নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিযোগীতার গল্প

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৩

আলভীর ঈদ উদযাপন
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
.
"বাবা, বাবা এবার ঈদ এলে আমাকে একটা নতুন কাপড় দিতেই হবে কিন্ত! গতবার, তার আগেরবার কিছুই দাওনি। বলেছিলে দিবে, কিন্তু ঈদের দিন তুমি কোথায় যেন চলে যাও। তোমাকে আর সেদিন খুঁজে পাওয়া যায়না। এই দেখোনা সেই দুই বছর আগের একটা পুরোনো প্যান্ট, পুরোনো শার্ট এখনো পড়ে আছি। কত সেলাই দেওয়া রয়েছে তাতে। এই পুরোনো ময়লা, ছেড়া জামা প্যান্ট আমার আর ভালো লাগেনা। স্কুলে গেলে বন্ধুরা আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। জানো বাবা, তখন না আমার খুব কষ্ট হয়। সেদিন ঐ জিহাদ একটা নতুন জামা পড়ে এসে আমাকে বলছে, দেখতো আলভি জামাটা কেমন? জানো বাবা তখন না আমার খুব খারাপ লেগেছিলো, আমারও না ওদের মতো নতুন জামা, নতুন পোশাক পড়তে ইচ্ছে হয়। তুমি আম্মুকে বলবে আম্মু যেন এই জামা, প্যান্ট আর না সেলাই করে দেয়। বলোনা বাবা বলবে তুমি আম্মুকে। আর এবার কিন্তু ঈদের দিন তুমি কোথাও যাবেনা। আমার জন্য একটা লাল টুকটুকে জামা, প্যান্ট কিনে আনবে। কি হলো বাবা কথা বলছোনা কেন? বলো আনবে তো! আমিও সবার মতো নতুন পোশাক পড়ে বাইরে বের হবো, জিহাদের মতো সবাইকে বলে বেড়াবো 'দেখতো কেমন হয়েছে এই জামাটা, কেমন হয়েছে এই প্যান্ট টা, আমাকে দারুণ লাগছে তাইনা!' বাবা এই দেখো আমি অনেক দিন ধরে কিছু টাকা জমিয়েছি। এই টাকাগুলো দিয়ে তুমি ঈদের মাঠ থেকে আমার জন্য একটা গাড়ি কিনে দিবে। আমি সেদিন পিয়াসকে দেখলাম সে একটা মাইক্রো গাড়ি তাদের বারান্দাতে চালাচ্ছে। গাড়িটা কত সুন্দর করে আপনাআপনিই চলছে। বলোনা বাবা দিবে তো কিনে আমাকে"?
এরকম নানান আবদার জমে আছে আলভির ভেতরে। তার এই আবাদারের কথাগুলো শুনে মজিদ ও রহিমা বেগমের চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝড়ছে। তারা কিছুই বলছে না, শুধু চুপচাপ তাদের ছোট্ট আলভির আবাদারের কথাগুলো শুনছে। তাদের যে সে সামর্থ্য নেই। প্রতিদিন দু'বেলা খাবার জোগাতে পারেনা তারা। তাহলে কি করে তারা তার ছেলের এই ছোট ছোট আবদার গুলো পূরণ করবে?
.
দোকানে দিন দিন বাকির টাকার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। হাতেও তেমন কোন কাজ নেই। সেদিন বাকিতে চাউল আর কিছু জিনিস কিনতে গেলে দোকানদার সাদেক মজিদকে বললো "কি গো মজিদ, তোমার তো বাকির খাতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কবে শোধ করবা এই টাকা? শোন বাপু, আমারও পেট আছে, ছেলেমেয়ে আছে। এবার ঈদের আগেই কিন্তু টাকাগুলো শোধ করে দিবে।"
.
