নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একমাত্র সোস্যালিষ্ট অর্থনীতি বাংগালী জাতিকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।
জাহেদা আমাদের পশ্চিম পাড়ার মেয়ে, মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারে জন্মেছিলো; বাবার বেকুবীর জন্য পরিবারটি অনেকটা অস্বচ্ছলতার মাঝে চলে যায়; জাহেদা ৪র্থ শ্রেণীতে উঠার পর, জাহেদার বাবা তাকে আর পড়তে দেয়নি; ইহা মেয়েটাকে কষ্ট দিতো সব সময়। যাক, মেয়েটা বড়শী, মাছ ধরার চাঈ, ইত্যাদি দিয়ে মাছ ধরে পরিবারের জন্য মাছ যোগাড় করতো; সে বড়শী নিয়ে বসলেই মাছ পেতো।
আমাদের গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় আমাদের একটা বড় ছাড়া-বাড়ী (বসত বাড়ী নয়) ছিলো; ইহার চারিপাশে গাছ, কলাগাছ, পাটি পাতা, বেতবন, আগাছার ঝোপ ও লতা ইত্যাদির কারণে ভেতরের কিছু দেখা যেতো না, অনেকটা ভুতুড়ে বাড়ীর মতো। বাড়ীর পুকুরটি মাঠের সাথে যুক্ত থাকতো, অনেক বাংলা মাছ আসতো মাঠ থেকে। জাহেদা সেই ভুতুড়ে বাড়ীর ঘাটে বসে ছোট ছিপ দিয়ে মাছ ধরতো। জাহেদার বয়স ১০ বছর হওয়ার পর, তার বাবা, সিদ্দিক পন্ডিত, মেয়েকে স্কুলে যেতে বারণ করলো, মেয়ে বড় হয়ে গেছে, আর পড়ালেখার দরকার নেই।
আমরা সেই বাড়ীতে সবজি করতাম; আমি গেলে তার সাথে দেখা হতো। তার বাবার সামান্য চাষের জমি ছিলো, অন্যদর জমি বর্গা নিয়ে ভালো চাষ করতো। ভালো থাকা তার ভালো লাগলো না, সে মাইজভান্ডারের সাগরেদ হলো, মাসে মাসে ওখানে যাওয়া আসার শুরু করলো, গেলে সহজে ফিরতো না; বছরে ২/৩ বার ওরসে যাচ্ছে, সাথে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন নিয়ে যাচ্ছে। সে আজগুবি ধরণের পোশাক পরা শুরু করলো, মাথায় লম্বাচুল; গ্রামে রটনা হয়ে গেলো, সে মাইজভান্ডারে গাঁজা খায় ও সেখানে রাতে ঢোল বাজায়ে নাচে।
জাহেদার মা বেশ স্বচ্ছল চাষী পরিবারের মেয়ে, কিন্তু তার নিজ পরিবারের অবস্হা খারাপ; করার কিছু নেই; মা-বাবার বাড়ী গিয়ে তাদেরকে সাহায্য করতে লাগলো। তার মা-বাবা বছরের চালডাল দিচ্ছে, খেয়েদেয়ে চলছে, পরিবারের অবস্হা ভালো নয়। জাহেদার মা স্বামীকে কিছুতেই কন্ট্রোলে আনতে পারলো না। ২/৩ বছর পর, মসজিদের ইমাম পন্ডিতের পেছনে লাগলো, এক সালিশ বসলো ইমামের নেতৃত্বে, পন্ডিত গাঁজা খায়। পন্ডিত ছিলো খুবই অমায়িক; ইমাম সাহেব সুবিধা করতে পারলেন না, প্রমাণ নেই।
এর পরের ওরসে পাশের গ্রামের ২ লোক গিয়েছিলো পন্ডিতের সাথে, তাদরকে সাক্ষী হিসেবে এনে ইমাম সাহেব আবার সালিশ বসালো; প্রমাণ পাওয়া গেলেো; বিচারের ১ম রায়, পন্ডিতের পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হলো; ২য় রায়ে পন্তিতকে বলা হলো সমাজীদের কাছে মাফ চাইতে; কিন্তু পন্ডিত মাফ চাইবে না। এবার এলো বিকল্প রায়, জুতা দিয়ে ১০ ঘা। জাহেদা অদুরে খড়ের গাদার পেছনে বসে বাবার বিচার শুনছিলো। হঠাৎ সে রুদ্রমুর্তি ধারণা করে, সালিশের সামনে এসে ঘোষণা করলো:
-যদি কেহ আমার বাবার গায়ে হাত দেয়, তার ঘাঁড়ে মাথা থাকবে না। আমার বাবাকে যেতে দাও, তোমাদের সমাজে নিয়ে তোমরা থাক।
লোকজন অবাক, কিশোরী কি বলে! সালিশে হট্টগোল লেগে গেলো; অনেকেই জুতার আঘাতের বিপক্ষে কথা বলতে লাগলো; অবশেষে সালিশের সিদ্ধান্ত হলো, জুতার দিয়ে আঘাত বাদ; তবে, সমাজচ্যুত। মাস'খানেক জাহেদারা কেহ বাড়ীতে নেই, জাহেদা মায়ের সাথে নানার বাড়ী চলে গেছে। আমি ছাড়া-বাড়ীত গেলে ঘাটে গিয়ে দেখতাম, জাহেদা নেই, বাড়ীটাকে কেমন মৃত মনে হতো।
