![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"জানি চিঠিটা পড়ার পর আমায় ঠিক যতটা ভালোবাস তারও বেশী ঘৃণা করবে। কিন্তু আমি তোমাকে আর ঠকাতে পারবো না, তাই আজ আর আসতে পারলাম না। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে তোমায় ভালবেসেছি, অন্য কারো জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে আমার জীবন। আমি নাহিদ কে ভালবাসি...
বাজির এই খেলায় বন্ধুদের হারাতে গিয়ে তোমার ভালবাসার কাছেই আমি হেরে গেলাম। আর জিতে গিয়েও আমি নিজের কাছে পরাজিত!
যদি কখনও পারো, আমায় ক্ষমা করে দিও..।
চাইলেই হয়তো তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে পারতাম। জানি কষ্ট হত, তবু অসম্ভব ছিল না কিন্তু বেঁচে থাকলে তো বাকিটা জীবন তোমাকে ঘৃণা করে বাঁচতে হবে। তোমায় এত বেশি ভালবেসেছি যে, তোমাকে কখনো ঘৃণা করতে হবে, এ কথা এক মুহূর্তের জন্যও ভাবিনি।
ভাববই বা কেন . . . ??? আমার ভালবাসা তো বাজি ছিল না। আজ আমার এই ভালবাসাকে আমি ঘৃণার কাছে এত সহজে হেরে যেতে দেই কি করে বল . . . . . ??? তাই ঘৃণা করে বেঁচে থাকার চেয়ে তোমায় ভালবেসেই চলে যেতে হল।
আমার ফুফাত বোন অনার্সে পড়ে। ভিডিওটি দেখছিলাম ও আর আমি একসাথে বসে। একপর্যায়ে বলে বসলাম, মিউজিক ভিডিওটি ভালই লাগলো, কিন্তু শেষের দিকে মৃত্যুর পূর্বে ছেলেটির হাতে লেখা চিঠির কথাগুলোতে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। উত্তরে বলে, উল্টো এই চিঠিটির জন্যই সম্ভবত সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বেশি বেশি লাইক পেয়েছে। উত্তরে বললাম, বেশি বেশি লাইক হয়েছে বলেই যে আমাকেও লাইক করতে হবে, এমনতো নয়, নিজের যুক্তিতে দেখা উচিত। ইয়াং ট্রেন্ড হুজুগে সয়লাব হয়ে, এইসব অখ্যাত আইটেমগুলো বেশিদিন মানুষের মনে থাকেও না।
কতিপয় উদ্ভট মন-মানসিকতার লেখক, কবি-সাহিত্যিকদের কিছু বাজে গাঁজাখুরি গল্পের উন্মাদনায় তরুণ প্রজন্মের খেসারত দিতে হয়। এসব ঘটনা ফলো করে, নিজেকে ঘটনার নায়ক চরিত্রে অনুপ্রাণিত করে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনায় জন্ম হয়।
উত্তরে যা বলে, তার সারমর্ম ‘ছেলেটি বেঁচে থাকলে দেখা হবে, দেখা হলে ব্যাপারটি মনে পড়বে এবং ঘৃণা করবে। তাই অতি ‘দূরদর্শী ও মহান মনে’র ছেলেটি ভালবেসেই মরে গেল’। আশ্চর্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, মৃত্যু কি এতই ছেলেখেলা?
আমরা জানি যে, অতি দুঃখ পেলে মানুষ আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়। নতুবা, সাইকো বা অসুস্থ মস্তিষ্কের হলেও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়।
বেঁচে থাকলে ঘৃণা করতে হবে, মানে কি? ছেলেটি কি করে বুঝল, বেঁচে থাকলে ঘৃণাটি তার মনে আসবে, যেখানে এখনও মেয়েটির প্রতি তার ভালবাসা রয়েই গেছে। মানলাম, ও যদি আগাম বুঝেই থাকে, তবে ঘৃণাটা যদি করতেই চায় না, তবে ঘৃণা করার ভয় কেন? সেই সূত্রে মেনেই নিলাম, প্রতারিত হলেও ওর মনে মেয়েটির প্রতি ভালবাসা মৃত্যুর পূর্বেও ছিল। এ অবস্থায় আত্মহত্যার মনোভাবটি আসল কোত্থেকে? এরকম সুস্থ মনে, সুস্থ মস্তিষ্কে কেউ এত সহজে আত্মহত্যা করতে পারে কি করে!
থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারের তপুরা কনডম কিনে নিয়ে গিয়ে “mutual sex” করতে না পেরে রাগে ফুঁসতে থাকে! আর এসবে অনুপ্রাণিত আধুনিক পুলা মাইয়ারা “mutual sex” কে পান্তাভাত মনে করলে কি কোন সমস্যা! কিন্তু এইসব দেখে কুলাঙ্গাররা “mutual sex” এর সঙ্গী জোগাড় করতে না পেরে যা ঘটছে তা মেনে নেয়ার নয়। এ ধরণের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে সিনেমা বা নাটক না বানালেই কি নয়? এগুলো দেখে কমবয়সী ছেলেমেয়েরা এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও সিনেমাকে নকল করতে গিয়ে এসব খারাপ বিষয়গুলোয় সমাজ প্রভাবিত হয়। আমি মানছি সিনেমা বা নাটকে শিখার মত বিষয়ও রয়েছে, কিন্তু তা উপস্থাপন করতে হবে সতর্কভাবে, যাতে দর্শকরা বিশেষ করে শিশুদের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।
যেভাবে প্রতিনিয়ত মানুষের শিক্ষার হার বেড়েছে, আনুপাতিকভাবে সমাজের অন্যায়-অত্যাচারও বেড়েছে। শুধু স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়ে উচ্চশিক্ষিত করালেই দায়িত্ব শেষ নয়। শুধু শিক্ষিত হলেই হবে না, শিক্ষার্জন করে যদি সে শিক্ষা কাজে না লাগে, মানবের মঙ্গলে না আসে, তবে সে শিক্ষার্জনে সফলতা কোথায়? কুশিক্ষিত থেকে সুশিক্ষিতই উত্তম। এর মূলে রয়েছে মূল্যবোধের অবক্ষয়, অপসংস্কৃতির সয়লাব।
একদিন হয়তো দেখা যাবে, এ দেশেও উন্নত দেশের মত নতুন প্রজন্ম তথা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাইকো জাতীয় অসুস্থ তরুণদের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে। মানসিক বিকৃতির উদ্ভব হবে। তখন হয়তো আমাদের আর ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। তাই এখনই সময় এসব প্রডিউসার, লেখকদের মুলোৎপাটন করা। যাতে এসব গল্প, উপন্যাস, মিউজিক ভিডিও দেখে আমার কোমলমতি তরুণেরা আত্মহত্যা, ধর্ষণ, খুন প্রভৃতির মত অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত না হয়।
©somewhere in net ltd.