নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘা

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২১

মেঘা
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
.
বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখি ফোনটা অনবরত বেজেই চলেছে। মাথাটা মুছতে মুছতে ভাবছি, এই সাত সকালে আবার কে আমাকে স্মরণ করলো? আম্মু, ছোট ভাই কিংবা বাড়ি থেকে তো কেউ এতো সকালে কল করবে না। নিশ্চয়ই কোনো বন্ধু হবে। গামছাটা বেলকনিতে টাঙানো দড়ির উপর রেখে ফোনটা হাতে করতেই দেখি মেঘা কল করেছে। সে আমার ক্লাসমেট। আবার ভালো একজন বন্ধুও বটে! প্রাথমিক হতে উচ্চমাধ্যমিক অবধি আমার কোনো মেয়ে বন্ধু ছিলো না। ছিলো না বলতে আমি নিজেই মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করিনি। ভেবেছিলাম, ভার্সিটির জীবনটাও একইভাবে কাটিয়ে দেবো। কিন্তু এই মেয়েটার জন্য তা সম্ভব হয়নি। ক্লাসে সবাই সবার সাথে কথা বললেও আমি কারো সাথে তেমন কথা বলতাম না, হাতে গোণা কয়েকজন ছাড়া। ক্লাসের প্রতিটা ছেলে, ক্লাসের সুন্দরী মেয়েদের পেছনে ঘুরঘুর করতো। কিন্তু আমি করতাম না। কেননা, আমিও যদি সবার মতো মেয়েদের পেছনে পরে থাকি। তবে অন্যদের আর আমার মধ্যে পার্থক্য রইলো কই?

একদিন কী একটা কারণে যেন খুব সকালে ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম। ক্লাসে ঢুকতেই দেখি একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটার নাম জানতাম। তবে কখনো আলাপ হয়নি। মেয়েটার রূপের প্রশংসা করতে গেলে সেটা আমার পক্ষে নিতান্তই কম হয়ে যাবে। আমি চুপচাপ পেছনের একটি বেন্চে গিয়ে বসে পড়লাম। কিয়ৎকাল বাদে মেয়েটি উঠে এসে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো, আমি মেঘা।
প্রত্যুত্তরে আমি ব্যাগ থেকে একটি বই বের করতে করতে বললাম, আমি শ্রাবণ।
মেয়েটি হাত সরিয়ে নিয়ে বললো, খুব ভাব তাইনা?
আমি কিঞ্চিৎ হেসে বললাম, বলতে পারেন।
মেয়েটি বললো, আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি?
আমি বললাম, নিশ্চয়ই।

আর সেই থেকেই মেয়েটির সাথে আমার বন্ধুত্ব। প্রথমে সম্পর্কের গভীরতা অল্প স্বল্প থাকলেও এখন তা ব্যাপক রূপ ধারণ করেছে।

গতরাতে সে বলেছিলো, আজ যেন একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠি। আর জমিদারি ভাবটা যেন কমিয়ে দেই। নিশীথে না ঘুমিয়ে যেন সন্ধ্যারাতে সালাত আদায় করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেই। আবার ঐ দিকে যেন অতি প্রাতে ঘুম থেকে উঠি।

আমি ব্যাচেলর মানুষ। আমার পক্ষে এ বিধান খুবই কষ্টকর। তবুও মহারানীর আদেশ, মানতে তো হবেই। তার কথানুযায়ী গতকাল রাত সাড়ে দশটায় ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুম থেকে উঠি সকাল সাতটা বাজে। আর তারপর স্নান। স্নান থেকে ফিরে তার ফোনকল।

