নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুপবতী

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

রুপবতী
পর্ব-৩
.
আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক সেই মুহুর্তেই আমার ফোনটা বেজে উঠলো। আমি ফোনটা হাতে করে তার দিকে তাকিয়ে আছি। ভাবছি, আমি আবার স্বপ্ন দেখছিনা তো?
বারবার ফোনটা বাজতে দেখে সামনে থাকা ব্যক্তিটি অর্থ্যাৎ সোমা অর্থ্যাৎ আমার পছন্দের মানুষটি বলে উঠলো, ওভাবে তাকিয়ে না থেকে ফোনটা ধরুন। আমি তার কথায় বাস্তবে ফিরে ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মমো ফোন করেছে। আমি ফোনটা রিসিভ করতেই সে বলে উঠলো, কেমন দিলাম সারপ্রাইজটা! আমি তার কথাটা ঠিক বুঝলাম না। সারপ্রাইজ? কিসের সারপ্রাইজ! আমি  বললাম, কিসের সারপ্রাইজ?
সে বললো, কেন তুই জানিস না? আমি এবার একটু ভাব ধরার চেষ্টা করে বললাম, না তো কিছুই জানিনা আমি।
সে বললো, তোর রুমে কেউ ঢোকেনি?
- হ্যাঁ ঢুকেছে তো!
- কে ঢুকেছে দেখেছিস?
- কে ঢুকেছে?
তাকে প্রশ্ন করতেই দেখলাম সোমা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সোমার ওভাবে তাকানো দেখে কেমন যেমন ভালো লাগা কাজ করতে লাগলো মনের ভেতরে, আবার  নার্ভাসও ফিল হতে লাগলো।
ফোনের ওপাশ থেকে মমো বললো
- কেনো সোমা যায়নি তোর রুমে?
আমি ওর কথা শুনে একটা হাসি দিয়ে ফোন রেখে দিলাম। সোমাকে এই সময়ে হঠাৎ করে এখানে দেখে বেশ অবাকই হলাম আমি।
আমি তাকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলাম। তখন সেই বলে উঠলো, আমি সরি। আসলে সবার থাকার জায়গা হয়ে গেছে। শুধু আমারটা হয়নি। তাই মমো বললো, এই রুমটাতে আসতে। কিন্তু আমি জানতাম না যে, এই রুমে কেউ আছে। আমি আবারো সরি, আসি।
সে রুম থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। আমি তখন বললাম, জায়গা যখন কোথায়ও পাওনি, তবে এখান থেকে চলে গেলে কি জায়গাটা পেয়ে যাবে?
সে আমার কথাটা শুনে দাঁড়িয়ে গেলো। বললো, না মানে আসলে আপনি হয়তো বিরক্ত হবেন। তাই আরকি!
তার কথা শুনে আমি মনে মনে বললাম, সুন্দরী তুমি আমার বিরক্ত হওয়ার কারণ হলেও তোমাকেই আমার চাই। তুমি ছাড়া এ শ্রাবণ যে থাকে সবসময় বেদনাময়। তুমি এখানে কেনো, আমার হৃদয় মাঝে থাকলেও আমি কোন কালেও বিরক্ত হবোনা তোমার উপর। বরং তুমি থাকলেই আরো সুখময় হয়ে থাকবে আমার এই জীবন।
আমি এবার একটা কাঁশি দিয়ে বললাম, কে বলেছে তোমায় যে, আমি বিরক্ত হবো? তুমি থাকতে পারো এখানে। আমার কোন সমস্যা নেই।
অামার কথা শুনে সে ব্যাগপত্র নিয়ে ফিরে এসে সবকিছু গুছিয়ে রাখতে শুরু করলো। আমি বললাম, কোন সাহায্য লাগবে? সে বললো,  না লাগবেনা।
সবকিছু গোছানো শেষ হলে সে ফ্রেশ হতে বাথরুমে গেলো। ততক্ষণে আমি খুশিতে লুঙ্গি ড্যান্স দিতে শুরু করেছি। তবে হ্যাঁ,  ড্যান্সটা কিন্তু মনে মনে দিচ্ছি। কারণ আমি ওসব ড্যান্স ট্যান্স জানিনা। যদি সত্যি সত্যিই দিই, তবে কেউ দেখে ফেললে আমাকেও মদন নামটা উপাধি দেবে, এটা আমি সিওর।
খানিক পর যখন সে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হলো, তখন তো আমি তার দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছিলাম না। মুখে বিন্দু বিন্দু পানির ফোঁটা, চুলগুলো এলোমেলো। এ যেন কাউকে ঘায়েল করার একটা অস্ত্র। যেই অস্ত্র দিয়ে কোন প্রকার শব্দ ছাড়াই কাউকে ঘায়েল করা যায়।
আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে আছি। চোখের পলকও যেন পণ করে আছে না পড়ার। আমাকে ওরকম একভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে বললো, কি দেখেন অমন করে?
