নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিনিলাম আপনারেআঘাতে আঘাতেবেদনায় বেদনায়;সত্য যে কঠিন,কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,সে কখনো করে না বঞ্চনা।

সত্যের সারথি সাদেক

সত্য যে বড় কঠিন, কঠিনেরে বাসিলাম ভালো, যে কখনো করেনা বঞ্চনা !

সত্যের সারথি সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐতিহ্য হারাচ্ছে বিউটি বোডিং

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৩৮





পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিউটি বোর্ডিংকে বিভিন্ন সাহিত্য, কবিতার আঁতুড়ঘর বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না।
পুরান ঢাকার যানজট মাড়িয়ে বাংলাবাজারে ঢুকেই প্যারীদাস রোডের পাশেই শ্রীশ দাস লেন। এর একটু মোড় নিলেই চোখে পড়বে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা ফিকে হলুদ রঙের একটি দোতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে প্রশস্ত উঠোন। শ্যামল-সবুজে ঘেরা। একেবারে আড্ডার উপযোগী জায়গা। পাশে খাবার ঘর, শোবার ঘর, পেছনে সিঁড়িঘর সবই পুরনো বাড়ির রূপকথার গল্পের মতো সাজানো।
এই বিউটি বোর্ডিং বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র বা ইতিহাসের ভিত্তিভূমি। যেন একটি জীবন্ত কিংবদন্তী ইতিহাস সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিউটি বোর্ডিং ও এর আড্ডার ইতিহাস চল্লিশের দশক থেকেই সুখ্যাতি লাভ করেছিল। সমমনা লোকদের তখন বিভিন্ন বিষয়ে চলত তোলপাড় করা সব আড্ডা।

অনেক কবি-সাহিত্যিকেরই লেখা তৈরির বহু ইতিহাস রয়েছে এই বিউটি বোর্ডিংয়ে।
”বুলবুল চৌধুরী তার আত্মজীবনী মূলক বই ’অতলের কথকথা’ তে তার এক বন্ধু কায়েস আহমেদ সম্পর্কে লিখেছেন ...”কায়েস আহমেদই আমাকে নিয়ে গিয়েছিল বিউটি বোডিং এ জড়ো হওয়া কয়েকজন তরুণ সাহিত্যিকের সামনে । ...বিউটি বোডিং এ সমবেত হতে পারার মাধ্যমে দেশের অনেক নবীন প্রবীন সাহিত্যিকের কাছাকাছি হতে পেরেছিলাম ।”
সৈয়দ শামসুল হক কে নিয়ে বলতে গিয়ে আসাদ চৌধুরী বলেছেন”বেশ মনে পড়ে বাংলাবাজারের বিউটি বোডিং এ তার সাথে প্রথম দেখা হয় ।”
শামসুর রাহমান লিখেছেন- ”মনে পড়ে একদা যেতাম প্রত্যহ দুবেলা বাংলা বাজারের শীর্ণ গলির ভেতরে সেই বিউটি বোর্ডিং-এ পরষ্পর মুখ দেখার আশায় আমরা কজন।"
এছাড়া বেলাল চৌধুরী তার ’সাত সাগরের ফেনায় ফেনায় ভেসে’ বইয়ে বেশ কয়েক জায়গায় বিউটি বোডিং সম্পর্কে লিখেছেন ।

বাড়িটি ছিল নিঃসন্তান জমিদার সুধীর চন্দ্র দাসের। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগে ওই দালানে গড়ে উঠেছিল ’সোনার বাংলা’ পত্রিকার কার্যালয়, সঙ্গে ছিল ছাপাখানাও। সাপ্তাহিক পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায়। এ সূত্রেই ভবন মুখর হয়ে ওঠে শিল্পী, কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণায়। সোনার বাংলা পত্রিকাতেই ছাপা হয় শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতা। দেশ ভাগের সময় পত্রিকা কার্যালয়টি নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায়।