এক শুক্রবার বিকলে রান্নার জন্য বেগুন আনতে গেছি ছাড়া-বাড়ীতে; দেখি, জাহেদা বেগুন খেতের আলের উপর চুপ করে বসে আছে।
-জাহেদা, কবে ফিরলি?
-কালরাতে।
-মাছ ধরিসনি?
-না।
কেন?
-আমরা তো সমাজচ্যুত, আপনি বিপদে পড়বেন।
-আমার বিপদে পড়ার সম্ভাবনা নেই! তোর ছিপ কোথায়? দেখ, কিছু লাগে কিনা।
২২ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২৯
সোনাগাজী বলেছেন:
আগের চট্টগ্রামের গ্রাম, কঠিন যায়গা ছিলো।
২| ২২ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৩৭
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: মাইজভান্ডারি ওরষে গঞ্জিকার সাথে বাংলা মদ নিত্যনৈমিত্তিক কারবার।
২২ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫২
সোনাগাজী বলেছেন:
ওরসের জোস।
৩| ২২ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মাইজভান্ডার, লালন আখড়া - গাঞ্জাসেবীদের অভয়ারন্য...
২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৫
সোনাগাজী বলেছেন:
এসব পীরেরা মাতালদের ভালোবাসেন।
৪| ২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মাইজভাণ্ডারের পুরোটাই ভেজাল।
২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬
সোনাগাজী বলেছেন:
সেটাই স্বাভাবিক; সেটা না'হলে উহা জমবে কেন?
৫| ২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
মাইজভান্ডারী থেকে চট্রগ্রামের কত ভাগ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৮
সোনাগাজী বলেছেন:
কোটীমানুষর পরিবার নষ্ট করেছে, জীবন নষ্ট করেছে, জমি দখল করেছে, এখন রাজনীতিতেও আছে।
৬| ২২ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আমার ভালো লাগে । ভাণ্ডারী গানের কনসার্ট।
গাউছুল আযম মাইজভান্ডারী আয়নার কারিগর আয়না বসাইয়া দে মোর কলবের ভিতর।
জোস ফীলীংস !!
২২ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০২
সোনাগাজী বলেছেন:
গিয়েছিলেন, হালকা মালকা তুলেছিলেন নাকি?
৭| ২২ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০১
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: যাবোনা কেন? ওখানে আমার ফুফীর বাড়ি। তবারকের টেস্ট অসাধারণ !
২২ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০৩
সোনাগাজী বলেছেন:
এখনো ঢোল বাজায়েে হালকা তোলে?
৮| ২২ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০৪
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: কি তুলবো ছবি ? গুগলে ছবি লাখ লাখ,
২২ শে জুন, ২০২২ রাত ১১:১৫
সোনাগাজী বলেছেন:
আমি ছবির কথা বলিনি।
ঢোল বাজায়ে দীর্ঘ সময় ধরে নাচতে থাকাকে আমাদের এলাকায় বলা হয়, "হালকা তোলা"; ইহার কথা বলেছি।
৯| ২২ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:১৬
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
এদেশে তো স্কুল চালু করে গাউসুল আজম মাইজভান্ডারী।
২২ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:২১
সোনাগাজী বলেছেন:
ওসব স্কুল মানুষকে জীবন থেকে বন্চিত করেছে।
( চলরে মন ত্বরা যাই, বিলম্বের আর সময় নাই,
গাউসুল আজম মাইজভান্ডারী স্কুল খুলেছে। )
১০| ২২ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:১৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: মীন রাশির মেয়েরা বরাবর ই অকুতভয়।
২২ শে জুন, ২০২২ রাত ১০:২২
সোনাগাজী বলেছেন:
গ্রামের ১টি মেয়েও সুখশান্তির মুখ দেখেনি।
১১| ২৩ শে জুন, ২০২২ রাত ১:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলা মাছ বলতে কি বুঝিয়েছেন? দেশী মাছ?