আমি যেন ততক্ষণে তার রুপ দেখে ঘোরের মধ্যে চলে গেছি। আমি কোন প্রকার বাছ বিচার ছাড়াই বললাম, একটা জল পরীকে দেখি। যেই জল পরীটার মুখে রয়েছে বিন্দু বিন্দু জলের ফোটা, ঠোঁটে রয়েছে ভুবন ভোলানো হাসি।
এসব কিছু বলার সময় হঠাৎ  করেই পাশের টেবিল থেকে একটা কাঁচের গ্লাস নিচে পড়ে  ভেঙে যায়। আর তাতে আমার ঘোরটাও চলে যায়। দেখলাম সোমা আমার কথায় লজ্জা পেয়েছে খুব। আমি তাকে বললাম, আজ আমি, মমো এবং মিম ছাঁদে বসে আড্ডা দিবো। তোমরা সবাই থাকবে তো? সেও আনন্দের সাথে বললো, কেন নয়। অবশ্যই  থাকবো। আমার আবার রাত জেগে ছাঁদে বসে আড্ডা দিতে অসম্ভব ভালো লাগে। আমি সোমাকে বললাম, তুমি বিছানাটা ঠিক করে রেস্ট নাও, আমি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
তাকে রুমে রেখে আমি সোজা ছাঁদে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় মমোকেও সাথে নিলাম। দুজন মিলে মনের মতো করে ছাঁদটা সাজালাম। দূরে থেকে দেখে মন হবে যেন কোন প্রোগাম হচ্ছে এখানে।
ছাঁদ সাজানোর কাজটা শেষ করে আমি আবার রুমে ফিরে এলাম। রুমে এসে দেখি সোমা বিছানায় শুয়ে আছে। চোখ দুটো বন্ধ তার। চুলগুলো মুখের উপর লেপ্টে রয়েছে। রুমের ডিম লাইটের আলোতে তাকে একেবারে নীল অপ্সরীর মতো দেখাচ্ছে। আমি তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম পলকবিহীন ভাবে। আহা! কি অপরুপ সে দেখতে, কি অপরুপ তার রুপের বাহার। এর জন্ম বোধ হয় শুধু আমার জন্যেই হয়েছে।
ভাবছি তাকে ডাক দিবো কিনা! আবার ভাবছি, হয়তো ক্লান্ত আছে।  একটু রেস্ট নিক। এসব ভাবতে ভাবতেই আমি তাকে ডাক দিলাম। কিন্তু সে কোন উত্তর দিলোনা। তার কোন উত্তর না পেয়ে ভাবলাম, হয়তো সে ঘুমিয়েই পড়েছে।  কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে আমাকে অবাক করিয়ে দিয়ে বললো, কি মিস্টার এতো ডাকাডাকি কিসের? আর তখন ওভাবে আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখছিলেন?
ওর কথা শুনে আমি খানিকটা অবাকই হলাম। তাহলে কি সে এতক্ষণ জেগেই ছিলো? তাহলে কি সে এতক্ষণ ঘুমানোর ভান ধরে ছিলো? হবে হয়তো!
আমি আমতা আমতা করে বললাম, না মানে,  মানে আড্ডা দিতে যাবেনা? ছাঁদে বসে আজ সারারাত আমরা আড্ডা দিবো।
সে বললো, আমি তো সেজন্যই অপেক্ষা করছিলাম। চলুন, চলুন।
.
রাতে ছাঁদে গিয়ে চারিদিকে মোমবাতির আলো জ্বালিয়ে দিলাম। আলো জ্বলে উঠতেই সোমা অবাক হয়ে বললো, বাহ অনেক সুন্দর তো! তার অবাক হওয়াটা ঠিক এমন ছিলো, যেন সে কোন অপ্রত্যাশিত জিনিস  দেখতে পেয়েছে!
