![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাদ্রাসায় পরতাম ছোটবেলায়। তো যেদিন আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হলো, সেদিনই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বললেন, সেদিন থেকেই মাদ্রাসায় থাকতে হবে(রাতেও)। বিকেল বেলা বেডিং আর কাপর-চোপর নিয়ে হাজির হলাম মাদ্রাসায়। মা রাতে খাওয়ার জন্য একটা বক্সে ভাত-তরকারি দিয়ে দিলেন। সন্ধ্যার পর কিছুক্ষন এইটা-সেইটা ভাবলাম। আশে-পাশে সবাইকে দেখলাম চিৎকার করে আলিফ-বা-তা-সা পড়ছে। এশার নামাজের পর যখন খেতে বসেছি, তখন মোটা-সোটা আর ন্যাড়া মাথার এক ছেলে এসে পাশে বসলো। আমার নাম জিজ্ঞেস করলো, এইটা-সেইটা জিজ্ঞেস করলো। আমি আমার নাম বললাম। অতঃপর আমি তাঁর নাম জিজ্ঞেস করায় চটপট করে বলে দিল- আবুল কাশেম। কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। তারপর আস্তে করে বললো, “ফাজিল পোলাপাইন ডাকে- কাশু পেটকু!” তাঁর উপাধি শুনে আমি মনে মনে ব্যাপক মজা পেলাম। আর উপরি ভাব ধরলাম “ফাজিলদের কথায় কান দিওনা!” টাইপ। যাইহোক, নতুন হিসেবে আমার একজন বন্ধু খুবই দরকার ছিল সেই মুহূর্তে। কাশু পেটকুকে পেয়ে স্বস্তিবোধ করলাম। বক্স থেকে ভাত প্লেটে রাখলাম। তাঁর উপর দুই টুকরো ইলিশ মাছের পেটি আর তরকারি ঢেলে দিলাম। খুদায় পেট চোঁ চোঁ করছে। এমন সময়, হঠাত কাশু পেটকু রহস্যমাখা চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে ফিসফিসিয়ে বললো,
“এই! ঐ জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখ! বাইরে একটা তালগাছ দ্যাখা যায়না? এইটা কিন্তু আসলে তালগাছ না। এইটা একটা জীন! অনেক রাতে... যখন সবাই নাক ডেকে মরার মতো ঘুমায়... তখন এই জীন তাঁর আসল রূপ ধারন করে! সসসসসসসসস!!!!!!!”
এইটুকু শুনে আমিতো ভয় আর বিস্ময়ে হতবাক! কাশু পেটকু একটু চুপ করে রইলো। আমি অপলক দৃষ্টিতে তালগাছবেশী জীনটাকে দেখছি। কি অদ্ভূত ব্যাপার স্যাপার! কাশু পেটকু আবার বলা শুরু করলো,
“এইটা যে একটা জীন, তা আমি ছাড়া আর কেও জানেনা। তবে খুব শিগগিরই সবাই জেনে ফেলবে মনেহয়। আমি জানলাম ক্যামনে শুনবি? সে এক ভয়ঙ্কর রাত! অনেএএএএক রাআআআত! আমার হাগা ধরছে! একাই হাগতে গেলাম ঐদিকের টয়লেটে! সসসসসস!!!”
কাশু পেটকু আবারও চুপ। আমি তালগাছবেশী জীন থেকে চোখ সড়াতে পারছিনা। গাছটা বাতাসে কেমন নড়ছে। আমার কাছে মনে হলো, বাতাসে তালগাছটার এভাবে নড়ার কথা না। কাশু পেটকু আবার তাঁর গল্প শুরু করলো,
“তালগাছের নিচে কেবল মাত্র গেছি, এমন সময় কে যেন আমাকে ডাকলো, ঐ ব্যাটা কাশু! আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে কাওকে না পেয়ে মারাত্মক ভয় পাইলাম! আবারও ডাকে- ঐ ব্যাটা কাশু! আমি আবারও লাফ দিয়ে উঠি! এমন সময় হঠাৎ! ......তালগাছটা নড়তে নড়তে নড়তে নড়তে সাপের মতো পেঁচিয়ে কেমন যেন হওয়া শুরু করলো। সসসসস!!” কাশু পেটকু আবারও চুপ। আমি ভয়ে এতক্ষণে থরথর করে কাঁপা শুরু করে দিয়েছি। মনে হচ্ছে, এই বুঝি তালগাছটা সাপের মতো হওয়া শুরু করে দেবে। ভয় পাওয়ার চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছি। এমন সময় খেয়াল করলাম, কাশু পেটকু আমার পাশে নাই। আমার প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখি প্লেটে রাখা দুই টুকরো ইলিশও নাই। এতক্ষণে বুঝলাম, গল্প শুনিয়ে আমার মাছের টুকরো দুইটা মেরে দিয়েছে শালা!