জাহেদা কি একা? তার আর কোনো ভাই বোন নেই?
জাহেদার জীবনটা করুণ। জাহেদার বাবা কম বুদ্ধির জন্য পুরো পরিবারের কষ্ট।
২৩ শে জুন, ২০২২ রাত ১:৫৯
সোনাগাজী বলেছেন:
আমাদর এলাকায়, মাইজভান্ডারীর তালে পড়ে ৭/৮টা পরিবার বিনষ্ট হয়েছিলো। জাহেদাও সেটার ভুক্তভোগী। তার ১টা বোনের জন্ম হয়েছিলো অনেক বছর পর।
১২| ২৩ শে জুন, ২০২২ ভোর ৪:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দুই পাহাড়ের মাঝে মওলা
মসজিদ বানাইছে!
জাহেদাদের জীবন
এমন করেই নষ্ট হয়!
২৩ শে জুন, ২০২২ সকাল ৯:০০
সোনাগাজী বলেছেন:
গ্রামের একটি মেয়েও সামান্য সুখশান্তির মুখ দেখেনি।
১৩| ২৩ শে জুন, ২০২২ সকাল ৯:২০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: মাইজভান্ডারীর কারণে অনেক পরিবার খেয়ে না খেয়ে থাকছে; উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ওখানে গিয়ে গাঁজামাজা খেয়ে দিনের পর দিন কেটে দেয়। স্মৃতিচারণ দারুণ হয়েছে।
২৩ শে জুন, ২০২২ সকাল ১০:৩৫
সোনাগাজী বলেছেন:
ধর্মের প্রতি আকর্ষণ!
১৪| ২৩ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:০৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কী অদ্ভুত সমাজের বিচার। মেয়েটার জন্য মনটা খারাপ হলো
২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪৮
সোনাগাজী বলেছেন:
আমাদের আশপাশের কোন মেয়ের জীবনটা সুখের হয়নি।
১৫| ২৩ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের এলাকায় একলোক ভালো চাকরী করতো। একদিন দেওয়ান বাগের মুরিদ হলো। একদম পাগলা ভক্ত। ৩/৪ বছর পর লোকটা পাগল হয়ে গেলো। তার বউ তাকে ছেড়ে চলে গেলো। এখন খালি গায়, খালি পায় রাস্তায় ঘুরাঘারি করে। দেখা হলে এক কাপ চা খেতে চায়।
২৩ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪৯
সোনাগাজী বলেছেন:
আইন করে পীরগিরি বন্ধ করার দরকার ছিলো।
১৬| ২৩ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৪
অক্পটে বলেছেন: পীরেরা কোটিপতি ভক্তেরা লেংটিপতি। ব্রেনওয়াস ইহাকে বলে। আমার পরিচিত একজন বিদেশে কাজ করতো ৩ লাখ টাকা তার সেলারী ছিল। তিনি এক পীরের ভক্ত হলেন। ফিরে এসে কামানো সব টাকা পীরের দরগায় ঢেলেছেন। নায়কের মতো চেহারা এখন এত বদসুরত হয়েছে যে কি আর বলবো। চেয়ে মেগে খায়। কিছু জিজ্ঞেস করলে কথা বলেনা একটু হাসে।
২৩ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৬
সোনাগাজী বলেছেন:
ভয়ংকর ভয়ংকর কাহিনী, জাতিকে মানুষ হতে দেয়নি জাতির শিক্ষিত অংশ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
গ্রামে গাঁজা খাওয়ার জন্য বিচার হয় এই প্রথম জানমাল। এমন গ্রামের খবর আমি আগে পাই নাই। তবে মদ তৈরি ও বিক্রির জন্য একঘরে করার খবর শুনেছি।