নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাজামুস জুলকারনাইন রতন

এস েজ রতন

একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।

এস েজ রতন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লু হোয়েল : মনোসাইবার সমস্যা

১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২


কাব্য হঠাৎ করেই গভীর রাত্রে বাবাকে জড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলো। বাবা, বাবা, আমাকে ব্লু হোয়েল ধরতে আসছে। আমার পা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সে আমাকে মেরে ফেলবে! বাবা যতই তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন যে, ব্লু হোয়েল বাস্তবে কি করে আসবে? ওটা তো একটা অনলাইন গেইম। তাছাড়া আমি তোমার কাছে আছি। ভয় কি? বাদ দাও তো? না, কাব্যকে মানানো যায়নি। গভীর রাত থেকে ভোর না হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে গুটিসুটি হয়ে জড়িয়ে শুয়েছিল।। এটা কোন বানানো ঘটনা নয়। একদম সাম্প্রতিক, লেখকের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা।

ব্লু হোয়েল, অনলাইনভিত্তিক এই গেইমটি স্মার্টফোনে অটোমেটিক্যালি ইনস্টল হয়ে যাওয়ার ভয় কি রয়েছে? হয়তো। কারণ, ইন্টারনেট অ্যাকটিভেট করার সাথে সাথেই কিছু আপডেটিং প্রক্রিয়া স্মার্টফোন অটোমেটিক্যালিই নিয়ে থাকে। সেটিংস্ নিজের প্রয়োজনমাফিক সব ঠিকঠাক করে নেট চালানো ইউজারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। সেলফোনের নিজস্ব ও বিভিন্ন অফার্ড অ্যাপের ক্ষেত্রেও একই কথা। আমাদের মেইল, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ব্লগ, নিউজসাইটস্ কোনকিছুই কি নিজেদের পছন্দে সেটিংস্ করে ব্যবহার করি? তা না করার কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে অটোআপডেট হতে থাকে অ্যাপস্ গুলো।

কোন ম্যাসেজ না দিয়েই অটোতে আপডেট হওয়া অ্যাপগুলোর মধ্যে ব্লু হোয়েল যে ইনস্টল হচ্ছে না আপনার অগোচরে তা-ই বা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে? কাব্য তাই জানাচ্ছিল তার বাবাকে। সে নিজেও জানে না, কি করে যেন তার সেলফোনে বিভিন্ন অপরিচিত অ্যাপস্ ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে। তাই সে তার ট্যাবটি তার বাবার কাছে জমা দিয়ে দিয়েছে। বলেছে- বাবা আমি আর ট্যাব ধরবো না, পরিচিত গেইমগুলোও খেলবো না। এই বিষয়গুলোতে এখনই সচেতন হবার মোক্ষম সময় এসেছে। স্মার্টফোন যেকারণে তৈরী হয়েছে, সেই প্রয়োজনীয়তাগুলো কি আমরা যারা তা ব্যবহার করি, তাদের খুব বেশি প্রয়োজন?

ফোন ব্যবহারকারীগণ কি এই ফোন ও এর অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন? না কি শুধু স্ট্যাটাস আর শোভা বর্ধনের জন্য হাতে বা কাছে নিয়ে রাখা, ব্যবহার করা? পৃথিবীর প্রযুক্তি খুব দ্রুত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এর সাথে তাল মেলাতে হলে নিজেকেও বা যারা যা ব্যবহার করছেন সে সম্পর্কে যথেষ্ট জানাশোনা থাকতে হবে। এর ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, হালনাগাদকরণ, ক্ষতিকর দিক –ইত্যাদি জানতে হবে। মারাত্মক গেইম ব্লু হোয়েলের রয়েছে প্রতিটি ধাপে আকর্ষণ করার মতো উপাদান। রয়েছে সম্মোহনী শক্তি, মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার মন্ত্র।