১৯৪৭-পরবর্তী দুই বছর খালিই পড়েছিল ভবনটি। ১৯৪৯ সালে তা ভাড়া নেন মুন্সিগঞ্জের দুই ভাই নলিনী মোহন সাহা ও প্রহ্লাদ চন্দ্র সাহা। যাত্রাটা হলো খুবই সাদামাটা ভাবে। প্রথম দিকে দুই-একটি রুম ভাড়া দেয়া হতো। কিন্তু পরে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কক্ষের সংখ্যা বাড়াতে হয়। ব্যবসা জমে উঠলে তৎকালীন জমিদার সুধীর চন্দ্র দাসের কাছ থেকে ১১ কাঠা জমি নিয়ে তাতে গড়ে তোলেন এই বিউটি বোর্ডিং। নলিনী মোহনের বড় মেয়ে বিউটির নামেই এর নামকরণ করা হয়েছে।
বর্তমানে এর মালিক প্রহ্লাদ সাহার দুই ছেলে সমর সাহা ও তারক সাহা । কথা হয় তাদের সাথে ।কথায় কথায় তারক সাহা জানালেন এর গৌরবোজ্জ্বল সোনালী ইতিহাস ।
তারক সাহা বলেন, “এ জায়গাটি ছিল বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির গুণী মানুষদের আড্ডার প্রাণকেন্দ্র। সমমনা মানুষদের নির্জলা আড্ডা চলত দিনরাত। পঞ্চাশ,ষাট আর সত্তুরের দশক ছিল বিউটি বোডিং এর যৌবনকাল । এ সময় আড্ডা দিতে আসতেন সে সময়ের প্রথিতযসা সাহিত্যিকেরা ।”
কবি শামসুর রাহমান থাকতেন আশেক লেনে, এবং কবি সৈয়দ শামসুল হক থাকতেন লক্ষ্মীবাজারে। কবি শামসুর রাহমানের সাথেই এই বিউটি বোর্ডিং'ই পরিচয় হয়েছিল কবি সৈয়দ শামসুল হকের। আর বিউটি বোর্ডিং'র সাথেই অন্য আর একটা পুরনো দালানের দোতলায় থাকতেন কবি শহীদ কাদরী। বিকেলে বোর্ডিং'র সবুজ চত্তরে এক কাপ চা কয়েকজনে ভাগ করে খেতে খেতে তখনকার শিল্পী সাহিত্যিকেরা মেতে উঠতেন জমজমাট আড্ডায়।
এখানে আড্ডা দিতে আসতেন হাসান হাফিজুর রহমান ,শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী, ফজলে লোহানী , কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায়, সত্য সাহা, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কলামলেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী, ভাস্কর নিতুন কুন্ডু, কবি আল মাহমুদ, শহিদ কাদরী, সমর দাশ, রণেশ দাসগুপ্ত, ফজলে লোহানী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, ব্রজেন দাস, হামিদুর রহমান, বিপ্লব দাশ, আবুল হাসান, মহাদেব সাহা, আহমেদ ছফা, হায়াৎ মাহমুদ, সত্য সাহা, এনায়েত উল্লাহ খান, আল মুজাহিদী, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, ড. মুনতাসীর মামুন, ফতেহ লোহানী, জহির রায়হান, খান আতা, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সত্য সাহা, গোলাম মুস্তফা, খান আতা, , বেলাল চৌধুরী, আনিসুজ্জামান, খান আতাউর রহমান, প্রবীর মিত্র, নায়করাজ রাজ্জাক, সন্তোষ গুপ্ত, ফজল শাহাবুদ্দিন, কবি ইমরুল চৌধুরী, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, শফিক রেহমান, আসাদ চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ প্রমুখ। । ঐতিহাসিক বিউটি বোর্ডিংয়ে থেকেছেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আড্ডা দিতে আসতেন গাজীউল হক, কম্রেড আঃ মতিন, অলি আহাদ, সাইফুদ্দীন মানিক প্রমুখ।
দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এই ঐতিহাসিক স্থানে এসেছিলেন নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু ও পল্লীকবি জসিমউদ্দীন। এসেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আড্ডা বা ইতিহাসের কেন্দ্রভূমি যাই বলি না কেন, তৎকালীন প্রগতিশীল লেখকদের আড্ডার জন্য এটি ছিল সবার প্রিয় স্থান। আর আড্ডা দিতে দিতেই অনেকেই লিখে ফেলতেন তার বিখ্যাত কোন লেখা বা কোন কর্ম।
এখান থেকেই ১৯৫৬ সনে প্রকাশিত হয় কবিতাপত্র "কবি কন্ঠ"। তারপর আহম্মদ ছফার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় "স্বদেশ" এবং আরো বেশ কয়েকটি সাহিত্য সাময়িকী। কবি সৈয়দ শামসুল হকের লেখালেখি করার জন্য একটা নির্দিষ্ট টেবিল এবং চেয়ার ছিল। এই বিউটি বোর্ডিং'এ বসেই ততকালীন পুর্ব পাকিস্তানের প্রথম পুর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচিত্র "মুখ ও মুখোশ"এর পরিকল্পনা করেছিলেন পরিচালক আব্দুল জব্বার খান। সমর দাস অনেক বিখ্যাত গানের কথায় সুর বসিয়েছেন এখানে আড্ডা দেয়ার ফাঁকেই
১৯৭১ সালে সেই আড্ডায় ছেদ পড়ে। পাকহানাদারবাহিনী জেনে যায় বাঙালির এই সাহিত্যসংস্কৃতির মানুষদের মিলনমেলার কথা।
প্রগতিশীল লেখকদের নিয়মিত আড্ডার জের ধরে বিউটি বোর্ডিং একাত্তরে হায়েনাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদরের দৃষ্টিতে পড়ে যায় এটি। প্রগতিশীলদের হত্যা করতে প্রতিক্রিয়াশীল এই চক্র একাত্তরের ২৮ মার্চ সকাল ১০টার কিছু পর হঠাৎ অভিযান চালায় এখানে। বোর্ডিংয়ের মালিক প্রহ্লাদ চন্দ্র সাহা, সন্তোষ কুমার দাস, হেমন্ত কুমার সাহা, অহিন্দ চৌধুরী শংকর, প্রভাত চন্দ্র সাহা, নির্মল রায় খোকা বাবু, হারাধন বর্মণ, প্রেমলাল সাহা, কেশব দেউ আগরওয়ালা, শামস ইরানী, যোসেফ কোরায়া, শীতল কুমার দাস, অখিল চক্রবর্তী, সাধন চন্দ্র রায়, সুখরঞ্জন দে, ক্ষিতীশ চন্দ্র দে, নূর মোহাম্মদ মোল্লাসহ ১৭ জনকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদাররা। পরে রাজাকারদের দখলে চলে যায় এটি। মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় এটি বন্ধ থাকে।

