নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধুই মানুষ

সম্রাট ইজ বেস্ট

নিঃশব্দ সময় পেরিয়েছে ধাপে ধাপে মৌনতায়, কালে কালে কেটে গেছে অযুত নিকষ প্রহর; আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা নিযুত স্পর্শের ঘ্রাণ, প্রতিদিন চুপিসারে বয়ে চলে বুকের ভেতর৷

সম্রাট ইজ বেস্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবী বিখ্যাত রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনা: নরমাংস ভক্ষণ করে বেঁচে থাকার এক অত্যাশ্চর্য আর লোমহর্ষক কাহিনী- শেষ পর্ব

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১০

প্রথম পর্ব: এখানে Click This Link

দ্বিতীয় পর্ব: এখানে Click This Link

২১ অক্টোবর রাতে একটি ছেলে ফিউজিলাজের বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। হঠাৎ করেই সে একদম অক্ষত ও ব্যাটারি ঠিক আছে এমন একটি ট্র্যানজিস্টার রেডিও পেয়ে গেল। পরদিন ২২ অক্টোবর রোববার সকাল সাতটার দিকে ট্র্যানজিস্টারটা নিয়ে বাইরে এলো ছেলেরা। খবর শোনার জন্য টিউন করল। কিন্তু খবর শুনে প্রচন্ড ধাক্কা খেল। ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে হারিয়ে যাওয়া উরুগুয়ের বিমান ফেয়ারচাইল্ডের অনুসন্ধান কাজ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। সবাই হতাশায় মুষড়ে পড়ল। কিন্তু একজন উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখাল। সে বলল, 'এখন আমরা অপেক্ষা করার উদ্বেগ থেকে মুক্ত হলাম। এখন নিজেরাই এই বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করব।'



বিধ্বস্ত হওয়ার আটদিনের মাথায় সব খাবার ফুরিয়ে গেল। খাবার শেষ হবার পর টুথপেস্ট খেলো ওরা। টুথপেস্ট শেষ হবার পর খাবারের চিন্তায় পাগল হয়ে উঠল সবাই। ইতোমধ্যে প্রতিদিনের খাবার পানির চাহিদা পূরণ করার এক অভিনব পদ্ধতি বের করে ফেলেছে ওরা। প্লেনে অ্যালুমিনিয়ামের কোন অভাব ছিল না। অ্যালুমিনিয়ামের পাত সূর্যের তাপে গরম করে তাতে তুষার ফেললেই পানি হয়ে যায়। তা বিভিন্ন বোতল বা পাত্রে সংরক্ষণ করে দৈনিক চাহিদার পানির অভাব দূর করে ফেলল ছেলেরা। প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরো দিয়ে গগলস বানিয়ে ব্যবহার করায় অন্ধত্বের হাত থেকেও বেঁচে গেল ওরা। কিন্তু খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পর সত্যিকার দুশ্চিন্তা দেখা দিল। আশেপাশে শুধু বরফ আর পাহাড়ের পাথুরে চূড়া ছাড়া আর কিছুই নেই। শৈবাল, গাছের শেকড় বা ঘাস বিচালির কোন চিহ্নই চোখে পড়ে না। সুস্বাস্থ্যের অধিকারি রাগবি খেলোয়াড় ছেলেরা কঠোর প্রতিকূলতার মাঝে বেশ দুর্বল হয়ে পড়ল। সবার চোখই গর্তে বসে গেছে। অনেকেই বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়ে অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছে, সে জায়গা দখল করেছে জীবনের প্রতি তীব্র অনীহা আর উদাসীনতা। কোন অবস্থাতেই যখন খাবারের ব্যবস্থা করা গেল না, তখন মেডিক্যালের ছাত্র রবার্তো কানেজা বিকল্প খাবারের ভয়াবহ অথচ যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাবটা উত্থাপন করল। অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে কথাটা বলে গেল কানেজা। তার প্রস্তাবের মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত যুক্তিও ছিল। প্রস্তাবে কারও ওপর জোর করল না সে। তবে বুঝিয়ে বলল যে, অবস্থাদৃষ্টে খাদ্যের অভাবে সবাইকে প্রোটিনের ঘাটতি ও অপুষ্টিতে মারা যেতে হবে। বসন্তকালের আগে বরফ গলবে না। আর বরফ না গললে শক্তসমর্থ কেউ হেঁটে গিয়ে লোকালয় থেকে অন্যদের জন্য সাহায্যও পাঠাতে পারবে না। সমাধিস্থলে দশটি মৃতদেহ রয়েছে। জীবিতদের তিন আত্মীয়ের মৃতদেহ বাদ দিলেও আরও সাতটি মৃতদেহ থাকে। এই সাতটি দেহ জীবিত ছাব্বিশজনকে এক মাসের বেশী সময় ধরে প্রোটিন যোগাতে পারবে। সুতরাং সিদ্ধান্ত যার যার কাছে। মৃতদের মাংস খেয়ে জীবন রক্ষা করবে নাকি জীবনের আশা ত্যাগ করবে?

