নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্নিগ্ধ অরু

অসাধারণ সাধারণ মানুষ।

স্নিগ্ধ অরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট লিখা খোলা চিঠি

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১১

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা খোলা চিঠি ....

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
সম্ভাবত জীবণের প্রথম বারের মতো আপনার কাছে কোন বিষয় নিয়ে সরাসরি লিখছি (জানিনা আদো এই লেখাটা আপনার কাছে পৌছাবে কি না!)। আপনার কাছে সরাসরি লিখছি কারণ আপনার মন্ত্রী সভায় একজন মন্ত্রী সরাসরি আমাদের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন, যেহেতু আমরা মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ভার্সিটিতে দিয়ে থাকি সুতরাং আরো ৭.৫% ভ্যাট দিতে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না। তার এই বক্তব্য আমি কিছুতেই বুঝতে পারলাম না উনি বাংলাদেশ এর মতোন একটা দেশের অর্থ মন্ত্রী হয়ে কিভাবে এই কথা বলতে পারেন? উনি ৩০ ও ৫০ হাজার টাকার কথা বললেন অথচ একবারও ভেবে দেখলেন না এই টাকাটা দিতে গিয়ে আমাদের বা আমাদের পরিবারের কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয় আবার তার উপর ৭.৫% ভ্যাট........!

যাইহোক, মূল কথায় ফিরে আসি, .......
প্রথমেই বলে নেই আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ....... আমি ২০১৩ সকালে সাইন্স বিভাগ থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষা দেই। ইচ্ছা ছিলো অনেক বড়ো একজন ইঞ্জিনিয়ার হবো এবং দেশের সর্ববৃহত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এইচ.এস.সি পরীক্ষায় আশানুরুপ ফলাফল না করাই, সেখানে সহ সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। সেদিন একটু হোচট্ খেয়েছিলাম কিন্তু আবারও নতুন করে শুরু করি সব কিছু । এবার লক্ষ্য দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলা! দেখতে দেখতে ভার্সিটি এডমিশন চলে আসলো।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন শহর আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে থাকলাম কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরীহাস,চান্স নামের সোনার হরিণটি হাতে পেলাম না। খুব আপসেট হয়ে পড়লাম। ফ্যামিলি থেকে বললো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে।বলা যায় বেশ ফোর্স ই করেছিলো ঐ সময়,প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ায় জন্য কিন্তু আমি সেইদিন ই আজকের এই চিত্র গুলা কল্পনা করে ফেলেছিলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম আরেকবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবো। দেখতে দেখতে এইচ.এস.সি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল এবং ভর্তি পরীক্ষা চলে আসলো। আবারও আরেকবার স্বপ্ন নিয়ে সারাদেশ ভ্রমণ।
গতবারের থেকে এবার এডমিশনে ভালো করলেও এবারও কপালে জুটলোনা এডমিশন। খুবি ভেঙ্গে পড়েছিলাম তখন। ভেবেছিলাম হয়তো আমর দ্বারা কিছুই হবে না। জীবণ শেষ! হয়তো জীবণ তখন ই শেষ হয়ে যেত, যদিনা শেষমেশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত না নিতাম।

যখন সিদ্ধান্ত নিলাম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার,তখন আমার আব্বু আমাকে একটা কথা বলেছিলেন আর তা হলো, "যদি ঐ সময় ই (এইচ.এস.সি পরীক্ষার পরপর ই) প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিতে তবে আজ অযথা ২/২.৫ লাখ টাকা খরচ হতোনা " সেইদিন বুঝতে পেরেছিলাম সামনের দিন গুলি কেমন হতে যাচ্ছে। যখন ঢাকায় চলে আসবো তখন আব্বু আমাকে ডেকে বলেছিলেন, "যদি কোথাও কোন কিছুতে দুইটাকা খরচ করলে সাচ্ছান্দ হয় কিন্তু এক টাকা খরচ করলে কাজটি হয়ে যায় তবে তুমি এক টাকা খরচ করো " আব্বু ঐদিন ই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আমাকে শিক্ষিত করে তুলতে উনার কতই না কষ্ট হতে যাচ্ছে।

