নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাজামুস জুলকারনাইন রতন

এস েজ রতন

একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।

এস েজ রতন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বরকতের রাত শব-ই মেরাজ

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:২৯


- আলহাজ্ব শাহ্ জামাল মুহাম্মদ সিকান্দার জুলকারনাইন

নববর্ষের সকাল আর দুপুরের পর বিকেল থেকেই রহমতের বারি বর্ষিত হতে থাকে এ শহরে। শব-ই মেরাজের রাত এই রাত। এই রাতেই মসজিদুল আকসা থেকে রওনা হয়ে মহান আল্লাহ্ পাকের আরশে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরই হাবিব আমাদের প্রিয় নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)। পৃথিবীতে আগত সকল নবীদেরকে সাথে নিয়ে ইমামতি করে নামাজও পড়েন আসমানে। হযরত জীবরাঈল (আ.) প্রতিমুহূর্তে তাঁর সাথে থেকে এই নবীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পথ বলে দেন কিভাবে আরশে আজিমে গমন করতে হবে।

আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’লার সাথে মুহাম্মদের (সা.) এ সাক্ষাৎ মুসলিম তথা বিশ্ববাসীর জন্য মস্তবড় উপহার। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সহ আরো অন্যান্য নির্দেশনা এই মোলাকাতের মধ্য দিয়ে নবী (সা.) এই বিশ্বমানবের জন্য পাথেয় হিসেবে নিয়ে এসেছেন। নবী (সা.) যখন আরশে আজিমের আঙ্গিনায় পা রাখবেন, ঠিক তখন মনে পড়লো হযরত মুসা (আ.) এর কথা। উনি যখন তুর পাহাড়ে মহান আল্লাহ্’র দিদারের জন্য উপনীত হয়েছিলেন তাঁর কওমসহ। তখন তাঁর পায়ে পাদুকা ছিল। আল্লাহ্ বলেছিলেন, মুসা, তুমি তোমার রবকে দেখতে এসেছো, তুমি কি তোমার পাদুকা খুলে রাখবে না?

নবী মুহাম্মদও (সা.) তাঁর পায়ের জুতা খুলতে যাচ্ছেন, এমন সময় আল্লাহ্ পাক বলে উঠলেন- হে আমার প্রিয় হাবিব, তুমি জুতা খুলছ কেন? মুসার জন্য যা নির্দেশ ছিল তোমার জন্য তো তা নয়। তুমি জুতা পরেই আমার আরশের আঙ্গিনায় প্রবেশ করো। মুহাম্মদ (সা.) আর আল্লাহ’র মধ্যে যে প্রেম, যে শ্রদ্ধাবোধ ছিল তা সবার জন্য শিক্ষণীয়। অনেকগুলো পর্দার আড়াল থেকে এই দু’জনের মধ্যে কথপোকথন হয়। কিছু বর্ণনায় আছে সত্তর হাজার পর্দার আড়াল থেকে এই বাক্য বিনিময় হয়। মহান আল্লাহ্ এক মহাশক্তিময় পবিত্র নূর। বলা হয়ে থাকে এই নূরের কারণেই পর্দার ব্যবস্থা।

বেহেশতেও, বেহেশতিরা মহান আল্লাহ্ কে দেখার সাথে সাথে তাঁর নূরের জ্যোতি তাদের চোখে এমন জোরালো আলোক প্রক্ষেপণ করবে যে সাথে সাথে তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়বে। আল্লাহ্ রব্বুল আ’লামীন হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন- পৃথিবীতে এক দোস্ত আরেক দোস্তের বাড়িতে গেলে উপহার নিয়ে যায়, আপনি তো আমার আরশে এসেছেন, আমার জন্য কি নিয়ে এসেছেন? মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন- হে আল্লাহ্ আমার সারাজীবনের এবাদৎ, বন্দেগি, জিকির, আসগার, আপনার নেয়ামতের জন্য আপনার প্রতি প্রশংসা সবকিছুই আপনার জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছি।