এমন ভয়াবহ, অমানবিক আর নিষ্ঠুরতম প্রস্তাব শুনে আঁতকে উঠল ছেলেরা। অবিশ্বাসে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল সবার। মৃত বন্ধু আর স্বজনদের মাংস খাওয়া! এ যে অকল্পনীয়!! যারা একসময় ছিল জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, যাদের সাথে হেসেখেলে জীবনের অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়েছে; যারা একসময় প্রাণাধিক প্রিয় ছিল, যাদের সাহচর্যে জীবনের মধুরতম সময়গুলো কেটেছে- তাদের শরীরকে ছিঁড়েখু্ঁড়ে, কুপিয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে, দুই চোয়ালের নিষ্পেষণে দলিতমথিত করে গলাধঃকরণ করা!!! এর চেয়ে ভয়ঙ্কর, এর চেয়ে নিষ্ঠুরতম, এর চেয়ে জঘন্য, এর চেয়ে অমানবিক কাজ আর কী হতে পারে? এমন অকল্পনীয় আর অমানবিক প্রস্তাব কিভাবে দিতে পারল রবার্তো কানেজা? তার কি মৃত বন্ধু আর আত্মীয়দের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই? এমন অবলীলায় প্রস্তাবটা কিভাবে উত্থাপন করল সে?

প্রস্তাব শুনে হতাশায় মুষড়ে পড়ল সবাই। কিন্তু জীবন বাঁচানোর আর কোন উপায় খুঁজে বের করতে পারল না তারা। অগত্যা কানেজার প্রস্তাবটা নিয়ে ভাবতে শুরু করল মনে মনে।



অবশেষে নানা যুক্তিতর্কের পর নিরুপায় হয়ে, একান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য আত্মীয়দের দেহগুলো বাদ দিয়ে মৃত বন্ধুদের মাংস খাওয়াই স্থির করল ওরা। যেহেতু মৃতদেহগুলো কারো কোন কাজেই আসবে না এবং জীবিতদের জীবন বাঁচানোর কাজে লাগবে, তাই ওরা আশা করল ঈশ্বর ওদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু জ্বালানী ছাড়া এত মাংস রান্না করে খাওয়ার কোন উপায় নেই। এ সমস্যারও সমাধান করল রবার্তো কানেজা। উরুগুয়ে থাকতে ক্যাম্পিং করতে গেলে সঙ্গে শুকনো গরুর মাংস নিয়ে যেত; স্থানীয়ভাবে একে চারকুই বলা হয়। কাঁচা মাংস রোদে শুকিয়ে চারকুই বানানো হয়। খুবই প্রোটিন ও খনিজসমৃদ্ধ এবং কোনরকম রিফ্রিজারেশনের প্রয়োজন হয় না বলে এটা কাউবয়দের নিকট খুবই প্রিয় খাদ্য। তাই মৃত বন্ধুদের মাংস থেকে ব্যাপকভাবে চারকুই তৈরী করার কাজ শুরু করে দিল কানেজা। মৃতদেহগুলো সমাধিস্থল থেকে বের করে এনে ফেয়ারচাইল্ডের ভেতর থেকে পাওয়া স্টীলের কুড়ালের সাহায্যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো কেটে কেটে আলাদা করার ব্যবস্থ করল সে। ক্ষত-বিক্ষত পচন ধরা জায়গাগুলো আলাদা করে ফেলে দিয়ে অন্যান্য মাংসল অংশ থেকে ব্লেড দিয়ে ছোট্ট করে পাতলা পাতলা টুকরো করা হল। হার্ট, লিভার, কিডনি, ব্রেনসহ মানবদেহের খাবার উপযুক্ত সবটাই কাজে লাগাল কানেজা। টুকরোগুলোকে সে অ্যালুমিনিয়ামের পাতের উপর বিছিয়ে রোদে দিল। তার উপর অন্য পাত দিয়ে সূর্যকিরণ প্রতিবিম্বিত করে তাপ বৃদ্ধির ব্যবস্থাও করল। প্রথম প্রথম কানেজা একাই মাংস কাটার কাজ করে যেতে লাগল। তারপর আস্তে আস্তে ব্যাপারটা সবার চোখ সওয়া হয়ে যাবার পর প্রায় সবাই বন্ধুদের দেহগুলো কসাইদের মত কাটা ও শুকানোর কাজ শুরু করল।



দিনে দুবার চারকুল পরিবেশন করা হত। কিন্তু কয়েকদিনেই এই খাবারে অরুচি ধরে গেল ছেলেদের। এই খাবারে কোন স্বাদ ছিল না। শুধুমাত্র জীবনধারণের তাগিদে শুকনো মাংসের শক্ত টুকরোগুলো পানির সাথে পেটে চালান করে দিত ওরা। তবে ওদের শরীরে ক্রমেই শক্তি ফিরে আসছিল। কিন্তু বরফ গলে গিয়ে অভিযান চালানোর সময় পর্যন্ত এই খাবারেও চলবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। এর মধ্যেই আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেল। হিমবাহের চাপে ফিউজিলাজে তুষার ঢুকে পড়ায় তার নিচে চাপা পড়ে আরও সাতজন যাত্রীর প্রাণপাখি অসীমের পানে উড়াল দিল। এই সাতজনকে হারিয়ে ছেলেরা আরও ভেঙে পড়ল। তবে সাতটি প্রাণ ঝরে গেলেও জীবিতদের জন্য তা কিছুটা উপকারীই হল। আরও কয়েকদিন বেঁচে থাকার উপকরণ জোগাড় হল।