যে সময়ে এসে আপনার মানসিক স্থিরতা ও ধীরতা আসবে তার আগেই যদি এই সমস্ত গেইম আপনার বা আপনার সন্তানের গোচরে আসে, তবে সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণে মরিয়া হয়ে উঠতেই পারে। পাগলেও নাকি নিজের বোঝটা বোঝে। তাই যা কিছুই করেন না কেন, নিজের বোঝটা ভালো করেই বোঝা উচিৎ। জীবনের চেয়ে বড় কোন সম্পদ কি পৃথিবীতে আছে? সবকিছু খোয়া যাবার পরেও সামান্য খড়কুটো আঁকড়ে ধরে গহীন সাগরেও বেঁচে থাকার আকুতি মানুষকে জীবন বাঁচানোর আশায় এগিয়ে নেয়।

ব্লু হোয়েল গেইমের প্রতিটি লেভেলে ব্যবহারকারীকে মন্ত্রমুগ্ধ করে আবিষ্ট করার পাশাপাশি তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ব্যক্তিগত উপাদান কৌশলে সংগ্রহ করে সার্ভারে স্টোরর্ড করা হয়। অনেকগুলো ইউজার রিপ্লাইস্ গণিতের সমাবেশ-বিন্যাস পদ্ধতিতে বের করে অ্যাপস্ এর সিস্টেমে ইনপুট দিয়ে দেয়া হয়। কোন অ্যাডমিনকে ম্যানুয়েলি কোন কম্পিউটারের মাধ্যমে তা কন্ট্রোল করার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে অ্যাডমিনসহ যেকেউ এর খপ্পরে পড়তে পারে। তবে যেহেতু অ্যাডমিনের কাছে সেটিংস্ অপশনটি নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য সে হয়তো নিজেকে এই গেইমের পরিণতি থেকে সরিয়ে আনতে পারে।

হলিউডের বিভিন্ন হরর, হাই-ভোল্টেজ টেকনিক্যাল কম্পিউটিং ও গ্রাফিক্স মুভিগুলোতে দেখা যায়- যে আবিষ্কারক ভয়ঙ্কর জিনিসটি তৈরী করেছেন তিনি নিজেই তার কাছে নির্মমভাবে মারা পড়ছেন। সুতরাং কোন সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। পত্রিকায় এসেছে- ব্লু হোয়েল গেইমটির উদ্ভাবক রাশিয়ার নাগরিক ফিলিপ বুদেকিন নিজেই একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ। মানসিক বিকারগ্রস্ততার কারণে সেটিংস্ ভুলে, সেটিংস্ এর অপশনগুলো থেকে এই গেইমটি যদি সাইবার দুনিয়া থেকে নিঃশেষ করে দেয়া না যায় তবে কি অবস্থা হবে? সুতরাং উদ্ভাবককে জরুরীভিত্তিতে সুস্থ করে তুলে গেইমটিকে চিরদিনের মতো ইঞ্জিনফাইল ডিলিট করা সহ ক্লু-হীন করতে হবে। পৃথিবীতে ডিজিটাল অ্যাক্সিডেন্টের বহু উদাহরণ রয়েছে

বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া, কিশোর কিশোরী, অফুরন্ত অবসরে থাকা, একাকী জীবন যাপন করা মানুষগুলোকে আরো সামাজিক হতে হবে। ডিজিটাল নয়, অ্যানালগ সামাজিকতা বাড়াতে হবে। মানুষের মানবিক দিকগুলোকে অনুভব করতে হবে। যেকোন ডিজিটাল উপাদানগুলোকে মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ ও ব্যবহার করতে হবে। আবারো ফিচারফোন ব্যবহার করা শুরু করতে হবে।
প্রয়োজনমাফিক স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ইক্যুইপমেন্টগুলো ব্যবহার করতে হবে। সময় নির্দিষ্ট করে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যভিত্তিক ব্যবহার বাড়াতে হবে। সময়ের গুরুত্ব বুঝে সৃজনশীল ও মানবিক বিভিন্ন কাজে সময়কে কাজে লাগাতে হবে।
----

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনার লেখার কারণে, খেলাটার প্রতি আমার আগ্রহ বাড়ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.