নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাহিনী কি সত্যি?

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৫৩

কাহিনী কি সত্যি
পর্ব-৩
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
.
ক্লাস শেষ হলে গতদিনের মতো বাসায় এসে রুমে ঢুকতেই স্বাধীন ভাই আবারও বলে উঠলেন, কী ছোট ভাই? কাহিনী কি সত্যি?
আমি ভাইয়ার কথায় হতবাক হয়ে গেলাম। ভাইয়া কী আমার অলক্ষ্যে আমার উপর নজর রাখছে নাকি? না না, তিনি আমার উপর নজর রাখতে যাবেন কেন? তাছাড়া সকালে ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় দেখে গেলাম তিনি উপুর হয়ে হাত পা ছেড়ে দিয়ে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন। দেখে মনে হয়েছিলো যেন, আজকে আর ঘুম ভাঙবে না।

আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, কিসের কাহিনী ভাইয়া?
তিনি বললেন, দাঁড়াও তোমার বড় ভাইকে এখনই ফোন করে বলে দিচ্ছি তোমার কথা। তুমি প্রতিদিন ভার্সিটিতে কী করতে যাও!

ভাইয়ার এ কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। তাহলে কী ভাইয়া আজকের ঘটনাটা জেনে গিয়েছে? জেবু কিংবা মেরীর সাথে ভাইয়ার পূর্ব পরিচয় নেই তো!
আমি আতঙ্ক স্বরে বললাম, "না না, বড় ভাইকে কিছু বলবেন না প্লিজ। বললে বাড়িতে খবর চলে যাবে।"
স্বাধীন ভাই খানিক হেসে আবারও বললেন, তাহলে ঘটনা সত্যি!
আমি "হ্যাঁ" সূচক মাথা নাড়ালাম। আমাকে "হ্যা সূচক" মাথা নাড়াতে দেখে পাশে থেকে নাঈম ভাই হেসে উঠলেন। বললেন, তাহলে কাহিনী সত্যি!
আমি আর কিছু না জিজ্ঞেস করে ব্যাগটা কাঁধ থেকে নামিয়ে ফ্যানের ভলিউম বাড়িয়ে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। গরমের দিনে জার্নি করলে শরীর একেবারে ক্লান্ত হয়ে যায়। আর এই ক্লান্ত শরীরকে শান্ত করার জন্য একটা স্বচ্ছ ঘুম অতি অত্যাবশ্যক।
.
চোখে তন্দ্রাভাব এসেছে মাত্র। ঠিক সে সময় নাঈম ভাই আমাকে ডেকে বললেন, শ্রাবণ তুমি ভাত খাবে না?
আমি বললাম, আপনারা খেয়ে নেন। আমি পরে খাবো। মাথাটা ব্যথাচ্ছে খুব। এমনিই গরমের মধ্যে জার্নি করে এসেছি। তার উপর আবার আপনাদের এই "কাহিনী সত্যের" প্যারা।
- যাও স্নান সেরে আসো। একসাথে খেতে বসবো।
- আপনারা খেতে থাকুন। আমার মাথা ব্যথা কমলে আমি পরে খেয়ে নেবো।
নাঈম ভাই এবার আমার কানের কাছে এসে বললেন, আমি তো ভেবেছিলাম কাহিনী মিথ্যা। কিন্তু না, এখন দেখছি কাহিনী একদম সত্যি।
- যান তো ভাই, যান আপনি। সবসময় এই একই প্যাচাল ভালো লাগে না। কাহিনী সত্যি তো কী হয়েছে? খুব উদ্ধার করে ফেলেছেন সবকিছু জেনে।
- রাগ করছো কেন?
- রাগ করি আর যাই করি, আপনি যান তো এখন এখান থেকে।
- শুনলাম আজ তোমার বড় ভাই নাকি এখানে আসবে!
- তো?
- তো আবার কী, উনার কান অব্দি কথাটা পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না।
- আপনার যা ভালো মনে হয় করেন আপনি। তবুও এখন যান। আমাকে একটু ঘুমাতে দেন, মাথাটা প্রচণ্ড পরিমাণে ব্যথা করছে।