১৯৭২ সালে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এলে দুই ছেলে তারক সাহা ও সমর সাহাকে নিয়ে ফিরে আসেন প্রহ্লাদ সাহার সহধর্মিণী প্রতিভা সাহা। আবারো নতুন উদ্যমে শুরু করলেন বোর্ডিংয়ের কার্যক্রম। এখনো তাদের পরিচালনায় চলছে এটি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখানে আড্ডা জমানোর জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেন কবি বেলাল চৌধুরী ও শহীদ কাদরী। এরপর একে একে আসেন আরো অনেকে।
একাত্তর পরবর্তী আড্ডায় বসেই সৈয়দ শামসুল হক লিখেছেন তার বিখ্যাত সাহিত্যকর্মগুলো, যার মধ্যে অন্যতম আরণ্যক, অনুপম দিন, এক মহিলার ছবি, কয়েকটি মানুষের সোনালী ছবি, জনক ও কালো কফিন, সীমানা ছাড়িয়ে ও রক্ত গোলাপ প্রভৃতি।
তারপরেও সময়ের বিবর্তনে বিউটি বোর্ডিং আগের মত আর জমেনি।তারক সাহা বলেন-”আমরা বিউটি বোর্ডিংয়ের ঐহিত্যকে অম্লান রাখতে কম চেষ্টা করা করছি না। তবুও বিউটি বোর্ডিংয়ে এখন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের আড্ডা বা পদচারণ নেই। বিউটি বোর্ডিংয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখাটাও হয়ে পড়ে ভাবনার বিষয়।
এ অবস্থায় ১৯৯৫ সালের ৪ আগষ্ট পূনর্মিলনী হয় এবং ঐ বছরই ইমরুল চৌধুরী গড়ে তোলেন ‘বিউটি বোর্ডিং সুধী সংঘ’। তারই তত্ত্বাবধানে ১৯৯৮ সালে ৬০ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের মাধ্যমে ২০০০ সাল থেকে সম্মাননা দেওয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যে সম্মাননাপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন কবি শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, বেলাল চৌধুরী, কবি আল মাহমুদ, দেবদাস চক্রবর্তী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, কবি রফিক আজাদসহ বেশ কয়েকজন সাহিত্যিক।
ব্যবসা কেমন চলছে এর উত্তরে তারক সাহা জানালেন -ব্যবসা তেনন চলে না, তবে আমি শুধু এর ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য বসে আছি । আমি চাই না এসব ঐতিহ্য নষ্ট করতে। জানি না আমার পরবর্তী প্রজন্ম কি করবে ? আগের মত আড্ডা কিংবা লেখকেরা আসেন কি না জানতে চাইলে পাশেই থাকা সমর সাহা জানালেন পুরান ঢাকার যানজট পেরিয়ে কেউ আর আসতে চায় না ।
তাছাড়া নতুন লেখকেরা সবাই নতুন ঢাকা থেকে আসতে চায় না । তবে আসে পাশে যারা থাকেন তারা মাঝে মাঝে আসেন ।তবে মাঝে মাঝে যে সব বিউটিয়ান আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের পরিবার এই স্মৃতি বিজরিত স্থানে আসেন ।যারা জীবিত আসেন তদের মধ্যে বিশেষ করে বুলবুল চৌধুরী নিয়মিত আসেন । এখন কি কোন সাহিত্য আড্ডা হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে কবি সংসদ বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের মাসিক আড্ডা এখানে নিয়মিত হয়ে থাকে ।