মেরাজের এই রাতেই হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে বেহেশত, দোজখ, কবরের আজাব সবকিছু দেখানো হয়। সবকিছু দেখে দেখে হযরত মুহাম্মদ (সা.) পেরেশান হয়েছেন আর তাঁর উম্মতের জন্য কত সহজ করে মহান আল্লাহ’র এবাদৎ করা যায়, আল্লাহ’র সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় তার জন্য আবেদন করেছেন। মুহাম্মদ (সা.) যখন সপ্ত আসমান থেকে ফিরে এলেন তখন দেখতে পেলেন, মসজিদুল আকসায় আসরের নামাজের জন্য যে ওজু করছিলেন সেই ওজুর পানি তখনো গড়িয়ে যাচ্ছিল। এমন মুহূর্তের ঘটনাকে সে সময় কাফেরগণ বিশ্বাস করতে চায়নি। তারা বলেছিল- এটা মুহাম্মদের (সা.) কাল্পনিক গল্প।

পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন সময়ে আয়াত নাজিল করে মহান আল্লাহ তার ব্যাখ্যা দিয়ে দিয়েছেন। সূরা বনী ইসরাঈলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। যাতে স্পষ্ট হয় হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সাথে আল্লাহ’র সাক্ষাৎ হয়েছিল। পবিত্র কোরআনে বলা আছে- আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে যেকোন কিছু সংকুচিত করতে পারেন, আবার ইচ্ছে করলে প্রসারিত করতে পারেন। মহান আল্লাহ্ পাক এই পৃথিবীটাকে ছয় দিনে নির্মাণ করেছেন। অথচ উনি চাইলে এক ফুঁ দিয়েই হয়ে যাও বললেই হয়ে যেতো। একটি বৃক্ষ বড় হতে দিনের পর দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। অথচ বৃক্ষের এই প্রক্রিয়াকে সংকুচিত করে দিলেই মুহূর্তেই বৃক্ষ বড় হয়ে ফল দিতে পারা সম্ভব। মহান আল্লাহ্ সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান। উনি চাইলে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।

কিছু কিছু নমুনা এমন হয়ে আমাদের সামনে আসলে আমরা আশ্চর্য হই। আমরা তাকে অস্বাভাবিক বলি। স্বতী-সাধ্বী পরহেজগার বিবি মরিয়মকে (রা.) সন্তান দান করেছেন তার স্বামী ছাড়াই। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে এই বিশ্বে। পবিত্র এই রাতে তাই মহান আল্লাহ্ পাকের করুণা লাভের আশায় আমাদের নিবেদিত থাকা উচিৎ- কোরআন তেলাওয়াতে, নফল নামাজ আদায়ে, জিকির করায়, দরূদ পড়ায়, ইসলামী বই-কোরআন-হাদিস তাফসির পড়ায়। ইসলামী আলোচনাতে মশগুল থাকা উচিৎ।

এ প্রজন্ম এতো বড্ড অস্থির, যাদেরকে ধর্মের শিক্ষা দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। এরা আর যাই করুক না কেন, নামাজ কালাম, সুন্নাহ্ ও কোরআন পাঠ আর নামাজের প্রতি উদাসীন হতেই দেখা যায়। আবার ফিরিয়ে আনতে হবে সেই দিন, যখন ইসলামী শিক্ষায় জীবন পরিচালিত করে সুন্দর ও পবিত্র, ন্যায়পরায়ণ, নৈতিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হবে নব প্রজন্ম। প্রতিটি ইসলামী ঐতিহাসিক সময়গুলোতে, দিনগুলোতে বিশদ জানার জন্য পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আলোচনা করতে হবে পরিবারের মধ্যে।

খুব সংকীর্ণ সময়ের জন্য এই পৃথিবীতে মুসাফির হয়ে আমাদের আগমন। ইহকালীন ধৈর্য, নিয়ন্ত্রণ, পরকালীন মুক্তি আর প্রশান্তির জন্য মহান আল্লাহ্’র এবাদতের বিকল্প নেই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: লাইলাতুল মেরাজ মুসলমানদের জন্য একটি ঐতিহাসিক বিষয়। আমাদের উচিত শবে মেরাজের শিক্ষাগুলি যথার্থ ভাবে কাজে লাগিয়ে দেশে সম্প্রীতির বন্ধন বজায়ে রেখে দেশটাকে শান্তিময় দেশে পরিণত করা।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ঘুমিয়েই রাত টি পার করে দিলাম।
আল্লাহ আমাকে মাফ করো।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট +

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫০

এস েজ রতন বলেছেন: বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.