কলটা রিসিভ করে কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে শুনতে পেলাম তার অনুপম কণ্ঠস্বর। আহা! কী সুন্দর করেই না কথা বলে মেয়েটি। এ জনমে যদি সে ত্রিকালভর মোর সঙ্গে থাকতো, তবে এ জনম মোর ধন্য হতো।
- কিরে কথা বলছিস না কেন? (মেঘা)
- হ্যাঁ হ্যাঁ, বল।
- কতক্ষণ ধরে তোকে ডেকে চলেছি। আর তুই চুপ করে আছিস কেন?
- তোর কণ্ঠের মোহে কল্পলোকে হারিয়ে গিয়েছিলাম।
- হয়েছে হয়েছে, এতো ঢং করতে হবে না। আমি বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে আছি। দ্রুত চলে আয়।
- আচ্ছা, তুই পাঁচ মিনিট দাঁড়া। আমি আসতেছি।
.
দ্রুত বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য ফার্মগেট, তেজগাঁও কলেজ। বাসস্ট্যাণ্ডে পৌঁছে দেখি মেঘা দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পরপর কপাল হতে স্বেদবিন্দু মুছে ঘড়ির দিকে দৃষ্টিগোচর করছে। আমি কাছে গিয়ে বললাম, দেরি হয়ে গেলো একটু। চল যাওয়া যাক।
তার গৌরবর্ণ ততক্ষণে রক্তাভে পরিণত হয়েছে। সে বললো, একটু দেরি হয়েছে না? পাঁচ মিনিটের কথা বলে পুরো দশ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছিস। আর এখন এসে বলছিস, একটু দেরি হয়ে গেলো!
- আহা! নিরুপমা দেখি রেগে আছে আমার উপরে।
- গিটার এনেছিস?
- না।
- কেন আনিসনি?
- ওসব টেনে নিয়ে যাওয়া ঝামেলা।
- তুই না বলিস, আমি তোর গিটারের টুং টাং আওয়াজ?
- হ্যাঁ।
- তবে সেই টুং টাং আওয়াজের বস্তুটাকে বহন করতেই যদি তোর ঝামেলা মনে হয়, তবে এই টুং টাং আওয়াজকে বহন করবি কী করে?
- তার মানে তুই আমাকে ভালো...

সে কথাটা পুরোপুরি শেষ করতে না দিয়ে বললো, "হয়েছে হয়েছে, এতো বুঝতে হবে না।"
আমি বললাম, তাহলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর। আমি যাবো আর আসবো। গিটার বিনে সুর পাবো কই বল? একটু দাঁড়া।
সে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বললো, ঐযে বাস চলে এসেছে। আজ থাক, অন্যদিন নিয়ে আসিস।

দু'জনে বাসে উঠে পরলাম। ভাগ্যক্রমে পাশাপাশি দু'টি সিট পাওয়ায় সেখানে বসে পড়লাম। তার আবার বাসে ঘুমানোর অভ্যাস আছে। সেজন্য আমি জানালার পাশে বসে তাকে ভেতরের দিকে বসালাম। বাস চলছে, মৃদু বাতাসে তার চুলগুলো উড়ে এসে বারবার আমার মুখের উপর পড়ছে। আমি নিমগ্নচিত্তে তার চুলের ঘ্রাণ উপভোগ করতে লাগলাম। অন্যদিন মেয়েটা অতি দ্রুতই ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু আজ ঘুমাচ্ছে না কেন? সে ঘুমিয়ে গেলে তার মাথাটা আপনাআপনিই আমার কাঁধের উপর চলে আসে।

তার ঘুম আসার কোনো লক্ষণ দেখতে না পেয়ে আমি বললাম, কিরে ঘুমাস না কেন?
সে বিস্ময় চোখে চেয়ে বললো, মানে?
আমি অপ্রুস্তুত হয়ে বললাম, না মানে না, কিছু না।
- লুচ্চা, আমি ঘুমাবো কেন?
- ঘুমন্ত অবস্থায় যখন আমার কাঁধে মাথা রাখিস, তখন মনে হয় পৃথিবীর সকল সুখ বুঝি আমাতেই বিরাজ করছে।
- ওরে হারামীরে।
- আচ্ছা না ঘুমালি, শুধু মাথা রাখ আমার কাঁধে।
- সর এখান থেকে। আমার বয়েই গেছে তোর কাঁধে মাথা রাখতে।
- আচ্ছা, ঠিক আছে।
- কী ঠিক আছে হ্যাঁ?
- কিছু না।
.
সংসদ ভবনের সামনে এসে বাস সিগন্যালে পড়লো। আমি জানি এখানকার সিগন্যাল ছাড়তে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। বাস থেকে নেমে কিছু বাদাম কিনে আনলাম। মেঘাকে বললাম, তুই বাদামগুলো ছিলে দে। আর আমি খাই।
- কি? আমি তোকে বাদাম ছিলে দেবো?
- হ্যাঁ।
- আমি কি তোর বউ হই?
- হতেই বা কতক্ষণ?
- তোর বাদাম তুই নিজেই ছিলে খা।