নভেম্বরের শেষের দিকে অ্যান্ডেজের আবহাওয়া ক্রমশ ভালো হতে লাগল। বরফ গলতে শুরু করল। ছেলেদের মনে আশার আলো জ্বলে উঠল। এর মধ্যে ইচাভারেন নামে আরও একটি ছেলে মারা গেল। ইচাভারেনের মৃত্যু ওদের মধ্যে বিরাট এক আলোড়ন সৃষ্টি করল। যত বিপজ্জনকই হোক, অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল ওরা। অভিযানের জন্য দলের মধ্যে শারীরিকভাবে সবচেয়ে ফিট ও শক্তসমর্থ তিনজনকে বাছাই করা হল। নান্দো প্যারাডো, রবার্তো কানেজা ও ভিজিনটিন। এই তিনজনকে অভিযানের জন্য তৈরী করা শুরু হল। দুসপ্তাহ তাদেরকে বেশী করে খাওয়ানো হল। দিনের বেলা বিশেষ ব্যায়াম করল, আর স্লিপিং ব্যাগ তৈরী করে রাতে তারা খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে প্র্যাকটিস করল। কাছাকাছি ছোটখাট অভিযান চালিয়ে নিজেদেরকে ঝালাই করে নিল ওরা। তাদের চারিদিকে বেষ্টন করে থাকা পর্বত আর গিরিশৃঙ্গের নকশা মনে মনে গেঁথে নিল। যদি সভ্যজগতে পৌঁছুতে পারে তবে উদ্ধারকারি দল নিয়ে যেন ফিরে আসতে পারে।



ডিসেম্বরের ১২ তারিখে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হল। পনের দিনের খাবার, এক বোতল পানি ও এক বোতল মদ নিয়ে যাত্রা শুরু করল তিনজন। ভোর চারটেয় পশ্চিমদিকে যাত্রা করল ওরা। কিন্তু মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যেই ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ল। বুঝতে পারল ওদের প্রথমদিনের লক্ষ্যমাত্রার মাত্র এক তৃতীয়াংশ পাড়ি দিতে পেরেছে। পর্বতারোহণের কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া এই বিশাল অ্যান্ডেজ পাড়ি দেয়া যে আত্মহত্যারই নামান্তর তা ওরা বেশ বুঝতে পারল। দ্বিতীয় দিনেও প্রথম দিনেরই পুনরাবৃত্তি হল। অবস্থা দেখে তিনজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিল, কেউ আহত হলে তাকে ফেলেই বাকিরা এগিয়ে যাবে। ওদিকে ফিউজিলাজের পাশে দাঁডিয়ে থাকা বাকিরা এই তিনজনের অগ্রগতির নমুনা দেখে যারপরনাই হতাশ হল। এদিকে প্যারাডো অনেক কসরত করে পর্বতের চূড়ায় উঠে অ্যান্ডেজের বিশাল বিস্তৃতি দেখে বুঝতে পারল কো-পাইলট লাগুরারা মরার সময় প্রলাপ বকে ওদেরকে ভুল তথ্য দিয়ে গেছেন। তারা মনে করেছিল অ্যান্ডেজের মাত্র মাইল দশেক ভেতরে আছে ওরা, কিন্তু ওদের এই ভুল ধারণা অচিরেই ভেঙে গেল। ধারণার চেয়ে অনেক বেশী পথ পাড়ি দিতে হবে, আর তার জন্য আরও বেশী খাবার প্রয়োজন হবে; তাই অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভিজিনটিনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হল। ভিজিনটিনের খাবার ওরা দুজন ভাগ করে নিয়ে রওনা হল। ভিজিনটিন মাত্র আধঘন্টায় ওদের কষ্ট করে ওঠা তিনদিনের পথ তরতর করে নেমে এল। নেমে এসে বাকিদেরকে দুঃসংবাদ শোনাল যে, ওদের অনুমানের চেয়ে অনেক বেশী পথ পাড়ি দিতে হবে। সময় লাগবে অনেক বেশী। সবচেয়ে বড় কথা- ওরা দুজন আদৌ লোকালয়ে পৌঁছুতে পারবে কিনা তাতেও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এসব শুনে বাকিরা হতাশায় একেবারে মুষড়ে পড়ল। তাদের আশার নিভু নিভু প্রদীপটাও যেন এক ফুঁয়ে নিভে গেল।