আড্ডাতে সবাই মেয়ে শুধু আমি ছাড়া। মমো, মিম, সোমা এবং তার বান্ধবীরা মিলে প্রায় দশজন সেখানে আমরা।
আমি তো লজ্জায় কথাই বলতে পারছিলাম না তখন। শুধু মমো, মিম আর সোমা থাকলে না হয় কিছু বলতে পারতাম। কিন্তু তাদের এতো এতো বান্ধবীদের মাঝে কিভাবে কথা বলবো, সেটা নিয়ে দ্বোটানায় পড়ে গেলাম। তারা সবাই যার যার মতো আড্ডা দিচ্ছে আর আমি শুধু তাদের আড্ডাটা উপভোগ করছি।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে মিম বললো, কি হয়েছে ভাইয়া তোমার? অমন চুপচাপ কেন? কথা বলছো না কেন?
মিম এই কথা বলতেই পাশে থেকে সোমা বলে উঠলো, তোর ভাইয়া মনে হয় লাজুক বেশি। তাই হয়তো লজ্জা পাচ্ছে। ওর কথা শুনে আমি পুরা টাশকি খেয়ে গেলাম। কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা! আমি নাকি লজ্জা পাচ্ছি?
তো, আমিও শুরু করে দিলাম আড্ডা। প্রথমে সবার সাথে পরিচিত হয়ে নিলাম। আমি যখন সোমার বান্ধবীদের থেকে তাদের নাম জিজ্ঞেস করছিলাম, তখন আমি খেয়াল করে দেখলাম সোমা আমার দিকে কেমন যেন একটা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি তার সে দৃষ্টির ভাষা খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম, তার হিংসা হচ্ছে। সে মনে মনে বলছে, ঐ তোর এতো এতো মেয়ের সাথে কিসের পরিচিতত হওয়ার দরকার হ্যাঁ?  আমাকে কি তোর চোখে পড়েনা?
তার ওরকমভাবে তাকানো দেখে আমি আর বাকিদের সাথে তেমন কথা বললাম না। শুধু মিম, মমো আর তার সাথেই বলতে থাকলাম। আমি কথা প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তার প্রেমিক আছে কিনা! কিন্তু সে যা উত্তর দিলো তাতে আমি যেন আকাশের চাঁদটা হাতে পেলাম।
সে বললো, আজ পর্যন্তও তেমন কাউকে খুঁজে পাইনি। তবে....
'তবে' কথাটি বলেই সে থেমে গেলো।
আমি বললাম, তবে কি? সে বললো, তবে এবার বোধ হয় কাউকে খুঁজে পেয়েছি। আমি একটু নড়েচড়ে বসে বললাম, কখন কোথায় তাকে খুঁজে পেলে?
আমি তার উত্তরের অপেক্ষা করার পাশাপাশি মনে মনে বললাম, কন্যা তুমি হইয়াছো পাগল আমাতে, আমিও যে চাই ডুবে থাকতে তোমাতে।
সে বললো, না বলা যাবেনা। আমি একটু নিচু স্বরে অস্পষ্ট কন্ঠে বললাম, তোমার মুখ থেকে কিভাবে কথাটা বের করতে হবে সেটা আমি জানি।
সে আমার ফিসফিসে কথাটা ভালো করে শোনার জন্য বললো, কি বললেন?
আমি বললাম, জানি তো কাকে খুঁজে পেয়েছো!
- কাকে খুঁজে পেয়েছি? (সোমা)
- ঐ রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে বসে থাকা বড়লোকের ছেলেটিকে ছাড়া আর কাকে আবার! (আমি)
- নাহ।
- তাহলে?
- বলবোনা।
- সময় হলে ঠিকই জানতে পারবো কন্যা,  তখন তোমার আর এসব অভিনয় করতে হবেনা। আর আমি এটাও জানি সে কে!
- জানেনই যখন, তখন আবার জিজ্ঞেস করেন কেন?
- শুধু তোমার মুখ থেকে শোনার জন্য। তাকে কি কখনো বলেছো তোমার ভালোবাসার কথা?