অগত্যা নিজের বাদাম নিজেই ছিলে খেতে লাগলাম। বাদাম খাওয়া শেষ হতে না হতেই মেঘা বলে উঠলো, "শ্রাবণ, আর কতক্ষণ এই জ্যামে বসে থাকবো?"
আমি বললাম, অনন্তকাল।
- মানে?
- বাস যত কাল জ্যামে থাকবে, তত কাল।
- মানে কী?
- চুপচাপ আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যা। বাস কলেজের সামনে এলে জাগিয়ে দেবো।
- আমি কি তোর গার্লফ্রেন্ড হই যে, তোর কাঁধে আমার মাথা রাখবো?

বুঝলাম জ্যামে বসে থেকে তার মাথাটা পুরো গরম হয়ে গিয়েছে। আমিও একটু গরম স্বরে বললাম, তাহলে শক্ত সিটে মাথা ঠুক।
- আমার গরম লাগছে প্রচুর। চল নেমে হাঁটতে থাকি।
- পারবো না।
- কেন পারবি না?
- আমার হাঁটতে ভালো লাগে না।
- মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই তো ক্যাম্পাসে পৌঁছে যাবো
- হ্যাঁ, জানি।
- তো চল।
- যাবো না।
- চল না প্লিজ।
- তোর খারাপ লাগলে তুই হেঁটে যা। আমি পারবো না।

সে তার ব্যাগটা হাতে নিয়ে হুরহুর করে বাস থেকে নেমে গেলো। যাওয়ার সময় আমাকে বলে গেল, তুই আর কখনো আমার সাথে কথা বলবি না।
আমিও বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে। সে দেখা যাবে।

মেঘা বাস থেকে নামার কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই বাস ছেড়ে দিলো। দেখলাম মেয়েটা মাথায় হাত দিয়ে বসে পরেছে। হয়তো ভাবছে, হায়রে কপাল! আরেকটু বসে থাকলে কী এমন হতো?
বাস খামাড়বাড়ি গোল চত্বর অতিক্রম করার আগেই আমি নেমে পড়লাম বাস থেকে। মেঘা তখনো বসে আছে। আমি একটু দ্রুত পায়ে তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম, "ধৈর্য, সব ধৈর্য। যার ধৈর্য নেই, সে সদা সুফল হতে বঞ্চিত হবে। আর তার চাক্ষুষ প্রমাণ তুই।"

তাকে টেনে তুললাম। বললাম, চল হেঁটেই যাই। সে হেঁচকা টানে তার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, তুই যা। আমি যাবো না।
আমি বললাম, বাহ! রাগলে দেখি তোকে পেঁচার মতো লাগে।
সে আমার বুকের উপর কয়েকটা কিল ঘুসি দিয়ে বললো, রাগলে তোর বউকে পেঁচার মতো লাগে। বিড়াল একটা।
আমি বললাম, একদম ঠিক বলেছিস। তবে বউটা হাসলে কিন্তু মন্দ লাগে না।
তার হাত ধরে তাকে একটানে আমার বুকের কাছে এনে বললাম, তো চলো বউ গাছের নিচে বসে একটু বিশ্রাম নেই।
- আমি তোর বউ?
- না।
- তবে বউ বললি কেন?
- মন চেয়েছে তাই। কেন? খারাপ লাগছে শুনতে? ঠিক আছে আর বলবো না।