দিন গড়িয়ে সপ্তাহ, সপ্তাহ গড়িয়ে কেটে গেল দুই মাস। ছেলেদের মা-বাবা, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন প্রায় সবাই ওদের আশা ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু সবাই আশা ছেড়ে দিলেও দুই অভিযাত্রী তখনো নিজেদের উপর আত্মবিশ্বাস হারায়নি। সতেরোই ডিসেম্বরে তারা দুজন ঠান্ডা, ক্ষুধা, তৃষ্ণা আর চরম প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করে অবশেষে সভ্যতার কাছাকাছি এসে পৌঁছুতে সক্ষম হল। একটি খালি খাবারের কৌটা দেখতে পেল ওরা। পরিত্যক্ত একটা খাবারের কৌটা দুজনের মনেই আশা ও উত্তেজনার স্রোত বইয়ে দিল। ওরা বুঝতে পারল, সভ্যতার কাছাকাছি এসে পড়েছে। ডিসেম্বরের বিশ তারিখে ক্ষুধায় তৃষ্ণায় ভেঙে পড়া দুই অভিযাত্রী শরীরকে কোনমতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এক জঙ্গলের কাছে পৌঁছুল। দেখল সেখানে কিছু গরু চরছে। কিন্তু কোন মানুষের দেখা পেল না। আরও কিছুদূর হামাগুড়ি দিয়ে চলার পর সামনে একটা খরস্রোতা নদী দেখতে পেল ওরা। আর এক পা-ও যেন চলতে পারছিল না দুজন। বাধ্য হয়ে ওখানেই শুয়ে পড়ল। দিন গড়িয়ে গেল। সন্ধ্যার দিকে একজন অশ্বারোহীকে দূর থেকে নদীর ওপারে দেখতে পেল ওরা। নিজেদের হাতে থাকা অ্যালুমিনিয়ামের রড নাড়তে নাড়তে চিৎকার করে অশ্বারোহীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইল, কিন্তু গলায় তেমন জোর না থাকায় আর নদীর কলকল শব্দে তাদের চিৎকার চাপা পড়ে গেল। তবে মনে হল লোকটা তাদের দেখতে পেয়েছে। তারপর দেখল অশ্বারোহী ফিরে চলে যাচ্ছে।

অশ্বারোহী লোকটা ছিল গরুর পালের মালিক। সে ছেলে দুটোকে দেখার পর নিজের ক্যাম্পে ফিরে গিয়ে নিজের ছেলেদের কাছে আগন্তুক দুজনের ব্যাপারটা জানিয়ে আলোচনা করল। আলোচনা শেষে আগন্তুকদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিল সে। তার নাম ছিল ক্যাটালান। সে প্রথমে মনে করেছিল ওরা দুজন জেলভাঙা আসামি বা কোন সন্ত্রাসী দলের সদস্য হবে হয়ত। তাই আর এগিয়ে যায়নি। বিমান দুর্ঘটনার কথা তার জানা ছিল। কিন্তু দুমাসের বেশী অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ওরা দুজন বিমানের জীবিত যাত্রী হতে পারে এবং বিশাল পর্বত ডিঙিয়ে এখান পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে এটা তার কাছে স্রেফ অবিশ্বাস্য ছিল। কিন্তু তারপরও ছেলেদের সাথে পরামর্শ করে পরদিন সকালে ক্যাটালান চারটে পাঁউরুটি ও চার টুকরো পনির নিয়ে নদীর পারে এসে পৌঁছুল। নদীর একেবারে কিনারায় পৌঁছে খাদ্যগুলো ওদের দিকে ছুড়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে খাবারগুলোর উপর হামলে পড়ল দুজন। চেটেপুটে খাওয়ার পর ক্যাটালানের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার হাসি হাসল ওরা। তারপর প্যারাডো পকেট থেকে কাগজ আর লিপস্টিক বের করে "এস ও এস" লিখে কাগজটা পাথরে মুড়ে নদীর এপারে ছুড়ে মারল। ক্যাটালান কাগজ কুড়িয়ে নিয়ে পড়ল। পড়ার পর বুঝতে পারল ওরা বিপদে পড়ে সাহায্য চাইছে। তাই আরও বিস্তারিত জানতে চেয়ে একটা পেন্সিলসহ কাগজটা আবার ওদের দিকে ছুড়ে মারল সে। প্যারাডো তাতে সংক্ষেপে বিমান দুর্ঘটনার কথা আর ওদের দুজনের টানা দশদিন হেঁটে পর্বত ডিঙিয়ে আসার কথা লিখে সাহায্য চাইল। অবিশ্বাসে চোখ বড় বড় হয়ে গেল ক্যাটালানের। তারপর আর দেরী না করে ঘোড়া ছুটিয়ে দিল সে। তিরিশ মাইল দূরের পুয়েন্টো নেগ্রো গিয়ে আরও সাহায্য আনতে হবে।

চলতে চলতেই পথে বন্ধু সারদাকে পেয়ে গেল ক্যাটালান। তাকে সব খুলে বলল সে। সারদা বিন্দুমাত্র দেরী না করে ছেলে দুজনের কাছে পৌঁছে গেল। ওদের কাছে সব শুনে ক্যাম্পে এসে ওদের দুজনের জন্য ঘোড়া নিয়ে গেল সে। তারপর ফিরতি পথে ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে ঘোড়া ছোটাল। দীর্ঘ দুই মাস বারো দিন পর ডিসেম্বরের একুশ তারিখের দুপুরে ফেয়ারচাইল্ডের জীবিত কোন যাত্রী সভ্যজগতে পৌঁছুতে সক্ষম হল। ক্যাম্পে পৌঁছার পর ওখানকার কাউবয়রা স্বাগত জানাল ওদের। তারপর লাঞ্চ খেতে দিল। খেতে খেতে সবাই শুনল ওদের বিস্ময়কর অবিশ্বাস্য বেঁচে থাকার কাহিনী।

