নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাজামুস জুলকারনাইন রতন

এস েজ রতন

একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।

এস েজ রতন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবর্ ও আল্লাহ’র সিদ্ধান্তে খুশি থাকা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৯

হযরত আইয়ুব (আঃ) এর ঘটনাটি সবারই মনে আছে নিশ্চয়ই।
একাধিক পত্নি ছিল উনার। তখনকার সময়ের সেটাই স্বাভাবিক ছিল। ধন, দৌলত, ফসলী জমি, পুকুর, খামার, বাগান কি না ছিল। প্রাচুর্য্যের কোন অভাবই ছিল না তার। মহান আল্লাহ’র কাছ থেকে আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়ে পাইক-পেয়াদা, লোকবল, সমর্থন, জনপ্রিয়তা সবই ছিল তার। অন্যান্য নবী রাসুলদের মতো আল্লাহ’র প্রিয় এই নবীকেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হতো। তাঁরাও উত্তীর্ণ হতেন খুব সফলভাবে।

হযরত আইয়ুব (আঃ) এর একসময় কঠিন কুষ্ঠ রোগ হলো। কুষ্ঠ হওয়া ফোঁড়াগুলোতে পোকারা আনন্দ করে তাদের খাবার খেতো। কোন একটি পোকাও যদি তাঁর শরীর থেকে পড়ে যেত তখন তিনি তা তুলে আবারো ফোঁড়ার ক্ষতে বসিয়ে দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন আল্লাহ’র সিদ্ধান্তই হচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আল্লাহ’র নবীগণ এভাবেই শত কষ্টকে সুখ মনে করে আল্লাহ’র সিদ্ধান্তকে মাথা পেতে নিয়েছেন।

অসুস্থতার পাশাপাশি হযরত আইয়ুব (আঃ) এর ধীরে ধীরে সবকিছু বিলীন হতে লাগলো। প্রতিপত্তি, সম্মান সব হারালো। বিবি রহীমা ছাড়া সকল বিবিসহ অন্যান্যরাও মুখ ফিরিয়ে চলে গেল। রহীমা অনুভব করতে পেরেছিল- আইয়ুব (আঃ) এর এই পরীক্ষা নিশ্চয়ই একদিন শেষ হবে। গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে গহীন বনে বসবাস করতে লাগলেন হযরত আইয়ুব (আঃ) ও তার সাথে শত কষ্ট সয়েও থেকে যাওয়া বিবি রহীমা।

অনেক কষ্টে আইয়ুব (আঃ) কে সেবা শুশ্রূষা করে যাচ্ছিলেন। সারাদিন অন্যের বাড়িতে কাজ করে তা থেকে পাওয়া উপার্জন দিয়ে খাবার কিনে আনতেন রহীমা। সারারাত ধরে ঘা গুলো পর্যবেক্ষণ করতেন, প্রয়োজনীয় সেবা কার্য করতেন। এতোকিছুর পরও আল্লাহ’র উপাসনা কিন্তু কেউই এক মুহূর্তের জন্য ছাড়েননি।

জিহ্বায় ঐ পোকাগুলো ঘা তৈরী করতে থাকলে আল্লাহ’র দরবারে মোনাজাত করে আরজ করলেন- হে মহান পরওয়ারদেগার, আমার সারা শরীরে তো তুমি ঘা করে দিয়েছই। আমি মেনে নিয়েছি। শুধু মুখটা বাকি ছিল, যা দিয়ে আমি সর্বক্ষণ তোমার নাম জঁপতাম, সেটাতেও তুমি ঘা বানিয়ে দিলে? তাহলে কি করে এই মুখে তোমার পবিত্র নাম জঁপ করবো?

সবাই তো জানতো হযরত আইয়ুব (আঃ) একজন আল্লাহ প্রেমি, পরহেজগার মানুষ ছিলেন, তারপরও খুব কাছের আত্মীয়-স্বজন ও বিবিগণও তো তাকে ফেলে চলে গেল। একজন শুধু হযরত আইয়ুব (আঃ) এর প্রতি চরম ভালবাসা ও আল্লাহ’র প্রতি অগাধ আস্থা রেখে সব মেনে নিয়েছিলেন। তারপর একদিন আল্লাহ’র অশেষ করুনায় সকল কিছু ফিরে পেলেন হযরত আইয়ুব (আঃ)। সেই রূপ, সেই যৌবন, সেই বিবিগণ, সেই প্রভাব-প্রতিপত্তি, জৌলুশ সব ফিরে পেলেন।

আল্লাহ’র প্রতি মানুষের আস্থা খুবই কম। ইসলামের ইতিহাসে অনেক ঘটনায় বোঝা যায়, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। যেকোন পরিস্থিতিতে আল্লাহ’র সিদ্ধান্তে আস্থা রাখা যেমন জরুরী, তেমনি তাঁর এবাদত, তাঁর কাছ থেকে আসা ভাল-মন্দ, ভাগ্যে বিশ্বাস করাটাও জরুরী। ঈমানের বিশ্লেষণে এই শাখা প্রশাখাগুলোতে অগাধ বিশ্বাস রাখাতেই হচ্ছে চূড়ান্ত সফলতা ও সুখ।

স্বামী ভক্তি কি, তা ঐ ঘটনা থেকে সহজেই অনুমান করা যায়। মানুষের যেকোন সময় খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে। আবার ভালো সময়ও যেতে পারে। এই উভয় সময়েই আল্লাহকে ভুলে না যাওয়া উচিৎ। কে জানে এর চেয়েও হয়তো খারাপ সময় আপনার হতে পারতো।

প্রতিটি বিষয়েরই নির্দিষ্ট সীমারেখা রয়েছে। তা অতিক্রম করলেই যত বিপত্তি। সীমা লঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। এর পরিণতিও সুখকর হতে দেখা যায় না। তাই যেকোন বিষয়ে সবাইকে সীমার মধ্যে রেখে ধৈর্য্য ধারণ করা উচিৎ। নচেৎ আল্লাহ তা’লা যেমন রহমানুর রাহীম, তেমনি কঠিন শাস্তিদাতাও।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.