নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি, ততবারই পুরুষ হয়ে উঠি। তুই শালা একটা ‌‘পুরুষ’ শব্দটি সম্ভবত পৃথিবীর নিকৃষ্ট একটা গালিতে রূপান্তরিত হবে। পুরুষ হিসেবে গর্ব করার কিছু নেই, আমি লজ্জিত, সত্যি লজ্জিত যে আজও মানুষ হতে পারিনি।

সীমান্ত প্রধান

যা কিছু সত্য, তাই সুন্দর

সীমান্ত প্রধান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তনুর সাথে কথোপকথন এবং একটি চিঠি

২৫ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০৪


কে! কে ওখানে?
আমি তনু
তনু! কোন তনু! কি চাই?

অনেকটা রাত পর্যন্ত তনুর সাথে আমার কথা হলো। আমি তাকে তনু নয়, সোহাগি নামেই ডেকেছি। সোহাগি! কি মায়া এই নামটাতে। ভোর হতেই মেয়েটি চলে যায়। রেখে যায় একরাশ আক্ষেপ। এক গুচ্ছ ক্ষোভ। আর অজস্র অভিমান।

সোহাগি, ক্ষমা করিস রে। আমি লজ্জিত, সত্যি খুব লজ্জিত! তোর মতো নারীর গর্ভে আমার মত পুরুষের জন্ম। আবার সেই আমিই ধর্ষক হয়ে তোর মত নারীর যৌনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করি কাম-লালসা চরিতার্থ করার জন্য। আমি পুরুষ! ছিঃ! আমি খুব লজ্জিত রে, পুরুষ হয়ে জন্মাবার জন্য। পুরুষ হিসেবে পরিচয় দেয়াটা সত্যি খুব লজ্জাজনক।

আমাকে ক্ষমা করিস। আমি এখনও তোর বিচার দাবী করিনি। কার কাছে বিচার চা’বো? দিনের পর দিন এমন ঘটনা এই জনপদে ঘটেই চলেছে! ক’টার বিচার হয়, হয়েছে? এখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতির চর্চা চলছে, বহুকাল ধরে। যার জন্য তোর এই পরিণতি বরণ করতে হলো।

তুই তো জানিস, সাধারণ মানুষ এ দেশে বিচার পায় না। যেমন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। তাদের সন্তান মেঘ কি পেয়েছে তার বাবা-মা হত্যার বিচার? কারা বিচার করে জানিস? যারা উঁচুতলায় থাকে। তার তোর আর্তনাদ শোনে না। তাদের কানে মেঘের কান্না পৌঁছায় না। কারণ তারা জানে না নির্মমতা কি? কেন না, তারা কখনো নির্যাতনের শিকার হয়নি।

নির্যাতনের শিকার একমাত্র তোরাই হবি। কারণ তোরা সার্ভিস গাড়িতে চড়িস। পায়ে হেঁটে চলিস। আর যারা অট্টালিকায় থাকে, প্রাইভেট কারে করে চড়ে! তাদের এই পরিস্থিতি বরণ করতে হয় না। বাস্তবতা কি? সেই নির্মমতা তারা জানেও না। তাই এ দেশে বিচার হয় না। ফলে বিচার চাই! বিচার চাই বলে চিৎকার করে কি লাভ! আমি তোর বিচার চাই না।

শুধু বলি, তোর এ ঘটনা থেকে অন্য মেয়েগুলোও শিক্ষা নিক। সে বুঝুক যে, ‘আমি নারী ঘর থেকে বের হলেই ধর্ষিত হতে পারি। কারণ, আমি আমার শরীরে একটা যোনি, দুইটা স্তন বহন করি। আমি নারী। পুরুষ আমাকে ধর্ষণ করতেই পারে’। তাই তারা নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। তারা সাহস সঞ্চার করুক ভেতরে। তারা যেন সক্ষম হয় ধর্ষণ করতে আসা পুরুষের উরুর মাঝে থাকা ছয় ইঞ্চির লিঙ্গটাকে কাটতে।

তুই তো বলিস আর কেউ না হোক, ঈশ্বর ঠিকই ধর্ষক ও হায়েনাদের বিচার করবে! আমি বলি, কোথায় থাকে তোর ঈশ্বর? সেদিন কোথায় ছিল তোর ঈশ্বর, যেদিন শুয়োরের বাচ্চারা তোর যৌনাঙ্গ রক্তাত্ব করল? কোথায় ছিলো তোর ঈশ্বর, যেদিন ধর্ষণ পরবর্তীতে জানোয়ারগুলো তোকে খুন করলো? কোথায় আর থাকবে! ঈশ্বর বসে বসে সেদিন তোকে ধর্ষণ করার দৃশ্য দেখছিলো কামাতুর দৃষ্টিতে আর সে নিজেও তা উপভোগ করছিল। কে জানে, হয় তো সেদিন এ দৃশ্য দেখছিলো আর ঈশ্বর নিজেও হস্ত-মৈথুন করছিলো!

তুই হয় তো জানিস না। ঈশ্বর-টিশ্বর বলতে কেউ নেই। কিচ্ছু নেই। এই পৃথিবীর ঈশ্বর একমাত্র পুরুষ। তাই তো পুরুষ ধর্ষক। ঈশ্বর ধর্ষক। আর তোরা নারীরা ধর্ষিতা হোস। তাই বলি এখনও সময় আছে, তোর থেকে শিক্ষা নিয়ে জেগে উঠুক নারী। এ লড়াই তার একার। তাকেই লড়তে হবে আগামীতে ধর্ষণ-মুক্ত একটা সমাজ গড়তে।

তুই ভালো থাকিস সোহাগি। পারিস তো আমায় ক্ষমা করিস। আমি তোর ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাই না। চাইব না। কেন না, তোকে আর প্রতি মুহূর্তে ধর্ষিত হতে দিতে চাই না। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে, বিচার চেয়েও লাভ নেই। এখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতির চর্চা চলছে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৩

বিজন রয় বলেছেন: এখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতির চর্চা চলছে।

রাইট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.