নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিনিলাম আপনারেআঘাতে আঘাতেবেদনায় বেদনায়;সত্য যে কঠিন,কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,সে কখনো করে না বঞ্চনা।

সত্যের সারথি সাদেক

সত্য যে বড় কঠিন, কঠিনেরে বাসিলাম ভালো, যে কখনো করেনা বঞ্চনা !

সত্যের সারথি সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আরেকটি বিজয়ঃ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতির ঐতিহ্যের অন্তভূক্ত

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৫০

বাংলা বর্ষবরণের সাথে বড় অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এই স্বীকৃতি বাঙালি জাতি সত্তাকে আরো মহীয়ান করল।
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সগর্বে স্থান করে নিল আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই স্বীকৃতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, অশুভর বিরুদ্ধে শুভরও বিজয়। বাঙালি জাতি কিভাবে শোভাযাত্রার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণের আগমনী গান গায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন তা আরো ভালো করে জানতে পারবে।

বাংলা বর্ষবরণ আমাদের সব সম্প্রদায়েরই প্রাণের উৎসব; খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর এর সূচনা করেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এ উৎসব আয়োজনে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। বাঙালি এ বাধা মানেনি। ষাটের দশকে তারা ছায়ানটের ডাকে, প্রাণের আহ্বানে রমনা বটমূলে উৎসবে মিলিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও একাধিকবার পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা প্রমাণ করে দেশ স্বাধীন হলেও বাঙালি সংস্কৃতির শত্রুপক্ষ কোথাও রয়ে গেছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত করতে গিয়ে স্বৈরাচারদের নানা রকম হুমকি শুনতে হয়েছে, মৌলবাদীদের রক্তচক্ষু দেখতে হয়েছে। জঙ্গিবাদ বিশ্বজুড়ে মাথাচাড়া দিতে চাইছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সড়ক ছাড়িয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার চেতনা বিশ্বের মহাসড়কে বিস্তৃত হোক। ইউনেসকো বলেছে, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের মানুষের সাহস আর অশুভর বিরুদ্ধে গৌরবময় লড়াই; এই আয়োজন ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।’ সব অশুভর বিনাশ ও সত্য প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াইয়ে আমাদের মাঠে থাকতে হবে।

যেকোনো বড় অর্জনের সঙ্গে দায়ও বেড়ে যায়। এই অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতি বিশ্বের কাছে নতুনভাবে ধরা পড়বে। অসাম্প্রদায়িকতা ও সর্বজনীনতার এই চেতনায় আমাদের সংহত থাকতে হবে। তা না হলে অশুভ শক্তি পাল্টা ছোবলের চেষ্টা করবেই।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানে আমরা একাত্তরে অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। জয়ী কোনো জাতি হারতে জানে না। বরং ধরা দেয় একের এর এক সাফল্য। মাতৃভাষার স্বীকৃতির পর নববর্ষের শোভাযাত্রার এই জয় আমাদের আরো সাহসী করবে। স্বীকার করতেই হবে অর্থনীতি, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নে আমরা অনেক দূর এগোলেও স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া বাকি। বাঙালি পরিচয়ের কথা মুখে বললেই চলবে না, চর্চায় তার ছাপ থাকা চাই। লোকজ অনেক সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত বিস্তৃতি, বিশ্বায়নের প্রভাবে এ যুগে নিজেদের ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমরা আন্তরিক না হলে ক্ষয় রোধ করা যাবে না।

দানবীয় শক্তির বিনাশ চেয়ে আমরা প্রতি পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করি। তবে দুর্নীতি, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধনী-দরিদ্র বৈষম্যসহ অনেক অশুভ শক্তি আমাদের চোখ রাঙায় প্রতিনিয়ত। তাদের পরাজিত করে সত্য ও সুন্দরের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করা গেলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পূর্ণ মাহাত্ম্য নিয়ে ধরা দেবে ।


(লেখকঃ সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী , জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.