি আর... তারা ঐ মেলায় গিয়ে সেটার প্রতিবাদ না করে আসরের মাঝে বসিয়ে সেটাকে নিয়ে মজা করবে এবং নিজেকে বড় করে তোলার চেষ্টা করবে.... আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে আমার সার্থ কায়েম করে নিবো।

সেদিন থেকেই রাজার মন্ত্রী, উজির, নাজিরেরা একটা করে রাজ্যের মন্দ কাজ করতে লাগলো আর চেষ্টা করতে লাগলো রাজ্যটাকে অন্য রাজ্যের কাছে বিলিয়ে দিতে।

...আর প্রতিদিনেই সেই কু-কর্মের প্রতিবাদ এবং রাজার গীবত পেয়ে যেত সকল প্রজারা...এবং সবাই নতুন টপিক নিয়েই বড় হওয়ার জন্য হুংকার ছুড়ে বলতো প্রতিবাদি হও...প্রতিবাদি হও....

আর সেখানেই নেতা তৈরী করতে একটা একটা করে দল গঠন করা হতো...যাদের দলপতি ভাষন দিতো, তাদের দলের অন্য নেতারা হাতে করোতালি দিয়ে স্বাগতম জানিয়ে সবাই বজ্রকন্ঠে আওয়াজ দিতো... জয় হোক মকবুলের... নিপাত যাক দুঃশ্বাসনের....

..আর রাজ্যের রাজা সহ সকল রাজ্যশাসনতন্ত্রের সকলেই আড়াল থেকে দেখতো আর খিল খিল করে সবাই হাসতো, এবং ওদের সেই মেলার আনন্দের সময়েই চলতো আবার তাদের রাজ্যনিধন পরিকল্পনা।

এ ভাবেই দিন যাচ্ছে, মাস যাচ্ছে, বছর যাচ্ছে আর রাজ্যটা অন্য রাজ্যের হতেও যাচ্ছে...এবং মিথ্যুক রাজার স্বপ্ন পূরন হতেও যাচ্ছে..

এবং এদিকেও কিন্তুু কম না...মেলায় আগের চেয়ে অনেক লোক হচ্ছে,বৃদ্ধি করা হয়েছে মিডিয়ার কিছু উন্নতশীল সরন্জামাদি..আর তার সাথে সাথে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নেতা এবং দর্শক....!!

--তখন কিন্তুু প্রজাদের রাজ্যের প্রতি কোন খেয়ালেই নেই..সব সময় ধান্দা মেলার দিকে আর মেলার দিকে। বাইরে কি হচ্ছে সেটার ইস্যু নিয়ে মেলায় কি ভাবে উপস্হাপন করবে...কি ভাবে গলার কন্ঠ বারিয়ে ভাষন দিলে সবাই হাত তালি দিয়ে আমাকে বড় করে তুলবে।

নিজেকে বড় করতেই সবাই ঝুনঝুনিটা বাজিয়ে ভাষন দেওয়া শুরু করে আর বাকিরা সেই ভাষনের কথা শুনে রাজাকে ফাসিতে ঝুলানোর জন্য হৈ হৈ করে লাফিয়ে উঠে......কিন্তুু কেউ মেলার বাজিরে বের হয় না।

যদিও হৈ হৈ করে দু একজন মেলা থেকে রাজার ফাসির জন্য বাহির হয়...তাকেই ধরে রাজা গলাটা আলাদা করে দেয়। কিন্তুু মেলার ভিতরের লোক তাহা কোন ক্রমেই বুঝতে পারে না।

হঠাৎ একদিন ওই রাজ্যের মন্ত্রীর দ্বারা খবর চলে আসলো মেলার মাঝে ----কিছু দিনের মধ্যেই মেলার কিছু অংশ ভেংগে দেওয়া হবে ---কারন এই মেলা করে রাজ্যের অনেক লোকসান হয়ে গেছে..কারন আসলে মেলাটা আমাদের রজ্যের না...অন্য রাজ্য এটাকে হাতিয়ে নিয়েছে...!।

এই কথা শুনেই কেউ প্রতিবাদ করার জন্য ব্যস্ত, আবার কেউ এটার টপিক তৈরী করে সবাইকে শুনিয়ে নিজেকে বড় বলে প্রমান করার জন্য ব্যস্ত।

...হুম সেদিন অবশ্য সবার স্বপ্নটা পূরন হয়েছে..কেউ সুন্দর টপিক দিয়ে আওয়াজ দিয়ে একটু বড় নেতা হয়েছে, আবার রাজার স্বপ্নটাও পূরন হয়েছে...কারন মেলার এক অংশ তাদের থেকে দখল করে নিয়েছে।

..কিছুদিন পর আবার মন্ত্রীর মাধ্যমে খবর চলে আসলো ---মেলার ঝুনঝুনিটা আমাদের না এটাও অন্য রাজ্যের , তারা আজ এটাকে দখল করে নিয়েছে এবং এই ঝুনঝুনি বাজিয়ে যে নিজেকে বড় করতে চাচ্ছিলো তাদেরকে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী পাকড়াও করে সবার গর্দান নামিয়ে দিবে....তোরা সাবধান হয়ে যা ...

...যেই বলা ঠিক সেই কাজ...

ওরা হাতিয়ে নিলো সেই সবার পছন্দের ঝুনঝুনিটা.. আর হাসতে লাগলো আকাশ বাতাস প্রতিফলিত করে...আর বলতে শুরু করলো....তোরা এক আজিব....,তোরা এক আজিব...তোরা এক.

...আজিব প্রকৃতিক।

---তাদের হাসি দেখে বাকি প্রজারা শুধু হুহু করে নীরবে কাঁদতে লাগলো। আর বলতে লাগলো... পারলাম না দেশকে রক্ষা করতে..

চেতনাময়ীদের সার্থ হাছিল হওয়াতে আরো কন্ঠ দ্বিগুন হয়ে আসলো আর বলতে শুরু করলো --তোদের এই পরিনতির জন্য ঝুনঝুনিটাই তোদের আসল কারন। থ্যাংকু তোদের সবাই কে.....

...তাহা শুনেই অলস প্রজারা আরো জোরে জোরে কাদতে লাগলো আর বলকে লাগলো....সবাই একসাথে মেলার বাহিরে রাজার ফাসি না চেয়ে ভূল করেছি....ভূল করেছি....ভূল করেছি...

--আমরা আসলেই অলস...আমরা আমাদের কারনেই আজ হারিয়ে ফেললাম আমাদের রাজ্য কে.....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.