নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুপবতী

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৮

রুপবতী
পর্ব-২
.
সে অবাক চোখে আমার দিকে চেয়ে বললো, সোমা আসবে মানে? আমি একটু ইতস্তত বোধ করলাম এবং তাড়াতাড়ি উত্তর দিলাম। বললাম "না মানে, কোন সোমা, কিসের সোমা?"
আহা! এবার কি সোমাকে পছন্দের ব্যাপারটা আমার বোনটা জেনে গেলো?
সে বললো "বুঝেছি, সব বুঝেছি। গোপনে গোপনে বুঝি এসবই চলে! আমি আজকেই মাকে ফোন করে বলে দেবো যে, মা তোমার ছেলে বড় হয়ে গেছে। তার একজন সঙ্গী লাগবে।"
- না না, খবরদার বলিস না? আর কে বলেছে আমি সোমাকে পছন্দ করি, ভালোবাসি?
- কেন, কে আবার বলবে? এইতো, এই মাত্রই তো তুই বললি। আমি কি কখনো তোকে বলেছি যে, তুই সোমাকে ভালোবাসিস কিনা? না, বলিনি। কিন্তু তুই নিজেই বলে দিলি সেই কথা।
ওর কথা শুনে আমি নিজেই বোকা সেজে গেলাম। অবশেষে বুঝি সে আমার এই ব্যাপরেও জেনে গেলো! ওর সাথে আমি সব বিষয়ে শেয়ার করি শুধু এই বিষয়টা ছাড়া। সে আমাকে এর আগেও অনেকবার জিজ্ঞেস করেছে, আমার কাউকে পছন্দ আছে কিনা কিংবা আমি কাউকে ভালোবাসি কিনা! কিন্তু বরাবরই আমার উত্তর "না" ছিলো। তবে আজকের পর থেকে আর "না" বলতে পারবোনা।
সে বললো, হুম সোমাও আসবে। আর কতদিন ধরে সোমাকে তোর পছন্দ?
আমি বললাম, যেদিন তোকে কলেজে ভর্তি করতে গিয়েছিলাম, সেদিন থেকেই।
সে বললো, সোমা কিন্তু অনেক সুন্দরী। ওর পিছে কলেজের সব ছেলেরাই লেগে থাকে। তুই সেখানে চান্স পাবি কিনা সন্দেহ! কথা বলেছিস কখনো ওর সাথে?
আমি বললাম, না কথা বলিনি। তবে আজ ও আসলে কথা বলবো। আর তুই কথা বলার একটা লাইন বের করে দিবি। ওকে?
বোনটা আমার একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো, আমার ভাইয়ের পছন্দ বলে কথা! আমি কি তার সাথে কথা না বলিয়ে দিয়ে পারি? অবশ্যই দিবো। আমিও চাই সোমার মতো সুন্দরী একটা মেয়ে আমার ভাবি হোক। তবে....
- তবে? তবে কি?
ওর মুখে 'তবে' কথা শুনে আমি ক্ষণিকের জন্য চিন্তায় পড়ে গেলাম। মমো কি বলতে চায়?
সে খানিক সময় চুপ থেকে বললো, সোমা তোকে ভালোবাসবে তো? আমি বললাম, ভালোবাসবে কি না বাসবে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে তো তাকে প্রপোজ করতে হবে!
মমোও আমার কথায় সম্মতি জানালো। আমি যেতে যেতে তাকে আরো অনেক কথা জিজ্ঞেস করলাম। এই যেমন, সোমার কোন প্রেমিক আছে কিনা, সে কাউকে ভালোবাসে কিনা, এসব কিছু।
মমো বললো, সে সোমার বিষয়ে অতটা অবগত নয়। সে আরো বললো, মাত্র মাস ছয়েক হলো তাদের সাথে সোমার বন্ধুত্ব। আর এই ছয়মাসেও তারা কেউ একে অপরকে ভালোভাবে চিনতে পারেনি।
মিম, ছোয়া, সুমাইয়া, এদের সাথে স্কুলের পাঁচটা বছর এবং আর ইন্টােরের দুইটা বছর নাকি তারা একসাথে পড়েছে। তাই তাদেরকেই শুধু চিনে। আর সোমার সাথে শুধু এই অনার্সে উঠেই পরিচয়।
সে আমাকে এও জানালো যে, তার জানামতে সোমা কাউকে ভালোবাসেনা। তার কোন প্রেমিকও নেই।
.
রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। ২০ মিনিটের রাস্তা জ্যামে আটকে পড়ে এক ঘন্টা হয়ে গেছে। সূর্যের রশ্মিটাও তীর্যক ভাবে বাসের জানালা দিয়ে এসে মুখে লাগছে। মমো জানালার পাশে থাকায় তার গরমটা সহ্য হচ্ছিলোনা। সেটা আমি বুঝতে পেরে তাকে বললাম, মমো আমার জায়গাতে বস। রোদে তোর চেহারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তুই ঘেমে যাচ্ছিস প্রচুর। দেখলাম বোনটা আমার তার ভাইকে কষ্ট দিতে চায়না বলে সে তার ভাইকে বলছে "ভাইয়া আমি এখানেই বসি। আমার কোন সমস্যা হচ্ছেনা।"
আমি মনে মনে বললাম, আহা ভাইয়ের প্রতি তার বোনটার কত খেয়াল!
আমি তাকে আবার বললাম, তোর মুখে তো রোদ পড়েছে। খানিকপর দেখবি মাথা ব্যাথাবে। তার চেয়ে বরং তুই এই পাশেই আয়। সে বারবার না না করাতে দিলাম একটা ধমক। আর তাতেই সে চুপচাপ লক্ষী মেয়ের মতো আমার সিটে এসে বসলো।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর জ্যাম ছাড়লে বাস আবার চলতে শুরু করলো। সকালে বের হয়ে খালার বাসায় পৌছালাম দুপুর ২ টায়। আমাকে যেতে দেখে মিম তো ভারি খুশি। সে এতোটাই খুশি যে, সে আমাকে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। তার এমন আচরণে আমি কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। একদম বাচ্চা মেয়েদের মতো আচরণ করতে লাগলো সে। খালাও আমাকে অনেকদিন পর আসতে দেখে অনেক খুশিই হয়েছেন। আমি ফ্রেস হয়ে এসে খালার সাথে কিছু কথা বলে মিমের সাথে আড্ডা দিতে থাকলাম।
আমি মিম আর মমো বসে আছি তাদের বাসার ছাঁদে। ছাঁদটাও বেশ গোছানো, পরিপাটি। ছাঁদের একদিকে বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ। অন্যদিকে একটা দোলনা। গাছগুলোতে সদ্য ফুল ফোটা শুরু করেছে, সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ছোট একটি গোলাপ গাছও দেখলাম সেখানে। আর ওটাতে নতুন কুড়ি এসেছে। হয়তো আজকালের মধ্যে ফুটতে শুরু করবে।
মিম আমাকে জিজ্ঞেস করলো, কেমন আছো ভাইয়া? আমি বললাম, ভালো। তুই কেমন আছিস?
সে ভুবন ভোলানো একটা হাসি দিয়ে বললো, অনেক ভালো ভাইয়া। অনেক ভালো আছি।
তার কথার মধ্যে আমি হাসিখুশি জড়িত সুখের একটা ভাব দেখলাম। হয়তোবা আমাকে এতোদিন পর তাদের এখানে আসতে দেখে কিংবা অন্যকোন কারণে! তবে কারণটা আমি পরক্ষণেই জানতে পারলাম।
সে বললো, জানো ভাইয়া আমি যাকে পছন্দ করি, তার সাথেই আমার বিয়েটা হচ্ছে। ওর মুখে এমন কথা শুনে আমি খানিকটা অবাক হলাম। আমি মমোর দিকে একবার তাকালাম। দেখলাম তার মধ্যে অবাকের কোন চিহ্নই নেই। হয়তো সে জানে এই বিষয়টা। আমি মিমকে বললাম, কি করে তোর বয়ফ্রেন্ড? সে খুব গর্বের সাথে বললো, তেমন কিছু করেনা। তবে সে বলেছে, বিয়ের পর কিছু একটা করবে। বর্তমানে সে বেকার।
আমি বললাম, নাম কি ছেলেটার, বাসা কোথায়, এমনিতে কি করে সে?
