নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এসো---ছোঁও--- সম্পূর্ণ পাথর হয়ে গেছি কিনা দেখো।

স্পর্শিয়া

স্পর্শিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাথরকুঁচি ও একটি কুঁড়ি -৬ষ্ঠ পর্ব

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫৩


দ্বিতীয় জীবন- ১ম পর্ব
পাথরকুঁচির জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের আগের অংশটুকু -২য় পর্ব
পাথরকুঁচি জীবনের দিন ও রাত্রীগুলো - তৃয় পর্ব
পাথরকুঁচি জীবনের স্বপ্ন ও কান্নারা -৪র্থ পর্ব
পাথর চোখে দেখা পাথরকুঁচি জীবন- ৫ম পর্ব

আজ আমাদের এখানে এক আশ্চর্য্য ঘটনা ঘটলো। সকালে হাত মুখ ধুয়ে টিভিরুমের টেবিলে পড়ে থাকা খবরের কাগজটা নিয়ে কেবলি বসেছি। হঠাৎ হই চই হট্টগোলে উৎসুক হয়ে জানালায় ছুটে গেলাম। জানালা দিয়ে বাগান পার হয়ে দেখা যায় হাসপাতালের সদর দরজা। দেখলাম এক দল লোক হই হই করতে করতে গেইটের ভেতরে ঢুকলো। ওদের মধ্যে একজনের কোলে একটি ২/৩ বছরের শিশু। শিশুটির মুখ একদিকে কাত করা ছিলো তাই ঠিক চেহারাটা দেখা যাচ্ছিলো না কিন্তু এক সাইডেে ওর হাত ও বুকের দিকে তাকিয়ে শিউরে উঠলাম আমি।

দৌড়ে গেলাম বারান্দায় । আমি ভুলে গিয়েছিলাম, যেই আমি একজন মানুষের সামনেও নিজের মুখ দেখাতে কুন্ঠা বোধ করি, সেই আমি এক দঙ্গল লোকের সামনে চলে এসেছি। কিন্তু এসে কোনো লাভ হলোনা। এই ভীড়েের মাঝে ঠিকমত দেখতে পেলাম না বাচ্চাটাকে। তাকে এমারজেন্সীর দিকে নিয়ে যাওয়া হলো আর সেখানে যাওয়া তো আমার পক্ষে সম্ভব না। এরপর আমার সারাটাদিনই নষ্ট হয়ে গেলো। এক অব্যাক্ত যন্ত্রনা চেপে থাকলো আমার পুরো বুকটা জুড়ে সারাদিনমান।

সারাদিন ভাবলাম বসে বসে। কি এমন দোষ করেছিলো এতটুকু একটা শিশু যে সারাটা জীবন তার এইভাবে নষ্ট করে দেওয়া হলো? বাচ্চাটার কথা আমি কিছুই জানিনা। তবে আমার নিজের ছেলেবেলা, কৈশোর মনে পড়ে। ছেলেবেলা বলতেই আমার মনে পড়ে আমার প্রিয় সেই রঙ পেন্সিলের বাক্সটাকে। নানা রঙের রঙ পেন্সিলগুলোর মধ্যে কেনো যেন বেগুনী রঙটাই বেশি প্রিয় ছিলো আমার। কি যে অদ্ভুত মায়াবি এক রঙ। কমলা, গোলাপী, নীল প্রতিটা রঙই যেন ছিলো এক এক অজানা রহস্যের এক একটি অজানা অধ্যায়। ছেলেবেলার রঙিন স্মৃতিগুলির মাঝে আরও যে সব মনে পড়ে রংধনু, প্রজাপতি, কাঁচপোকা, হাওয়াই মিঠা, কাঠঠোকরা বা মাছরাঙ্গা। সব বর্ণময় বর্নীল জিনিসগুলিই আমাকে টানতো বেশি। কিন্তু আজ বর্ণহীন এক জগতে বসবাস আমার। ছেলেবেলার রঙ পেন্সিল রঙ্গিন স্মৃতিগুলি আজ বন্দি বড়বেলার ক্ষয়ে যাওয়া রঙ পেন্সিলের এক রঙচটা বাক্সে।

