নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি, ততবারই পুরুষ হয়ে উঠি। তুই শালা একটা ‌‘পুরুষ’ শব্দটি সম্ভবত পৃথিবীর নিকৃষ্ট একটা গালিতে রূপান্তরিত হবে। পুরুষ হিসেবে গর্ব করার কিছু নেই, আমি লজ্জিত, সত্যি লজ্জিত যে আজও মানুষ হতে পারিনি।

সীমান্ত প্রধান

যা কিছু সত্য, তাই সুন্দর

সীমান্ত প্রধান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘরের‬ শত্রু বিভীষণ

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৯

অনেকেই বলে, ‌‘ধর্ম নারী'কে খুব সম্মানিত করেছে'! কিন্তু আমি চেষ্টা করেও সেই সম্মানের জায়গাটা খুঁজে পেলাম না। খুঁজে পেলাম না শুধু তাই নয়, ধর্ম নারীকে সম্মানিত করেছে, এর স্বপক্ষের দাবীটাও ঠিক বুঝলাম না!

তবে প্রশ্ন শুধু এটুকুই যে, পুরুষতন্ত্র কি ‘নারী’কে কখনো সম্মানিত করেছে বা করতে পারে? যদি তা না পারে, তবে ধর্ম কিভাবে ‘নারী’কে সম্মানিত করল! যেহেতু প্রতিটি ধর্মই তো পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে রচিত। অর্থাৎ পুরুষ কর্তৃক ‘নারী’কে অবদমিত করার সুক্ষ্ম একটা কৌশল হচ্ছে ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থ।

যার ফলে কোনো ধর্ম বলছে ‘নারী’ গণিমতের মাল! কোনো ধর্ম বলছে ‘নারী’ মলের মত! আবার কোনো ধর্ম ‘নারী’কে অশুচি দাবী করে মন্দিরেও প্রবেশ নিষিদ্ধ করছে! এ কি তবে সম্মান? আবার আল্লামা শফীর মতো ধর্মের প্রতিপালকরা বলছে, ‘নারী’ তেঁতুল!

‘নারী’ মানেই যৌনসম্ভোগের বস্তু আর সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র— ধর্ম কি এর থেকে বেশি কিছু আর ‘নারী’কে ভেবেছে? ‘নারী’ মানেই প্রতিটি ধর্মের কাছে পুরুষের সেবাদাসী। এর বেশি কোনো ধর্ম কি ‘নারী’কে সম্মান দিয়েছে? হ্যাঁ আর সম্মান দিয়েছে, তা হলো চার দেয়ালের একটা ঘর আর কড়াই খুন্তির সংসার। যেখানে বসে ‘নারী’ আলু-পটলের হিসেব কষবে। আর তেল, নুন, ডাল, চাল কম খরচ করে পতি দেবতার উন্নয়ন করা যায় কিভাবে? সে ব্যবস্থা করবে।

অপ্রিয় হলেও সত্য যে, প্রতিটি ধর্মই পুরুষতন্ত্রের ধারক ও বাহক। তাই ধর্মগ্রন্থ সবই রচিত হয়েছে ‘নারী’ অধিকার খর্ব করে। ‘নারী’কে হেয় প্রতিপন্ন আর অসম্মানিত করতেই তৈরি করা হয়েছে নানা অবমাননাকর বিশেষণ। যা কেবল মাত্র নারীর জন্যই প্রযোজ্য। শুধু তাই নয়, পুরুষ-তন্ত্র নারীকে ‘মানুষ’ বলে স্বীকার করতেও চায় না। যা বিভিন্ন শব্দকোষে সে বিষটি স্পষ্ট। যেখান ‘মানুষ’ একমাত্র পুরুষকেই দাবী করা হয়েছে, ‘নারী’কে নয়।

বিভিন্ন শব্দ কোষগুলোতে একজন ‘নারী’র সমার্থক হিসেবে আমরা পেয়ে থাকি — স্ত্রী, মেয়ে, মেয়ে-লোক, মহিলা, রমণী, ললনা, অবলা, মানবী, অর্ধাঙ্গী, অঙ্গনা, নিতম্বিনী ইত্যাদি। আর পুরুষের ক্ষেত্রে পাই— পুরুষ মানুষ, ছেলে, ছেলেমানুষ, মরদ, মানুষ, মানব, মনুষ্য, নর, আদম ইত্যাদি। এর অর্থ হচ্ছে ‘নারী’ ‘মানুষ’ নয়, একমাত্র পুরুষই ‘মানুষ’! তাহলে একজন ‘নারী’র অবস্থান এই সমাজে কোথায়?

শিশু অথবা প্রতিবন্ধীর চেয়ে একজন ‘নারী’কে বেশি কিছুই ভাবে না পুরুষতান্ত্রিক এ সমাজ। যার প্রমাণ এখনও পেয়ে থাকি যাত্রীবাহী বাসগুলোতে। যেমন এসব বাসগুলোতে ‘নারী’দের জন্য ৮/৯টি আসন বরাদ্দ রাখা হয়। যার উপরে লেখা থাকে, ‘নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য’! এর মানে একজন ‘নারী’ আর প্রতিবন্ধী সমান!

অনেক সময় আমরা দেখি, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ‘নারী’ কারণে বা অকারণে বাইরে গেলেও, তাকে হয় স্বামী, ভাই অথবা পিতাকে সঙ্গে নিতে হয়। তা না হলেও ছোট হোক বা বড় হোক একটি ছেলে হলেও চলবে! অর্থাৎ একজন না একজন পুরুষ তার সঙ্গে থাকতেই হবে! এ কি একজন ‘নারী’র জন্য খুব সম্মানের! খুব গর্বের?

