![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ অনেক দিন পর লিখতে ইচ্ছা করছে তাই লিখতে বসলাম। হঠাৎ করে সেদিন আমার এক স্কুল এর বান্ধবীর সাথে রাস্তায় দেখা হল। ওর নাম দিতি। আমরা এক সাথে প্রাইমারী এবং হাই স্কুল এ পড়েছি। আমরা যখন ক্লাস সিক্স এ তখন আমার ভাইয়া একদিন তার বেস্ট ফ্রেন্ড রায়হান ভাইয়াকে নিয়ে আমাদের বাসায় এলো এবং আমার সাথে তারা বেশ মিষ্টি সুরে কথা বলতে লাগলো। এক সময় রায়হান ভাইয়া আমাকে বলল সে নাকি দিতি কে খুব ভালবাসে। আমি কথাটা শুনে খুব ই অবাক হলাম কারন দিতি রায়হান ভাইয়াদের পাশের বাসায় থাকতো, আর তারা চাইলেই নিজেদের ছাদেই তাদের প্রেম-ভালবাসা চালিয়ে যেতে পারে তা এখানে আমার কাজ টা কি আমি বুঝতে পারলাম না। যেহেতু সেটা ছিল ২০০১ এর দিকে তো সেই সময় মোবাইল সবার হাতে হাতে ছিল না তখন এক মাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি, তাও খুব কাছের মানুষ ছাড়া, এ কাজে কাউকে বিশ্বাস করা খুব কঠিন ছিল। যাই হোক আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই দিতি কে কথাটা জানালাম আর নিজেও জানতে পারলাম যে তারা আরও আগে থেকেই এই সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আশেপাশের লোকজন ইদানিং তাদের কিছুটা সন্ধেও করায় তারা আর আগের মতো রোজ দেখা আর কথা বলতে পারে না। যেহেতু আমার বান্ধবী আর ভাইয়ার বন্ধু দুজনেই দুজনকে ভালবাসে সেহেতু আমার ক্ষুদ্র মন তাদের সাহায্য করতে সায় দিল। আমি তাদের ডাক পিওন হয়ে গেলাম, দুজনের বার্তা দুজনের কাছে পৌঁছে দেয়ায় ছিল আমার কাজ। এভাবে তাদের প্রেম চলতে থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে আমি ছাড়াও যে যোগাযোগ হতো তা আমি জানতাম না। আর দিতি যে সবাইকে তার প্রেম কাহিনী বলে বেড়াতো এটাও আমি জানতাম না। দিতি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল না। আমি শুধু আমার ভাইয়ার কথা রাখতে ওর বন্ধু কে সাহায্য করতে রাজি হয়েছিলাম। আর এই প্রেম কাহিনীর কথা আমি আর কাউকে জানাই নি। এক দিন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড লিজা আমাকে চুপিচুপি বলে জানিস দিতি না প্রেম করে। আমি তো শুনে হা। আমি ওকে বলি কে বলছে তোকে এটা, লিজা বলে সারা স্কুল জানে আর তুই জানিস না? আমি ওকে কিছু বলি না, কারন এখন যদি আমি ওকে বলি এই সম্পর্কের কথা আমি আরও আগে থেকে জানি তো লিজা খুব কষ্ট পাবে কারন আমি ওকে জানাই নি। তাই আমি কোন কথা না বলে ওর কাছে সব শুনলাম। দিতি সবার সাথে বেশ রসালো ভাবে তার প্রেমের গল্প বানিয়ে বলেছে, কিন্তু সে কোথাও আমার কথা বলে নি, এটা একটা আমার জন্য ভাল খবর ছিল। কিন্তু কাহিনী সেটা না, আসলে কাহিনী শুরু হল ক্লাস সেভেন এ উঠার পর। দিতি এমনিতে তেমন ভাল ছাত্রী ছিল না কিন্তু পরীক্ষায় এর ওর দেখে বেশ ভাল রেজাল্ট করে ফেলত। দুঃখ হল এবার তার রেজাল্ট ভাল হল না, কারন পরীক্ষার আগের রাতে তার বাবা তাকে পড়াতে গিয়ে তার বইয়ের ভিতরে রায়হান ভাইয়ার লেখা চিঠি পেল এর সেই চিঠিতে আমার নাম টাও