নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুনভাবে নিজের চিন্তার শক্তি আর ভাবনার বিশ্লেষণ করার সামর্থ অর্জনের জায়গা হল ব্লগ। বিচিত্র ভাবনারাশির আলোয় নিজেকে আলোড়িত আর আলোকিত করার উদ্দেশেই আমরা ব্লগে আসি। অবসর সময়টাকে ভালোভাবে কাটানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম উপায় আর নেই। তদুপরি বিনোদন এখানে উপরি পাওনা

এস এম ইসমাঈল

মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।

এস এম ইসমাঈল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারবালার ময়দানে হযরত আলী আসগর (রাঃ) এর শাহাদাত)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮

হযরত সৈয়দা জয়নাব (রাঃ) ভাতিজার লাশের পাশে দাড়িয়ে এভাবে আহাজারি করতেছিলেন। হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) বোনের হাত ধরে তাবুর অভ্যন্তরে নিয়ে গেলেন। এবং বললেন বোন! সবর কর, আল্লাহ তাআলা সবরকারীদের সাথে আছেন। সবর এবং ধৈর্যের আঁচল হাত-ছাড়া করনা। যা কিছু হচ্ছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে, আমাদের সবর ও ধৈর্যের মাধ্যমে কামিয়াবী হাসিল করতে হবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে মহা পরীক্ষা। বোনকে নিয়ে যখন তাঁবুর অভ্যন্তরে গেলেন, তখন সৈয়দা শহর বানু হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর সামনে এসে বললেন, আপনার ছেলে আলী আসগর পানির তৃষ্ণায় কেমন করতেছে, গিয়ে দেখুন। পানির তৃষ্ণায় ওর অবস্থা খুবই সঙ্গীন হয়ে গিয়েছে। ধরফর করতেছে কিন্তু নড়াচড়া করতে পারছে না। কাঁদতেছে কিন্তু চোখের পানি আসতেছে না। মুখ হা করে আছে, কিন্তু কোন আওয়াজ বের হচ্ছে না। এ অবস্থা দেখে আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে গেছে। শুনুন, জালিমেরা হয়তো জানেনা যে, আমাদের সাথে ছোট ছোট শিশুরাও রয়েছে। আমার মনে হয়, এ ছোট শিশুকে কোলে করে আপনি ওদের সামনে নিয়ে গেলে নিশ্চয় ওদের রহম হতে পারে। কারন এরকম শিশু ওদের ঘরেও রয়েছে। তাই আপনি এ শিশুকে কোলে করে ওদের সামনে নিয়ে যান এবং বলুন আমাকে পানি দিওনা, তোমাদের হাতে কায়েক ফোঁটা পানি এ শিশূর মুখে দাও। তাহলে তারা নিশ্চয় দিবে। হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) বললেন, শহর বানু! তোমার যদি এটা আরজু এবং ইচ্ছা হয়ে থাকে, তাহলে তোমার এ ইচ্ছা পূর্ণ করতে আমি রাজি আছি। কিন্তু এ বদবখতদের প্রতি আমার আদৌ আস্থা নেই। যা হোক , হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) ছয় মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশুকে কোলে নিয়ে ইয়াজিদ বাহিনীর সামনে গিয়ে বললেন, দেখ! এটা ছয় মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশু। এটা আমার ছেলে আলী আসগর। এটা তোমাদের সেই নবী করিম (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) এর বংশধর, তোমরা যার কারেমা পাঠ কর। শোন! আমি তোমাদের কোন ক্ষতি করে থাকতে পারি, আমার থেকে তোমরা এর বদলা নেবে। কিন্তু এ মাসুম শিশুতো তোমাদের কোন ক্ষতি করেনি। আহা! এ পানির তৃষ্ণায় ধরফর করছে, কিন্তু সেটা দেখা যাচ্ছে না। শোন! আমার হাতে কোন পানির গ্লাস দিওনা, তোমাদের হাতে এ শিশূর মুখে কয়েক ফোঁটা পানি দাও। আর এ শিশু পানি পান করার পর তৃষ্ণা মিঠে গেলে তলোয়াল হতে নিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না। তাই এর তৃষ্ণাটা নিবারণ কর। দেখ, তৃষ্ণায় এর কি অবস্থা হয়েছে। তাঁবুর পর্দানশীল মহিলাদের কাকুতি-মিনতিতে ঠিকতে না পেরে একে নিয়ে এসেছি। তিনি (রাঃ) এ করুণ বর্ণনা দিচ্ছিলেন, আর এদিকে আলী আসগর (রাঃ) কে লক্ষ্য করে হুরমেলা বিন কাহেল নামক এক বদবখত জালিম তীর নিক্ষেপ করল এবং সেই তীর এসে আলী আসগর এর গলায় বিধল। হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) দেখলেন, শিশুটি একটু গা-নাড়া দিয়ে চিরদিনের জন্য নিশ্চুপ হয়ে গেল।



হযরত ইমাম হুসাইন রা হু হু করে কেঁদে দিলেন, বলতে লাগলেন, ওহে জালিমেরা! তোমরাতো নবী করিম (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতিও কোন সমীহ করলে না। তোমদের মনতো কাফিরদের থেকেও কঠোর। শিশূদের প্রতি কাফিরেরাও সহানুভুতি দেখায়। তোমরাতো নিজেদের কে মুসলমান বলে দাবি কর। যা হোক, তিনি ছেলের গলা থেকে তীর বের করলেন এবং মাটিতে ফেলে দিয়ে বললেন, মওলা! এ লোকেরা যা কিছু করছে, এর জন্য আমি তোমাকে সাক্ষ্য করছি। লাশকে কাধেঁ নিয়ে তাঁবুর কাছে নিয়ে এসে হযরত আলী আকবর এর পাশে রেখে ডাক দিয়ে বললেন, ওহে শহরবানু! ওহে জয়নাব! আলী আসগর আর ধরফর ধরফর করবে না এবং তৃষ্ণার কারনে হাত পা নড়াচড়া করবে না। এ তৃষ্ণার্ত অবস্থা দেখে তোমাদের অস্থিরতা আর বৃদ্ধি পাবে না। সে জান্নাতুল ফেরদাউসে গিয়ে দাদীজান এর কোলে বসে হাউজে কাউছারের পানি পান করছে।



আহ! কারবালার মাঠে হযরত ফাতেমাতুয যুহরা এর বাগানের ফুল ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে। কোন জায়গায় আব্বাস পড়ে রয়েছে, কোন জায়গায় কাসেম পড়ে রয়েছে, কোন জায়গায় আলী আকবর পড়ে রয়েছে, কোন জায়গায় আলী আসগর পড়ে রয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.