আমার রুমের পাশ দিয়ে যেই সরু গলিটা আছে। দিনের প্রায় প্রতিটা প্রহরই তার নির্জনতায় কাটে। আমি এই জানালার ধারে প্রায়ই বসে থাকি। একা একা। পাতলা একটা পর্দা লাগানো আছে তাতে। কিন্তু এই পর্দা আমি সরিয়ে দেই মানে উঠিয়েই দেই একেবারে উপরের গ্রীলের ফাঁকে। কোনো জনমনষ্যির দেখা মেলেনা এই গলিতে খুব মাঝে সাঝে ছাড়া। অবাক হয়ে লক্ষ্য করি বিকেলের রোদ চলে যাওয়া নিশ্চুপ এই গলিটার নিসঙ্গতার সাথে আমার বেশ মিল আছে। কেমন যেন মন খারাপ করা একটা ক্ষন আর মন খারাপ করা একাকী সরু গলিটি। আসলে শুধু বিকেলই নয় সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা বা গভীর রাতেও গলিটি নিসঙ্গ পড়ে রয় আমারই মত। আমরা একে অপরের ব্যাথা অনুভব করি। মাঝে মাঝে অবাক হয়ে দেখি দুঃখী নিসঙ্গ গলিটা চেয়ে আছে আমার দিকে।

প্রথম যেদিন আমি এই গলিটার দুটো আশ্চর্য্য ব্যাথাতুর চোখ দেখতে পেলাম, যা চেয়ে ছিলো অপলক আমার দিকে। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিলো আমার।আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমার কি তবে হেলুস্যিনেশন হচ্ছে? আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি। ভয়ে ঠাস করে জানালার পাল্লা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছিলো আমার সেদিন। আমি মনে মনে বলছিলাম আমি ভুল দেখেছি। অবশ্যই আমি ভুল দেখেছি। পথের কোনো প্রাণ নেই। কোনো চোখ দেখিনি আমি। এসব আমার মনের ভ্রান্ত কল্পনা।

জানালায় পিঠ রেখে চোখ বুজে দাঁড়িয়ে ছিলাম কতটা সময় জানিনা। কিন্তু আবার চোখ মেলতেই দেখতে পাই দরজা, জানালা, আসবাবপত্র সবারই দুটো করে চোখ। সবাই তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে। আমি আশ্চর্য্য হয়ে দেখি এই রুমের আলমারী টেবিল এমনকি বিছানারও দুটো দুটো করে চোখ। তারা সবাই বির্মষ। ওদের কারো চোখেই কোনো আনন্দ নেই। সবাই আমার কষ্টে কষ্ট পাচ্ছে তাই সঙ্গ দিতে এসেছে নির্বাক মুঢ় মৌনতায়। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। এরপর আমার মনে নেই আর।

যখন আমার জ্ঞান ফেরে তখন ম্যাডাম প্যাট্রেসিয়া হতে কাউন্সেলর এমন কি আমাদের কিচেনে যে হেড কুক রান্না করে তাকেও দেখতে পাই আমার পাশে। আমার ভীষন লজ্জা হতে থাকে। আমার কাউন্সেলর রুম থেকে সবাইকে চলে যেতে বলেন আর তারপর উনি জানতে চান ঠিক কি হয়েছিলো আমার। আমি তাকে নিসঙ্গ গলিটার কথা বলি। বিমর্ষ দুখী চোখের আসবাবগুলোর কথা বলি। বলি গলিটার প্রান আছে। মানুষের চাইতেও অনুভুতিশীল সেই প্রান । যাদের কারো সাথে কথা বলার দরকার হয়না। তাদেরকে জানাতে হয়না কারো দুঃখ। তারা আপনা থেকেই সব জেনে যায়। আমার জানালার ধারের ঐ নিসঙ্গ গলিটা তাই আমার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলো। আমি ভয় না পেলে ও নিশ্চয় কথা বলতো আমার সাথে। আমার দুঃখ হচ্ছে এখন, কেনো ভয় পেলাম? কেনো শুনলাম না কি বলতে চায় আমাকে ঐ নির্জন নিসঙ্গ গলিটা? আমি ম্যাডামকে গলিটার সুন্দর বড় বড় দুটো ব্যাথাতুর চোখের কথা বলি। ম্যাডাম প্যাট্রেসিয়া বলেন আমার একটা সাউন্ড স্লিপ লাগবে । তিনি আমাকে ঘুমের ইনজেকশন ইনজেক্ট করতে বললেন।