এতক্ষণ যাবত আমি তার হাত ধরে রেখেছিলাম। একটা ঝাঁকি দিয়ে তার হাতটা ছেড়ে দিয়ে বললাম, চল ক্যাম্পাসের দিকে যাই।
তার হাতটা অমনভাবে ছেড়ে দেওয়াতে সে বললো, হাত ছেড়ে দিলি কেন?
- ধরেই বা রাখবো কেন?
- তবে এতক্ষণ ধরে ছিলি কেন?
- মনে চেয়েছিলো সেজন্য।
- ও।
- হ্যাঁ।
- চল গাছের নিচে গিয়ে বসে বিশ্রাম নেই।
- না, ক্যাম্পাসে গিয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে বসে বিশ্রাম নেবো।
- রাগ করেছিস?
- একদম না।
- তবে এভাবে কথা বলছিস কেন?
- কই, কিভাবে?
- আচ্ছা ঠিক আছে চল।
.
সামনে আমাদের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা। ক্লাসের ফার্স্টবয় আমি। সেই সুবাদে মেঘার যত প্রকার সাহায্যের প্রয়োজন হয়, সব আমাকেই করতে হয়। হুটহাট করে কল করে বলবে, শ্রাবণ এখনই আমার বাসার নিচে চলে আয়। অগত্যা নিরুপায় আমি। আমার যেতেই হবে। ভালোবাসি যে মেয়েটাকে। কখনো আবার গভীর রাতে কল করে বলবে, তোকে দেখতে মনে চাইছে। দ্রুত চলে আয়। সেই মুহূর্তে আমি না গেলে পরদিন ঝারি শুনতে হয়। আমি তাকে কত করে বুঝায়, আমি ব্যাচেলর মানুষ। রাত বারোটার পর গেট বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সে, সেসব কথা শুনতে নারাজ। আবার যদি বলি, আমাকে ভালোবাসিস? তখন কিন্তু আবার ঠিকই মুখ বাঁকিয়ে বলে, আমার বয়েই গেছে তোকে ভালোবাসতে।
.
সম্প্রতি আমি খেয়াল করছি, আমাদের ক্লাসের নীলা নামের মেয়েটা আমাকে কিছু বলতে চায়। সে বিভিন্ন ভাবে আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু বলতে পারে না। সেদিন অডিটোরিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ করেই মেয়েটা আমার সামনে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।
আমি তার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম। সে বললো, এখানে না। একটু উপরে চলুন। এর মাঝে মেঘা এসে হাজির। আমি নীলাকে বললাম, অন্যদিন কথা হবে কেমন?
মেয়েটি কিছু বললো না। শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে। আমি স্বপ্ল সময়ে তার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম, তার মনের মধ্যে অনেক কথা জমে আছে। কিন্তু সে সেই কথাগুলো বলার সুযোগটা পাচ্ছে না।
.
- ঐ মেয়ের সাথে এতো কী তোর?
মেঘার এমন প্রশ্ন শুনে কিছুটা অবাক হলাম। বললাম, কোন মেয়ে?
- নাটক করিস? কোন মেয়ে মানে? ঐযে বোরকা পরা, নেকাব পরা মেয়েটা।
- নীলার কথা বলছিস?
- বাব্বাহ! নামও জানিস দেখছি।
- তা, কী হয়েছে বল?
- ঐ মেয়ের সাথে তোর কিসের এতো সখ্যতা?
- কই? কোনো সখ্যতা নেই তো।
- তাহলে অডিটোরিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে কিসের আলাপ করছিলি?
- তেমন কিছু না। মেয়েটা আমাদের ক্লাসমেট। তাছাড়া আমার রোলের পরেই তার রোল।
- আমি ছাড়া কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবি না।
- কেন?
- বলতে নিষেধ করেছি, বলবি না। এতো প্রশ্ন করিস কেন?
- তুই কি আমার প্রেমিকা হস? যে, তুই ছাড়া কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবো না!
- শ্রাবণ...
- বল...
- আমার দিকে তাকা।
- কেন?
- তাকাতে বলেছি তাকা।

