নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বানসুরি স্পেশাল

বাঁশী আর বউ এই নিয়ে সংসার

বানসুরি

কামকাজ নাই বাঁশী বাজাই আর খাই

বানসুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাখাওয়াত কাহিনী-৩

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৭

বছরখানেক আগের কথা। দু’তিন দিন হল এ দপ্তরে যোগদান করেছি। তখনও দাপ্তরিক পিয়ন সাখাওয়াতের inherent প্রতিভা আঁচ করতে পারিনি ঠিক মতন। একদিন সকালবেলা। একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রস্তুতে মগজ পুরা আউলা-ঝাউলা। কলিং বেল টিপা ছাড়াই সাখাওয়াতের প্রবেশ........



সাখাওয়াত: স্যার, বড় স্যার আপনারে সেলাম দিছে । (মানে ডেকেছে)

আমি: যাও, ওয়ালাইকুম সালাম। (দুষ্টুমি করে)



সাখাওয়াতের প্রস্থান। প্রতিবেদনটার শেষ প্যারায় আবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। হাতে নোটপ্যাড ও কলম নিয়ে বড় স্যারের রুমের উদ্দেশ্যে বের হলাম। সাখাওয়াত পেছনে পেছনে। “কি বিষয়, তুমি আসতেছ কেন?” সাখাওয়াত সন্ত্রস্ত চিত্তে, “স্যার, আপনার সাথে এ্যাবার আমারেও সালাম দিছে”। কিছুই বুঝলাম না। দু’জনেই বড় স্যারের চেম্বারে প্রবেশ করলাম।



আমি : স্যার, স্লামুলাইকুম। ডেকেছিলেন স্যার?

বড় স্যার : হুম..., নোট নাও.... এক) আজকে বিকাল ৪টার মধ্যেই প্রতিবেদনটি ফাইনাল করতে হবে...... দুই) বিকাল ৫টার মধ্যেই ওই ‘ওয়ালাইকুম সালাম’ টাকে বদলী করতে হবে। (সাখাওয়াতকে দেখিয়ে)



বুঝতে পারলাম, প্রতিভাধর সাখাওয়াত আমার সালামের জবাব “ওয়ালাইকুম” সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় সযত্নে বড় স্যারকে পৌঁছে দিয়েছিল। নিজের রুমে ফিরে প্রতিবেদন প্রস্তুতে আবার মনোনিবেশ। একটুপর পিও (পার্সোনাল অফিসার) সাহেবের প্রবেশ। পেছনে সাখাওয়াত।



আমি: তো সাখাওয়াত বল, কোন শাখায় বদলী করলে তুমি খুশী হবে?

সাখাওয়াত: স্যার, কাজতো কাজই। যেকোন শাখায় ইনশ’আল্লাহ সমস্যা হবে না।

পিও: স্যার, সাখাওয়াতকে মাফ করে দেন। সে অফিসের কাজে কিছুটা তালগোল পাকিয়ে ফেলে। কিন্তু অফিসের বাইরের ফুট-ফরমায়েশগুলো খুব সূচারুরূপে করতে পারে। যেমন ব্যাংক থেকে চেক ভাংগিয়ে কেউ ওর মত দ্রুত টাকা ওঠাতে পারে না।



আমি: তাই নাকি সাখাওয়াত! ব্যাংক থেকে টাকা উঠাতে তোমার কতক্ষণ লাগে?

সাখাওয়াত: স্যার, অফিসের পাশের জনতা ব্যাংক শাখা হলে মাত্র পাঁচ মিনিট। (পিও সাহেব ভাব নিয়ে নড়েচড়ে বসলেন)

আমি: আর অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষেত্রে?

সাখাওয়াত: স্যার, অন্য কোন ব্যাংকে আমার কোন পরিচিত পিওন বন্ধু নেই........;).



পিও সাহেব সাখাওয়াতের দিকে কটমটিয়ে তাকিয়ে মাথা ঘুরিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে বললেন, স্যার বিভিন্ন প্রয়োজনে ভাল নাম্তা/খাবার আনতে ওর তুলনা হয় না। আমি বললাম, তাই নাকি? যাও দেখি, আমাদের দুজনের জন্য প্রেসক্লাবের উল্টোদিকের রেস্টুরেন্ট থেকে ভাল নাস্তা নিয়ে এসো। গরম সিংগারা হলে ভালো হয়। টাকা নিয়ে সাখাওয়াত নাস্তার অভিযানে। আমি প্রতিবেদনে মনোযোগ দিলাম। পিও সাহেব সাখাওয়াতের যোগ্যতা প্রমাণে নাছোড় বান্দা। বসে আছে... আধা ঘন্টা, এক ঘন্টা.....সাখাওয়াত আসেনা! তিনি এবার অধৈর্য হয়ে সাখাওয়াতের ফোনে কল দিলেন.....



পিও: হ্যালো সাখাওয়াত, তুমি কই?.......................রুমের বাহিরে দাড়ানো হলে কল রিসিভ করলি ক্যান হারামি, এক্ষুণি ভেতরে ঢুক্। (ত্বরিতগতিতে সাখাওয়াত প্রবেশ )

পিও: এতক্ষণ লাগল?? (ধমক দিয়ে)

সাখাওয়াত: স্যার, আরো অনেক আগে আসছি।

পিও: তাড়াতাড়ি সিংগারা দে, এতক্ষণে নিশ্চয় ঠান্ডা হয়ে গেছে। বেটা হাদারাম কোথাকার!!!

সাখাওয়াত: স্যার ঠান্ডা হবে না, এখনও দোকানে সিংগারা বানায় নাই। বিকালে বানাবে। ফোন নম্বর দিয়ে এসেছি। বানানো শুরু হইলে সাথে সাথে আমারে খবর দিবে................................:):):)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.