সূত্র: ইন্টারনেট ও সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বই ‘আন্দেজের বন্দি’।

মন্তব্য ৬৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৬৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩৩

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: খুবই দক্ষতার ছাপ রেখেছেন প্রতিটি শব্দের মিছিলে মিছিলে।

ভাল লাগলো প্রিয়।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিতও হলাম। শুভকামনা রইল।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩৪

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: এই ঘটনাগুলোর একধরণের টেনে নিয়ে আসে। আর সেটার কাজ করে লেখকের লেখার কৌশল।

ধন্যবাদ।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫৪

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: লেখার কৌশল কেমন হয়েছে জানি না তবে আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আমি সার্থক। আবারও আপনাকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩৯

অনেক কথা বলতে চাই বলেছেন: বাকিদের কখন আনতে গেল? সেটা লিখলেন না? নাকি পরের পরবে?

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:০০

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: না, পরের পর্ব আর আসছে না। তবে সংক্ষেপে জানিয়ে দিই। ক্যাটালান তিরিশ মাইল দূরের শহরে পৌঁছে সেখানকার পুলিশ স্টেশনে খবরটা জানায়। প্রথমে অবিশ্বাস করলেও স্টেশন ইনচার্জ ব্যাপারটা ঊর্ধতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনিও প্রথমে অবিশ্বাস করেন। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। তারপর সবাইকে উদ্ধার করা হয়।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বুকমার্কড। ইন্টারেস্টিং পোস্ট। পরে পড়বো।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:০২

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: বুকমার্ক করে রাখার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। পড়ে অবশ্যই মতামত জানাবেন খলিল ভাই। শুভকামনা রইল।

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৪

রাকু হাসান বলেছেন: কত বিচিত্র কত অদ্ভুদ । :|| । সুন্দর করে লিখেছেন । প্রিয়তে নিলাম ,আবার পড়বো । বিষয়টা জানতাম ই আমি । কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি । শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:০৫

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সত্যিই বিচিত্র আর অদ্ভুত! এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা দ্বিতীয়টি ঘটেছিল কিনা সন্দেহ আছে। আপনাকে কিছুটা হলেও খুশি করতে পেরেছি জেনে খুবই আনন্দিত হলাম। আপনাকেও পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৪

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: দুর্দান্ত কাহিনী, এটা নিয়ে সিনেমা বানালে টাইটানিকের মত হিট হবে....



এক আফ্রিকানের কাছ থেকে চারকন খেয়েছিলাম। দড়ির মত শক্ত, নোনতা, বিশ্বাদ...:(


লোকগুলো নিশ্চিত মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে এসেছে। তবে উদ্ধার কাজ বন্ধ করা ঠিক হয় নি। এসব ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া দরকার, উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ধার কাজ অতি দ্রুত যেন হয়...

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: জ্বী মন্ডল ভাই। সত্যিই দুর্দান্ত কাহিনী। সিনেমা বেশ ক’টাই হয়েছে। বইও লেখা হয়েছে বেশ ক’টা। আসলে প্রথমবার ছোট থাকতে পড়েছিলাম। তখনই সাংঘাতিক রোমাঞ্চকর লেগেছিল আমার কাছে। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

আপনার কাছে ভালো লেগেছে মানে একেবারে খারাপ লিখিনি। কী বলেন? :)

৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

অপ্‌সরা বলেছেন: কি সাংঘাতিক!

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: হ্যাঁ শায়মাপু। একেবারে সাংঘাতিকের চেয়েও মারাত্মক। এমন ঘটনার নজির পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই।

৮| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৩৩

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: দুনিয়াটাই আসলে বিচিত্রময়। লোকগুলো বেঁচে ফিরে আসাটা একটা অলৌকিক ঘটনা।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সত্যিই তাই। এমন অলৌকিক ঘটনার নজির নেই বললেই চলে।

পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ কবি। শুভকামনা রইল।

৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: ইউটিউবে এসব তথ্যের উপর নির্মিত প্রতিবেদন মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। তবে সত্যমিথ্যা দ্বন্দ্বে ভোগার ফলে এখন আর দেখি না।
কয়েকদিন আগে আপনার দ্বিতীয় পোস্ট (সম্ভবত) পড়েছিলাম।

প্রিয়তে রাখলাম।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সম্মানীত করলেন জুনায়েদ ভাই। এ ঘটনাটা পুরোপুরি সত্য। বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীদের মধ্যেই কয়েকজন এ নিয়ে বই লিখেছেন। আর ঘটনাটা তখন সারা দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

১০| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:০২

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: খুবই দুঃখজনক, সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে দুর্ঘটনা থেকে ফিরে আসা লোকদের। ডিসকভারি চ্যানেলটি আসলে মাঝেমধ্যে এরকম বিমান দুর্ঘটনায় পাহাড়ে বা জঙ্গলে অথবা সাগরে আটকা পড়া মানুষদের বেঁচে থাকার পরামর্শ দিয়ে আসছে, অনেকেই হয়তো দেখে না, তবে আমি মনে করি সেইসব সার্ভাইভ অনুষ্ঠান দেখা উচিৎ, তাতে বিপদের সময় কিছুটা ধারণা কাজে আসতে পারে।