- ওর নাম নয়ন। বাসা বনানীতে। আমাদের কলেজেই পড়ে। এবার তোমাদের সাথে পরীক্ষা দেবে।
ওর কথা শুনে আমি অবাক থেকে অধিকতর অবিক হলাম। মিমের মাথা ঠিক আছে তো? নাকি সে আবেগের বশে এসব করছে! সে জেনেশুনে এমন একটা ছেলেকে কি করে ভালোবাসতে গেলো? আর কিসের ভিত্তিতেই বা বিয়ে করতে যাচ্ছে? নয়নকে আমি ভালোভাবেই চিনি, সে কেমন ছেলে!
আমি মিমকে বললাম, কি বলছিস এসব? তুই নয়কে কতদিন হলো চিনিস? আর কলেজের এতো ছেলে থাকতে নয়নের সাথে রিলেশনে জড়াতে গেলি কেন?
সে আমাকে অারো একবার অবাক করিয়ে দিয়ে বললো, ভাইয়া আমি সব জানি ওর ব্যাপারে। আরে এই বয়সে সবাই একটু আধটু ওসব করেই থাকে, তাতে দোষ কোথায়? আর নয়ন আমার কাজিন হয়। আমার বাবার বন্ধুর ছেলে। সেই ছোটবেলাতেই নাকি আমাদের বিয়ে ঠিক করে রেখেছে আমার আর ওর বাবা।
আর আমরা এতো দ্রুত বিয়ে করছি, কারণ তাকে ছাড়া আমার আর এক মুহূর্তও থাকা সম্ভব নয়।
মমো পাশে থেকে তার এই কথাটা শুনে মিটিমিটি হাঁসছে। তাকে ছাড়া নাকি এক মুহূর্তও থাকা সম্ভব নয়! হিহিহি। এবার সে জোড়েই হেসে দিলো। তার হাসি দেখে মিম তাকে বললো, অমন মদনের মতো হাসছিস কেন?
মিমের কথার শুনে এবার আমিও জোড়ে জোড়ে হাঁসতে থাকলাম। মিম বললো, ভাইয়া তোমার আবার কি হলো? তুমি হাঁসছো কেন?
আমি বললাম, মদন! তুই মমোকে মদন বললি? সে বললো, হ্যাঁ বলেছি। তো তাতে কি হয়েছে? আমি বললাম, কি হয়েছে সেটা মমোকেই জিজ্ঞেস কর। সে মমোর দিকে তাকাতেই যেন ভস্ম হয়ে গেলো। অগ্নিঝড়া চোখ নিয়ে মমো মিমের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম, আহা আহা সবাই তোকে মদন বলে। তুই আসলেই একটা মদন।
মমো রাগ করে উঠে চলে গেলো। সে চলে যেতেই মিম জিজ্ঞেস করলো, কি হলো ভাইয়া? আমি তো কিছুই বুঝলাম না।
আমি বললাম, তাকে কখনো মদন বলবিনা। বোনটা আমার অনেক কিউট হওয়া স্বত্ত্বেও আমি ওকে মদন বলি। যার কারণে সে রেগে যায়। আর রাগলে যে আমার বোনটাকে আরো সুন্দর লাগে। যখন তোর ওকে রাগাতে ইচ্ছে করবে কিংবা যখন দেখবি ওর কোন কারণে মনটা খারাপ, ঠিক তখন তুই ওকে মদন বলে ডাকবি। তখন দেখবি সে কতোটা রেগে যায়!
.
