![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিমাকে পড়াচ্ছি। পড়ানোর এক পর্যায়ে অনেক সংকোচ নিয়ে বললাম হিমা তোমার মাকে গিয়ে বল যদি পারেন আমার টাকা টা দিতে ।পড়ানো শেষ । হিমা ওর মাকে বলল টাকার কথা । ওর মা রুমে এসে বলল এই মাসে ওনারা নাকি অনেক সমস্যায় আছেন তাই টাকা দিতে পারবেন না। ঈদের পরে দিয়ে দিবে। আমি কিছু না বলে চলে আসলাম । মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেছে।
ভাবছিলাম টিউশানির টাকা টা দিয়ে আম্মা আব্বা আর ছোট ভাই টার জন্য কিছু কিনব। যেই পরিস্থিতি তাতে মনে হয় আর কেনা হবে না। তারপর রাফিকে পড়াতে গেলাম। ঈদের সময় দেখে ওর মা আগেই টাকা দিয়ে দিছে। রাফিকে পড়ানোর পর বাড়িতে গেলাম।
ঈদের কিছু দিন বাকি আছে দেখি কি করা যায়।
হিমা কে পড়াতে গেলাম। পড়ানোর এক পর্যায়ে হিমা বলল আপু কাল আমরা শপিং করছি। আমি প্রশ্ন করলাম কি কিনলা? একটা ড্রেস কিনছি। আমি আর কিছু জিজ্ঞাসা করলাম না । ও নিজেই বলতে লাগল আমার ড্রেস টার দাম কত জানো আপু ? আমি বললাম আমি ভাবে জানব। ১৮০০০ হাজার টাকা। একে একে সব কিছুর দাম বলল । আজ নাকি আবার শপিং এ যাবে । ওর মায়ের জন্য শাড়ি কিনতে। কাল একটা শাড়ি দেখে এসেছে অনেক দামি। এদের কাছে যা টাকা ছিল তা শেষ হয়ে যাওয়ায় শাড়ি না কিনেই চলে আসল।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম শাড়িটার দাম কত ছিল ? ২৫০০০ টাকা । এই তুমি অনেক কথা বল হিমা? এই বলে আবার পড়ানো শুরু করলাম। পড়ানো শেষ করে ফেরার পথে ভাবছি মানুষ বড়ই অদ্ভূত । নিজেরা হাজার হাজার টাকার শপিং করে কিন্তু শিক্ষক কে ২০০০ টাকা দিতে তাদের সমস্যা। রাগে আমার শরীর কটমট করছে।
বাড়ি যাবার পর ছোট ভাইটা জিজ্ঞাসা করল আমার কি ঈদে নতুন জামা কিনে দিবা না?
কিছু বললাম না।
আবার অই দিকে মা এসে বলল আব্বার ওষুধ শেষ । মাথায় আরেক টা বোঝা । এক বান্ধুবীর কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়ে আব্বার জন্য ওষুধ আর ভাই এর জন্য একটা জামা কিনে আনলাম। আম্মা আব্বাকে কিছু দিতে পারলাম না এই ভেবে মনটা অনেক খারাপ লাগছে। আর যেই কয়টা টাকা আছে তা ঈদের সময় লাগবে। হিমাকে পড়াতে গেলাম । হিমা খাচ্ছে একটু পর আসবে। আমি বসে আছি
হিমার মা এসে বলল দেখত শাড়ি টা কেমন হইছে?
আমি বললাম আন্টি অনেক ভালো ।
হিমা আসল ওকে পড়ানো শেষ করে রাফিকে পড়াতে গেলাম।
পরের দিন হিমাকে পড়াতে গিয়ে শুনি হিমার মার শাড়ি নাকি চুরি হইছ?
আমি বললাম কিভাবে?
হিমা বলল উপরের তলার আন্টিকে শাড়ি টা দেখানোর পর সোফাতে রাখছিল । পরে দেখে নাই।
আজ নাকি আবার ওর মা শপিং এ যাবে?
মনে মনে বলি শিক্ষক কে দেয়ার জন্য টাকা নেই । অথচ শপিং এর জন্য টাকার অভাব নেই ...
©somewhere in net ltd.