নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের পুজারী

শাকিল আহমেদ ইবনে আলী

(facebook.com/skilalis) (facebook.com/skilali2) (facebook.com/skilali1) (twitter.com/skilalis) (plus.google.com/+skilalis) (youtube.com/c/skilalis)

শাকিল আহমেদ ইবনে আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহর রাস্তায় একটি আমলে ৪৯ কোটি গুণ বা বে হিসাব সওয়াব হবে যেভাবে

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৬



আল্লাহর রাস্তায় একটি আমলে ৪৯ কোটি গুণ বা বে হিসাব সওয়াব হবে যেভাবে ...
১ম হাদীস
عن خريم بن فاتك : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من أنفق نفقة في سبيل الله كتبت له بسبع مائة ضعف
অনুবাদ-হযরত খুরাইম বিন ফাতেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু খরচ করে তা তার আমলনামায় ৭ শত গুণ হিসেবে লেখা হয়।
সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৬২৫
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৬৪৭
সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৫
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯০৩৬
মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-২২৭
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৭৭০
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩২৯৪
এখালে লক্ষ্য করুন। এক টাকা খরচ করলে এখানে সাত শত গুণ সওয়াব লেখার কথা এসেছে। এবার দ্বিতীয় হাদীসটি দেখুন-
২য় হাদীস
عن سهل بن معاذ عن أبيه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إن الذكر في سبيل الله تعالى يضعف فوق النفقة بسبع مائة ضعف قال يحيى في حديثه بسبع مائة ألف ضعف
হযরত সাহল বিন মুয়াজ রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহকে স্মরণ করার সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচের সওয়াবের তুলনায় ৭ লক্ষ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
অন্য বর্ণনায় এসেছে সাত লক্ষ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৫৬১৩
আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৪০৫
মুসনাদুস সাহাবা ফি কুতুবিত তিসআ, হাদীস নং-১৫১৮৬
কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৮৭৯
জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-৬৮৫৮
এবার উভয় হাদীসকে একত্র করুন। প্রথম হাদীস দ্বারা জানতে পারলাম। এক টাকা খরচে সওয়াব পাওয়া যায় ৭ শত গুণ। আর দ্বিতীয় হাদীসে জানতে পারলাম খরচের তুলনায় অন্য আমলে পাওয়া যায় ৭ লক্ষ্য সওয়াব বেশি। এর মানে হল, একটি আমল করলে প্রতি আমলে খরচ করলে যত পাওয়া যেত তারও সাত লক্ষ্য গুণ বেশি সওয়াব।
তাই এবার ৭ শতকে ৭ লক্ষ্য দিয়ে গুণ দিন। ৭০০×৭০০০০০=৪৯,০০,০০,০০০।
তাহলে কি বুঝা গেল? আল্লাহর রাস্তায় একটি আমল করা ঊনপঞ্চাশ কোটি আমল করার সওয়াবের সমতূল্য।
উল্লেখিত হাদীস দু’টি সনদ হিসেবে দুর্বল। কিন্তু জাল নয়। আর সকল গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিসগণ একমত দুর্বল হাদীস ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। তাই এ ফযীলত বলতে কোন সমস্যা নেই।
***************
মুহাদ্দিসীনে কেরামের মূলনীতি হল দুর্বল হাদীস ফাযায়েলের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। যেমন-
সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী রহঃ বলেন-