এরপর ঢাকায় আসলাম পড়াশোনা করতে লাগলাম কিন্তু যখন সেমিস্টার ফি ও অন্যান্য খরচ এর জন্য টাকা চাইতাম তখন, আব্বুর দীর্ঘ শ্বাস ফেলে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথাটা শুনতেই বুকের ভিতরটা হাহাকার করে উঠে। যদিও আব্বু,আম্মু কখনোই বুঝতে দেন না তাদের কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে আমার সেমিস্টার আর অন্যান্য খরচ মেটাতে যেয়ে কিন্তু আমি ভালোভাবেই আচ করতে পারতাম/পারি ! এখন যদি অতিরিক্ত আরো ভ্যাট প্রয়োগ করেন আমাদের উপর তাহলে খরচ আরো বাড়বে! এই খরচ টানতে যেয়ে আমার পরিবারের যে পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে তা বলে বুঝানো যাবে না,অথচ এর উপর যদি আরো অতিরিক্ত ৭.৫ ভ্যাট বসানো হয় তবে পরবর্তিতে আমার পরিবার কিভাবে সে খরচ চালাবে তা ভাবতে গেলেও আমার মুখ শুকিয়ে যাই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আমার ৪ বছরের আন্ডারগ্রাজুয়েশন কোর্সে সকল ফি মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা। যদি এর সাথে আরো অতিরিক্ত সাড়ে সাত পার্সেন্ট ভ্যাট যোগ করি তবে খরচ প্রায় আট লাখ পঞ্চাশ হাজার হয়ে যাবে। আপনি বিশ্বাস করুন আর না ই করুন,এই অতিরিক্ত ১ লাখ টাকা যদি আপনার সরকার আমার কাছ থেকে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়,তবে তা আমার, প্রায় ২/৩ বছরের ঢাকায় থেকে খাওয়া-দাওয়া খরচটি হয়ে যাবে। হ্যা,অবাক করার মতো কথা হলেও এটাই সত্য! ......

তাই আপনার কাছে অনুরোধ রাখি আমাদের উপর অতিরিক্ত ভ্যাটের বোঝা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিবেন। আমারা যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তারা শুধু যে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান ...এমন না। আমরা অনেক মধ্যবিত্ত বা নিম্ন বিত্তের সন্তান ও আছি। দয়া করে আমাদের কথা গুলা শুনুন। আমাদের জীবণ-যাপণ,আমাদের পরিবারের অবস্থান,ইত্যাদি শুনুন ও জানুন। তাহলে বুঝতে পারবেন কেন এই অতিরিক্ত ভ্যাট দেওয়া আমাদের পক্ষে এত কঠিন ।আজ আর কিছু লিখবোনা শুধু আশা রাখবো যে আপনি, এই ভ্যাট প্রত্যাহারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে,আমাদের উপর থেকে অতিরিক্ত ভ্যাটের বোঝা থেকে আমাদের মুক্তি দিবেন .....

ইতি
আসিফ নেওয়াজ
দেশের এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সাধারণ ছাত্র ....

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

বাংলাদেশের মতো গরীব দেশে বেসরকারী ইউনি থাকা অপরাধের সমান।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১২

স্নিগ্ধ অরু বলেছেন: অন্যায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থাকা নয়, অন্যায় হচ্ছে বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়ে জন্মানো।

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২৬

প্রামানিক বলেছেন: ভাই গরীব মানুষের লেখা পড়া উঠেই যাবে।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১৪

স্নিগ্ধ অরু বলেছেন: গরীব মানুষদের তো কবেই লেখাপড়া থেকে অলিখিত অব্যাহতি দিয়ে দেয়া হয়েছে, এখন তো সেটা একরকম খড়ের গাদায় সূচের মতোই গুটিকয়েক গরীবেরা পড়াশুনা করে, আর বাকি ছিলো মধ্যবিত্তরাই, সেটাও এখন বাতিলের খাতায় নাম লিখাবে হয়তো।

৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৬

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: লেখক, আপনার এই লেখা যদি কোন অনলাইন পেপার ছাপতে চায়, তবে আপনার আপত্তি আছে কি?

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১৬

স্নিগ্ধ অরু বলেছেন: লেখাটা আসলে আমার না, সেটা লেখার শেষেই উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
তাই ছাপাতে চাইলে লেখকের নাম উল্লেখ করে ছাপাবেন অবশ্যই।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.