নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু আনলে পুড়িয়া গেল/অমিয় সাগরে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল।

সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু আনলে পুড়িয়া গেল/ অমিয় সাগরে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল।

সবুজসবুজ

না মিটিতে আশা ভাঙিল খেলা

সবুজসবুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজে যারে বড় বলে .........................

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৪৩







বাড়িতে রান্নাঘরে একটা কুচিনা চিমনি লাগাব বহুদিনের সখ। কিন্তু সেই মধ্যবিত্ত নামধারী বাঙালি। টানাটানি লেগেই আছে -দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। বছর ডিঙিয়ে ফি বছর।



সখের তো কোনো শেষ নেই। কিন্তু বাজেটে কুলানো আর যায় না। হঠাৎ কিছু টাকার সংস্থান হল। সংস্থান বলতে ধার। হাজার দশেক টাকা ধার করলাম। ইচ্ছেটা একটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের। ভেবেছিলাম আট হাজার থেকে দশ হাজারের মধ্যে একটা কিনব। কিন্তু বাজারে গিয়ে হাজার তিনেকে একটা পছন্দ হয়ে গেল। সাতহাজার টাকা বেঁচে গেল। ভাবলাম এটা দিয়ে যদি চিমনি লাগানো যায়।



গেলাম আমার বাবার এক ছাত্রের দোকানে। ওদের কুচিনার ডিলারশিপ আছে। দোকানে গেলে আর কমা জিনিসে মন যায় না। ভালো জিনিসই কিনতে ইচ্ছা করে। সাড়ে সাত হাজারের বদলে ইচ্ছাটা গিয়ে থামল তের হাজারে। আবার ধার। কি আর করা।



তারপর আমার প্রফেশনের কথা, বাবার কথা উঠল। আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। আমিও শিক্ষক। বাবা অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন, আমি বাংলার। আমি বিনা পয়সায় শিক্ষা দান করার মোটেও পক্ষপাতি নই। আমি নিজেই দেখেছি বাবা যাদের বিনা পয়সায় শিক্ষা দান করতেন, ( অধিকাংশই বিনা পয়সায়, আবার অনেকেই মাসের পর মাস পড়ে

টাকা পয়সাই দিত না) তাদের অনেকেই বাবার সাথে পরবর্তী সময়ে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। কিন্তু মুশকিল হল আমরা এদের ব্যবহারে বাবার উপরেই রেগে যেতাম কারণ বাবা এদের উপরে রাগতেন না, বলতেন -"বাচ্চা ছেলে করে ফেলেছে।"



আমি নিজেকে বেশ যোগ্যতম শিক্ষক বলেই ভাবি। আমার এখান থেকে পড়াশুনা করে অনেক ছেলেমেয়েই শিক্ষকতার চাকরি করছে। আমি ওদের কছে বুক বাজিয়ে বলি-আমার বাবা খুব ভালো একজন শিক্ষক ছিলেন।কিন্তু আমার বাবার খুব নাম থাকলেও দাম ছিল না। আমি চাই আমার নামও হোক, আবার দামও হোক।



প্রসঙ্গ ক্রমে আমার অসন্তোষ বের হয়ে এল। আমার এক ছাত্রী, প্রথম বছরে পড়তে এসেই চাকরি পেয়েছিল। পরে একটা চাকরির কাগজে তার ইন্টারভিউ বের হয়েছিল। সেখানে সে আমার নামটা পর্যন্ত বলেনি। মনের ভেতর রাগটা জমা হয়ে আছে এখনো।



বাবার সেই ছাত্র এরপর বাবার কথা বলছিল। বাপন দা , মানে বাবার এই ছাত্রটি অঙ্কে খুব কাচা ছিল। বাবা বলেছিলেন -"বাপন তুই অঙ্কে শুধু পাশ মার্কসটা তোল, আর কিছু ভাবতে হবে না।" শেষ পর্যন্ত বাপনদা পাশ মার্কের বদলে প্রায় ডবল মার্কসেরও বেশি নম্বর পেয়েছিল।



বাপনদা বলছিল-সুব্রত, দেখ, এখন কার শিক্ষকেরা টাকা ছাড়া কিছুই চেনে না। আমার বাবা জাহাজে চাকরি করত । বছরে একবার মাত্র বাড়ি আসত। সেই সময়ে হয়তো কিছু টাকা স্যারকে দেওয়া হত। এখন কার কোনো শিক্ষক এমনটা সহ্য করবে ! আর এটার পরেও প্রতিটা ছাত্র নিয়ে এতটা গভীর ভাবনা- ছাত্রটা কেমন , কি করলে সে আরো নম্বর পাবে, প্রত্যেক ছাত্রকে নিয়ে এভাবে কোন শিক্ষক ভাবে ? আমরা এই স্যার কে সম্মান করব নাতো কাকে সম্মান করব।



বাড়ি ফিরে এলাম। ভাবতে ভাবতে এলাম, কিন্তু কোনো কূল কিনারা পেলাম না। বাবাও শিক্ষক ছিলেন , আর আমিও শিক্ষক !!!!!!!!!!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.