قال العلماء من المحدثين والفقهاء وغيرهم يجوز ويستحب العمل فى الفضائل والترغيب والترهيب بالحديث الضعيف ما لم يكن موضوعا (الأذكار-7-8
মুহাদ্দিসীন ও ফুক্বাহায়ে কেরাম এবং অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম বলেন-দুর্বল হাদীসের উপর ফাযায়েল ও তারগীব তথা উৎসাহ প্রদান ও তারহীব তথা ভীতি প্রদর্শন এর ক্ষেত্রে আমল করা জায়েজ ও মুস্তাহাব। যখন উক্ত হাদীসটি জাল না হয়। {আল আজকার-৭-৮}
এ মূলনীতিটি নিম্ন বর্ণিত বিজ্ঞ ব্যক্তিগণও বলেছেন-
১- মোল্লা আলী কারী রহঃ-মওজুয়াতে কাবীর-৫, শরহুন নুকায়া-১/৯
২- ইমাম হাকেম আবু আব্দুল্লাহ নিশাপুরী রহঃ-মুস্তাদরাকে হাকেম-১/৪৯০
৩- আল্লামা সাখাবী রহঃ- আল কাওলুল বাদী’–১৯৬
৪- হাফেজ ইবনে তাইমিয়া হাম্বলী রহঃ- মাজমুআ ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-১/৩৯
আহলে হাদীস নামধারী গায়রে মুকাল্লিদগণও এ মূলনীতিতে একমত
১- শায়খুল কুল মিয়া নজীর হুসাইন সাহেব দেহলবী রহঃ- ফাতওয়া নজীরিয়া-১/২৬৫
২- নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান- দলীলুত তালেব আলাল মাতালিব-৮৮৯ {নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান সাহেবকে গায়রে মুকাল্লিদদের আকাবীরদের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে ধর্তব্য করা হয়। {আপকি মাসায়েল আওর উনকা হল কুরআন ওয়া সুন্নাত কি রওশনী মে, লেখক-মুবাশশির আহমাদ রাব্বানী-২/১৮১}
৩- মাওলানা সানাউল্লাহ ওমরতাসরী রহঃ- আখবারুল হাদীস-১৫ শাওয়াল ১৩৪৬ হিজরী।
৪- হাফেজ মুহাম্মদ লাখওয়ী রহঃ- আহওয়ালুল আখরাস-৬
৫- মাওলানা আব্দুল্লাহ রূপরী সাহেব রহঃ- ফাতওয়া আহলে হাদীস-২/৪৭৩
শায়েখ জাকারিয়া রহঃ ও এ মূলনীতির কথা বলেছেন-
“এ বিষয়ে সতর্ক করাও জরুরী যে, হযরত মুহাদ্দিসীন রাঃ গণের নিকট ফাযায়েলের বর্ণনায় অনেক সুযোগ আছে। আর মামুলী দুর্বলতা গ্রহণযোগ্য। তবে সুফীয়ায়ে কেরামের ঘটনাতো ঐতিহাসিক বিষয়। আর এটা জানা কথা যে, ঐতিহাসিক বিষয় হাদীসের মর্যাদার তুলনায় খুবই কম। {ফাযায়েলে আমাল, উর্দু এডিশন-৩৮৪, রেসালায়ে ফাযায়েলে নামায, তৃতীয় অধ্যায়, ফাযায়েলে আমাল পর ইশকালাত আওর উনকা জাওয়াব নম্বর-৬৫, ফাযায়েলে দরূদ-৫৬}
নোট
হযরত শায়েখ জাকারিয়া রহঃ যদি কোথাও দুর্বল হাদীস বর্ণনাও করেছেন, সেখানে সাথে সাথে আরবীতে লিখে দিয়েছেন যে, এ হাদীসটি দুর্বল।
শায়েখতো অনেক হেকমত ও দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন এ ব্যাপারে। কারণ হাদীস সহীহ দুর্বল বলাটা এটা বিজ্ঞ ওলামাদের কাজ। তাই তিনি এসব যারা বুঝেন তাদের জন্য আরবীতেই বিষয়টি পরিস্কার করে দিয়েছেন, উর্দুতে তা আর অনুবাদ করেন নি। কারণ যার কাজ তাকেই সাজে, অন্যরা করতে গেলেই সমস্যা বেঁধে যায়। যেমন বর্তমান জমানায় অনুবাদ পাঠকরাও হাদীসের সহীহ জয়ীফ নিয়ে মন্তব্য করে হাদীসকে হাস্যকর ও জগাখিচুরী পাকিয়ে ফেলছে।
ফেতনা রুখার জন্যই শায়েখ হাদীসের সহীহ জয়ীফ হওয়ার কথা আরবীতে বলেছেন। উর্দুতে অনুবাদ করেন নি। হযরাতের ভাষ্য অনুযায়ী এটাও বুঝা যায় যে, হযরত ফাযায়েলে আমালে খুব কম হাদীসই দুর্বল এনেছেন।
যে প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসীনরা স্বীয় কিতাবে ফাযায়েলের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীস এনেছেন
১- ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ স্বীয় কিতাব “আস সুন্নাহ” এর মাঝে ৩০৩টি।
২- ইমাম বায়হাকী রহঃ “কিতাবুল আসমাই ওয়াস সিফাত” গ্রন্থে ৩২৯টি।
৩- ইবনে তাইমিয়া রহঃ তার “আল মুনতাকা” গ্রন্থে ২৬২টি।
