নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বানসুরি স্পেশাল

বাঁশী আর বউ এই নিয়ে সংসার

বানসুরি

কামকাজ নাই বাঁশী বাজাই আর খাই

বানসুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিগারেট। শুধু মৃত্যু নয়, জীবনও দেয় :P

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

রাত প্রায় ৮টা। গোপালগঞ্জের কোন এক ডাকবাংলোয় রাতটা কাটাতে হবে। বাংলোর রুমে ঢুকে নিজেকে খুব ভিআইপি ভিআইপি মনে হল। ইয়া বড় কার্পেটিং করা এসি রুম, এটাচ্ড বাথ, টিভি, টেলিফোন, ফ্রুট বাস্কেট! জামা-কাপড় ছেড়ে ফ্রি হওয়া যাক। মনের আনন্দে অনেকটা খালি গায়েই ঢুকে পড়লাম বাথরুমে.. ওয়াও! বিশাল বাথরুম, ঝকঝকা তকতকা; ভাবতেছি, আজ সকালে কোন লক্ষ্মীর মুখ দর্শনে ভাগ্যদেবতা এতই প্রসন্ন!



মনের আনন্দে গুণে গুণে এক নম্বর, দুই নম্বর সব সারলাম। ফ্রেশ হয়ে, বাথরুমে সাঁটা আমার থেকেও লম্বা লুকিং গ্লাসটাতে ঘুরেফিরে কয়েকবার পোস দিলাম। শাহরুখ, সালমান সব তারকাই ফেল! তোয়ালেটা নাকে ধরতেই...আহ, কি মিষ্টি সুগন্ধি! নাহ, এবার বের হওয়া যাক। লেপটপটা অপেক্ষা করছে.. ফেসবুকে ঢুকতে হবে যে!



বের হতে গিয়েই...দরজা লক। খুলছেনা!! নানান ভাবে চেষ্টা করছি। উঁহু, কোন কৌশলই কাজ দিচ্ছে না। মোবাইল ছাড়া, প্রায় খালি গায়েই ঢুকেছিলাম বাথরুমে। কাউরে ফোন করে খবর দেয়ার উপায়ও দেখছি না। চতুপার্শে তাকালাম, ভেন্টিলেটরতো দুরের কথা, একটা ছিদ্র পর্যন্ত নেই। দেখি, জোরে শোরে দু’একবার চিল্লাপাল্লা করলে কারো কানে যায় কিনা! নাহ কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।



সালমান খানের মত খালি শরীরে হাতের মাসেল ফুলিয়ে কয়েকবার দৌড়ে এসে দরজায় ফ্লায়িং ধাক্কা দিলাম। শেষবার ধপাস করে ফ্লোরে আছড়ে পড়ে....বুঝতে পারলাম শাহরুখ, সালমান হওয়া আমার দ্বারা হবে না। উফফ...অনেক হাঁফিয়ে পড়েছি। তোয়ালেটা বিছিয়ে একটু আরাম করা যাক। কিন্তু...নিঃশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে কেন? আবদ্ধ রুমে বায়ৃর পরিমাণ কি কমে আসছে? শেষ পর্যন্ত বাথরুমেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হবে?



নাহ, টেনশন না নিয়ে শুয়ে শুয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখি! আচ্ছা, রুমের মূল দরজাও কি লক করেছিলাম? তাইলে তো একেবারেই “মাঠে মারা যাওয়ার” মত বাথরুমে মারা। হয়তো আগামী কাল সকাল ১০টা/১১টায় মৃত্যু কমফার্ম হওয়ার পরে লোকজন এসে রুমের দরজা ভাঙবে, তারপর বাথরুমের দরজা ভেঙে আমার লাশ!! এ্যাঁ.....লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম। সারা শরীর ঘামাচ্ছে...আবার কিছুক্ষণ লক নিয়ে মোছড়ামুছড়ি ধাক্কাধাক্কি করলাম। নাহ...কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।



যাক্ এবার কাম সারছে ভালোমতই। বিদ্যুৎ চলে গেছে। মশাদের মুহুর্মু আক্রমণ। কোনরকম তোয়ালেটা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছি। তন্দ্রামত চোখ লেগে আসছে..কবর কবর আবহ, ভয়ও লাগছে! কিন্ত..কিন্তু...এ কিসের শব্দ? আজরাইল আসছেনা তো? ফ্লোর বেয়ে ঠক ঠক পায়ের শব্ধ কানে আসছে...! ভয়ে ভয়ে আওয়াজ করলাম,...কে, কে? “স্যার, আমি শফিক। আপনার সিগারেট নিয়ে এসেছি”। মাই গড! ভুলেই গেছিলাম, শফিক ছেলেটাকে এক প্যাকেট সিগারেট আনতে পাঠিয়েছিলাম। বিয়ের পরে বউয়ের কথায় যদি সিগারেট ছেড়ে দিতাম, নিশ্চিত আজকে বাথরুমে মরে ভুত......ধন্যবাদ সিগারেট।



শফিক লোকজন ডেকে আনল। তালা ভাঙ্গার কাজ চলছে। কিন্তু আমি কেন যেন খুশী হতে পারছি না। কারণ কি? ও...ধ্যাত তাওয়েল আছে না? ওটা পেছিয়ে কোনরকম ইজ্জত রক্ষা করা যাবে...হা হা। যাকগে...আজকের অভিজ্ঞতা থেকে তিনটি শিক্ষা নিলাম...



1. জীবনে কখনও সিগারেট ছাড়ুম না, না

2. কখনও মোবাইল ছাড়া বাথরুমে ঢুকুম না

3. খালি গায়ে বাথরুমে ঢুকুম না, না, না

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:২৬

অদ্ভুত শূন্যতা বলেছেন: চমৎকার এই লেখাটায় কোন মন্তব্য নেই!! পড়া হয়েছে মাত্র দুই বার!!! অবাক ব্যাপার!!!! সামুর এই নতুন ব্যারামের জন্যই ইদানিং সামুতে আসতে বিরক্ত লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.