নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পরিচয় আমি।

Md Ashraful Alam Sourov

Md Ashraful Alam Sourov › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্যাটেলাইট অর্থ কি, স্যাটেলাইটের কাজ কি ? স্যাটেলাইটের ইতিহাস ?

১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:০৫


স্যাটেলাইটঃ

স্যাটেলাইট অর্থ কৃত্রিম উপগ্রহ।
স্যাটেলাইট হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত উপগ্রহ। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার খবর আমরা নিমিষেই পেয়ে যাই। স্যাটেলাইটকে রকেট বা স্পেস শাটলের কার্গো বে-এর মাধ্যমে কক্ষপথে পাঠানো হয়। পাঠানোর সময় রকেট নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয় ইনার্শিয়াল গাইডেন্স সিস্টেম (আইজিএস) মেকানিজম। পৃথিবীর অভিকর্ষ পার হতে রকেটকে ঘণ্টায় ২৫ হাজার ৩৯ মাইল ত্বরণে ছুটতে হয়। স্যাটেলাইট স্থাপনের সময় কক্ষীয় গতি ও তার জড়তার ওপর পৃথিবীর অভিকর্ষের যে প্রভাব রয়েছে, এর জন্য সামঞ্জস্য বিধান করতে না পারলে স্যাটেলাইট এ অভিকর্ষের টানে ফের ভূপৃষ্ঠে চলে আসতে পারে। এ জন্য স্যাটেলাইটকে ১৫০ মাইল উচ্চতাবিশিষ্ট কক্ষপথে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ হাজার মাইল গতিতে পরিভ্রমণ করানো হয়। মূলত গতিবেগ কত হবে, তা নির্ভর করে স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে কত উচ্চতায় রয়েছে, তার ওপর। পৃথিবী থেকে ২২ হাজার ২২৩ মাইল উপরে স্থাপিত স্যাটেলাইট ঘণ্টায় ৭০০ মাইল বেগে পৃথিবীকে আবর্তন করে। পৃথিবীর সঙ্গে স্যাটেলাইটও ২৪ ঘণ্টা ঘোরে। তবে ভূ-স্থির বা জিওস্টেশনারি উপগ্রহগুলো এক জায়গাতেই থাকে। এগুলো আবহাওয়া ও যোগাযোগ সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইট উপবৃত্তাকার পথে ঘোরে। সাধারণত ৮০-১ হাজার ২০০ মাইল উচ্চতাবিশিষ্ট কক্ষপথে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট পাঠানো হয়। কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে স্যাটেলাইটটি কত উচ্চতায় বসবে। যেমন উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে গবেষণা, বণ্যপ্রাণীর চরে বেড়ানো পর্যক্ষেণ, অ্যাস্ট্রোনমি এবং পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করার জন্য সায়েন্স স্যাটেলাইটকে বসানো হয় ৩০ হাজার থেকে ৬ হাজার মাইল উচ্চতায়। আবার গোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয় ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার মাইল উচ্চতায়। এক এক ধরনের স্যাটেলাইটের বৈশিষ্ট্য ও গঠন প্রণালী একেকরকম। তবে সব স্যাটেলাইটের মধ্যেই সাধারণত কিছু মিল আছে।

স্যাটেলাইটের কাজসমূহঃ

স্যাটেলাইটের শরীর ধাতু সংকরের ফ্রেম দিয়ে তৈরি। একে বলে বাস। এতেই স্যাটেলাইটের সব যন্ত্রপাতি থাকে।
প্রত্যেক স্যাটেলাইটে থাকে সোলার সেল এবং শক্তি জমা রাখার জন্য ব্যাটারি। এর পাওয়ার সিস্টেম প্রসেসকে পৃথিবী থেকে সবসময় মনিটর করা হয়। স্যাটেলাইটে একটি অনবোর্ড কম্পিউটার থাকে যা একে নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন সিস্টেমকে মনিটর করে। স্যাটেলাইটের আরেকটি মৌলিক বৈশিষ্ট হল এর রেডিও সিস্টেম ও অ্যান্টেনা।
আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট পৃথিবী পৃষ্ঠ নিরীক্ষন করতে ও পৃথিবী পৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশের ছবি তুলতে ব্যবহার করা হয়।
মিলিটারী স্যাটেলাইট শুধুমাত্র সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
এর মুল কাজ হল- নিউক্লিয়ার মনিটরিং, রাডার ইমেজিং, ফটোগ্রাফি ও শত্রুর গতিবিধ পর্যবেক্ষন ।

