নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুটা প্রকাশিত বাকীটা অপ্রকাশিত
রোদহীন রুদ্র,
জানি না এখন তুই কোথায় আছিস, কেমন আছিস।
আমার জানার যদিও বন্ধ নয় তবুও যে মানুষটি লুকিয়ে থাকতে চায়, তাকে খুঁজে বের করা একটু কঠিনই বটে। তাছাড়া তুই মেয়ে হলে বুঝতি মেয়েরা সব পারে না। মেয়েদের মন সবসময় মন থাকে না। মন পবনের শেকল হয়। আবার কখনও মন টনকে টন পাথরও হয়। তুই বলেছিলি “সব স’য়ে যাওয়ার অপর নাম নারীচরিত্র”। তোর এই কথা আমি বাদামের খোসার মতো সেদিন উড়িয়ে দিয়েছিলাম সত্যি তবে জীবনের ঝাঁজ মেশানো পথে চলতে গিয়ে তা একটু—একটু বুঝতে পারছি কথাগুলো হাতের উল্টো পিঠের মতো সত্যি।
তোর হেয়ালী করা বলা অনেক কথাই আমাকে আজকাল সত্যি আর মিথ্যের জলভরা গ্লাসে রোজ একবার ডুবায় আর ভাসায়। মাঝে মাঝে তোর কথারা সব রঙঘুড়ি হয়ে উড়ে—উড়ে দূরকে আরও দূরের সাথে বেঁধে দিয়ে যায়। আমি যা এড়িয়ে যেতে চাই তা আবার সামনে এসে দাঁড়ায়। আমাকে প্রশ্ন করে তোলে ফেলে আসা রঙহীন কথারা। তুই কথার যাদুকর ছিলি, একদিন তাই হাসতে—হাসতে বলেছিলি, “নিজেকে উৎসর্গ করার মাঝে একটা আনন্দ হয়তো আছে কিন্তু তা’তে জীবনের রঙ থাকে না”। তোর সে রঙযাদু এখনো মন্ত্রের চেয়ে মুগ্ধ করে যায়। আমার চারপাশে আজকাল এতো এতো আনন্দ অথচ কেন জানি সবকিছু রঙহীন মনে হয়। যে মানুষটা সারাজীবন শুধু মানুষকে রাঙ্গিয়ে দেবার স্বপ্ন দেখতো, সে আজ নিজেই রঙহীন হয়ে পথে—প্রান্তরে পড়ে থাকে। কতখানি কষ্ট বুকে জমলে তবে ঘরমুখো মানুষ ঘরহীন হয় তা তোকে না দেখলে বুঝা যাবে না।
রুদ্র, তোর মনে আছে কি?
দু’হাজার আটের এক শুক্লা একাদশীর রাতে তোর সাথে আমার প্রথম কথা হয়েছিলো। সেলফোনের গণ্ডি তখন সবে শহর ছেড়ে মফস্বল হয়ে প্রত্যান্ত গ্রামের দিকে যাত্রা শুরু করেছে মাত্র। তুই সেদিন আমায় গান শুনিয়ে ছিলি। প্রথম পরিচয়ে কেউ যে অমন বিচ্ছিরি গলায় গান গেয়ে কাউকে যন্ত্রণামুগ্ধ করতে পারে সেটা তোর গান না শুনলে কেউ বুঝতেই পারবে না। এরপর প্রায় দুই—হাজার উনষাট দিন কেটে গেছে আমি বহুবার তোর গান শুনেছি কিন্তু প্রথমবারের মতো যন্ত্রণামুগ্ধ হইনি। আজকাল পথ চলতে গেলে যখন কোন লম্বা চুলঅলা পাগল চোখে পড়ে তখনই থমকে যাই। একটু সময়ের জন্য শরীর জুড়ে কাঁপুনি এসে যায়। খুব কৌতূহল নিয়ে পাগলের মুখায়বে তাকিয়ে থাকি। মিনিট—মুহূর্ত কেটে গেলে বুঝতে পারি এটা তুই না। তখন পাথরযন্ত্রণা বুকে নিয়ে পথ চলতে থাকি। তোকে দেখার তৃষ্ণা হয়তো আছে, কিন্তু আমি অমন উন্মাদের বেশে যদি দেখতে পাই তাহলে তাহলে ঠিক থাকতে পারবো না। জানিস্—আমার খুব কান্না পায় এই ভেবে, না জানি একদিন সত্যি—সত্যিই তুই পাগলের বেশে আমার সমুখে দাঁড়িয়ে যাস। কে’জানে একদিন হয়তো তোর কথাই সত্যি হবে; তুই সমস্ত অভিমান নিয়ে আমাদের দংশন করার জন্য উন্মাদ হয়ে রাস্তায় বসে যাবি।
দিঘাপতিয়ার রাজবাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে মনভার করা আকাশ চোখে নিয়ে তুই বলেছিলি, “তুই আর আমি হলাম একটি মুদ্রার এপিঠ—ওপিঠ”। যখন মুদ্রার এপাশে আলোর ঝলকানি পড়ে, তখন অপর পাশে অন্ধকার স্বপ্ন আঁকে। আমরা বন্ধুরা সব আলোর সমুদ্র বুকের মধ্যিখানে নিয়ে ঘুরে বেড়ালেও তুই পরিশেষে অন্ধকারটাকেই বন্ধু করে নিয়ে নিলি। কিন্তু কেন? কিসের অভিমানে?