পাশের বাড়ির রাসেলের বাবার থেকেও প্রচুর টাকা ধার নেওয়া আছে মজিদের। কিন্তু রাসেলের বাপে কোনদিনও মজিদের থেকে টাকা চায়না। বরং যখন মজিদের টাকার প্রয়োজন পড়ে, তখন মজিদ তার কাছে গেলেই সে টাকা বের করে দেয়। কোনদিন সে জিজ্ঞেসও করেনি "কি করবে টাকা দিয়ে?" আলভির পড়ালেখার খরচ প্রায় রাসেলের বাবার টাকা দিয়েই চলে।
এখন তার কাছে থেকেও টাকা চাইতে লজ্জা লাগে মজিদের। একজনের থেকে আর কতবার টাকা চাওয়া যায়! যদি এমন হতো, মজিদ কিছু টাকা ধার করছে আবার মাঝে মাঝে কিছু টাকা পরিশোধও করছে। তাহলে সমস্যা হতোনা। মজিদের ভাগ্যে যেন কাঠপোড়া কয়লার স্তুপ জমে আছে। হাজার পরিস্কার করলেও সে কয়লার স্তুপ দূর হচ্ছেনা।
.
কাজের বড় সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও একটা ভালো কাজ পাওয়া যায়না। মজিদ যে জায়গাতে কাজ করে, সেখানে প্রায়ই মজুরের টাকা নিয়ে ঝামেলা করে সেখাানকার কাজের মালিক।
প্রতিদিন যা টাকা রোজগাড় করে মজিদ, তার সবটাই ফুরিয়ে যায় সংসারের খরচে। বিন্দু পরিমাণ টাকাও উদ্বৃত্ত থাকেনা তার। যা দিয়ে সে তার ছেলের জন্য একটা নতুন পোশাক কিনবে। মজিদ মনে মনে ভাবছে, আলভি তো ঠিকই বলেছে। তার নতুন কোন পোশাক নেই। তার ঐ একটা জামা প্যান্ট সে অনেকদিন ধরে পড়ছে। হাজারও সেলাই দেওয়া রয়েছে তাতে।
.
মজিদ মাঝে মাঝেই কোন নিরালাই বসে ভাবে, আল্লাহ তাকে কেন এমন গরীব বানালো? তার ভাগ্যটা কি আল্লাহ একটু সুন্দর করে দিতে পারলোনা? সারাবছর না হয় কষ্টেই কাটে দিন, কিন্ত এই রোজার একমাস কি ভালো কাটতে পারেনা?
বিভিন্ন ভাবনাতে বিভোর হয়ে মজিদের মুখ "আমি এমনই এক হতভাগা যে কিনা তার ছেলের একটা আবদারও পূরণ করতে পারিনা" হঠাৎ এই কথাটি বের হয়। তার মুখে এমন কথা শুনে পাশে থেকে রাসেলের বাপ বলে উঠলো, কি হয়েছে মজিদ তোমার? ফিসফিস করে কি আবোল তাবোল বলছো এসব?
মজিদ খেয়ালই করেনি কখন রাসেলের বাপ এসে তার পাশে বসেছে। সে ছোট্ট করে জবাব দিলো "কই কিছুনা তো!"
.
দেখতে দেখতে ঈদের দিন ঘনিয়ে এলো। তিনদিন পর ঈদ হবে। আলভি ছুটে ছুটে এসে তার মাকে বলে "মা মা জানো জিহাদ আজকেও একটা নতুন জামা পড়েছিলো, আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা কি তোর ঈদের? সে বলেছিলো নাহ, এটা ঈদের হবে কেন? এটা আমার বাবা আমাকে এমনিতেই কিনে এনে দিয়েছে। শুভকে দেখলাম সে তার বাবার সাথে শহরে যাচ্ছে ঈদের কেনাকাটা করতে। আমার কেনাকাটা কবে করবো মা? তুমি একটু বাবাকে বলোনা, আমাকেও যেন শহরে নিয়ে গিয়ে নতুন পোশাক কিনে দেয়।"
ছেলের কথাতে আবারো মায়ের দু'চোখ জলে ভরে ওঠে। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নেয় রহিমা। আর শাড়ির আঁচল দিয়ে সে তার চোখ দুটো মুছতে থাকে।
চোখের পানিও কেন শুকিয়ে যায়না? বারবার কেন বৃষ্টির ফোটার মতো অনবরত ঝড়তে থাকে চোখ থেকে?