ঘুম যখন ভাঙ্গলো, নিজেকে আবিষ্কার করলাম আমি মূল হাসপাতালের ওয়ার্ডে। আমাকে আমার আবাসিক রুম থেকে এখানে পাঠানো হয়েছে পর্যবেক্ষনে রাখার জন্য। একাকী থাকার চাইতে কিছুদিন মানুষের মাঝে থাকতে হবে। আমার মনটা খারাপ হলো। মন খারাপের মূল কারণটাই ছিলো আর কারো জন্য নয়, ঐ নিসঙ্গ গলিটার জন্য কষ্ট। তাকে ছেড়ে থাকতে হবে কিছুদিন। কে জানে এরপর আমার রুমটাও চেঞ্জ করে দেওয়া হবে কিনা। গলিটার জন্য আমার কষ্ট হতে থাকে। সেও তো আমার মতই একাকী নিসঙ্গ। কিছু বলতে চেয়েছিলো সে আমাকে । জানাতে চেয়েছিলো তার ব্যাথা আর আমি কিনা ......সব ভন্ডুল করে দিলাম।

উচ্চ ক্ষমতার ঘুমের ঔষধের কার্য্যকারিতায় আমি আবারও ঘুমিয়ে পড়লাম। এরপর যখন ঘুম ভাঙ্গলো চোখ বন্ধ অবস্থাতেই কানে ভেসে এলো শিশুর ক্ষীন কান্না। অনেকক্ষন যাবৎ এই কান্নার স্রোতে ভেসে ভেসে ঘুম কাটলো আমার। চোখ মেলে দেখলাম কান্নাটা স্বপ্ন ছাড়িয়ে বাস্তবেই শোনা যাচ্ছে। আমি আবারও ভয় পেলাম। ভাবছিলাম এটাও কোনো হেল্যুসিনেশন হবে। দেওয়ালের ঘড়িতে তখন রাত দুটো বেজে পঁচিশ। আমি ভালো করে মাথা ঝাঁড়া দিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলাম কয়েক বেড পরের বেডটা থেকেই ভেসে আসছে শিশুর কান্না।
কান্নাটা হেল্যুসিনেশন নয়। সত্যিকারের মানব শিশুরই কান্না। অনেক ক্ষন যাবৎ কাঁদছে বাচ্চাটা। কিন্তু কোথাও কোনো সেবিকা নেই কেনো?

আমি উঠে এসে দাঁড়ালাম ওর বেডের পাশে। আহারে বাচ্চাটা। কি মিষ্টি একটা মুখ। কাঁদতে কাঁদতে বুঝি শক্তিও ফুরিয়েছে। ওর পুরো বাম হাত ও গলার কিছু অংশে মেডিসিন ও ব্যান্ডেজ। বাচ্চাটা কাঁদছে খিদে পেয়েছে নাকি ভয়ে কাঁদছে? কোথাও কাউকে দেখতে না পেয়ে আমি খুব সাবধানে ওকে কোলে তুলে নিলাম। হয়তো ওকে এভাবে নেবার জন্য আমাকে ডক্টর বা নার্সেরা বকা দেবেন তবুও আমি সেসবের তোয়াক্কা না করে ওকে কোলে নিয়ে কাঁধে মাথাটা রেখে ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করলাম। বাচ্চাটার কান্না থেমে গেলো। কিন্তু আমার কাঁধের উপর ঘুমের মাঝেও ফুঁপিয়ে উঠছিলো ও।