খানিক বাদেই মমো আবার ছাঁদে এলো। দেখলাম তার হাতে একটা মোবাইল। আমি ভালো করে লক্ষ করতেই দেখি তার হাতে আমার সাধের মোবাইলটা। মোবাইলটা হাতে করে নাচাচ্ছে আর বলছে, আমি মদন তাইনা? বল আরো বেশি করে মদন বল আমায়।
ওর এমন কথা শুনে আমি কিছু একটা হওয়ার পূর্বাভাস পেলাম। তার মতিগতি ভালো ঠেঁকছেনা আমার কাছে। জানি কিছু একটা হতে চলেছে।
সে আবার বললো, কি হলো বলবিনা? এখন ভয় পাচ্ছিস নাকি? ভয়ের কিছু নেই। তোর মোবাইলের তেমন কিছুই হবেনা। শুধু এখান থেকে ঐ রাস্তার উপরে ফেলে দিবো। আর কিছুনা। যদি তোর মোবাইলটা উড়তে জানে, তবে সে তার জীবন রক্ষা করতে পারবে। আর না জানলে সে মারা গিয়ে তোকে আহত করে দিয়ে যাবে।
তার কথা শুনে আমি আবার তাকে মদন বলতে গিয়েও বললাম না। কারণ, জানি সে মোবাইলটা ফেলে দিবে। এতে কোন সন্দেহ নেই। তার রাগ উঠলে সে সবকিছুই করতে পারে। এর আগেও সে আমার একটা মোবাইল ভেঙেছে।
আমি তাকে মদন না বললেও মিম তাকে ঠিকই মদন বলে উঠলো। আর সাথে সাথেই আমি নিচে কিছু একটা পড়ার আওয়াজ পেলাম। আওয়াজটা শুনে আমার বুকের ভেতরে ধক করে উঠলো। আমার মোবাইলটা আবার ফেলে দিলোনা তো? আমি ওর হাতের দিকে লক্ষ করে দেখলাম, নাহ! আমার মোবাইলটা তার হাতেই আছে। তবে সে কি ফেলে দিলো নিচে? আমি এগিয়ে গিয়ে নিচে তাকাতেই দেখি মিমের মেকাপ বক্স নিচে পড়ে আছে। বক্সটা একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ওদিকে মিম ভাবছে, মমো বোধ হয় আমার মোবাইলটা ফেলে দিয়েছে। আর সেটা ভেবে তার যে কি হাসি! যেন হাসির গোডাউন নিয়ে বসেছে সে।
তার হাসির প্রত্তুত্তরে আমিও তার দিকে তাকিয়ে বত্রিশটা দাঁত বের করে বিশাল মাপের হাসি হাসতে থাকলাম। আমার অমন হাসি দেখে সে থেমে গেলো। বললো, তুমি আবার হাসছো কেন ভাইয়া? তোমার তো কান্না করা উচিত।
আমি বললাম, কান্না করবো কেন?
সে এবার আরেকটা হাসি দিয়ে বললো, তোমার মোবাইলের শোকে। তার কথা শুনে আমি তার থেকে দ্বিগুন হেসে তাকে মদন বলে সম্বোধন করে বললাম, নিচের দিকে তাকিয়ে দেখ।
সে অবাক হয়ে বললো, মানে? নিচের দিকে তাকাবো কেন?
আমি বললাম, আরে দেখই না। তখন নিজেকে ঠিক রাখতে পারবিনা। সে আমার কথা শুনে বসা থেকে উঠে এসে নিচের দিকে তাকাতেই মুখটা কালো করে আমার দিকে করুণ চোখে তাকালো। আমি তাকে ইশারায় বললাম, হাস.. বেশি করে হাস।
সে আর এক মুহূর্তও সেখানে না দাঁড়িয়ে মমোর দিকে রাগি একটা লুক নিয়ে নিচে চলে গেলো।
আমি মনে মনে ভেবে নিলাম, এবার বোধ হয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে।
.
সন্ধ্যার সময় আমি রুমে শুয়ে শুয়ে সোমার কথাই ভাবছিলাম। মমো বললো, সোমা এবং তার বান্ধবীরাও নাকি আজকে আসবে। তবে এখনো আসছেনা কেন তারা? নাকি আজ আর আসবেনা!
এসবকিছু ভাবাভাবির অন্তে আমি বাইরে থেকে কারো কন্ঠ শুনে শুয়া থেকে উঠে দাঁড়ালাম। কন্ঠটা বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে। কিন্তু মনে করতে পারছিনা।
ঠিক তখনই শুনতে পেলাম, মমো বলছে "মিম সোমারা এসেছে। ওদেরকে তোর একটা রুম দেখিয়ে দে। ওরা ওখানে থাকুক।"
মমোর কথার শুনে তবেই আমি বুঝতে পারলাম, সেই পরিচিত কন্ঠের মালিকটা আসলে কে? তাহলে আমার কল্পনার রাজকন্যা আজকে চলেই এলো! এখন থেকে তো আমার আর একটুও ঘুম হবেনা বোধ হয়! শুধু তার কথা ভেবেই রাত পার হয়ে যাবে। আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, এখন থেকে এই সাতটা দিন প্রতিটিরাতে বাসার ছাঁদে গিয়ে আড্ডা দিবো। যাতে সোমার সাথে একটু ভাব জমাতে পারি, কথা বলতে পারি।
আমি রুমে থেকেই মমোকে ফোন দিলাম। যদিও সে বাইরেই আছে, তবুও তাকে ফোন দিলাম। কারণ, বাইরে সোমাসহ এক গাদা মেয়ে মানুষ এসেছে। আমার বুঝি লজ্জা করেনা!