মনে মনে এর প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করলাম।
কয়েকদিন পর, যখন মাদ্রাসায় একটু পুরোনো হয়ে গেছি। একদিন রাতে কাশু পেটকুকে কিছু একটা দেখিয়ে বললাম, এইটার কেরামতী তোকে আজ রাতে দেখাবো।
তুই আমার পাশে ঘুমাবি। আর খবরদার! কাওরে বলিস না।
রাতে কাশু পেটকু বিছানা পেতে ঘুমালো আমার পাশে। ধানাই পানাই দিয়ে বুঝালাম, আজ কাজটা হবেনা। কাল করতে হবে। কাশু ঘুমিয়ে গেল। আমিও চোখ বুঝলাম। ধীরে ধীরে রাত গভীর হলো। ভোরে হুজুর ফজরের নামাজের জন্য ডাকাডাকি শুরু করতেই আমি উঠে গেলাম। দাত ব্রাশ করলাম, অজু করলাম, নামাজের জন্য তৈরী হলাম। রুমে এসে দেখি সবাই নামাজের জন্য কাতার বেঁধে দাড়াচ্ছে। কিন্তু কাশু পেটকু লেপের নিচে শরীর ঢুকিয়ে মাথা বের করে রাগে-ক্ষোভে ঘোৎ ঘোৎ করছে। হুজুর নামাজ পড়াতে এসে দেখে কাশু এখনও লেপের নিচে। হুজুর তো রেগে মেগে অস্থির। একজনকে বললো, ঐ আমার বেতটা নিয়া আয় তো!! হারামজাদার ঘুমের সাধ মিটাই!
একজন দৌড়ে গেল বেত আনতে। এই দেখে কাশু পেটকু ভয়ে সবকিছু ফেলে লেপের নিচ থেকে বের হয়ে দিলো এক দৌড়! সবাই এইবার দেখলো, কাশু পেটকুর পরনের লুঙ্গি নাই। লেংটা কাশু পেটকুকে দেখে তো সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেল।
দুইদিন বাদে কাশু পেটকু আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
“তুই ঐদিন রাইতে আমার লুঙ্গি খুইলা লুকাইয়া রাখছিলি ক্যান!”
অনেক মাফ টাফ চাইয়া সেইদিন কাশু পেটকুর থেকে ছাড়া পাইছিলাম।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৯
সোহাগ সকাল বলেছেন: তা একটু ছিলাম বটে!
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
গ্রাম্যবালিকা বলেছেন: কাশু পেটকু, নামটা সেইরকম হৈছে! আপ্নেও তো কম যাননা! আমি ভেবেছিলাম, তার উপর পানি ঢেলে দিয়েছেন, বিছানা ভেজানোর দোষ দিবেন বলে।
মজা পেলাম।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪
সোহাগ সকাল বলেছেন: পানি ঢাইলা দেয়ার মতো পুলাপাইন্না কাম করিনা!
উই আর স্ট্যান্ডার্ড!
৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬
রাইভী বলেছেন: হাসতে হাসতে মুইতা দিলাম!
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৫
সোহাগ সকাল বলেছেন: কনকি!!
৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
সবুজ মহান বলেছেন: যেহেতু হেসেছি সেহেতু রম্য ভাল হয়েছে
২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪
সোহাগ সকাল বলেছেন: ধন্যবাদ সবুজ মহান।
শুভ কামনা।
৫| ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
ইরানপন্থী বলেছেন:
hastesi vai
২৭ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১০
সোহাগ সকাল বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৫
সাদা রং- বলেছেন: আপনি তো খুব ফাজিল ছিলেন।