- না বলিনি, তবে বলবো সময় হলে।
- আর যদি সে তোমাকে নিজে থেকে বলে তাহলে?
- তাহলে আর কি? একটু ভাব দেখাবো তখন।
- ভাব কেন দেখাবে?
- ওমা, ভাব না দেখালে সে তো ভাববে আমিও তারে ভালোবাসতাম।

সোমার কথা শুনে আমি ভাবলাম, কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা! যাকে পছন্দ করে, যাকে ভালোবাসে তার সামনেই আবার  বলে, ভাবে দেখাবে!
আমাদেরকে এভাবে কথা বলতে দেখে মিমের অন্যসকল বান্ধবীরা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে । তারা হয়তো ভাবছে, "আহা! এতো সুন্দর কিউট একটা ছেলে যদি আমাদের বয়ফ্রেন্ড হতো, তবে কতই না ভালো হতো। আর সোমা কিনা তাকে প্রপোজটাই করতে পারছেনা।"
.
রাত দেড়টার দিকে আমরা আড্ডা শেষ করে ঘুমোতে গেলাম। অবশ্য সোমা আমার রুমেই ঘুমিয়েছিলো। প্রথমত সে আমার রুমে ঘুমাতে না না করলেও পরে কোথায়ও জায়গা না পেয়ে শেষে আমার রুমেই তাকে আসতে হলো। সকালে যখন আমার ঘুম ভাঙলো তখন দেখি সোমা রুমে নেই। আমি ভাবলাম হয়তো সে বাথরুমে গেছে। খানিকপর যখন দেখলাম সে তোয়ালেটা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রুমে ঢুকলো তখন তো আমি একেবারে হা করে তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। স্নান করে ভেজা খোলা চুলে সোমা যখন আমার দিকে তাকিয়ে বললো, সবসময় অমন হাঁ করে তাকিয়ে কি দেখো হুম?
ঠিক তখনই আমার মনে ভালোবাসার ঢেউ খেলে গেলো। গতরাতেই সে আমাকে 'আপনি' করে বললো। আর এখনই এতো দ্রুতই সে তুমিতে নেমে এলো। ভাবতেই কেমন যেন ভালোলাগা কাজ করতে শুরু করলো মনের ভেতরে। আমি তার অমন রুপ দেখে নিজেকে তার মধ্যে হারিয়ে ফেলেছি।
আমার মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে গেলো, আমার রুপবতীটাকে দেখি।
কথাটা বলা মাত্রই সে রাগি একটা লুক নিয়ে বললো, রুপবতীকে দেখো মানে? আমি বললাম, হ্যাঁ রুপবতীকেই দেখি।
আর সেই রুপবতীটা যে তুমি। তোমার ভেজা চুলের মাঝে মুখ ডুবিয়ে একটু ঘ্রাণ নিতে চাই। তোমাকে আলতো করে একটু ছুঁয়ে দিতে চাই। তোমার রুপের সাগরে ভেসে বেড়াতে চাই। তোমায় নিতে নিশি রাতে হেঁটে বেড়াতে চাই ব্যস্ত শহরের ফুটপাত ধরে। তোমার সারাজীবনের পথচলার সঙ্গী হতে চাই। প্রতিদিন সকালে তোমার এরকম মায়াবী চাহনিটা দেখতে চাই। দিবে কি এসবের অধিকার তুমি আমায়?