ভালো লাগলো ভাই

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ নয়ন ভাই। আপনাকে বেশ কিছুদিন পরে দেখলাম। আশা করি ভালো আছেন।
হ্যাঁ, সারভাইভাল অনুষ্ঠানগুলো দেখা উচিত। কখন কার কাজে লেগে যায় কেউ বলতে পারবে না।
কষ্ট করে পড়া ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৫

বাকপ্রবাস বলেছেন: আমি সাধারণত এই টাইপ লেখা বা বই পড়িনা, আজ পড়লাম, ভালই লাগল।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল। ভালো থাকুন।

১২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



এই বিমান দূর্ঘটনা সম্বন্ধে জানতাম না৷জানলাম৷++++

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: প্রিয় কাউসার ভাইকে পেয়ে ভালো লাগল। আপনাকে জানাতে পেরে খুশি লাগছে। আমি যদিও অনেক সংক্ষেপে লিখেছি তারপরও মূল ঘটনা মোটামুটি তুলে ধরতে পেরেছি।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ কাউসার ভাই। ভালো থাকুন।

১৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৩৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: হ্যা ভাই, আল্লাহর রহমত আপনাদের দোআয় ভালো আছি।
সবসময় ব্লগে থাকতে পারিনা, মাঝেমধ্যে আসি যাই। নতুন জায়গায় পুষ্টিং, তাই একটু মানসিকভাবে বিষণ্ণতায় আছি।

দোয়া রাখবেন ভাই
শুভকামনা আপনার জন্য সবসময়

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: দোয়া করি বিষণ্ণতা কেটে গিয়ে সুখ আর হাসিতে ঝলমলিয়ে উঠুক আপনার জীবন! শুভকামনা আপনার জন্যও।

১৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: তিন পর্বের কাহিনীর সমাপ্তি চমৎকার হয়েছে। পর্বগুলোর মাঝের গ‍্যাপ আরেকটু কম হলে ভালো হতো। চমৎকার সিরিজটি উপহার দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ, সম্রাট ইজ বেস্ট।

এই ঘটনা নিয়ে বিচিত্রায় একটা লেখা বের হয়েছিল। তাতে ছিল যে, সংবাদ সম্মেলনে যখন অভিযাত্রীদের জিজ্ঞেস করা হয় তারা এই দীর্ঘ সময় কিভাবে বেঁচে ছিল, তখন তারা উত্তর দিতে পারেনি এবং একেবারে ভেঙে পড়েছিল। পরে তারা একজন পাদ্রীর কাছে জানায় যে তারা নরমাংস খেয়ে বেঁচে ছিল। তখন পাদ্রী তাদের জানান যে প্রাণ বাঁচাতে তারা যা করেছে তাতে কোন ভুল হয়নি। এই প্রসঙ্গে আমার মনে পড়ে, কুরআনের হালাল হারাম সংক্রান্ত আয়াত। সেখানে কিছু খাবার হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তারপর বলা হয়েছে সেগুলো খাওয়া চলে, যদি কেউ সীমালংঘন না করে অনন্যোপায় হয়ে খায়।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ নিন আপনার অপূর্ব সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আর একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও পর্বগুলোর মধ্যে গ্যাপ বড় হয়ে যাওয়ায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত! আসলে ব্যস্ততা একটু বেশী যাচ্ছে বলে সবসময় ব্লগে আসতে পারি না। তারওপর আমার টাইপ করতে বিরাট আলসেমি লাগে। তাই আপনাদের বেশী অপেক্ষা করিয়ে রাখতে হয়েছে। আবারও সরি!

বিচিত্রার লেখাটা পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তবে বর্ণনাটা সঠিক। আমি আরও সংক্ষেপে লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত করলে মূল ঘটনাটা হৃদয়ঙ্গম করা অনেকের জন্য বেশ কঠিন হয়ে যেত। তাই তিন পর্ব হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধারপরবর্তী ঘটনাটা আর লিখিনি। বেশী বড় লেখা অনেকের জন্য বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ানোর সমূহ সম্ভাবনা ছিল। তাই বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে সভ্যজগতে ফিরে আসার মধ্যেই লেখাটা সীমাবদ্ধ রেখেছি। উদ্ধার পরবর্তী ঘটনাগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে আর লেখার কলেবর বৃদ্ধি করার চেষ্টা করিনি।

আর অপারগ হয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য সীমা লঙ্ঘন না করে এমন খাদ্য গ্রহণ করার অনুমতি আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে বলে আমিও জানি।

সবশেষে আপনার উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানাচ্ছি। ভালো থাকবেন।

১৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টা আগে একবার পড়েছি বলে মনে হচ্ছে।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: জ্বী রাজীব ভাই। হয়ত আগের পর্বগুলো পড়া হয়েছিল আপনার। ধন্যবাদ আবারও পড়ার জন্য।