আমার ভাষা শিক্ষার ক্লাস শুরু হয়েছে। আমার ইংরেজী শিক্ষিকা আমাকে রোজ নিয়ম করে ইংরেজী শিখাচ্ছেন। উনি আমাকে জিগাসা করলেন, "আমার হাত ধরো" এই কথাটার ইংলিশ কি হবে? আমি অনেক ভেবেও ধরা শব্দের ইংরেজী খুঁজে পেলাম না। ছোট থেকেই এই একটি সাবজেক্ট আমি খুব ভয় পেতাম। অনেক কষ্টে মনে পড়লো ক্যাচ মানে ধরা। এমনি পড়েছিলাম কোন ক্লাসে যেন, থ্রোও দ্যা বল, ক্যাচ দ্যা বল.. ... আমি অনেক কষ্ট করে ইংরেজী শব্দগুলো মাথায় আনার চেষ্টা করি। তারপর অনেক ভেবে বললাম ক্যাচ মাই হ্যান্ড। উনি হেসে ফেললেন, আমি বুঝলাম অনেক বড় কোনো ভুল করেছি। লাল হয়ে উঠলাম আমি লজ্জায় এবং হীনতায়। উনি বলে চলেছিলেন, ক্যাচ মানে ধরা বটে তবে হোল্ড মাই হ্যান্ড বলতে হবে।

লজ্জায় আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। এতগুলো দিন পরে আমার হাসি পায় সে কথা ভেবে , কি পরিমান যে সেনসিটিভ হয়ে পড়েছিলাম আমি সেসব দিনে। সাদা ধবধবে পোষাক পরা মাথায় সাদা স্কার্ফ জড়ানো পাদ্রী ইংরেজী শিক্ষার এই টিচারটিকে দেখলেই আমার মাদাম তেরেসাকে মনে পড়ে। তিমি আমার কেঁদে ফেলা দেখে ভীষন দুঃখিত হলেন। আমার মাথাটা উনার কোলে তুলে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। তিনি বলে চলেছিলেন। ডোন্ট ক্রাই বেবি, দিস ইজ নট ইওর মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ। ইট'স ভেরি নরমাল ইউ কান্ট স্পিক ইন ইংলিশ। থিংক- ক্যান আই স্পিক গুড বাংলা? নো --

উনার স্নেহস্পর্শে হঠাৎ আমার মাকে মনে পড়তে লাগলো। কতদিন মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে কাঁদিনি আমি। কতদিন মায়ের মুখটা দেখিনি। কতগুলো দিন পার হয়ে গেছে মায়ের হাত দুটো আমার গাল ছোঁয়নি। আমি নিশ্চিৎ জানি আমার মা কতটা কষ্ট পেয়েছেন আমি আর তাদের সাথে দেখা করিনি, করতে চাইনি বলে। মা নিশ্চয় অবাক হয়ে যায়। ভাবে আমি পাগল হয়ে গেছি। উন্মাদ হয়ে গেছি নইলে কেউ কি পারে এইভাবে আত্মীয় পরিজন ছেড়ে এতগুলো দিন এতটা দূরে থাকতে?