কিছু কিছু ‘নারী’র জন্য এ খুব সম্মানের ও গৌরবেরও। তারা অনেকেই যৌনসম্ভোগের বস্তু হতেই আগ্রহী। পতিদেবতার যৌন-দাসী ও সেবাদাসী হতেই আগ্রহী। যার ফলে এরাও অন্য ‘নারী’ যখন পুরুষতন্ত্রের নাগ পাশ কেটে বেরিয়ে আসতে চায়, তখন পুরুষের পাশাপাশি ‘নারী’কে কুলটা, নষ্টা, বেশ্যাসহ নানা উপাধিতে ভূষিত করতেও কার্পণ্য করে না।

শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও পুত্রবধূ দ্বারা অনেক শাশুড়ি নির্যাতিত হচ্ছে। আবার অনেক পুত্রবধূ নির্যাতিত হচ্ছে শাশুড়ি, ননদ দ্বারাও। এর অর্থ হচ্ছে, ‘নারী’ মুক্তির অন্তরায় ‘নারী’ই জড়িয়ে আছে আষ্টেপৃষ্ঠে। এ জন্যই তসলিমা নাসরিন বলেছিলেন, ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭

৮৩১আবীর১৯৮৩ বলেছেন: যার ফলে কোনো ধর্ম বলছে ‘নারী’ গণিমতের মাল!
গনিমতের মাল যে অর্থে নারীকে বলা হয়েছে সে একই অর্থে পুরুষকেও বলা হয়েছে । এতএব এখানে অসম্মান করা হয়নি ।

এর মানে একজন ‘নারী’ আর প্রতিবন্ধী সমান!
আসলে আপনার মাথায় বোধ হয় শুধু নেগেটিভ চিন্তা । বাসে নারীর জন্য আলাদা সিট রাখা হয়েছে তার অসুবিধার কথা বিবেচনা করে। আপনি চাইলে আপনার স্ত্রী কন্যাকে পুরুষের পাশে বসিয়ে দিন । দেখবেন তারাই বলবে তাদের জন্য আলাদা সিট হলে ভাল হত।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

গোধুলী রঙ বলেছেন: সমাজে প্রচলিত হাজারো কুনিয়ম আপনি ধর্মের দোহাই দিয়ে চালাই দিলেন। আশা করি একটু সুন্দর মন নিয়ে পজিটিভলি চিন্তা করবেন, পারলে কোরান পড়ে নারীর অবস্থান টা বুঝবেন। যে বিষয়টা নিয়ে আপনার গভীর জ্ঞ্যান নেই সেটা নিয়ে আপনার মতামত কতখানি গ্রহনযোগ্য আপনি নিজে একটু ভেবে দেখেবেন। আপনার ইসলামের জ্ঞ্যানের সাথে স্ট্রিং থিওরির জ্ঞ্যানের তুলনা করবেন, যদি দেখেন সমান তবে একইভাবে স্ট্রিং থিওরির লিমিটেশন গুলো নিয়ে একটা ব্লগ লিখেন দেখি কতটুকু কি পারেন।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমার মনে হয়, যতদিন নারীর সমার্থক হিসেবে 'অবলা' টার্মটিকে বাতিল না হবে ততদিন নারীর অধিকার কেউই প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।

নারীদের সামনে অধিকারের প্রশ্ন তুলে তাদেরকে বিভ্রান্ত করছে এক শ্রেনীর মানুষ। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব এজেন্ডা আছে এবং এই তালিকায় আছে বুদ্ধিজীবি, মুক্তমনা, ধর্মব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারন লম্পট পর্যন্ত।

সমাজ থেকে 'নারী অধিকার' এর মত একটি বিতর্কিত ধারা বিলুপ্ত করতে হবে। কারন একটি আধুনিক সমাজে কখনই কারো অধিকার নিয়ে কাউকে চিন্তা করতে হয় না। এটা স্বপ্রতিষ্ঠিত একটি ব্যাপার। যেহেতু আপনি আলোচনাটি সুত্রপাত করেছেন, এই দেশীয় বিদ্যমান সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে তাই আপনার কাছে প্রশ্ন, অনুগ্রহ করে কি বলতে পারেন পৃথিবীর কোন জাতি, সমাজ কিংবা অংশে নারীকে তার অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয় নি?

স্রষ্টার কথা বাদ ই দেন, বিবর্তনবাদের তত্ব অনুসারেই না হয় বলেন, যে নারী পুরুষের সৃষ্টিতে প্রাকৃতিকভাবে যে বিভাজন আছে, বৈষম্য আছে, শারীরিক শক্তির তারতম্য আছে, তার রহস্য কি?

আমি কম জানা মানুষ। আমার কাছে এই রহস্যের সঠিক জবাব জানা নেই। তবে মনে হয়, এই শক্তির তারতম্যের বিষয়টি মানুষের জীনে প্রবেশ করেছে হাজার হাজার বছর ধরে। যা পুরুষকে ভাবতে শিখিয়েছে তারা তুলনামুলক এগিয়ে আছে। এই জীনগত ত্রুটি আপনি কিভাবে পরিবর্তন করবেন?

যাইহোক, এমন হাজারো প্রশ্ন আছে, সময় স্বল্পতায় আপাতত বলতে পারছি না। তবে আমার মনে হয়, মুক্তচিন্তা ও দর্শনের নামে নারীর পন্য হয়ে উঠা যেমন কাম্য নয় তেমনি ধর্মীয় অজ্ঞতায় নারীকে বন্দী করারও কোন সুযোগ নেই। আমাদের নারীরা হয়ে উঠুক জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সম্মানের প্রতীক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.