উল্লেখ ছিল। পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার পরের দিন দিতি আমাদের বাসায় এলো আর আমাকে সাথে করে ওর বাসায় নিয়ে গেল আমি কিছু বোঝার আগেই। দিতির বাবা আমার খুব করে ক্লাস নিল আর গলা ফাটিয়ে বলল আমি যদি কোন ভাবে দিতিকে আর এই কাজে সাহায্য করি তাহলে তিনি আমার বাবা মাকে বলে দিবে। কিন্তু আমার বাবা মাকে বলে দিবে কথাটা শুনে আমি যতো না কষ্ট পেলাম এর চেয়ে বেশী কষ্ট পেলাম যখন আঙ্কেল বলল দিতি কে নাকি আমি রায়হান ভাইয়ার সাথে প্রেম করতে বাধ্য করেছি। আমি আর কোন কথা বলতে পারি নি কাঁদতে কাঁদতে বাসায় আসলাম আর ভাইয়াকে জড়িয়ে কান্না শুরু করলাম। আমি ভাইয়াকে বললাম আর কখনো আমি দিতির সাথে কথা বলব না। ভাইয়া আমাকে বুঝাল আর বলল এই বেপারটা ভুলে যেতে। তার এস এস সি পরীক্ষা শুরু হবে তাই সে খুব ব্যাস্ত, রায়হান ভাইয়াও আসতো বাসায় কিন্তু এটা নিয়ে তেমন কথা বলতো না। ওদের পরীক্ষা শেষ হল। একদিন রায়হান ভাইয়া আমাদের বাসায় এলো তার মুখচোখ খুব কালো হয়ে আছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে। সে আমাকে বলল তার নাকি সর্বনাশ হয়ে গেছে। অবশেষে জানতে পারলাম দিতির নাকি তার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে সেই ছোট বেলা থেকে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। কিন্তু সে সব জানা শর্তেও রায়হান ভাইয়ার সাথে সম্পর্ক করেছে। রায়হান ভাইয়া আমাকে খুব করে রিকোয়েস্ট করলো আমি যেন আর একবার তার হেল্প করি। আমি দিতির সাথে ওই ঘটনার পর আর কথা বলতাম না কিন্তু রায়হান ভাইয়ার জন্য আমি আবারো ওর সাথে কথা বললাম। দিতি আমার কাছে মাফ চাইলো আর বলল ওই দিন সে খুব ভয় পেয়ে গেয়েছিল তাই ওর বাবার কাছে মিত্থা বলেছে। আমি রায়হান ভাইয়ার কথা ওকে বললাম ও আমাকে খুব ভাল করে বুঝিয়ে বলল সে মরে গেলেও ওর ফুফাতো ভাইকে বিয়ে করবে না দরকার হলে ও রায়হান ভাইয়ার সাথে পালিয়ে যাবে। আমি এই কথা রায়হান ভাইয়াকে বললাম। কিন্তু কিভাবে যেন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড লিজা এটা জানতে পারলো আমি দিতিকে হেল্প করি প্রেম করতে সে যথারীতি আমাকে ভুল বুঝল আর আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিল। আমি অনেক চেষ্টা করে ওকে বুঝালাম তারপর আমরা দুজনে দিতিকে সাহায্য করতে লাগলাম। আমাদের এস এস সি পরীক্ষা শেষ হল, রেজাল্টও হল । কিন্তু আমি এক কলেজে ভর্তি হলাম দিতি আর লিজা অন্য কলেজে। আমাদের দেখা হওয়া কমে গেল। হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম দিতির বিয়ে হয়ে গেছে। লিজার বাসায় গেলাম আর জানলাম সত্যি ঘটনা। আমরা দুজনে দিতিদের বাসায় গেলাম কিন্তু দিতির আম্মু আমাদের দিতির সাথে দেখা করতে দিল না। রায়হান ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করলাম রায়হান ভাইয়া বলল দিতি নাকি তাকে জানাইছে কিন্তু রায়হান ভাইয়া দিতির সাথে যোগাযোগ করার আগেই তার বাবা তাকে মেরে ওর ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছে। দিতির