৪- হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ তার “বুলুগুল মারাম মিন আদিল্লাতিল আহকাম” গ্রন্থে ১১৭টি।
৫- ইমাম নববী রহঃ তার খুলাসাতুল আহকাম মিন মুহিম্মাতিস সুনান ওয়া কাওয়ায়িদিল ইসলাম” গ্রন্থে ৬৫৪টি।
৬- মুহাম্মদ ইবনে খুজাইমা রহঃ তার “কিতাবুস সিহাহ” গ্রন্থে যা সহীহ ইবনে খুজাইমা নামে প্রসিদ্ধ এনেছেন-৩৫২টি।
৭- মুহাম্মদ ইবনে হিব্বান রহঃ তার “কিতাবুস সিহাহ” যা সহীহ ইবনে হিব্বান নামে প্রসিদ্ধ, তাতে এনেছেন-২৯৪টি।
৮- ইমাম দারা কুতনী রহঃ তার “সুনানে দারা কুতনী” তে অনেক দুর্বল হাদীস এনেছেন বলে মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন।
৯- গায়রে মুকাল্লিদদের ইমাম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খানও তার “কিতাবু নুজুলিল আবরার” নামক গ্রন্থে ১৩৩টি দুর্বল হাদীস এনেছেন।
*****************
আজকাল আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষ আলেম আর গায়রে আলেমের মাঝের পার্থক্য জানে না। হাস্যকর ব্যাপার হল-দু’ একটি বাংলা বা ইংরেজী ভাষায় হাদীসের কিতাব ও কুরআনের অনুবাদ পড়েই এখন অনেকে আল্লামা সেজে যাচ্ছেন। কিছু কিতাবের অনুবাদের রেফারেন্স মুখস্ত করে একের পর রেফারেন্স দিতে পারলেই আমাদের সমাজের সাধারণ লোকেরা বড় আল্লামা বানিয়ে দিচ্ছে লোকটিকে। লোকটির মাঝে আরবী বুঝার ক্ষমতা আছে কি না? অনুবাদ ছাড়াই মূল কিতাব থেকে মাসআলা বের করার যোগ্যতা আছে কি না? কুরআনের আয়াতের শানে নুজুল, শব্দের অলংকার, আরবী ব্যাকরণ, নাসেখ-মানসুখ, শানে ওরুদ, তাফসীর ইত্যাদী সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখে কি না? ইত্যাদি যাচাই করা ছাড়াই অনুবাদের রেফারেন্সদাতাদের যে সমাজ আল্লামার মর্যাদা দিতে শিখে। সে সমাজের লোকেরা আলেমদের কাছে কেন যাবে?
আলেমদের কাছে না যাওয়ার কারণে। যারা কুরআন সুন্নাহকে মূল কিতাব থেকে, তার নাসেখ-মানসূখ, শানে ওরুদ ও শানে নুজুল, তাফসীর ইত্যাদিসহ মাসায়েল বর্ণনা করেন, ব্যাখ্যা দেন, তাদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ না করা আমাদের সমাজে বিভ্রান্তির মূল কারণ।
নিজে নিজেই কিছু অনুবাদ পড়ে আল্লামা সাজার প্রবণতা ইদানিংকালে বেড়ে গেছে। কোন কিতাবের অনুবাদ পড়ে বুঝতে না পারলে, বা কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হলে নিজে নিজেই এর সামাধান খুঁজে। না পেলে প্রচার করতে শুরু করে কিতাবটি ভুল। শিরকে পূর্ণ। আদৌ কি বিষয়টি এমন কিনা? কোন বিজ্ঞ আলেম থেকে তা জেনে নেবার প্রয়োজনীয়তা বোধ না করায় গোমরাহ হচ্ছে এ সমাজের অনেক নতুন প্রজন্ম।
অষুখ হলে বিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে নিজে নিজে চিকিৎসা করাকে কেউ নিরাপদ না মনে করলেও,
বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ইঞ্জিনিয়ারের কাছে না গিয়ে নিজে নিজেই নির্মাণ শুরু করাকে বুদ্ধিমানের কাজ মনে করলেও, আজকের সমাজের মানুষেরা কুরআন সুন্নাহের মত স্পর্শকাতর বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের শরনাপন্ন হওয়া ছাড়া নিজে নিজেই সব শিখে নেবার মত দুঃসাহস দেখাচ্ছে। আর গোমরাহীর অতলে যাচ্ছে তলিয়ে।
কোন কিতাবের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন জাগলে এ বিষয়ে প্রাজ্ঞদের কাছে এর জবাব জানতে চাইতে হবে। নিজে নিজে সমাধান খুঁজে না পেলে বদনাম ছড়ানোটা আহমকীর নিদর্শন। নিজের অজ্ঞতাকে দলিল নেইয়ের উপর প্রমাণ পেশ করাটা বোকামী ছাড়া আর কী হতে পারে?