১৬| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবন যুদ্ধের এক রোমহর্ষক কাহিনী!
অনেক অনেক ধন্যবাদ শেয়ারে।

সিরিজটি মনে রাখার মতো হয়ে রইল :)

+++

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সত্যিই অবিশ্বাস্য কাহিনী! জীবনে এমন যুদ্ধ হয়ত অনেকেরই করতে হয় তবে এ ঘটনাটা স্মরণীয় হয়ে আছে মৃত সহযাত্রীদের মাংস খাওয়ার জন্য। যদিও কাজটা নিরুপায় হওয়ার কারণেই করতে হয়েছিল। তাই বিশ্ববাসী ওদের কাজে কোন দোষ খুঁজে পায়নি।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভৃগু ভাই। সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।

১৭| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭

আখেনাটেন বলেছেন: কত অদ্ভুত ব্যাপারই না পৃথিবীতে ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত।

আপনার এই লেখার পর্বগুলি ব্লগের সম্পদ হয়ে থাকবে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৪

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ধন্যবাদ আখেনাটেন। আপনাদের মত পাঠক থাকলে লিখেও তৃপ্তি। অনুপ্রেরণা পেলাম। আশা করি সামনেও পাশে থাকবেন। শুভকামনা রইল।

১৮| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪

শিখা রহমান বলেছেন: ঘটনাটা আগেই শুনেছিলাম। আপনার লেখায় আবারো পড়লাম। খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন।

লেখাটা আগে পড়লেও মন্তব্য করা হয়নি। আপনাকে অনেক দিন ব্লগে দেখছি না যে।

আশাকরি ভালো আছেন কবি সম্রাট। শুভকামনা নিরন্তর!!

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: কেমন আছেন আপনি? অধমকে মনে রেখেছেন জেনে যারপরনাই খুশি হলাম! বেশ কিছুদিন ব্লগে আসতে পারিনি। বিভিন্ন কাজে একটু ব্যস্ত ছিলাম। আপনার সব লেখাও পড়া হয়নি। আশা করি সময় করে সব পড়ে নিতে পারব!

আপনার জন্যও অফুরান শুভকামনা রইল!! ভালো থাকুন সবসময়!

১৯| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২৯

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: সম্রাট ভাই কেমন আছেন?

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্! ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? একটু ব্যস্ত ছিলাম। কিছুদিন ব্লগে আসতে পারিনি। আপনার সব খবর ভালো তো?

২০| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯

আবু তালেব শেখ বলেছেন: এই ঘটনা নিয়ে যদি মুভি তৈরি হয় তাহলে মুভির নামটা বলেন। দেখে আরো কৌতুহল নিবৃত্ত হবে।
পোস্ট++

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:০৪

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ধন্যবাদ আবু তালেব ভাই! মুভি বেশ কয়েকটাই হয়েছে তবে আপনি চাইলে এই মুভিটা দেখতে পারেন। https://www.youtube.com/watch?v=I0N3n2_ac_o

এটা তৈরী হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। এছাড়াও ইউটিউবে অনেক ডকুমেন্টারি আছে। সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।

পড়া ও মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

২১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: ভাই অনেকদিন পর আসলাম!
ভুলে গেলেন মনে হয়! কেমন আছেন?

০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: না ভাই, আপনাদের এমন আন্তরিকতা কি ভুলে থাকা সম্ভব? অধমকে স্মরণে রেখেছেন দেখে কৃতজ্ঞতা বোধ করছি। আসলে একটু ব্যস্ত ছিলাম, এখনও আছি। তবে ব্লগে উপস্থিতি আছে। যদিও লেখা বা কমেন্টের সময় বের করা যাচ্ছে না তারপরও আশা করি খুব শীঘ্রই আবার নিয়মিত হব ইনশাআল্লাহ। আপনার জন্য অফুরান শুভকামনা!

২২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

বিজন রয় বলেছেন: আপনি কেমন আছেন? অনেক দিন ধরে আপনাকে মিস করছি।

নতুন পোস্ট দিন।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ বিজনদা! আপনারা আমাকে মিস করছেন জেনে যারপরনাই খুশি লাগছে। আশা করি আশা করি খুব শীঘ্রই আবার নিয়মিত হব! ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!

২৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আপনি কোথায় ?

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আছি আপনাদের আশেপাশেই। একটু ব্যস্ত। আপনি কেমন আছেন? অধমকে খুঁজেছেন দেখে ভালো লাগল।

২৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: রতনে রতন চেনে, অধমে অধম । আমি ভালো আছি সামান্য ব্যাস্ত, আপনি কেমন আছেন ?

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আমিও ভালো ও সামান্য ব্যস্ত আছি। সময় ও সুযোগমত আপনাদেরকে জ্বালাতে আসব। ততক্ষণ ভালো থাকুন।

২৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: পড়তে পড়তে চোখে জ্বল এসে যায়। কি করুণ কাহিনী।

যদিও আগে ফিচার পড়েছিলাম এটা নিয়ে।

দারুন লিখেছেন।

+++++

নতুন কোন পোস্ট দিচ্ছেন না কেন ? ব্যস্ত ?

