নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কক্ষমানব

সেলিম মোঃ রুম্মান

আমি একজন নিরাপদ ব্লগার

সেলিম মোঃ রুম্মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কন্যা বন্দনা!!

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৪২

"আমার মেয়ে তো ইংরেজিতে ছাড়া কথাই

বলে না।"



বিসমিল্লাহ করে ভদ্রলোক তাঁর ৭ বছর

বয়সী মেয়ের "কন্যা-বন্দনা" শুরু করলেন!







অফিসের গাড়ি করে বাসায় ফিরি ৬ জন

কলিগের সাথে। সবাই খুব চমত্কার মানুষ, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার

চেষ্টা করি আমরা। শুধু ভদ্রলোক একটি মাত্র বিষয় কেন্দ্র করেই আবর্তিত হোন– "কন্যা"!



এটা কোনো সমস্যা না, সমস্যা হলো কন্যা-

বন্দনার বিষয়গুলো নিতান্তই মর্মান্তিক আমাদের জন্য। শেষ তিনদিনের বন্দনার বিষয় ছিলো যথাক্রমে–



১. কন্যার খাদ্য অভ্যাস (কন্যা বিদেশী ফল ছাড়া খায় না)

২. কন্যার পোশাক অভ্যাস

(কন্যা বিদেশী ড্রেস ছাড়া পরে না)

৩. কন্যার ছড়া অভ্যাস

(কন্যা ইংরেজি ছড়া ছাড়া কিছু বলে না)



ভদ্রলোক মুখ হাসি হাসি করে কন্যা-

বন্দনা করেন, আমরা বাকী ৬ জন মুখ

গোমরা করে অসীম ধৈর্য্য নিয়ে তাঁর বয়ান

শুনি। মুখের আকৃতি বয়ানের সাথে মিল

রেখে পরিবর্তন করি, 'ও তাই', 'কি দারুন', 'ইয়া খোদা', 'মাশাআল্লাহ', 'বলেন কি' ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করি।



মাঝে কোনদিন অতি বিরক্তির কারণে মুখের

আকৃতি পরিবর্তন করি না; 'ওয়াও' জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করি না। তাতে ভদ্রলোকের বয়ানের আগ্রহের কোনো উনিশ-বিশ হয় না। বয়ান চলতে থাকে, ৩০ মিনিটের রাস্তা ৩০ ঘন্টার মতো মনে হয়।



আজকের বিষয় কন্যার 'ভাষা অভ্যাস'।

আমরা মানসিক প্রস্তুতি নিলাম।



– ভাই, মেয়ের তো ইংরেজি উচ্চারণ সেই রকম, ফরেনার ফেল। এতো পারফেক্ট উচ্চারণ যে মেয়ের স্কুলের বিদেশী টিচাররা পর্যন্ত বুঝে না!

– বলেন কি ভাই?, পাশের এক কলিগ বললেন। "মাশাআল্লাহ!", পেছনের সিটের থেকে আওয়াজ আসলো।



আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, এ কি যন্ত্রণা!

– তাহলে কি আর বলছি ভাই, দাঁড়ান- আপনাদের ফোনে শুনাই।



একেকবারে মোবাইল স্পিকারে দিয়ে বাসায়

ফোন দিলেন ভদ্রলোক।



– হ্যালো সামান্থা (কাল্পনিক নাম, নাম

অনেকটা এই রকম) মাম্মি, How are you [কেমন আছো তুমি]?

– হ্যালো বাপ্পি, I am fine [ভালো আছি আমি]



আর দশটা সাধারণ বাচ্চা মেয়ের

আদরমাখা ইংরেজি উচ্চারণই মনে হলো আমার কাছে, পাশ থেকে এক কলিগ চিমটি কাটলেন।



– মাম্মি, Where is your mom [তোমার মা কোথায়?]

– বাপ্পি, আম্মু তোমারে কইছে আজকে যদি আম্মুর জন্য 'তিব্বত কদুর তেল' না আনো তুমি, আম্মু তোমারে জামার হ্যাঙ্গার

দিয়া পিডাইয়া হাড্ডি-গুড্ডি একসাথ কইরা ফালাইবো, আর কইছে সারা রাইত

কানে ধইরা খাড়া করাইয়া রাখবো, বুঝছো?!!!



ভদ্রলোকের হাসি হাসি মুখ

সাথে সাথে কালো হয়ে গেলো। গাড়ির

ভেতরে সম্পূর্ণ নিরবতা, সবগুলো মুখ

ভদ্রলোকের দিকে।



বেইজ্জতির ষোলোকলা পূরণ করতেই বোধহয় ফোনখানা তাঁর কাঁপা কাঁপা হাত

থেকে পড়ে গিয়ে গাড়ির সিটের

নিচে ঢুকে গেলো!



ভদ্রলোক সিট থেকে নেমে হামাগুড়ি দিয়ে মোবাইল খোঁজা শুরু করলেন। কপাল খারাপ, মোবাইল তাঁর হাতের নাগালের বাইরে।

সিটের নিচ থেকে কন্যার তীক্ষ কন্ঠ

ভেসে আসছে– "বাপ্পি, কই তুমি? কথা কও না ক্যান? শুনো, আমার লাইগা কিন্তু মনে কইরা...."



আহা রে 'বাপ্পি'!! আহা রে বেচারা!!!

আহা রে!!!!





লিখা :জাভেদ কাইসার

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫২

আদম_ বলেছেন: হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহ মজাক লাগছে।
হাছা না গপ্প। তবে এমন যাতনাময় অভিগ্গতা আমারও আছে। বিরক্তির চোটে বসের প্রাইভেটে যাওয়া বাদ দিয়া লেগুনায় ঝুইলা গেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.