সে ফোন রিসিভ করে বললো, কিরে কি হয়েছে? ফোনে কি টাকা বেশি হয়েছে নাকি?
এটাই হলো আমার বোন। বিকেলে কত বড় একটা ঝগড়া, রাগারাগি হয়ে গেলো। অথচ এখন সবকিছুই আগের মতো ঠিকঠাক।
আমি বললাম, আরে নাহ। টাকা তো এমনিতেই ফোনে থাকে। আর না থাকলে তো তোর কলেজ ব্যাগ আছেই।
সে আমার কথায় কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, ঐ তুই আমার ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করছিস কেন? আমি জানতাম এই ব্যাগের কথা বলা মাত্র সে ব্যাগ চেক করবে। আমি বললাম, টাকার উপরে কি লেখা আছে নাকি যে, ওটা তোর টাকা? আমি সামনে পেয়েছি তাই নিয়েছি। এতে আমার দোষ কোথায়? আর তোর টাকা মানে তো আমার টাকাই।
আমার কথায় সে রহস্যময় একটা হাসি হেসে বললো, ঠিক বলেছিস আমার টাকা মানে তো তোর টাকাই। আর তাহলে তো, তোর জিনিস মানে তো আমারও জিনিস। তাইনা?
তার কথা শুনে আমি বুঝতে পারলাম না, সে কি বলতে চাইছে? পরক্ষণেই সে বললো, ভাইয়া তোর একাউন্ট থেকেই কিন্তু টাকাগুলা উঠানো ছিলো। তুই ভুলে যাসনা, তোর কার্ডের পিন নাম্বার আমি জানি।
ওর কথা শুনে কপালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বসে পড়লাম। হায়, এ কি সর্বণাশা কর্মকান্ড। আমার টাকা কিনা আমিই আবার চুরি করি বোনের ব্যাগ থেকে।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে সে বললো, কিরে কথা বলছিস না কেন? আমি সবকিছু বাদ দিয়ে তাকে বললাম, বাইরে কে কথা বলে? সে বললো, তোর প্রিয়তমা এসেছে। সেই-ই কথা বলছে। আজকে রাত থেকে আড্ডা হবে চরম। চলে আসিস আমাদের সাথে ছাঁদে। আর ছাঁদে একটা আড্ডা দেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করিস।
মমোর কথা শুনে মন চাইছে বোনটাকে এত্তগুলো আইসক্রিম কিনে দেই। তাকে যে জন্য ফোন করলাম, সে সেই কথাটাই নিজে থেকেই আমাকে বললো। আহা! এতো সুখ কোথায় রাখি আমি? আমি বললাম, তোর ভাবির সাথে একটু ভাব জমিয়ে দিবি কিন্তু? সে একটু মুড নিয়ে বললো, হুহ.. এখনো বিয়ে তো দূরের কথা, প্রেমই হয়নি। আর বলে কিনা "তোর ভাবির সাথে একটু ভাব জমিয়ে দিস।"
.
মমোর সাথে কথা বলার মিনিট ত্রিশেক পর কে যেন দরজায় নক করলো। আমি ভাবলাম হয়তো মমো, মিম কিংবা খালা হবে। তাই উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলাম। আর দরজাটা খোলা মাত্রই কেউ একজন দ্রুত গতিতে রুমের মধ্যে ঢুকে পড়লো। আমি নির্বাক হয়ে গেলাম। বুঝে উঠতে পারলাম না, কে ঢুকলো রুমে! এমনিতেই সন্ধ্যা টাইম। তার উপর আবার রুমে অল্প আলোর লাইট জ্বালানো। আমি বড় বিপাকে পড়ে গেলাম। বড় লাইটটা জ্বালাতেই আমি চমকে উঠলাম। এ আমি কাকে দেখছি আমার রুমে! সেও আমাকে দেখে অবাক হয়েছে খুব। আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক সেই মুহুর্তেই আমার ফোনটা বেজে উঠলো।
.
অপেক্ষা করুন তৃতীয় পর্বের।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.