রহিমা ছেলেকে মিথ্যে সান্ত্বনা দিয়ে বলে "বলবো বাবা বলবো। কালকেই তোকে শহরে নিয়ে যেতে বলবো তোর বাবাকে"। আলভি লোভী লোভী চোখে, আকাশ সমান হাসি নিয়ে মুখে, তার মাকে বলে "সত্যি বলছো মা, বাবাকে বলবে আমাকে শহরে নিয়ে গিয়ে পোশাক কিনে দিতে?" হ্যাঁ বাবা বলবো, কষ্টকে অতি কষ্টে চেপে রেখে কান্নাকে দুহাত দিয়ে সরিয়ে উত্তর দেয় রহিমা।
আলভী মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে খুশিতে মাকে জড়িয়ে ধরে।
.
রোজাও এসেছিলো মজিদের সংসারে অভাবও বেড়েছিলো। না জানি রোজার দিনে আরো ভালো দিন কাটবে তাদের। কিন্তু না, আগের থেকে আরো খারাপ দিন কাটছে তাদের।
মজিদ দোকান থেকে চাউল আনতে গেলে দোকানদার সাদেক আবারো বললো "কি মজিদ মিয়া ঈদ তো চলে এলো টাকা পয়সা দিবানা নাকি?"
মজিদ উত্তরে কিছু বলেনা। দোকানদার বুঝে ফেলে মজিদের কাছে টাকা নেই। তাই সে আগে থেকেই মজিদকে বলে দেয়, আজ মিয়া টাকা না দিলে আর বাকি দিবোনা।
মজিদ বিষন্ন মনে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে আসলে রহিমা মজিদকে বলে "ওগো আলভী বলছে তাকে শহরে নিয়ে গিয়ে তার ঈদের পোশাক কিনে দিতে। ঈদ তো প্রায় চলেই এলো, তুমি আলভীকে কালকে শহরে নিয়ে গিয়ে একটা জামা প্যান্ট কিনে দাওনা।"
মজিদ মৃদু স্বরে জবাব দেয়, হাতে একটা কানাকড়িও নেই। আজ রাতে কি খেয়ে রাত্রি যাপন করবো সেই চিন্তাতে আমি কুল পাচ্ছিনা। দোকান থেকে চাউল আনতে গেলে দোকানদার আমাকে বললো আগের টাকা শোধ না করলে আর বাকি দিবেনা।
রহিমা তার স্বামীর কপালের ঘাম মুছে দিয়ে বললো "তাহলে আজ আলভী না খেয়ে থাকবে?"
মজিদ ও রহিমা, তারা নিজেদের কথা চিন্তা করেনা। তাদের ছেলে আলভী কি খাবে, কি পড়বে এ চিন্তাতেই তাদের মন কেঁদে কেঁদে উঠছে। তার উপর আবার রহিমা আলভীকে বলেছে, কালকে তাকে তার বাবা শহরে নিয়ে যাবে।
.
সূর্যটা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। ঐ দূরের মসজিদ থেকে মোয়াজ্জিনের মিষ্টি কন্ঠে আযানের সুর শোনা যাচ্ছে। ইফতারির জন্য মজিদের ঘরে কিছুই নেই, শুধু পানি ছাড়া। মজিদ এবং রহিমা দুজনে দু'ঘড়া পানি খেয়ে ইফতার করছে। ঠিক সেই মুহূর্তে আলভী কোথায় থেকে যেন ছুটে এসে তার মাকে বললো "মা মা দেখো কি এনেছি?"
