নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাজামুস জুলকারনাইন রতন

এস েজ রতন

একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।

এস েজ রতন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষমতা দ্য পাওয়ার

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮



স্রোতের তোড়ে সবই ভেসে চলে। বিপরীতে তাই কেউ যেতে সাহস করে না। মানুষ হচ্ছে শরীর, আবেগ, প্রাণ বিশিষ্ট প্রাণি। বিভিন্ন দিক থেকে এই মানুষের সীমাবদ্ধতা প্রকট। শরীর আছে, আবেগ নেই। খুব একটা গঠনমূলক কাজে তাকে লাগনো যাবে না। আবেগ আছে শরীর নেই, এতেও লড়াই করে যাওয়া দুষ্কর। প্রাণ আছে শরীর আবেগ নেই; তাতেও জড়ের মতো পড়ে থেকে অন্যের বোঝা হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। শরীর ও আবেগ আছে প্রাণই নেই, তাহলে তো কথাই নেই। কি করে কি হবে?

এই কারণেই মানুষের জন্য এই তিনটি বিষয় খুব দরকারী। শরীর বলতে- শক্তি, সামর্থ্য, দক্ষতা। আবেগে রয়েছে- মেধা, সৃজনশীলতা, গুণাবলী, নৈতিকতা, সাহস, চিন্তা-চেতনা, বিবেক, পরিকল্পনা, বিবেচনা। প্রাণ তো সঞ্জীবনী, সবকিছু চালনার রসদ। সবকিছু ঠিক থাকলেও ক্ষমতা বা শক্তির কাছে বার বারই আমাদের পরাজয় ঘটে। এটাই স্বাভাবিক। কল্পনার জগতের সুপারম্যান ছাড়া এর বিপরীতে কেউই দাঁড়াতে পারে না। তা-ও ঐ একই কথাই হলো- সেই শক্তি বা ক্ষমতা। ক্ষমতা যেভাবেই আসুক, তার পরাজয় নেই। বিজয় সুনিশ্চিত। সে যে পক্ষেরই হোক না কেন।

এই বিষয়টি বুঝতে পেরেই মানুষও এর অপব্যবহার করা শুরু করেছে। বাদল মাত্রই ডিগ্রির রেজাল্ট হাতে পেলো। বড়ভাইকে জানালো খুশির খরবটা। বড়ভাই ওপ্রান্ত থেকে খুশি হয়ে মিষ্টি খেতে চাইলো। -ভাইয়া খাওয়াবো খাওয়াবো। আমার একটা জবের ব্যবস্থা করলে একসাথে সবাই মিলেই মজা করবো। -তোর জব নিয়ে ভাববি না, ওটা আমার দায়িত্ব। -ভাইয়া কবে দেখা করবো? -চলে আয়, তোর ডিগ্রি পরীক্ষার প্রবেশপত্রটা সাথে থাকলেই চলবে। যদিও মাস্টার্স পাশ চাচ্ছে ওরা। অসুবিধা নেই, সিস্টেম করে দেবো।

১৫ বছরের অভিজ্ঞ এক লোকের সিভি কপি করে বাদলের সিভিতে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স জুড়ে দেয়া হলো। সাথে আরো কত রকমের প্রশিক্ষণ গ্রহণের অভিজ্ঞতা। পেশাগত কারণে কয়েকটি দেশে যাবার কথাও বাদ গেল না। দারুণ পাক্কা এক সিভি তৈরী হয়ে গেল। স্যুটেড কোটেড হয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সাথে দেখা করানো হলো। প্রধান বাদলের বড়ভাইকে বললেন- তোমার ভাই? আর কোন কথা নেই। ও কবে যোগদান করতে পারবে? ব্যস্ হয়ে গেল চাকরি। এইচআর বিভাগে শুধু সিভিটা পাঠিয়ে দেয়া হলো। বাকিটা ইতিহাস।

চোখে সমস্যা, একটি চিঠির ঠিকানাও ঠিকমতো পড়তে পারে না। এক ডিপার্টমেন্টের চিঠি অন্য ডিপার্টমেন্টে দিয়ে দিচ্ছে, একজনের চিঠি অন্য একজনকে –এভাবেই দিব্যি পিয়ন পদে বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছেন মাহিন সাহেব। পারসোনাল ফাইলে যা রাখা আছে তার একবর্ণও নিজের না। নিজের স্বার্থ হাসিলে এরা নিজের বাবা-মায়ের নাম পর্যন্ত পরিবর্তন করে রাখতে কুণ্ঠা বোধ করে না। বড় বড় কর্পোরেশন, অধিদপ্তর, কমিশনে এরা কাজ করে যাচ্ছে, বাড়ি গাড়ি কিনছে, কুলীন হচ্ছে।

হঠাৎই ঢাকা শহরের ব্যস্ত সড়ক ফাঁকা। কি কারণ? এপার ওপার করতেই খাকি শার্টের ফুলস্লীপ হাতটা বাধা হয়ে রইল। - যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন। আর যাওয়া যাবে না। দূর দূর করে পেছনে চলে যেতে বললেন। নিজেকে এক পায়সারও মূল্য আছে বলে মনে হলো না। সাধারণ তো সাধারণই। কোন ভিআইপি যাবে কানাকানিতে শুনলাম। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে ওভাবেই দাঁড়িয়ে রইলাম, সাথে আরো শত শত সাধারণ মানুষ। বোকা মানুষগুলো একসময় ভোট দিয়ে ভিআইপি বানাতো। তারাই কৃতঘ্নের মতো পিঠের ওপর, বুকের ওপর পা মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতো। এখনো যায়, যাবেই তো, এখন তো আর...। থাক সে কথা না হয় অনুক্তই থাক।

সবই হচ্ছে ঐ ক্ষমতার কারণেই। শরীর, আবেগ, প্রাণ সবই বিফল, বিমর্ষ শৌর্যের কাছে শক্তির কাছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.