১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ধন্যবাদ মাইদুল ভাই। কাহিনীটা সত্যিই খুবই করুণ। প্রথমবার পড়ে আমার মনটাও ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পড়া ও মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ।

আমি আসলে একটু ব্যস্ত ছিলাম, এখনও তাই। তবে সময় ও সুযোগ পেলে পোস্ট অবশ্যই দেব ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন। ভালো থাকুন।

২৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২১

জুন বলেছেন: উরুগুয়ের এই রাগবী দলের কাহিনীটি যে আমি কত শতবার পড়েছি তার ঠিক নেই সম্রাট । নান্দো পারাদোর বিশাল মনের প্রথম পরিচয় পেয়েছিলাম যখন সে তার মা বোনের মৃতদেহ খেতে বলে গিয়েছিল তাদের সহযাত্রীদের । এক শ্বাসরুদ্ধকর ভয়ংকর এই ঘটনা পৃথিবীর বুকে আলোড়ন তুলেছিল ।সেখান থেকে উদ্ধার পাওয়া সবাই পরবর্তীতে প্রচন্ড মানসিক দ্বন্দে ভুগেছে ।
আপনার সৌজন্যে আবার পড়া হলো । ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: নতুন করে পড়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আসলে কাহিনীটা আমার কাছে এত রোমাঞ্চকর লেগেছিল যে তা ব্লগে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারিনি। তাই আপনাদের মত অনেক সিনিয়রদের পড়া থাকা সত্ত্বেও নতুনদের জন্য ব্লগে দিয়েছি। আশা করি নতুন করে অনেকেই ঘটনাটা জানতে পারবেন!

আপনার জন্য শুভকামনা। ভালো থাকুন সবসময়।

২৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

প্রামানিক বলেছেন: এই সম্পর্কে জানা ছিল না জেনে ভালো লাগল।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই। খুঁজে বের করে পড়েছেন দেখে ভালো লাগল।

২৮| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



এই বিষয়ে অনেক গুলো আর্টিকেন পড়েছিলাম । অবিশ্বাস হলেও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় দেখা গিয়েছে তাদের শরীর মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রপ্ত করে ফেলেছিল । পরিবেশের সাথে তাদের খাপ খাওয়ানোটা একটু সময় লেগেছে । তবে একে বারে যে আরো বেশি দিন বেচে থাকতেন তেমন ও নয় ।

আর রেফারেন্স হিসেবে বই গুলো দারুন ।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: বেস্ট এর পোস্টে গ্রেটকে স্বাগতম! আর্টিকেলগুলো অবশ্য আমার তেমন পড়া হয়নি। আমি শুধু ঘটনাটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। খুঁজে বের করে পড়েছেন সেজন্য ধন্যবাদ।

২৯| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২২

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: আমি ভালো আছি .....

তারপর, আপনার কি খবর সবর!! ;)

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আমিও ভালো। নতুন কোন খবর নেই। আগের মতই আছি। নতুন কিছু লেখা হচ্ছে না। ব্যস, এই আর কি।

৩০| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

ইসিয়াক বলেছেন: সুন্দর সমাপ্তি...।অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ইসিয়াক। পড়া, মন্তব্য এবং সর্বোপরি অধমকে অনুসারিতের তালিকায় যোগ করার জন্য আবারও ধন্যবাদ। ব্লগে আপনার পথচলা আনন্দময় হোক।

৩১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা ..

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১২

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ওকে ভাই। আমিও ওকটু হাসি। হা হা হা।

৩২| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

বলেছেন: দুর্দান্ত কাহিনী , দুরন্ত লেখক





মুগ্ধতা।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ‌আপনার আন্তরিক মন্তব্যটাও মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেল লতিফ ভাই। এমন পাঠক পেলে লিখেও আরাম। শুভকামনা রইল।

৩৩| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৪৩

দি রিফর্মার বলেছেন: Servival-এর মূল মন্ত্র হল Don't be panic. কোন অবস্থাতেই দূর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে প্যানিক হওয়া যাবে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
কোন এক দুর্গম এলাকায় একটি ছোট বিমান দুর্ঘটনায় পতিত হলে পাইলট গুরুতর আহত হয়। সে চিন্তা করল এই দুর্গম এলাকায় কে তাকে বাঁচাতে আসবে। এই দিকে ব্যাথার যন্ত্রনায় সে কাতর হয়ে পড়ল। সে এই নিঝুম পরিবেশে আতংক গ্রস্ত হয়ে পড়ল। অবশেষে সে নিজের পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করল। এর চার ঘণ্টা পর উদ্ধারকারী দল পাইলটের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হল। সে যদি প্যানিক না হত তাহলে তার বেঁচে যাওয়া ছিল শতভাগ নিশ্চিত।
আপনার লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো। এমন আরো লেখা আপনার কাছ থেকে উপহার পাব আশাকরি।
শুভ কামনা রইল।

১৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪৪

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: দি রিফর্মার বলেছেন: Servival-এর মূল মন্ত্র হল Don't be panic. কোন অবস্থাতেই দূর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে প্যানিক হওয়া যাবে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

এগজাক্টলি। আমিও তাই বলি। যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।

লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। আপনার জন্যও অশেষ শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.