আমাকে রেগে যেতে দেখে নাঈম ভাই আর কোনো কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। এদিকে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। এমনিই মাথা ব্যথা করছে। তার উপর আবার "কাহিনী সত্যি কাহিনী সত্যি।" মেজাজটাই খারাপ করে দিলো। এখন আর ঘুমও আসছে না। ঘুমাতে গেলেই মনে হচ্ছে, বড় ভাই যদি সব কথা জেনে যায়! তবে তো সোজা বাড়িতে খবর চলে যাবে। আর তখন আবার আব্বা আম্মু কান্না করে বলবে, তোকে এই জন্যে ঢাকাতে পাঠিয়েছি? তোকে এই প্রেম পিরিতি করার জন্য ভার্সিটিতে ভর্তি করিয়েছি!
.
বিছানা ছেড়ে উঠে গামছাটা নিয়ে স্নান করতে গেলাম। ঢাকাতে যেদিন প্রথম এসেছিলাম, সেদিন আমি বাথরুমে প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবত অবস্থান করেছিলাম। এর পেছনের কারণ এখন পর্যন্তও কেউ জানে না। সেদিন বাথরুমের দরজায় কতগুলো টোকা পড়েছিলো আমার মনে নেই। ঝর্ণা ছেড়ে মনের সুখে স্নান করেছিলাম সেদিন। ঝর্ণার ঝিরিঝিরি পানিগুলো শরীরে পড়লেই সকল দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। আজও বাথরুমে ঢুকে ঝর্ণা ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। উত্তপ্ত রৌদ্রের কারণে পানিও কিছুটা গরম হয়ে আছে। তবে কিছুক্ষণ পরেই ঠাণ্ডা পানি আসতে শুরু করলো। আমি আনমনে ঝর্ণাপানে মুখ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। ঝর্ণার পানিতে যেন সকল দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাচ্ছে আমার।
হঠাৎই বাথরুমের দরজায় টোকা পড়লো।
- বাথরুমে কে রে?
আমি ভেতর থেকে শুনতে পেলাম, নাঈম ভাই বলছেন বাথরুমে শ্রাবণ রয়েছে।
- ভাই শ্রাবণ আমার অবস্থা যায় যায়, বের হও ভাই।

এইতো স্বাধীন ভাইকে আজ অনেকদিন পর
হাতে পেয়েছি। আজ তার অবস্থা কাহিল না করে ছাড়ছি না। আর আজকে এই সুযোগে, কাহিনী সত্যের রহস্যও উদঘাটন করে ছাড়বো। আমি বললাম, কে? কে ভাই আপানি? অসময়ে ডাকেন কেন?
- আমি তোমার স্বাধীন ভাই। একটু তাড়াতাড়ি বের হও ভাই।
- স্বাধীন কে? কোনো স্বাধীন ট্বাধীনকে আমি চিনি না।
- কী বলো এসব?
- হুম, ঠিকই বলি।
- ভাই আমার অবস্থাটা বুঝতে চেষ্টা করো।
- আমি রোবট, আমি কারো অবস্থা বুঝি না।
- প্লিজ ভাই, একটু তাড়াতাড়ি বের হও।
- হাজার প্লিজ টিলিজ বললেও আমি বের হচ্ছি না। সবে মাত্র ঢুকলাম বাথরুমে। আগে মাথা ঠাণ্ডা করবো। তারপর বের হওয়া যায় কি না ভেবে দেখবো।
- ভাইরে তোর হাতে ধরি, পায়ে ধরি, বের হ ভাই বের হ।