স্যাটেলাইটের ইতিহাসঃ

কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ যাত্রার ইতিহাস খুব একটা পুরনো নয়, একেবারেই নতুন। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, মহাকাশ যাত্রার প্রথম পদক্ষেপটির সূচনা হয়েছিল ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর। এই যাত্রার সূচনা করে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তারা স্পুটনিক-১ নামক কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে। স্পুটনিক শব্দের অর্থ হলো ভ্রমণসঙ্গী। একই বছর ২ নভেম্বর স্পুটনিক-২ নামক আরেকটি কৃত্রিম উপগ্রহ তারা মহাকাশে পাঠান। প্রথম মার্কিন কৃত্রিম উপগ্রহের নাম এক্সপ্লোরার-১। এই উপগ্রহ ১৯৫৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মহাকাশে পাঠানো হয়। ভস্টক-১ নামক সোভিয়েত কৃত্রিম উপগ্রহ মানুষ নিয়ে প্রথম পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। যে মানুষটি প্রথম মহাকাশে গিয়েছিলেন ইউরি গ্যাগারিন। তিনি ছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের নাগরিক। তিনি ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল ভস্টক-১ এ চড়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেন। স্টক-৬ নামক কৃত্রিম উপগ্রহে চড়ে প্রথম সোভিয়েত মহিলা মহাকাসচারি ভেলেন্তিনা তেরেসকোভা মহাকাশে ঘুরে আসেন ১৯৬৩ সালে। ইনটেলসেট-১ কৃত্রিম উপগ্রহকে পাঠানো হয় বাণিজিয়কভাবে ব্যবহারের জন্য যোগাযোগ উপগ্রহ হিসেবে। রিমোটসেনসিং বা দূর অনুধাবনের জন্য পাঠানো প্রথম উপগ্রহ হলো ল্যান্ডসেট-১। একে পাঠানো হয় ১৯৭২ সালে। আন্তর্জাতিক যোগসূত্র স্থাপনের জন্য অ্যাপোলো-সয়োজ টেস্ট প্রজেক্ট নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রথম পাঠানো হয় ১৯৭৫ সালে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এ পর্যন্ত প্রায় সহস্রাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে। কয়েক শত কৃত্রিম উপগ্রহ বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং হাজার হাজার অব্যবহৃত কৃত্রিম উপগ্রহ বা তাদের অংশবিশেষ মহাকাশে ধ্বংসাবশেষ হিসেবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১

আধুনিক বিজ্ঞানে স্যাটেলাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। পৃথিবীর উন্নতরাষ্ট্র গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদশে সরকারও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে।

বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ 'বঙ্গবন্ধু-১' স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মার্কিন কোম্পানি স্পেসএক্স-এর সর্বাধুনিক রকেট ফ্যালকন-৯ স্যাটেলাইটটি নিয়ে কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং গ্রাউন্ডে সিগন্যালও পাঠিয়েছে।
এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল ( এসপিআই) কোম্পানিকে পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসপিআই এর কাজ হল স্যাটেলাইট ডিজাইন ও এটির নির্মাণকাজ তদারকি করা, গ্রাউণ্ড স্টেশন তৈরি, বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেয়া ও কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণে সহায়তা করা।

বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সফল হলে টেলিযোগাযোগ, টিভি ও বেতার সম্প্রচারের মত কাজগুলো এই উপগ্রহ দিয়ে করা সম্ভব হবে এখন যা করা হচ্ছে অন্যদেশের ভাড়া করা উপগ্রহের মাধ্যমে আর যার জন্য প্রতি বছর আমাদের টিভি চ্যানেলগুলো উপগ্রহের ভাড়া বাবাদ দিচ্ছে ৪০ লাখ ডলার । নিজস্ব উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপিত হলে অন্যদেশকে ভাড়াতো দিতেই হবে না তাছাড়াও অন্যদেশকে এই উপগ্রহ ভাড়া দিয়ে আয় করা যাবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.