![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়য়ের তাড়নায় আজ আমি পড়ে আছি সময়য়ের গ্যাঁড়াকলে।
আমি আমার দেশকে বড়ই ভালবাসি। কিন্তু সমস্যার ব্যাপার হলো আমি এখনো আমার এই দেশকে অনেক ভাল কিছু উপহার দিতে পারিনি। আমি খুব ভাবি এই দেশ নিয়ে। আমার এই তীব্র দেশপ্রেমের দৌড় এই পর্যন্তই।
আমার কাছে কি মনে হয় জানেন? আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশকে যতোটা ভালবাসে, পৃথিবীর আর কোন দেশের মানুষই নিজের দেশকে এতোটা ভালবাসে না। আমি জানি এই ভাবনাটা অযৌক্তিক। কিন্তু আমার কাছে এতোটা অযৌক্তিক মনে হয় না।
আমারা বাঙালিরা অনেক আগে থেকেই দেখে এসেছি কিভাবে ভিনদেশি মানুষ এসে আমাদের সম্পদ লুটেপুটে খায়। আমাদের এই বঙ্গদেশে প্রাচুর্য এবং সম্পদের অভাব ছিল না। আমরা কয়েক শত বছর আগেও অনেক সুখে শান্তিতে থাকতাম। আমাদের খাদ্য, পোশাক, জীবন-সবই খুব সাদামাটা ছিল। সেই সাদামাটাই আমাদের কাছে বহুমূল্যের ছিল। আমরা জানতাম না আধুনিকতা কি জিনিস। আমরা নিজেদের দেশের খাদ্য-বস্ত্র নিয়েই অনেক বেশি সন্তুষ্ট ছিলাম। দিনের বেলা কঠোর কায়িক পরিশ্রম করে রাতের বেলা শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তাম আমরা। কোনকিছুরই অভাব বোধ করতাম না তেমন একটা। আমাদের বঙ্গদেশ তখন ছিল নানাবিধ সম্পদে ভর-পুর।
বাঙ্গালি স্বভাবত অনেক নম্র, অনেক সাধারন আর বেশ আরামপ্রিয়। তবে এই আরামপ্রিয় সাদামাটা জাতির দেশে আজকে এতো অশান্তি কেন? এতো রাজনৈতিক অস্থিরতা কেন? এতো রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণটা হল আমরা নিজেরাই। আমরা সবাই কিন্তু দেশকে প্রচণ্ড ভালবাসি, কি বিএনপি আর কি আওয়ামিলীগ। তবে আমরা কৌশল কম জানি। জানি-ই না বলতে গেলে। আপনি কি ভাবছেন আমি পাগলের প্রলাপ বকছি? আপনি হয়তো প্রশ্ন করছেন-‘কৌশল না জানলে রাজনীতিতে এতো ঝামেলা থাকে কিভাবে?’
হ্যা, ঠিক আছে। আমি মানলাম আমাদের রাজনীতি অনেক জটিল, অনেক ঝামেলাপূর্ণ। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করেছেন? খুব সভ্য দেশগুলোতে কিন্তু মানুষজন রাজনীতি নিয়ে এতো বেশি ক্ষেপে নেই। এটাও হয়তো পাগলের প্রলাপ ভাবছেন। আপনি এখন প্রশ্ন করতে পারেন-‘কই বিদেশেও তো দেখি কতো মানুষ স্ট্রাইক করে, বিদ্রোহ করে। সভ্য দেশেও তো কতো যুদ্ধ হয়..’
বুঝলাম তারাও বিদ্রোহ করে, ভাঙচুর করে, মারামারি করে। কিন্তু কয়দিন ধরে করে? তারা একদিন এসব করলেই ওইদিনই সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। আমাদের এখানকার মতো দিনের পর দিন একইরকম ভাঙচুর-মারামারি চলতে থাকে না। আর যুদ্ধ? যুদ্ধ কারা করছে? যুদ্ধ সেই দেশগুলোই করছে যাদের জোর একটু বেশি অন্যান্য দেশের তুলনায়। যেমন আমেরিকা, ইসরাইল। এদের অস্ত্র-সস্র বেশি, তাই জোর ও বেশি।
হাতেগোনা কয়েকটা বাদে বাকি সব দেশের কথা ভাবুন। চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইটালি, পর্তুগাল, ডেনমার্ক, ক্যানাডা, ইত্যাদি। ওরাও কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশ। ওরাও সরকারের কিছু কিছু ব্যাপারে মেনে নিতে পারে না। তখন তারা স্ট্রাইক করে, আন্দোলন করে-আর তাদের সরকার সেটা দ্রুত সল্ভ করে বা করার চেষ্টা করে। তাদের দেশে দিনের পর দিন রাস্তায় রাস্তায় মারামারি খুনাখুনি করতে হয় না। কারণ কি জানেন? কারণ তাদের সরকার খুব ভালমতো জানে যে জনগণের মন না রাখতে পারলে তাদের নিতম্বের নিচে গদিটাও থাকবে না। তারা খুব ভালমতোই জানে তারা যেই ধরনের রাজনীতি করছে তার নাম হল গণতন্ত্র। তারা জানে জনগণকে সন্তুষ্ট না রাখতে পারলেই ওরা ক্ষমতা পাবে। জনগণের মন জয় না করতে পারলে তারা দিস ওয়ে দ্যাট ওয়ে রাজনীতিতে অসফল হবেই-তথ্যটা তারা জানে।
আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা এই সহজ ব্যাপারটা বুঝতে চায় না। তারা ভাবে মানুষের মন জয় কারাতে এতো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কি দরকার? এর চেয়েও তো অনেক ভাল ভাল পদ্ধতি আছে গদিতে বসে থাকার বা গদি ‘অর্জন’ করার। যেমন ছাত্র রাজনীতি। আমি এখানে বলতে চাচ্ছিনা যে সকল ছাত্র যারা রাজনীতির সাথে জড়িত তারা সবাই খারাপ, বা দেশের খারাপ চায়। এটা যদি বলি তাহলে সেই ১৯৫২ সালের ভাষা শহিদদেরও অপমান করা হবে। তাঁদের অপমান করার কথা ভাবতেই পারি না। তাছাড়া ছাত্র রাজনীতি প্রায় সকল দেশেই আছে। আমাদের দেশের ছাত্রসমাজ যে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার-এটা আমাদের সবারই অনেক গর্বের বিষয়। মূল কথায় আসি। আমাদের রাজনীতিবিদেরা এই ছাত্রসমাজের সুবিধা নিচ্ছে। তাদের একটা বড় অংশকে বিচ্ছিরিভাবে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করছে। আমরা তাই ‘ছাত্র রাজনীতি’ কথাটা শুনলে আতকে উঠি, ভয় পাই। অথচ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে কিন্তু এই ছাত্র রাজনীতির-ই বিশাল ভূমিকা ছিল। আর আমরা এখন এই সময়ের ছাত্র রাজনীতি আর দেশ স্বাধিন হবার সময়কার ছাত্র রাজনীতির মধ্যে কোন মিল খুঁজে পাই না। এই কাজের সাথে জড়িত কোন ছাত্র বলতে আমরা জঙ্গি টাইপ কাউকে বুঝি।
এটা তো একটা কৌশলের কথা লিখলাম আমাদের রাজনীতিবিদদের। আরো কতো ‘মাস্টারমাইন্ড’ উপায় আছে! আমরা আম জনতা এতো কিছু বুঝি নাকি! তো যাই হোক। আসল কথা হলো, এরা জানে কুটিল-জটিল-বক্র-হীন সব উপায় বের করে ক্ষমতা লাভ করতে। অথচ মানুষকে সন্তুষ্ট রেখেও যে সুস্থ সুন্দরভাবে রাজনীতি করা যায়, এটা তারা কেন জানি বোঝে না। বাঙালিদের মতো একটা জাতিকে সন্তুষ্ট রাখা কি কোন বড় ব্যাপার? মনে তো হয় না। যেই জাতি দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একটা বাজে নষ্ট সিস্টেমকে গিলে খাচ্ছে, সেই জাতিকে সন্তুষ্ট রাখা তো আসলে কোন ব্যাপার না।
আমি লেখার শুরুর দিকে বাঙালির অতীতের কথা বলেছি। অতীতে (আমি এখানে বাংলাদেশে ভিনদেশিদের আগমনের আগের কথা বলেছি) বাঙালি কিরকম আরাম-আয়েশে দিন কাটাতো সেই কথা লিখেছি। আমাদের অনেক সম্পদ ছিল, সেই সম্পদই আমাদের অলস করে দিয়েছে। আমরা সুকৌশলের চেয়ে কূটকৌশল শিখেছি। শিখেছি কিভাবে উচ্চ ডিগ্রিধারী হয়ে অনেক টাকা কামানো যায়। আমরা এখন এইটা নিয়ে কম ভাবি কিভাবে আমাদের দেশে খাদ্যশস্য বৃদ্ধি করা যায়। ওগুলা তো কঠিন ব্যাপার। তাছাড়া এই সেক্টরে টাকাপয়সাও কম। কি লাভ এসব ফালতু জিনিস নিয়ে ভাবার? আরো তো মানুষ আছে এগুলো নিয়ে চিন্তা করার।
আমরা বেশি আরাম আয়েশ করতে করতে আরও কি কি শিখেছি তা আরেকটু বলি। বাজারে এমন কোন জিনিস নাই যেটাতে ভেজাল নেই বা কোন নকল নেই। ভাল জিনিসের ব্যবসাতে তো কষ্ট বেশি। সেটার চেয়ে নকল বের করা আর ভেজাল মিশানো অনেক সহজ। ভেজাল নিয়ে আর লিখতে ইচ্ছা করছে না। এটা সবারই চরম বিরক্তির একটা বিষয়।
এই ভেজাল করার মানসিকতা আমাদের মহান রাজনীতিবিদদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে আর কি। তারা সহজ-স্বাভাবিক ভাবে মানুষের মন জয় করবে না। তারা নানা ধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করবে। জনগণ আবার কি জিনিস? এরা মানুষ নাকি? কে পাত্তা দেয় এদের? জনগণ তো খালি পারে ঝামেলা বাঁধাতে। ক্ষমতা তো তাদের-ই হাতে। তারাই দেশের ভালোমন্দ বুঝবে। আর জনগণ হল তাদের খেলার পুতুল। মাঝে মধ্যে একটু নাচায় আর কি। এদের আবার মন-টন কি? এদের তো মানুষই বলা চলে না!!
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৯
সময়ের গ্যাঁড়াকল বলেছেন: নাহ এখন তো ডিজিটাল তাই চুরুট চায়
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৬
নিলু বলেছেন: শুধু ভোটের সময় বিড়ি চায়