আমার কথা শুনে সে হাসতে হাসতে শেষ। সে বললো, এটা কি ছিলো? প্রপোজ নাকি কবিতা! ওর হাসি দেখে আমি ভাবলাম, হয়তো সে মজা নিচ্ছে তাই আর কিছু বললাম না। আমাকে চুপ থাকতে দেখে সে বললো, কিছু একটা জিজ্ঞেস করেছি তোমাকে।
আমি বললাম, তোমার থেকে এটাকে কি মনে হয়? সে কিছু সময় কি যেন ভেবে বললো, আমার থেকে তো এটাকে কবিতাই মনে হয়।
ওর কথা শুনে আমি ভাবছি, না না এই মেয়ে সাথে আমার হবেনা! প্রপোজ করলে বলে, সেটা নাকি কবিতা। আর যখন কবিতা বলবো তখন হয়তো বলবে, এটা প্রপোজ।
আমি বললাম, না এটা মোটেও কোন কবিতা নয়।
সে অবাক চোখে তাকিয়ে তোয়ালেটা মাথায় দিয়ে বললো, তুমি সিরিয়াস? আমি বললাম, সেই কবে থেকেই আমি সিরিয়াস। তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম, সেদিন থেকেই তোমাকে আমি পছন্দ করে ফেলি। আমার এই চোখদুটো শুধু তোমাকে খুঁজে বেড়াতো চারিদিকে।
- আর সেই জন্যই তুমি প্রতিদিন আমাদের ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে তাইনা? একদিন রিমঝিমকে দিয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করালাম, তুমি প্রতিদিন আমাদের ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকো কেন। তখন তুমি বলেছিলে, তোমার বোনের জন্য। যখন রিমঝিম আমাকে বললো, তুমি তোমার বোনের জন্য অপেক্ষা করো। সেদিন সেই কথাটা আমি বিশ্বাস করিনি। কারণ, যদি তুমি তোমার বোনের জন্যই অপেক্ষা করতে, তাহলে জানালার ফাঁক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে কেন? যখন আমি তোমার দিকে তাকাতাম, ঠিক তখনই তুমি এমন ভাব ধরতে যেন তুমি কি একটা কাজে ব্যস্ত। (সোমা)
- তাহলে তুমিও জানতে যে, তোমাকে আমি পছন্দ করি, অনুস্মরণ করি?
- না জানলে কি গতকালকে এখানে আসতাম?
- মানে?
- মানে হলো, মমো আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিলো, তুমিও গতকাল এখানে আসবে। তাই কালকে অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি। যদিও বাবা মা "না" করেছিল। তবুও তোমাকে দেখার জন্য চলে আসতে হলো।
- তার মানে মমো জানতো যে, আমি তোমাকে আর তুমি আমাকে পছন্দ করো?
- তা নয়তো কি? আর প্রথম যেদিন তুমি মমোকে কলেজে ভর্তি করতে এসেছিলে, সেদিনই তোমাকে আমার মনে ধরেছিলো। আর সেদিনই আমি মমোর সাথে বন্ধুত্ব করি। যাতে তোমাকে আমি কাছে পেতে পারি, তোমাকে জীবন সাথি করতে পারি।
.
সোমার কথা শুনে আমার অবাক হওয়ার যতটুকু বাকি ছিলো, ততটুকুর চেয়ে আরো দ্বিগুন অবাক হলাম। তাহলে মমো আমাকে এই ব্যাপারে আগে জানায়নি কেন? আগে জানালে আমাকে এতোটা কষ্ট করে প্রতিদিন ওর ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতোনা। রোদে পুরে তাকে একটিবার দেখার জন্য ওর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতোনা।
মদনটারে আগে কাছে পাই, তারপর বোঝাবো আমার সাথে লুকোচুরি খেলার মানে।
- কি হলো, চুপ করে আছো কেন? (সোমা)
- কই, কই চুপ করে আছি? (আমি)
- তুমি গত তিনদিন কলেজে আসোনি কেন?
- এমনিই, ভালো লাগছিলোনা তাই।
- ও
- হুম
- তা, এখন ভালো লাগছে?
- না।
- কেন?
- তুমি আমার প্রপোজটাকে গ্রহণ করোনি এখনো!
- হিহিহি, পাগল একটা।
- সেটা তোমারই।
- থাক এতো ঢং না করে আবার প্রপোজ করো।
- আবার করতে হবে?
- না করলে থাক, দরকার নেই। আমি অন্যকাউকে দেখি খুঁজে পাই কিনা, যে আমাকে সুন্দর করে প্রপোজ করতে পারবে।
- না না, দাঁড়াও আমি করছি।
- এমনি এমনি করলে তো হবেনা।
- তাহলে?
- সদ্য ফোটা একটি সতেজ গোলাপ দিয়ে করতে হবে
- এখন আমি এমন গোলাপ কই পাবো?
- সেটা আমি বলবো কি করে? যাও বাইরে যাও, গিয়ে দেখো পাও কিনা!
আমি সোমার কথা অনুযায়ী যেই না বাইরে যাওয়ার জন্য রুমের দরজা খুলেছি। ঠিক সেই সময়.....
.
অপেক্ষা করুন চতুর্থ পর্বের।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.