![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আব্বাস কিয়ারোস্তমি(২২ জুন ১৯৪০-৪ জুলাই ২০১৬) কে যারা চলচিত্রের একটু আধটু খোজ খবর রাখেন তারা সকলেই জানেন তিনি কি ছিলেন।তাকে নিয়ে নতুন করে বলার কারন আমি দেখি না।গত ৪ জুলাই আমাদের এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন কিয়ারোস্তমি আর রেখে গেলেন বিশ্ব চলচিত্র ও চলচিত্র প্রেমিকদের নিকট একবুক হতাশা,দুঃখ,কস্ট আর নিয়ে গেলেন কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
আসুন আজকে আমরা তাঁর ৫ টা অসাধারন সৃষ্টি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করি।
১. ক্লোজ-আপ(Close-Up)
চলচিত্র না বলে এটাকে একটা ডকু ফিকশন বলা যায়,কিয়ারোস্তমির অন্যান্য চলচিত্রগুলির মতনই।
প্রথমে বলে রাখি এই চলচিত্রে কোন পেশাদার অভিনেতা অভিনয় করেন নাই যা ছিল সব বাস্তব।এমনকি এই চলচিত্রের কোন গল্পও ছিল না।টোটাল ঘটনাকে জাস্ট ভিডিও করেছেন সামান্য কিছু অংশ বাদে।
ঘটনাটা একজন দরিদ্র বেকার যুবককে নিয়ে যে কিনা একটা ইরানিয়ান চলচিত্র প্রেমিক পরিবারকে বোঁকা বানায় এবং পরে ধরা পরে।ওই যুবক নিজেকে আরেক বিখ্যাত ইরানিয়ান পরিচালক ও লেখক মহসেন মাকমালগাফ পরিচয়ে সেই পরিবারের সাথে যুক্ত হন এবং ধরা পরেন পুলিশের হাতে।স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তার বিচার হয় এবং ওই পরিবার তাকে ক্ষমা করে দেওয়ায় সে মুক্তি পায়।মুক্তির পরে মহসেন মাকমালগাফ স্বয়ং তাকে নিয়ে ওই পরিবারের নিকট যান এবং সেই পরিবারের কর্তা ও কর্ত্রীর নিকট ক্ষমা চায়।
চলচিত্রটা পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ৫০ চলচিত্রে স্থান পায় ২০১২ সালে।
২ দ্য হোয়াইট বেলুন(The White Ballon)
না এই চলচিত্রটা আব্বাস কিয়ারোস্তমি নির্মান করেন নাই,করেছেন আরেক বিখ্যাত ফীল্মমেকার জাফর পানাহি যিনি ছিলেন কিয়ারোস্তমির ছাত্র,কিয়ারোস্তমি তাঁর ছাত্র জাফর পানাহির জন্যে এই চলচিত্রের চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন।
চলচিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে।
নতুন বছরে একটা মাছ ধরা বা কেনা ইরানের একটি ঐতিহ্য।সেই ঐতিহ্যের ধারা মোতাবেক অনেকেই মাছ ধরছে বা কিনছে,সেই সুবাদে ৭ বছরের মেয়ে রাজিয়ে দোকানে অনেক সুন্দর গোল্ডফিস দেখে বায়না ধরেছে সে এটা কিনবে।কিন্তু তার মা রাজি না কারন তাদের পুকুরে মাছ আছে।কিন্তু রাজিয়ের জেদের কাছে ওর মা হেরে যায় এবং ওকে ৫০০ টোমানস দেয় মাছ কিনতে।ইরানের ট্রেন্ড অনুযায়ী নতুন বছর উপলক্ষে ৭ দিনের জন্য অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।তাই আজকের ভিতরেই মাছ কিনতে হবে রাজিয়েকে।কিন্তু রাজিয়ে কি মাছ কিনতে পারবে?জানতে চাইলে দেখে ফেলুন এই মাস্টারপিসটা।
৩. টেস্ট অব চেরি(Taste of cherry)
চলচিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে।
গল্পটি শুরু হয় একজন মধ্যবয়স্ক ব্যাক্তিকে নিয়ে যিনি আত্বহত্যা করতে চান এবং এমন একজনকে খুজছেন যে কিনা তাকে একটি চেরিফল গাছের নিচে সমাহিত করবেন,এরজন্য তিনি অনেক মোটা অংকের অর্থ প্রদান করবেন।কিন্তু তিনি বিভিন্ন পেশার বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত হলেও কেউই তার কথায় রাজী হলেন না।এভাবে এক সময় তিনি একজনকে পেয়ে যান যিনি তাকে কথা দেন যে তাকে তিনি সমাহিত করবেন চেরি ফল গাছের নিচে।কারন তার অনেক অর্থের দরকার সন্তানের চিকিৎসার জন্য।
দেখে ফেলতে পারেন পাম ডি অর প্রাপ্ত এই চলচিত্রটি।
৪ দ্য উইন্ড উইল ক্যারি আস(The Wind Will Carry Us)
১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় এই অসাধারন সৃষ্টি।
গল্পটি গড়ে উঠে বেহজাদ নামক একজন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে,যিনি তার একজন মুমুর্ষ আত্বীয়কে দেখতে শহর থেকে গ্রামে আসেন,কিন্তু তিনি গ্রামের মানুষের সাথে মিশতে পারছিলেন না।কিভাবে বেহজাদ তার ব্যবহার,অ্যাটিচ্যুড পরিবর্তন করবেন দেখতে দেখে ফেলুন চলচিত্রটি।
৫ সার্টিফাইড কপি(Certified Copy)
ফ্রেঞ্চ এই চলচিত্রটি মুক্তি পায় ২০১০ সালে যার পরিচালক ছিলেন আব্বাস কিয়ারোস্তমি।
গল্পটি গড়ে ওঠে একজন ব্রিটিশ লেখক মিলারের নতুন বই সার্টিফাইড কপি উপর।যেই বইটা সম্বন্ধে তিনি একটি বক্তব্য দিতে এসেছেন।সেখানে পরিচয় হয় একজন ফ্রেঞ্চ এন্টিক পন্যের ডিলারের সাথে,যিনি সেই অনুষ্ঠানে তার সন্তানের সাথে উপস্থিত হন এবং মিলারের বইটার কয়েকটা কপি কিনেন,এবং মিলারকে তার ফোন নাম্বার প্রদান করে চলে যান।
পরবর্তিতে মিলার সেই ভদ্র মহিলার সাথে তার দোকানে দেখা করেন,এবং সেই ভদ্রমহিলার সাথে ঘুরতে বেরহন এবং সেই বইয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে তর্ক করতে থাকেন।
দেখে নিতে পারেন এই চলচিত্রটি।
©somewhere in net ltd.