ফাযায়েলে আমাল ও আকাবীরে দেওবন্দ এবং হক্কানী ওলামাদের উপর উত্থাপিত অভিযোগের অবস্থা তা’ই। কিছু অতি পন্ডিত লোক কোন বিজ্ঞ ব্যক্তির তত্বাবধান ছাড়া নিজে নিজে কিতাবগুলো পড়ে। তারপর প্রশ্ন জাগে। নিজে নিজেই এর সমাধান খুঁজে। উত্তর না পেয়ে ছড়াতে শুরু করে এ কিতাব ভুল। শিরকে পূর্ণ।
ডাক্তারী বই নিজে নিজে পড়ে কোথাও প্রশ্ন জাগলে নিজে নিজে খুঁজে উত্তর না পেয়ে যদি উক্ত পাঠক ডাক্তারী ঐ বইকে ভুল সাব্যস্ত করে, তাহলে বিজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে যেমন বিষয়টি চরম হাস্যকর হয়। তেমনি এ অতি পন্ডিত কুরআন সুন্নাহের অনুবাদ পাঠকদের অভিযোগের ধরণ দেখে হাসি পায় বিজ্ঞ আলেমদের।
ফাযায়েলে আমালের উপর উত্থাপিত প্রশ্ন গুলোও তেমনি। যেভাবে প্রশ্ন করা হয়, মনে হয় প্রশ্নকারী বিশাল হাদীস বিশারদ। কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে বিরাট প্রাজ্ঞ লোক। অথচ আমড়া কাঠের ঢেকি । (কিছুটা সংযোজিত ও বিয়োজিত)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
*******************************
হাদীসের সংজ্ঞা এবং প্রকারঃ সাহাবা ও তাবেয়ীগণের কথা কি হাদীস?
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীসের সংজ্ঞা
হাদীসের প্রসিদ্ধতম সংজ্ঞা হল,
اقوال النبى صلى الله عليه وسلم وأفعاله وأحواله (فتح الملهم-1/6
রাসূল সাঃ এর কথা,কর্ম এবং অবস্থাকে বলা হয় হাদীস। {ফাতহুল মুলহিম-১/৬}
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহঃ লিখেন-
وَقَالَ الطِّيبِيُّ: الْحَدِيثُ أَعَمُّ مِنْ أَنْ يَكُونَ قَوْلَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالصَّحَابِيِّ وَالتَّابِعِيِّ وَفِعْلَهُمْ وَتَقْرِيرَهُمْ.
আল্লামা তীবী রহঃ বলেন- হাদীস এটি আম শব্দ। এর মাঝে রাসূল সাঃ এর কথা এবং সাহাবী এবং তাবেয়ীদের কথা এবং তাদের কর্ম ও তাকরীর তথা কোন কিছু দেখে চুপ থাকা বিষয়ও শামিল। {তাদরীবুর রাবী-৬}
তাহলে আল্লামা তীবী রহঃ এর মতে হাদীস হল ৯টি বস্তুর সমন্বয়। তথা-
১- রাসূল সাঃ এর কথা।
২- রাসূল সাঃ এর কর্ম।
৩- রাসূল সাঃ এর তাকরীর।
৪- সাহাবী রাঃ এর কথা।
৫- সাহাবী রাঃ এর কর্ম।
৬- সাহাবী রাঃ এর তাকরীর।
৭- তাবেয়ীগণ রহঃ এর কথা।
৮- তাবেয়ীগণ রহঃ এর কর্ম।
৯- তাবেয়ীগণ রহঃ এর তাকরীর।
আল্লামা তীবী রহঃ এর মত ৯ প্রকারকেই হাদীস বলেছেন হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ। দেখুন-
وَقَالَ شَيْخُ الْإِسْلَامِ فِي شَرْحِ النُّخْبَةِ: الْخَبَرُ عِنْدَ عُلَمَاءِ الْفَنِّ مُرَادِفٌ لِلْحَدِيثِ، فَيُطْلَقَانِ عَلَى الْمَرْفُوعِ وَعَلَى الْمَوْقُوفِ وَالْمَقْطُوعِ.
