![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর”। কবি কাজী নজরুল ইসলাম সত্যিই লিখেছেন। তার এই লেখনীর মাধ্যমে বোঝা যায় নারীর গুরুত্ব কতটুকু। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারীকে বাদ দিয়ে সর্বাত্মক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে নারীরা তাদের পরিবার এবং সমাজ গঠনে যাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্যে সরকার নারীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। একজন নারী চাইলেই সব কিছু পেতে পারেন না। প্রশস্তিতে বুক ফুলে ওঠে যখন দেখি খোদ প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটিতে বসে আছেন একজন নারী। বিরোধী দলের শীর্ষ আসনটিতেও রয়েছেন একজন নারী। কিংবা জাতীয় সংসদের স্পিকারের পদ, সুপ্রিমকোর্টের জাস্টিসের পদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদসহ আরো অনেক অনেক শীর্ষপদে নারীর অধিষ্ঠান আমাদের নারীদের অগ্রযাত্রার দৃশ্যমান দ্যোতক হিসেবে জ্বলজ্বল করছে। তুলনামূলক বিচারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নারী ক্ষমতায়নের বর্ধিষ্ণু সূচকগুলোও খাটো করে দেখবার অবকাশ নেই। বিশ্বের মুসলিম প্রধান দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে নারীর অবস্থান অনেক বেশি সন্তোষজনক। চলতি বছরের হিসাবেও যেখানে ইন্দোনেশিয়া, ইরাকি কুর্দিস্তান, ইয়েমেনসহ আফ্রিকার ২৭টি দেশের ২০০ মিলিয়ন নারী (১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী) বিজ্ঞান ধিকৃত এফজিএম (ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন) ব্যবস্থার শিকার হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের মেয়েদের তো অনেক বেশি নিরাপদই মনে হয়। বাংলাদেশে সরকারি, বেসরকারি উভয়ভাবেই নারী সমাজের অগ্রযাত্রা সাধিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পরই বাংলাদেশ দীর্ঘ অবহেলিত নারী সমাজের বিবিধ সমস্যা ও লৈঙ্গিক বৈষম্যের বিষয়গুলো বিবেচনায় এনেছে। বাহাত্তরের সংবিধানেও লৈঙ্গিক সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে প্রগতিশীল চিন্তাধারা স্থান পেয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে নারী অধিকার এবং উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেনশনের সঙ্গে সম্পর্কিত হচ্ছে। নারী উন্নয়নে মিলেনিয়াম ডেভলপমেন্ট গোলস (MDGs) সহ আরো অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তিনামার সহায়ক হিসেবে নিয়মিতভাবে কাজ করে চলেছে। সরকারের লিঙ্গসাম্য সংক্রান্ত পরিকল্পনা বস্তুত চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা থেকে সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত হয়ে আসছে। তা ছাড়া, শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৭ সালে তাঁর প্রথম নারী উন্নয়ন পলিসি (WDP) প্রণয়ন করেছে এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৭ এবং ২০১৩ সালে দুটি ন্যাশনাল এ্যাকশন প্লান (NAP) গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য সহায়ক কৌশল ও নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জাতীয় সংসদে সদস্যপদ বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করা হয়। এই অগ্রগতির স্বীকৃতি স্বরূপ ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক কোরাম ২০১৪ সালে তার জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট (GGR) অনুযায়ী নারীর রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে ১০ নম্বর দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। অনুকূল পরিস্থিতির সঙ্গে মূল অনুঘটক হিসেবে কাজ করে চলেছে বর্তমান সরকারের নারী উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন।
©somewhere in net ltd.