নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাহিনী কি সত্যি?

২৮ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৭

কাহিনী কি সত্যি
পর্ব-১
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
.
প্রতিদিনের মতো আজও ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছি। রৌদ্রের উত্তাপ যেমন বেড়েছে, তেমন গরমও বেশ দারুনভাবে পড়ছে। বাসের মধ্যে পা ফেলানোর মতো জায়গা পর্যন্ত নেই। আমি অবশ্য সিটেই বসে আছি। আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি বারবার এপাশ ওপাশ করছেন। আমি বুঝতে পারলাম লোকটির সময় এখন কেমন যাচ্ছে! লোকটিকে দেখে মায়া হলো আমার। মায়ার দরুণ লোকটিকে আমার সিটটা ছেড়ে দিয়ে বললাম,
- আংকেল আপনি এখানে বসুন।
লোকটি যেন তৃষাতুর প্রাণে এক ফোঁটা জল পেলেন। আমি বলা মাত্রই তিনি অতি দ্রুততার সাথে সিটে বসে পড়লেন।

কিছু কিছু বাসের মধ্যে পেছন দিকে আবার ইয়া বড় একটা টায়ার থাকে। টায়ারের কারণে পেছন দিকে একটু জায়গাও পড়ে থাকে। আমি পেছনে সরে টায়ারের সমীপে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমাকে পেছনে সরতে দেখে আমার সামনে থাকা ছেলেটিও একটু পেছনে এলো। সামনের ছেলেটির অবস্থান তখন ঐ আংকেলের পাশে, যাকে আমি সিটে বসতে দিয়েছিলাম। বাসের মধ্যে অধিক পরিমাণে ভীড় থাকায় ড্রাইভার হঠাৎ করে ব্রেক কষতেই আংকেলের সাথে ছেলেটির ধাক্কা লাগে। ঠিক তখনই আংকেল ছেলেটিকে কড়াভাবে গালিগালাজ করে ওঠেন।
- সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারো না? গায়ে কী বল নেই নাকি?
- সরি আংকেল।
- সরি কিসের হ্যাঁ? এই যে শার্টে যেই দাগটা লাগলো, সেটা কী সরিতেই উঠে যাবে?

আমি আংকেলের এমন ব্যবহারের মর্মাহত। কিছুক্ষণ অাগেই তিনি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমার শরীরের সাথে বেশ কয়েক তার ধাক্কা লেগেছে। শুধু আমার না, তার সামনে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের সাথেও লেগেছে। তখন কিন্তু তিনি ঠিকই সরি বলে মাফ পেয়ে গিয়েছেন।

আমি ছেলেটিকে বললাম, ভাই একটু সামনের দিকে এগিয়ে দাঁড়াবেন? ছেলেটি সামনে এগিয়ে গেলে আমি আংকেলের কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আংকেল ফইন্নি চিনেন?
উত্তরে তিনি অবাক চোখে আমার দিকে তাকালেন। আমি বললাম, যদি ফইন্নি না চিনে থাকেন, তবে নিজেকে দেখুন। তাহলে আস্ত একটা জলজ্যান্ত ফইন্নির মুখ দর্শন করতে পারবেন। এইতো খানিক আগে যখন আপনি কাঁচুমাচু হয়ে ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন তো আপনার শরীর আশেপাশের সবার সাথে ধাক্কা খেয়েছে। তখন তো আপনার শার্টে দাগ লাগেনি! তবে এখন লাগলো কী করে? সিটে বসতে দিয়েছি বলে জমিদারি ভাজ ধরেছেন দেখছি।
- এই ছেলে এই তোমার বাড়ি কোথায় হ্যাঁ?
- কিনবেন নাকি?
- তুমি তো আস্ত একটা বেয়াদব!
- বেয়াদবি তো শুরুই করিনি। শুরু করলে ঠা*প সামলাতে পারবেন না।
- ভদ্রতার সাথে কথা বলো, গুরুজনদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, তা শেখোনি?
- নিজের দিকে দেখুন আংকেল, নিজের দিকে দেখুন। নিজে আগে শিষ্টাচার শিখুন। ছেলের বয়সি একটি ছেলের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয়, তা শিখুন আগে। তারপর না হয় ভদ্রতা শেখাতে আসবেন।
.
- মিরপুর-১, মিরপুর-১
- মামা নামিয়ে দিয়েন।
- ভাড়া হয়ছে মামা?
- জ্বী মামা, ভাড়া দিয়েছি।

বাস থেকে নেমে বাসার দিকে রওনা দিলাম। সূর্যটা তখন ঠিক একদম আমার মাথার উপরে। পেছনে শার্ট ভিজে পিঠে লেগে গিয়েছে। অনেকদিন হলো বৃষ্টি হয় না। এখন এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে কতই না ভালো হতো। উত্তপ্ত এই শহরটা শীতলতায় ভরে যেতো।

আমার বাসাটা মিরপুর-১ থেকে সামান্য দূরে। হেঁটে গেলে মিনিট সাতেক লাগে। রিক্সায় গেলে মাত্র দশ টাকা লাগে। তবে সময় এবং ক্ষেত্র ভেদে এই "মাত্র দশ টাকা" শব্দটা শুধু "দশ টাকা" হয়ে যায়।
ঠিক এখন এই মুহূর্তে সেই "মাত্র দশ টাকাটা" আমার কাছে "শুধু দশ টাকা।"

অক্লান্ত পরিশ্রমের সাথে মিনিট সাতেক হেঁটে বাসায় পৌঁছে কলিংবেলে চাপ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ বাদে এক বড় ভাই দরজা খুলে দিলেন। বড় ভাইটা আমার সামনের রুমে থাকে। চুপচাপ স্বভাবের শান্ত একটি ছেলে তিনি। অপ্রাসঙ্গিক কোনো কথা কখনও তাকে বলতে শুনিনি।
ডাইনিং পেরিয়ে নিজের রুমে ঢুকতেই স্বাধীন ভাই বলে উঠলেন, কী ছোট ভাই? কাহিনী কি সত্যি?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


গরম বেশী পড়লে মাথা ঠিক থাকে না; সম্ভব হলে, সকালে ও বিকেলে বের হবেন, দুপুরে রাস্তায় কম বের হবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.