রহিমা তার ছেলের দিকে তাকিয়ে দেখে আলভী কিছু খেজুর, ছোলা, মুড়ি, জিলাপি আরো অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। রহিমা তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো "এগুলা কোথায় পেলি তুই?"
- জিসানদের বাড়িতে আজ ইফতারির আয়োজন করেছিলো। আমি সেখানে গেলে রাসেলের বাবা আমাকে এগুলো দিয়ে বললো, তুই এগুলো নিয়ে বাড়িতে যা। তোর বাবা মা রোজা আছে তাদেরকে এগুলো দে আর তুই খা। তাই নিয়ে এলাম তোমাদের জন্য।
সেদিন তারা আলভীর আনা ইফতারি দিয়েই রাতের আহার শেষ করলো। আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলো, আল্লাহ তুমি সবই পারো।
.
আগামীকাল ঈদ। আলভীকে তার বাবা শহরে নিয়ে যায়নি, পোশাক কিনে দেয়নি, এতেও সে রাগ করেনি। রাগ না করার পেছনেও একটা কারণ আছে। আর সেটা হলো মজিদ তার ছেলেকে আশ্বাস দিয়েছে, বাবা তুই ঈদের আগের দিন রাতেই তোর পোশাক পেয়ে যাবি। এই জন্য আলভী আর তার বাবার কাছে পোশাকের বায়না করেনি এ দুইটা দিন। আজকের এই দিনটাই হলো সেইদিন। আলভীকে পোশাক কিনে দেওয়ার দিন।
প্রতিদিনের মতো আজও আলভী সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়েছে খেলাধুলা করতে। প্রভাতে রান্না করা কিছু খাবার খেয়ে সে প্রতিদিন খেলতে বের হয়ে যায়। সারাদিন এদিক সেদিক খেলেধুলে দুপুরবেলা একবার বাড়ি এসে খেয়ে দেয়ে আবার বেড়িয়ে যায়।
আলভীর মনে আজ খুশির ঢেউ উথাল পাথাল করছে। সে তার বন্ধুদের বলে বেড়াচ্ছে, তাকেও আজ তার বাবা নতুন জামা, প্যান্ট কিনে দিবে। কালকে ঈদের মাঠে সবার মতো সেও নতুন কাপড় পড়ে ঘুরে বেড়াবে।
.
এদিকে মজিদ চিন্তা করছে কিভাবে তার ছেলেকে সে নতুন পোশাক কিনে দিবে! আজ যদি একটা কাজ থাকতো তাহলে আর এমন দিন দেখতে হতোনা। ওদিকে সাদেক দোকানদারও বারবার টাকা চাচ্ছে। কালকে ঈদের দিনে সকালে যে সেমাই খাবে, সেই সেমাই চিনি কেনার টাকাটাও নেই মজিদের কাছে।
এমন দূর্দিনে, দুঃসময়েও যে রহিমা নামের মহিলাটি তার পাশে আছে এতে মজিদ মাঝে মাঝে বেশ অবাক হয়ে যায়।
মজিদের চিন্তা মাখানো উদাসীন চেহারা দেখে রহিমা মজিদকে বলছে "ওগো তুমি চিন্তা করোনা। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আমি বলে রাখলাম দেইখো কোন একদিন আমাদের এই কষ্টের পরিবারটা সুখের জোয়াড়ে ভাসবে। আমাদের ছোট্ট আলভী একদিন বড় হয়ে আমাদের সেই সুখের দিনটা উপহার দিবে। তুমি আল্লাহর কাছে দোয়া চাও, সেই দিনটা পর্যন্ত যেন আল্লাহ আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখেন।"
.