আমার মায়ের জন্য কষ্ট হতে থাকে। এক ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করে আমার ছায়া সুনিবিড় সেই গ্রামে। যেখানে আমার মমতাময়ী মা রোজ আমার কথা ভেবে কাঁদেন। আমার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু আমি এও জানি দূর থেকে যে কষ্টটা উনি পাচ্ছেন হয়তো আমাকে অনেক দিনের অদেখায়, সেই কষ্টের তীব্রতা কমতে কমতে একদিন নাই হয়ে যাবে আর কষ্টটা নাও যদি একেবারেই চলে যায়, বহুদিনের অদর্শনে কষ্টটা ক্ষীন শিখার মত টিমটিম জ্বলতে থাকবে একটা সময়.....খুব ক্ষীন।

কিন্তু অহর্নিশ চোখের সামনে আমার মত এই জলন্ত হুতাশন ঝুলে থাকলে কিভাবে সহ্য করতেন তিনি?

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৬

গেম চেঞ্জার বলেছেন: অপেক্ষা করছিলাম আপনার লেখার।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১৮

স্পর্শিয়া বলেছেন: অপেক্ষার জন্য ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার। ভালো থাকবেন।

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১৪

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: এই পর্বটিও পূর্বের পর্বগুলোর মতোই দারুন লাগলো। পাথরকুঁচির বর্ণনায় পাথরকুঁচির দিনলিপি।অনবদ্য লিখনি।ভালোলাগা জানবেন+++

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২৮

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ রুদ্র জাহেদ। সবসময় আমার লেখা পড়বার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: স্পর্শিয়া ,



ক্যাচ নয় , হোল্ডিং দ্য হার্টস অব দ্য ষ্টোরী .........................

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৩৩

স্পর্শিয়া বলেছেন: আহমেদভাই ধন্যবাদ। এমন মন্তব্য আমার প্রাপ্য নয়।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমার মায়ের জন্য কষ্ট হতে থাকে। এক ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করে আমার ছায়া সুনিবিড় সেই গ্রামে। যেখানে আমার মমতাময়ী মা রোজ আমার কথা ভেবে কাঁদেন। আমার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু আমি এও জানি দূর থেকে যে কষ্টটা উনি পাচ্ছেন হয়তো আমাকে অনেক দিনের অদেখায়, সেই কষ্টের তীব্রতা কমতে কমতে একদিন নাই হয়ে যাবে আর কষ্টটা নাও যদি একেবারেই চলে যায়, বহুদিনের অদর্শনে কষ্টটা ক্ষীন শিখার মত টিমটিম জ্বলতে থাকবে একটা সময়.....খুব ক্ষীন।

মায়ের কষ্টগুলো কমে না। আমার মা আমাকে কি পরিমাণ মিস করেন সেটা হয়তো ২/১ কথায় বলে ফেলতেই পারি। কিন্তু পারব না মায়ের কষ্টগুলো বুঝতে। দিনের পর দিন মাকে ছেড়ে থাকতে আমার তেমন মিসিং এখন আর হয় না কিন্তু মা কি তেমনটি করতে পারে??

প্রতিবার বাড়িতে গেলে মাকে দেখি সেই আগের মতোই মিস করার লক্ষণ। আসলে, মা'য়ের কষ্ট/অনুভূতিগুলোর তূলনা নেই।

পাথরকুঁচির মা'ও হয়তো মিস করে। তবে চোখের সামনে থাকলে যতটা কষ্ট পেতেন ততোটা হয়তো ধীরে ধীরে ক্ষয়ে গেছে।

একটা প্রবাদ আছে 'পথ পথিকের সৃষ্টি করে না। পথিকই পথের সৃষ্টি করে"

পাথরকুঁচির উচিত নিজের গন্তব্যে পৌঁছার জন্য ভাবা। পথ সৃষ্টি হবেই। পরিমিত ইচ্ছাশক্তি, প্রাণের প্রাচুর্য, একঝাঁক প্রেরণা তাতে প্রবাবকের কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

স্পর্শিয়া বলেছেন: পাথরকুঁচির জন্য গন্তব্যের সব পথগুলি খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইচ্ছাশক্তি, প্রেরণা দেখি কোনটা কাজে দেয়?