রুদ্র, অভিমানের বনাঞ্চল হাতের তালুতে ডুবিয়ে দিয়ে এবার নিজের ভূবণে ফিরে আয়। আমি কিংবা আমরা ভালো আছি —বেঁচে আছি সেটাই সুখের উঠোন নয়। তোর অস্তিত্বও কখনো—কখনো আমাদের অম্লজান হয়ে উঠে যা তুই কোনদিন বুঝতে চাস নি। আমাদের অনুভূতির কোন মূল্য হয়তো এখন আর তোর কাছে নেই তবুও ফিরে আয়। জানি না এই পত্রপাঠে তোর কোন ভাবান্তর হবে কিনা। তবুও ভেবে দেখিস। কথাবেলা—খেলা—হেলা আর ফেলার জীবনে যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস।
...............................
কথাইতি-
নাহার___________
নাটোর, মসজিদ রোড।
৪ মার্চ-২০১৬ খ্রি:
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৫
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৯
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: পুরো চিঠিটাই একটি গল্প যেন। প্রিয়তে রেখে দিলাম।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৪
সকাল রয় বলেছেন: শুনে খুশি হলাম। অনেক দিন হয়ে গেলো গল্প লিখি না। অনেক চিঠি লেখা অবস্থায় পড়ে আছে তাই একটি দিলাম।
ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫১
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: রোদহীন রুদ্র ফিরে আসুক জীবনের সমমস্ত উজ্জলতা নিয়ে --
অপূর্ব আবেগ মথিত চিঠি পড়তে ভাল লাগলো
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১০
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ কবি। ভালো আছেন হয়তো।
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৪
জাহিদ অনিক বলেছেন:
রয়কথা, কথামৃত নাকি অমৃত কথা কিংবা মৃত কথা----------- ভালো লেগেছে
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৮
সকাল রয় বলেছেন:
নামকরনে
বা
নামলিপিতে
কথামৃত, কথার মৃত বা কথাঅমৃত।
অনেক অনেক ধন্যবাদ জাহিদ অনিক।
৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৩
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: মনকে নাড়া দিয়ে যাওয়া কথা। ভাল লাগল।
৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩৫
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: ভালোলাগা। প্লাস প্লাস প্লাস
৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৩২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এ যেন সন্মোহন করা কথামালার এক গাঁথুনি। ভাল লাগা অফুরান।
৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪০
সুমন কর বলেছেন: কথাইতি'র চিঠি পড়ে মুগ্ধ হলাম। শুভ রাত্রি।
+।
৯| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩০
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
বেশ সাবলীল চিঠি আলাপণ । নীরব দুঃখ স্পষ্ট । ভাল লেগেছে । নামটা সুন্দর, কথামৃত । যে কথাগুলো ছিলো অমৃত !
১০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:১৬
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
শুভ ভোর ২০১৮!
জীবনের নিঃশ্বাসগুলো সুখের সৌন্দর্য্যে বয়ে যাক....
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: চিঠি পড়লাম। অনেকদিন পর।