এইতো বেটা লাইনে এসেছে। এটাই হলো মোক্ষম সময় "কাহিনী সত্যের" ঘটনা জানার। আমি বাসে কী করি না করি, ভার্সিটিতে কার সাথে ঘুরি, সেসব জানে কেমন করে তা আজ বের করবোই করবো। না হলে আজ আর বাথরুম থেকে বের হচ্ছি না। আমি নরম কণ্ঠে টেনে টেনে বললাম,
- ভাইয়া, আপনাকে বাথরুমে ঢুকতে দিতে পারি। তবে...
- তবে কী? তাড়াতাড়ি কও।
- তবে একটা শর্ত আছে।
- কী শর্ত? আমি সব শর্ত মানতে রাজি।
- আমি ভার্সিটিতে কার সাথে কী করি, তা আপনি জানেন কী করে?
- কই? আমি তো কিছুই জানি না।
- তাহলে ভার্সিটি থেকে ফিরতেই যে বলে ওঠেন, কাহিনী কি সত্যি!
- ও, আচ্ছা সে ব্যাপারে পরে বলছি। আমার বেরিয়ে গেলো। তুমি আগে বের হও।
- না, এখনই বলতে হবে।
- ভাইরে আমি কথা দিলাম, বাথরুম থেকে বের হয়েই তোমাকে সব বলবো। প্লিজ বের হও।

বুঝতে পারলাম তার অবস্থা "ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি" টাইপের। আমার কঠিন হৃদয়টাকে একটু নরম করে তাকে বাথরুমে ঢুকতে দিলাম।

কিছুক্ষণ পরেই ফরাৎ করে একটা শব্দ শুনতে পেলাম। নাঈম ভাই তখন ভাত খাচ্ছে। আমি বললাম, ভাই ফরাৎ করে শব্দ হলো কিসের?
তিনি বললেন, আকাশে ঘনকালো মেঘ দেখেছো কখনও?
আমি বললাম, দেখেছি বৈকি! অহরহ দেখেছি।
- মেঘ যখন পুরো পৃথিবীটাকে অন্ধাকারাচ্ছন্ন করে দেয়, ঠিক তখনই বৃষ্টির আগমন পরিলক্ষিত হয়। আর বৃষ্টি শুরু হলে মেঘ তার নিজ অস্তিত্ব বিলীন করতে গুরুম গুরুম করে ডেকে ওঠে।
- এর সাথে ফরাৎ শব্দের সম্পর্ক কী?
- তুমি ছোট মানুষ, বুঝবে না ওসব। যাও প্যান্ট পড়ে এসে খেতে বসো।
.
প্রায় পনেরো মিনিট পরে স্বাধীন ভাই যখন বাথরুম থেকে বের হলেন। তখন তাকে দেখে হাসি ধরে রাখতে পারলাম না। আহা! বেচারার কী একটা অবস্থা হয়েছিলো। স্বাধীন ভাইকে দেখে নাঈম ভাই তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন, তা স্বাধীন ভাই কাহিনী কি সত্যি?
স্বাধীন ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, কাহিনী মিথ্যা হতে হতে সত্যি হয়ে গেলো। আরেকটুর জন্যই তো গিয়েছিলাম। সে যাক গে, শ্রাবণকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি মাথা ঝাঁকালাম। বললাম, ভাই "কাহিনী সত্যের" ঘটনাটা বলতে চেয়েছিলেন।
তিনি মুচকি হেসে বললেন, শোনো তাহলে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:১৬

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: তাড়াতাড়ি বলেন ভাই :)

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:১৮

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: হাহাহা, অপেক্ষা করুন দাদা।
ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৯

শায়মা বলেছেন: উফফ বিরক্ত হচ্ছি ভাইয়া! :-&


এরপর দিন যদি আবার ঘটনা সত্যি সত্যি করতে দেখি তো একদম আরেক ঘটনা করে দেবো!!!!!! X((

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৩৮

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: হাহাহা, এর পরের পর্বে কাহিনী সত্যির আসল রহস্য উদঘাটন হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন।

৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:০১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: "কাহিনী তি সত্যি"একি বাক্য টুইস্ট ছুড়ে গল্পের গতানুগতিক ভাবটা ধরে রাখতে পারছেন না। গল্পের ধারা বর্ণনা ঠিকি আছে তবে এই একটি বাক্যই কেবল অতিরঞ্জিত হচ্ছে। লিখতে থাকুন সাথেই আছি।

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৪০

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য। আপনাকে একটু অনুপ্রেরণা আমাকে লেখালেখির প্রতি আগ্রহী করে তোলে।

৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: মূল ঘটনা জানার অপেক্ষায় আছি।

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৫৪

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: অপেক্ষা করুন প্রিয়

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: শিরোনামটা বদলে দেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.