ধন্যবাদ আবারও গেম চেঞ্জার।

৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪০

নাবিক সিনবাদ বলেছেন: অন্নেক ভালো লাগলো আপু।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০০

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ নাবিক সিনবাদ।

৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

এস কাজী বলেছেন: এই পর্বটাও ভাল হয়ছে। ভাল লাগল পড়ে।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ এস কাজী। ভালো থাকবেন।

৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: শেষের প্রশ্নটা জটিল। কিন্তু মায়েদের কাছে সন্তান সবসময় সুন্দরই থাকে। অনুভুতির পরিবর্তন
হয়না। বরং সন্তানে দুঃসময়ে মমতা আরো বাড়ে। সবকিছু উজাড় করে দিয়ে সন্তানকে দেখে রাখে।

শুভকামনা রইলো।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

স্পর্শিয়া বলেছেন: মায়ের ভালোবাসা বা স্নেহের কোনো তুলনা হয়না।পৃথিবীর সবাই ত্যাগ করলেও মা সন্তানকে ত্যাগ করতে পারেন না। তবুও পাথরকুঁচিরা তাদের কষ্টগুলো থেকেও মায়েদের কষ্টগুলোকেই বড় করে দেখে এবং কনফিডেন্স হারায়।

৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০৫

রিকি বলেছেন: অপেক্ষায় ছিলাম আপনার আপু। এই পর্বও ভালো লাগল।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ রিকি। ভালো থাকুন।

৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৩৪

আমি মিন্টু বলেছেন: দারুন লাগল আপু যদিও আমি গল্প একটু কম পড়ি । কিন্ত আপনার গল্পটি পড়ে নিয়মিত গল্প পড়ার ইচছা শক্তি জাগলো ।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৬

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ মিন্টু। ভীষন ভালো থাকুন।

১০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: পাথরকুঁচির আশেপাশের সুন্দর মানুষেরা তাকে আবারও জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক। শুভকামনা।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৮

স্পর্শিয়া বলেছেন: শুভ কামনার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ হাসান মাহবুব। ভালো থাকবেন।

১১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:০২

লালপরী বলেছেন: পাথরকুচির অনেক কস্টের গল্প ভালোলাগলো আপু।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩১

স্পর্শিয়া বলেছেন: লালপরী ধন্যবাদ । ভীষন ভালো থাকুন।

১২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২২

ডাঃ মারজান বলেছেন: মা' কে অনেক মিস করছি। আপনার পোস্টের নিয়মিত পাঠক। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৩

স্পর্শিয়া বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩

সুমন কর বলেছেন: সাথে আছি..........

ভালো থাকুন।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৯

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর। শুভ কামনা।

১৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮

জেন রসি বলেছেন: মানুষই মানুষের সাজানো স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।আবার এই মানুষই মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি দেয়, অনুপ্রেননা দেয়। মানুষ যেমন দানব রুপে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে আবার কিছু মানুষ পরম মমতায় সেই ক্ষত মুছে দিতেও পারে।তাই যতই বিপদ আসুক, যতই অসুন্দরের দানবীয় রাজত্ব চলুক মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো যাবেনা। সেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে মানুষ নিজেকেই নিজে অবিশ্বাস করা শুরু করবে।

আপনার গল্পগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি।ভালো থাকুন সবসময়। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭

স্পর্শিয়া বলেছেন: বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলায় দোদুল্যমান পৃথিবীতে অবিশ্বাসের হিংস্র করাল থাবাটাই বেশী কার্য্যকরী ক্ষতিকারক।

তবুও বিশ্বাস করতে হয়, মানুষ বিশ্বাস করে....

ধন্যবাদ জেন রসি আমার লেখাগুলো এত মনোযোগ দিয়ে কেউ পড়বে এটা আগে ভাবিনি।

১৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

সাহসী সন্তান বলেছেন: পাথরকুচি জীবনের বিষাদময় অধ্যায়! পড়তে পড়তে নিজেই আবেগাপ্লুত হয়ে যাই!