{তাদরীবুর রাবী-৬}
হাদীসের প্রকারভেদ
আসলে এ বিষয়টি অনেক দীর্ঘ বিষয়। হাদীসের অনেক প্রকার রয়েছে। যেমন কয়েকটি প্রকার নিচে উদ্ধৃত করা হল। বাকি বিস্তারিত দেখতে পড়তে হবে উলুমুল হাদীসের গ্রন্থাবলী।
আমাদের কাছে পৌছা হিসেবে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
১-খবরে মুতাওয়াতির।যা বিশাল জনগোষ্ঠি বর্ণনা করেছেন, যা মিথ্যা হওয়া স্বাভাবিকভাবে অসম্ভব।
২- খবরে ওয়াহিদ।যা শুধু একজন বর্ণনা করেন।
খবরে মুতাওয়াতির আবার দুই প্রকার।
১- মুতাওয়াতিরে লফজী তথা শব্দ ও অর্থ হিসেবে মুতাওয়াতির।
২- মুতাওয়াতিরে মানুয়ী তথা যা অর্থ হিসেবে মুতাওয়াতির শব্দ হিসেবে নয়।
খবরে ওয়াহিদ আবার তিন প্রকার। যথা-
১- মাশহুর।প্রতিটি স্তরেই যা তিনজন বা তার চেয়ে বেশি ব্যক্তি করে বর্ণনা করেছেন কিন্তু তাওয়াতুরের পর্যায়ে পৌছেনি।
২- গরীব।যাতে একজন বর্ণনাকারী থাকে।
৩- আজীজ। যার প্রতিটি স্তরে দুইজনের থেকে কম বর্ণনাকারী নেই।
খবরে ওয়াহিদের মাশহুর, আজীজ এবং গরীব শক্তিশালী ও দুর্বল হওয়া হিসেবে আবার দুই প্রকার।
যথা-
১- মাকবুল।
২- মারদূদ।
মাকবুল হাদীস স্তর হিসেবে আবার দুই প্রকার। যথা-
১-সহীহ।
২-হাসান।
সহীহ হাদীস আবার দুই প্রকার। যথা-
১-সহীহ লিজাতিহী।
২-সহীহ লিগাইরিহী।
হাসান হাদীসও দুই প্রকার। যথা-
১-হাসান লিজাতিহী।
২-হাসান লিগাইরিহী।
মাকবুল হাদীস আবার আমল হিসেবে দুই প্রকার। যথা-
১-মামুলেবিহী তথা যার উপর আমল জারি আছে।
২- গায়রে মামুলিবিহী তথা যার উপর আমল জারি নেই।
এরকম আরো অনেক প্রকার রয়েছে। যা উলুমুল হাদীসের গ্রন্থাবলীতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
যেমন
১-মুকাদ্দিমায়ে ফাতহুল মুলহিম।
২-মুকাদ্দিমায়ে ইবনুস সালাহ।
৩-তাদরীবুর রাবী।
৪-তাইসীরু মুসতালাহিল হাদীস।
৫-মুকাদ্দিমায়ে মিশকাত।
৬- শরহু নুখবাতিল ফিকার।ইত্যাদি।
সাহাবা রাঃ ও তাবেয়ীগণ রাঃ এর বক্তব্যের হুকুম কি?
আমরা ইতোপূর্বের হাদীসের সংজ্ঞা দ্বারাই বুঝে গেছি যে, অনেক বিজ্ঞ মুহাদ্দিসীনদের মতে সাহাবা রাঃ এবং তাবেয়ীগণ রাঃ এর বক্তব্যও হাদীস বলেই ধর্তব্য।
দেখুন, তাদরীবুর রাবী, শরহু নুখবাতিল ফিকার,মুকাদ্দিমায়ে মিশকাত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



১ কোটী আমল করলে মোট কত কোটী সওয়াব হবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.