বয়স তখনো ১৮ হয় নি তাই লোক জানাজানি না হওয়ার ভয়ে দিতিকে কারো সাথে দেখা করতে দিত না। ২০০৬ এ দিতির সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল ওর বিয়ের ৬ মাস পরে, তখন ও খুব চুপচাপ আর এক দম অচেনা একটা মেয়ে মনে হয়েছিলো। আমার সাথে তো কোন কথা বলে নি শুধু লিজার দুই একটা কথার উত্তর দিয়েছিল। আজ ৬ বছর পরে ওর সাথে দেখা হল। অনেক পুরানো কথা মনে পরছিল। কিন্তু ওর পাশে ওর ৩ বছরের মেয়ে ওর হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। মেয়েটাকে দেখে আর কিছু বলতে ইচ্ছা হয় নি কারন কেন জানি মনে হল ও আজ সব মেনে নিয়ে তার ছোট্ট সংসারে ভালই আছে।
২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৪৬
মাহবু১৫৪ বলেছেন: হ ম ম । বুঝলাম
আপনাকে চিঠি বাহক হিসেবে অনেকটা ব্যবহার করা হয়ছিল। আপনি হয়তো না বুঝেই তাদেরকে হেল্প করেছিলেন।
যেই ছবিটা দিয়েছেন সেটা খুব পরিচিত একটা ছবি। কোথায় পেলেন এটা?
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৩
সিরাজুন নাজিয়া নাবিলা বলেছেন: মাহবু১৫৪ ভাইয়া, ছবিটা আমার এক ফেবু ফেন্ডের পেজ থেকে নেয়া।
৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৪৩
তাসজিদ বলেছেন: আপনার বান্ধবি খুব ছোট বয়সে প্রেম করা শুরু করেছিল, যা পরবর্তীতে তার পড়াশোনায় বেঘাত ঘতায়।
Love in immature stage is dangerous.
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৯
সিরাজুন নাজিয়া নাবিলা বলেছেন: আমার বান্ধবী তখন কতখানি বুঝতো আমি জানি না কিন্তু এখন সে অনেক বুঝে আর বাস্তবটা টাও মেনে নিতে শিখেছে ... ওর জন্য দয়া করবেন যেন আর কোন ভুল না হয়ে যায় ।
৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৪৫
রোড সাইড হিরো বলেছেন: অনেক পুরানো কথা মনে পরছিল। কিন্তু ওর পাশে ওর ৩ বছরের মেয়ে ওর হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। মেয়েটাকে দেখে আর কিছু বলতে ইচ্ছা হয় নি কারন কেন জানি মনে হল ও আজ সব মেনে নিয়ে তার ছোট্ট সংসারে ভালই আছে।
খুবই বুদ্ধিমানের মত কাজ করেছেন। তা প্রেমপত্রবাহক হিসেবে ভালোই অভিগ্গতা করেছেন
।
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২০
সিরাজুন নাজিয়া নাবিলা বলেছেন: :!> হয়তবা :#>
৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৭
সাদাসিধা মানুষ বলেছেন: খুব দ্রুত ১টা প্রেম করে আপনাকে প্রেমপত্রবাহক হিসেবে নিয়োগ দেব! হাজার হোক এক্সপেরিয়েনস এর ১টা ভেলু আছে তো
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৯
সিরাজুন নাজিয়া নাবিলা বলেছেন: ওকে
৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫১
মাহবু১৫৪ বলেছেন: হ ম ম । আপনার যেই ফ্রেন্ড এর পেইজ থেকে নিয়েছেন সেই পেইজ আমিও দেখেছি। তাকে চিনি আমি।
৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৮
সিরাজুন নাজিয়া নাবিলা বলেছেন: ও
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৪৫
রাইসুল সাগর বলেছেন: হুম। :-<