আমি তার দিকে তাকালাম। সে বললো, আমার চোখের দিকে দুই মিনিট তাকিয়ে থাক। পলক ফেলবি না একদম।
আমি বিনা প্রশ্নে তার চোখের দিকে দুই মিনিট তাকিয়ে রইলাম। অতঃপর সে বললো, কিছু ফিল করতে পারলি?
আমি বললাম, তুই সত্যিই কি আমাকে ভালোবাসিস? নাকি মজা করছিস?
- মেঘা মজা করতে পারে। কিন্তু মেঘার চোখ, মন কখনো মজা করে না।

দেখলাম তার চোখ দু'টো ছলছল করছে। ইশ! মেয়েটা কত ভালোবাসে আমাকে। নীলার সাথে কথা বলতে দেখে সে এতোটা জেলাস ফিল করবে, কখনো কল্পনাতেও ভাবিনি। মনে মনে নীলাকে ধন্যবাদ দিলাম।
আজ তার সাথে একটু কথা বলেছি বলেই আমার প্রতি মেঘার ভালোবাসাটা বুঝতে পেরেছি।
.
ফর্মফিলাপ চলছে। অনেকে এসে টাকা কমানোর জন্য আমার কাছ থেকে দরখাস্ত লিখে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ আর্থিক প্রবলেমের জন্য দরখাস্ত জমা দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ বাপের টাকা নিজের পকেটে ঢুকানোর জন্য দরখাস্ত দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার বড় ভাইকে ধরে বিশ হাজার টাকার জায়গা দশ হাজার দিয়ে কাজ সারছে। সাথে চা নাস্তা বাবদ বড় ভাইকে দুই, আড়াই হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে। ব্যাপারটা মন্দ না।

এদিকে আবার আমার বাড়িতে অভাব অনটনের কারণে দুই বেলা খাবার জোটে না ঠিকমতো। ছোট ভাইটা এবার ষষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। তার পড়ালেখার খরচ, সাথে সংসারের খরচ টানতেই বেশ বেগ পোহাতে হয় আব্বাকে। তার সাথে আবার আমার পড়ালেখার খরচ।
আব্বা সেদিন ফোন করে বললেন, মাঠের ধানগুলো নাকি এখনো পাকেনি। ধানগুলো পাকলে সেগুলো কেটে এনে বাজারে বিক্রি করলে তবেই টাকা হবে। নয়তো এই মুহূর্তে উনার কাছে কোনো টাকা নেই। আমিও আর চাপ দেইনি আব্বাকে।
একটা পার্টটাইম জব করি। সেখান থেকে যা পাই। তা দিয়ে ঢাকার শহরে মোটামোটি থাকা খাওয়াটা হয়ে যায়। মেঘাকে আমার পরিবার সম্বন্ধে কিছুই বলিনি এখনো। অবশ্য সে কখনো জানতেও চায়নি। তবে তাকে এই ব্যাপারে বলাটা বেশ জুরুরি। কেননা সে যার সাথে সারাটা জীবন কাটাবে, তার সম্বন্ধে তো পুরোপুরি জানতে হবে।

সবাইকে দরখাস্ত লিখে দিতে দিতে দুপুর হয়ে গেল। এর মাঝে মেঘা এসে জিজ্ঞেস করে গিয়েছে, আমি ফর্মফিলাপ করেছি কিনা। তার প্রশ্নের জবাবে আমি "হ্যা, না" সূচক মাথা ঝাঁকিয়েছি শুধু।
.
ক্যাস্পাস থেকে বের হতে যাবো, ঠিক সেই সময় নীলা এসে সামনে দাঁড়ালো। সে বললো....
.
অপেক্ষা করুন দ্বিতীয় পর্বের।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৯

এস সুলতানা বলেছেন: অসাধারণ

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩০

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন:
পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষা

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩১

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২১

খাঁজা বাবা বলেছেন: তারাতারি
বেশি অপেক্ষা করা যাবে না :)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩১

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৩

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: ভালো লাগলো, ২য় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩২

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬

ফয়সাল রকি বলেছেন: খুনসুটি ভালই চলছিলো। চালিয়ে যান।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩২

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাষায় সুন্দর লিখেছেন। কোনো ভনিতা নেই।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩২

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা

৭| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


অনেক ডায়ালগ, বেশী কথা, খাঁটি বাংগালী

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৩

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.