![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিটি জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য বোঝার ক্ষমতা মানুষের নেই ,যদি কোনো মানুষের থেকে থাকে তবে সে মহামানব নয়ত মহাবেকুব ।
টেস্ট অঙ্গনে ১৩ বছর ।
টেস্টে অভিষিক্ত হওয়ার ওই দিন
আজ ।
চারদিকে সাজ সাজ রব । ইতিহাসের
সাক্ষী হতে চায় সবাই । আগের দিনই
দেশের প্রথম টেস্টের টিকিট বিক্রির
দায়িত্বপ্রাপ্ত
ব্যাংকটি জানিয়ে দেয় , প্রথম দিনের
খেলার সব টিকিট
নাকি বিক্রি হয়ে গেছে । এ
নিয়ে এন্তার হুলুস্থুল । টিকিট
না পাওয়ার কারণে দেশের ক্রিকেট
ইতিহাসের প্রথম টেস্ট
ম্যাচটি যদি মাঠে বসে দেখা না হয় ,
সারা জীবন গল্প করে বেড়ানোর
মতো একটা ব্যাপার
যে হাতছাড়া হয়ে যায় !
টেলিভিশনে খেলা দেখাবে , কিন্তু
তাতে ইতিহাসের
সাক্ষী হতে চাওয়া ক্রিকেটপ্রেমীর
পাত পূর্ণ হয় নাকি !
আজ থেকে ১৩ বছর আগের
সময়টা অবতরণিকায় একটু
তুলে আনা হলো । ইতিহাস রচিত হওয়ার
ওই মুহূর্তটিতে দেশের
ক্রিকেটপ্রেমীদের
ব্যাপারটা অনেকটা এমনই ছিল ।
ভারতের বিপক্ষে দেশের প্রথম টেস্ট
ম্যাচটিতে জাতীয় দলের সাফল্য-ব্যর্থতার চেয়েও বড় ছিল ইতিহাস
রচনার বিষয়টি । ইতিহাস মুখ্য বিষয়
হলেও প্রত্যাশার ব্যাপারটিও
একেবারে কম ছিল না সেদিন । জয়ের
চিন্তা ছিল না । কিন্তু সম্মানজনক
পারফরম্যান্সের বাইরে সেদিন অন্য
কিছু ভাবতে রাজি ছিলেন
না ক্রিকেটপ্রেমীরা ।
তবে প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে ম্যাচের
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের অনন্য
পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীদের
আনন্দের মাত্রা সেদিন
বাড়িয়ে তুলেছিল অনেক গুন । স্বপ্নের
মতো তিনটি দিন শেষে চতুর্থ
দিনে এসে টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন
জগতের সঙ্গে সেদিন বাংলাদেশের
প্রথম পরিচয় ঘটে । প্রথম
ইনিংসে ৪০০ রানও যে টেস্ট ম্যাচ
ড্র করা কিংবা জয়ের জন্য যথেষ্ট নয় ,
বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও
দর্শকেরা খুব ভালোভাবেই সেদিন
পেয়ে গিয়েছিলেন পাঠটা । দ্বিতীয়
ইনিংসে মাত্র ৯২ রানে অলআউট
হয়ে বাংলাদেশ সেদিন
বুঝতে পেরেছিল
টেস্টে ভালো করতে আরও দীর্ঘ , বন্ধুর
পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে ।
টেস্ট ক্রিকেটের তপ্ত
ভূমিতে পা রাখার ত্রয়োদশ
বার্ষিকীতে এসেও সেই
পথচলা এখনো চলছে বাংলাদেশের ।
আমরা শিখছি । নিজেদের
দুর্বলতাগুলোকে ঠাহর
করে এগিয়ে চলেছি নিরন্তর । ১৩
বছরে মাত্র পাঁচটা টেস্ট জয়ের
রেকর্ড একটু মন খারাপ করে দিলেও
প্রত্যাশার মাত্রাটা দিনকে দিন
বেড়েই চলছে । গত দেড়-দুই
বছরে টেস্ট ক্রিকেটে শক্ত
পায়ে এগিয়ে যাওয়ার
ব্যাপারটি আমাদের
আশাবাদী করে তুলেছে দারুণভাবে ।
১৩ বছর আগে আমিনুল ইসলাম , আকরাম
খান , নাঈমুর রহমান , মোহাম্মদ
রফিকরা যে ‘রিলে রেস’ টি শুরু
করে দিয়ে গিয়েছিলেন , আজ সাকিব ,
তামিম , মুশফিক ,
মাশরাফিরা সে রিলের
ব্যাটনটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দৃপ্ত
আবেগে । ব্যাটনের হাত-বদলে আগের
চেয়ে বেড়েছে গতি , কিন্তু
ফিনিশিংটা এখনো অনেক দূরে । আরও
দুই একটি প্রজন্মকে হয়তো এই রিলের
ব্যাটন টেনে নিয়ে যেতে হবে ।
সাকিব-
মুশফিকরা ফিনিশিংয়ে পৌঁছে যেতে পার
পরম পাওয়া । নতুন প্রজন্ম না হয় নতুন
রেসেরই গোড়া-পত্তন করবেন । নতুন ওই
রেসটি হবে শীর্ষে পৌঁছানোর ।
প্রত্যাশার সঙ্গে সমর্থনের
মাত্রাটা যেখানে , সেখান
থেকে ব্যর্থ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না ।
দেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তিতে এ
দেশের ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ মানুষের
অবদান যে অনেক । প্রজন্ম
থেকে প্রজন্মান্তরে এই ভালোবাসা আর
সমর্থনই যে আমাদের ক্রিকেটের বড়
শক্তি ।
(পরিমার্জিত)
©somewhere in net ltd.