নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।
ভাগ্য সম্পর্কে ঐ সর্বমহানই জানেন। কেউ ইচ্ছে করলেই এ ব্যাপারে কোন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে অক্ষম। এখানেই মানুষের চরম সীমাবদ্ধতা। মেধা, বুদ্ধি, বিবেচনা, দৃষ্টান্ত, অভিজ্ঞতা দিয়ে মানুষ যেকোনকিছুর বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দিতে পারে। যেহেতু ভাগ্যের পুরো জীবনচিত্রটি মানুষ দেখতে বা জানতে পারে না, তাই আপাতদৃষ্টিতে তার মনে হতে পারে ভাগ্য নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। আপনার সামনে একটা কাঁচের গ্লাস দেয়া হলো। যে মুহূর্তে এই লেখাটি আপনি পড়ছেন- ইচ্ছে করলেই এখনই সেই গ্লাসটি নিচে ফেলে দিয়ে ভেঙ্গে ফেলতে পারেন। গ্লাসটি নিচে ফেলে দিলে কি হতে পারে তা আপনি সহজেই আন্দাজ করতে পারছেন। ফলে এটা আপনি নিশ্চয়ই আমার লেখা পড়ে বোকার মতো করে ফেলবেন না। অথচ ভাগ্য লিপিতে বিধৃত যা হবার কথা তা কিন্তু হবেই।
অনেক সাবধান থেকেও কখনো কখনো শেষ রক্ষা হয় না। আবার খুব এলোমেলো চলেও দিব্যি ঠিকঠাক থাকে সব। আবার সাবধান থেকে সাবধানের ফলাফল যেমনি পাওয়া যায়, তেমনি অসচেতন থেকে অচেতন হবার নজিরও বেশ আছে। অন্যায় প্রবণতা আর খারাপ কিছু করে ছোট ছোট ফলগুলো নিজেই দেখার সুযোগ রয়েছে আমাদের। ধরুন, ফলের বাক্সে থাকা একটি পেয়ারা আপনি কামড়ে খেয়ে ফেললেন। আবার কলার কাদি থেকে কলা ছিঁড়ে না খেয়ে রেখে দিলেন। তাৎক্ষণিক এই বিষয়গুলো আপনার ইচ্ছেমতো করে বলতেই পারেন- আপনি ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন বা করতে পারছেন। কিন্তু সম্পূর্ণ বিচারে আপনি হবেন লক্ষ্যচ্যূত।
ফুটপাত ধরে খুব সন্তর্পণে আপনি দেখে শুনে হেঁটে যাচ্ছেন কোন গন্তব্যে। ফুটপাতে রাখা মোটরসাইকেলের পেছনের হুক আপনার পাঞ্জাবীর পকেটের ভেতর দিয়ে ঢুকে পাঞ্জাবীর পেছনটা ছিঁড়ে দিল। ঘটনাটি খুব দ্রুত ঘটে গেল। এর বিশ্লেষণ কি করবেন? ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বন্ধুবান্ধব মিলে চা পান করছেন। হঠাৎ বেপরোয়া একটি মাইক্রোবাস ফুটপাতের উঁচু অংশে উঠে যেয়ে আপনারই পিছু নিলো। আপনি দৌড়ে চায়ের দোকানের ভেতরে গেলেন, অথচ মাইক্রোটি আপনাকেই চাপা দিলে আপনি মাটিতে পড়ে গেলেন। বড় ধরনের আঘাত পেতে পেতে যেন রক্ষা পেলেন কিন্তু ততক্ষণে পায়ের পাতা ছেঁচে দিয়েছে সে।
পরীক্ষাটা খুব বেশি ভাল হয়নি। সন্তুষ্টি নেই। অথচ কলেজের দেয়ালে লাগানো ফলাফলশীটে ছিঁড়ে যাওয়া পাতায় আপনার রোল নম্বরটি ঠিক দেখতে পেলেন। ভর্তি হলেন সেই স্বপ্নের কলেজে। ইচ্ছে, ডাক্তার হবেন ভবিষ্যতে। একটা মেডিকেলেও চান্স পেলেন না। অবশেষে কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সাঙ্গ করে হাইস্কুলের শিক্ষকতা পেশা শুরু করলেন। ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসতেন। প্রতিদিন স্কুল মিস করতেন। পড়া ফাঁকি দিয়ে সিনেমা হলের বাবুটাকে পান খাওয়ার টাকা দিয়ে বাংলা ছবি দেখতেন। এসএসসি পর্যন্তও পার হতে পারলেন না। স্থানীয় বাজারে দোকান দিলেন। মনিহারীপণ্যের দোকান। ধীরে ধীরে কাস্টমার বাড়তে লাগলো। আপনার দোকানের নামেই এলাকাটার নাম ছড়ালো। মেম্বার নির্বাচন করে পাশ করলেন। সবাই আপনাকে বেশ সমীহ করতে শুরু করলো। মাস্টার্স পাশ ছাড়া বিয়ে করবেন না। সম্মানীত ঘরের বংশীয় এক মেয়েকে বিয়ে করলেন। বলার মতো কোন পাশ নেই আপনার, অথচ অনেকেই ভাবেন আপনি অনেক শিক্ষিত।
গাড়িটা দারুণ চলছিল। পিচ ঢালা পথ। সুন্দর সুন্দর মিষ্টি সুরের গান বেজে চলছিল। কোন কথা নেই বার্তা নেই রাস্তার পাশের জারুল গাছটি হঠাৎ মাঝ বরাবর ফেটে বিকট শব্দে ভেঙ্গে পড়লো আপনার গাড়ির উপর। কাঁচ ভেঙ্গে একটা কাঁচের টুকরা ডান হাতের কনুইয়ের কাছাকাছি পুঁতে গেল। প্রচুর রক্তক্ষরণ হলো। গাড়ির উপরিভাগ ভচকে গেলেও তা চালানো গেল। সপ্তাহ খানেক পর হাতের ঐ আঘাত পাওয়া অংশে অবশ লাগতে শুরু করলো। ডাক্তার বললেন- নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারিয়ে তুলতে চেষ্টার ত্রুটি হলো না। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। নার্ভের ইলাস্ট্রেশন পাওয়ার নষ্ট হওয়ায় হাতটা এখন অকেজো। কোনকিছু তুলে নেয়া যায় না। ধরাও যায় না।
সম্প্রতি বিমান দুর্ঘটনায় কেউ কেউ পুড়ে অঙ্গার হয়েছে, অথচ সবাইকে অবাক করে দিয়ে আপনি কোন আঘাত পাওয়া ছাড়াই দিব্যি বের হয়ে আসলেন। এরকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে ভালমন্দের, উত্থান-পতনের। কেউ কি কোনকিছুর বিনিময়ে তার ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে? তবে সবকিছুর মূলে আশার কথা হচ্ছে- যেকেনো কিছুতেই মহান আল্লাহ্ রব্বুল আ’লামীনের ইচ্ছের বিষয়টিতে সায় রাখা, এবং তাঁর সিদ্ধান্ত বান্দার ভালোর জন্য হয় এই বিশ্বাস মনে পোষণ করা, সে যেকোন ধরনের সফলতা বা বিফলতা হোক না কেন। আর প্রতি মুহূর্তে ভাল কিছু করার মনোবাঞ্ছা থাকা। বাকিটা সাধ্য, ইচ্ছের বাইরে ও আমাদের নিশ্চিত সীমাবদ্ধতায় মোড়ানো।
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩
তারেক ফাহিম বলেছেন: বিশ্লেষন বেশ
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা। ভাল লাগল।