আপু, অনেকের মত আমিও সব সময় আপনার লেখাটার অপেক্ষায় থাকি! ভাল থাকবেন & শুভ কামনা জানবেন!

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভকামনা।

১৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

দর্পণ বলেছেন: স্পর্শিয়া

এ লেখাটিও অসাধারণ লাগলো। আপনি একজন গুনী ও শক্তিশালী লেখিকা। শুভকামনা রইলো।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৩

স্পর্শিয়া বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ দর্পন। ভালো থাকবেন।

১৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বরাবরের মতোই সুন্দর, হৃদয় স্পর্শী, সাবলীল বর্ণনা, আবেগের গভীরতা সব মিলিয়ে আগের মতোই চমৎকার।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৪

স্পর্শিয়া বলেছেন: আমার প্রতিটা লেখা মন দিয়ে পড়বার জন্য কৃতজ্ঞতা বিদ্রোহী ভৃগু। ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

১৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

চ্যাং বলেছেন: মর্মিত ও ব্যাথিত :( :( :( :( :( :( :( :( :( :(

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ চ্যাং।

১৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৫০

কিরমানী লিটন বলেছেন: +++
শুধুই মুগ্ধতা রেখে গেলাম,মন ছুঁয়া কাব্য প্রসবের জন্য -অসাধারণ!!!
সতত শুভকামনা-সুন্দরের সাথেই আছি ...

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০০

স্পর্শিয়া বলেছেন: শুভকামনা কিরমানী লিটন। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

২০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০১

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: বেশ লাগছে গল্পের বর্ণনার পরতে পরতে ।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪

স্পর্শিয়া বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আর শুভকামনা।

২১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: লেখাগুলি পড়ার পর প্লাস বাটন ক্লিক করা ছাড়া কিছু বলার নেই।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৯

স্পর্শিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

২২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৪

ক্যাটালিয়া বলেছেন: এসব কি লিখেছেন আপনি? মানুষ এত গভীর করে ভাবতে পারে? অনুভূতিশীল গলি, ব্যথিত আসবাব!

জানেন, ছোট বেলায় আমিও খুব রং পেন্সিল ভালোবাসতাম! "ছেলেবেলার রঙ পেন্সিল রঙ্গিন স্মৃতিগুলি আজ বন্দি বড়বেলার ক্ষয়ে যাওয়া রঙ পেন্সিলের এক রঙচটা বাক্সে। " লাইনটা ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে গেল...

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০

স্পর্শিয়া বলেছেন: ক্যাটালিয়া আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।


রঙ পেন্সিল দেখলে আজও আমার মনে পড়ে আমার ছেলেবেলা।

২৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনার লেখা পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম; এমন লেখা কীভাবে মিস করে গেলাম। এইমাত্র আপনার ব্লগে ঘুরে বুঝলাম; গত মাস দেড়েক আমি অনিয়মিত ছিলাম ব্লগে, তখনই এই শক্তিমান লেখিকার আবির্ভাব সামু'র আঙ্গিনায়। নিয়মিত লিখে যাবেন এই আশা রইল। আর এই পর্ব নিয়ে বিশেষ আর কি বলব? ভালো থাকুক পাথরকুঁচি, ভালো থাকুন আপনি। শুভকামনা নিরন্তর।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪

স্পর্শিয়া বলেছেন: আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই। আমি শক্তিমান লেখিকা নই। শুধু মনের কথাগুলো লিখে যাই। এটাই পারি।

২৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্পর্শিয়ার গল্পগুলো পাঠকদের মন স্পর্শ করে যাচ্ছে। অতি চমৎকার আপনার প্রকাশ ক্ষমতা!
জড় পদার্থের মাঝেও অনুভূতিপ্রবণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কল্পনাটা অভিনব হলেও অলীক মনে হয় নি। এটাই কলমের শক্তি।
পোস্টে ভাল লাগা। + +
আপনার জন্য শুভকামনা...

১৩ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:০০

স্পর্শিয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.