সারাদিন খেলাধুলা শেষে আলভী সন্ধায় বাড়ি ফিরে তার বাবাকে বললো- বাবা আমার জামা প্যান্ট এনেছো? মজিদ তার ছেলের কথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে অন্যদিকে মুখ করে বসে আছে। কারণ সে যে তার ছেলের জামা প্যান্ট আনেনি।
"ও মা, মা.. তুমি বলেছিলে যে, বাবা আমাকে আজকে আমার জামা প্যান্ট কিনে দিবে। তো, দাওনা মা। কোথায় লুকিয়ে রেখেছো আমার জামা প্যান্ট? ঐ বাক্সের মধ্যে?" বলেই আলভী তাদের টিনের বাক্সটা খুলে দেখে সেখানে কিছুই নেই। কিছু না পেয়ে সে তার বাবাকে বললো - বাবা তুমি আমার জন্য কিছু আনোনি? এবার আলভীর এমন কথা শুনে তার মা রহিমা হু হু করে শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে কাঁদতে থাকলো। যত কষ্ট আছে এ পৃথিবীতে, সব কষ্টরা যেন তাদের পরিবারকেই বেশি ভালোবাসে। যার কারণে তাদের পরিবারে সবসময় দুঃখ কষ্ট লেগেই থাকে।
.
সেদিন রাতে আলভী তার মায়ের কান্না দেখে আর পোশাকের জন্য তার বাবার কাছে বায়না করেনি। চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়েছিলো বিছানাতে।
পরদিন খুব সকালে হঠাৎ পিয়াস আলভীকে ডাক দিলো। আলভী দরজা খুলে বাইরে গিয়ে দেখে পিয়াস তাকে ডাকছে।
- আলভী তোর ঈদের পোশাক কিনেছিস?
- না রে।
মন খারাপ করে আলভী উত্তর দিলো।
- মন খারাপ করিস না। আয় আমার সাথে।
বলেই পিয়াস আলভীর হাত ধরে টানতে টানতে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেলো। পিয়াসের বাবা বিদেশ থেকে এসেছে আজ সকালেই। আর আসার সময় বাচ্চাদের জন্য অনেক কাপড় এনেছে। সেগুলোই বিতরণ করা হচ্ছে তাদের বাড়িতে। পিয়াস তার বাবার থেকে দুই সেট জামা প্যান্ট নিয়ে আলভীকে দিলো। আর বললো- এগুলো পড়ে ঈদে যাবি আর ঈদের মাঠে যাওয়ার সময় আমাকে ডাক দিবি। আলভী মাথা নেড়ে পোশাকগুলো নিয়ে খুশিতে নাচতে নাচতে বাড়িতে এসে তার মাকে ডাক দিলো। তার মা ঘুম থেকে উঠে দেখে আলভীর হাতে নতুন পোশাক।
তার হাতে নতুন পোশাক দেখে তার মা তাকে জিজ্ঞেস করলো "কোথায় পেয়েছিস এগুলো"?
আলভী খুশিতে হাসতে হাসতে বললো- মা পিয়াসদের বাড়িতে তার বাবা পোশাক বিতরণ করছে। সকালে পিয়াস এসে আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এগুলো দিলো।
.
.
.
.
আজ আলভী বড় হয়েছে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। সেও আজ পিয়াসের বাবার মতো ছোট ছোট বাচ্চাদের মধ্যে কাপড় বিতরণ করছে। আগামীকাল ঈদ, তাই এই বিতরণের কাজটা আজকেই শেষ করতে চাই আলভী।
মজিদ ও রহিমা নিজ হাতে ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে ঈদের পোশাক দিচ্ছে।
পুরোনো সেসব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে রহিমা হঠাৎ মজিদকে বলে উঠলো "দেখেছো আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন। তোমাকে একদিন বলেছিলাম না- আমাদের ছোট্ট আলভীটা একদিন অনেক বড় হবে, সেদিন আমাদের এই কষ্টের সংসারে আর কষ্ট থাকবেনা। সব কষ্টগুলো সুখে পরিণত হবে। আজকে সে দিনটা এসেছে আমাদের।"
আজও রহিমা বেগমের চোখে পানি চিকচিক করছে। তবে এই পানিটা দুঃখের নয়, আনন্দের।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.