আড্ডা বিষয়ে কথা হয় কবি সংসদ বাংলাদেশ এর সেক্রেটারী তৌহিদুল ইসলাম কনকের সাথে তিনি বললেন,- বিউটি বোডিং এর যে সোনালী অতীত ছিল তা হয়তো আমরা ফিরে পাব না তবে আমরা চাই যেন এই ঐতিহ্য হারিয়ে না যায় , তাই আমরা নিয়মিত মাসিক আড্ডা দেই ।
পশ্চিম বঙ্গের কেউ আসে কিনা জানতে চাইলে তারক সাহা জানালেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার এসেছিন , তাছাড়া সমরেশ মজুমদার ঢাকা আসলেই আসেন , শক্তি চট্রোপাধ্যায় ও এসেছিলেন ।
বিউটি বোডিং নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে বললেন, তার ইচ্ছা একাত্তরে আমার বাবাসহ যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি মোরাল, একটি পাঠাগার এবং বিউটিয়ানদের একটি সংগ্রহশালা করতে চাই যাতে তাদের কিছু স্মৃতি ধরে রাখতে পারব ভবিষ্যত প্রজন্মেও জন্য ।
খাবারের কথা উঠতেই তিনি বললেন এখানে আগের মতই খাবারের মূল্য একেবারে কম রাখা হয় তবে খাবারের মান ঠিক আছে । খাবারের তালিকায় চোখ বুলালে দেখা যায় অনেক পদ।খিচুড়ি ৩০ টাকা, মুরগির মাংস ৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮০ টাকা, সবজি ১০ টাকা, বড়া ১০ টাকা, চচ্চড়ি ১০ টাকা, পোলাও ৫০ টাকা, মুড়িঘণ্ট ৫০ টাকা।
এছাড়া বাইলা, কাতলা, রুই, তেলাপিয়া, চিতল, পাবদা, ফলি, সরপুটি, শিং, কৈ, মাগুর, ভাংনা, চিংড়ি, চান্দা, আইড়, বোয়াল, কোড়ালসহ প্রায় সব ধরনের মাছ পাবেন এখানে। সকালের নাস্তা ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে, দুপুর ও রাতের খাবার ৫০ থেকে ৬০ টাকা হলে যথেষ্ট। তবে সরষে ইলিশ খেতে ১০০ টাকা গুনতে হবে।
এখানে সবজি হয় নানা রকমের। বেগুনভাজি, করলা ভাজি, কচুশাক, লালশাক, কলাভর্তা, শিম ও মউ-শিমভর্তা আর ধনেপাতার ভর্তা প্রতিদিনকার মেন্যু। সকালে একসময় আটার রুটির রেওয়াজ ছিল। এখন সকালের রুটির জায়গা নিয়েছে ভাত, আলুভর্তা, ডিমভাজি আর ডাল। রাতের রান্না সীমিত আকারের। এক পদ মাছ, সবজি আর ডাল। তবে দধি এখানে তিন বেলাই পাওয়া যায়। বিউটি বোর্ডিংয়ের দধির খুব চাহিদা।
বিউটি বোর্ডিংয়ে এখনও থাকার ব্যবস্থা আছে। রয়েছে ২৫টি কক্ষ। এক বিছানায়ালা রয়েছে ১২টি কক্ষ, এক রাতের জন্য ভাড়া ২০০ টাকা। বাকিগুলো দুই বিছানায়ালা কক্ষ, ভাড়া ৩০০ টাকা।
নতুন প্রজম্মের সাহিত্যিকরা এখানে আসুক। আবারও জমে উঠুক বিউটি বোর্ডিং। কারন এর সাথে জড়িয়ে আছে বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তীদের ইতিহাস। নতুন প্রজন্মের কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণায় আবারও জমে উঠবে বিউটি বোর্ডিংয়ের সেই সরস আড্ডা। প্রাণ ফিরে পাবে ইতিহাস ঐতিহ্যের বিউটি বোর্ডিং সংশ্লিষ্টদের এমনটাই প্রত্যাশা।

####
(লেখক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.