নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেন মৃত্যু হচ্ছে লোকালয়ে প্রতিদিন,মরে যাচ্ছি আজাবে সুদহীন...

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা

শহুরে ডিপ্রেশনে আবদ্ধ.....

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রীক মিথলোজী ঃ থেসাস এবং মিনোটোস...

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২২

Thesus and minitous...



থেসাসের কোনো বাবা ছিলো না।কেউই জানতো না তার বাবা কে। এথেন্সের রাজা এজিউস এবং পসেইডন তার মা এথেরাকে প্রচন্ড ভাবে ভালোবাসতেন...



থেসাসের জন্মের পূর্বে এজিউস এথেরা বলেন,"আমাদের যদি ছেলে হয় এবং যখন সে পূর্ণবয়স্ক হবে,তাকে এই পাথরটি নড়াতে বলবে এবং আমার তলোয়ার আর স্যান্ডেল নিতে বলবে "



এজিউস এরপর তার তলোয়ার এবং স্যান্ডেল বড় একটি পাথরের নিচে লুকিয়ে রাখলো এবং এথেন্সের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো...



এই কাহিনীটা ঘটেছিলো ট্রোজেন নামক ছোট্ট একটি শহরে যেখানে থেসাস শক্ত,বলিষ্ঠ পুরুষ হিসেবে গড়ে উঠলো....



যখন এথেরা বুঝতে পারলো তার ছেলেকে বলার এটাই সময়। সে পাথরের কাছে তার ছেলেকে নিয়ে গেলো এবং সেটা সরাতে বললো। থেসাস খুব সহজেই সেটা সরিয়ে ফেললো এবং ওই বড় পাথরের চাই টি কাছের এক জঙ্গলে ছুড়ে ফেললো। এথেরা তাকে ওই তলোয়ার আর স্যান্ডেল নিয়ে এথেন্সে যেতে বললো...



এথেরা আর তার বাবা এথেন্সে যাওয়ার জন্য থেসাস কে পানিপথ বেছে নিতে বললো কিন্তু থেসাস ছিলো একরোখা। সে স্থলপথই বেছে নিলো।কিছু মাইল যাওয়ার পর সে অতিদাকয় দানবের সম্মুখীন হলো।যার হাতে চকচকে মুগুর ছিলো....



সে বললো...



"আমি পেহ্রিফেটিস এবং আমি এই মুগুর দ্বারা তোমার মাথা দলিত-মথিত করবো "



' ওহ তাই নাকি? :-) ওটা তো অনেক শক্তিশালী :-D '



" হ্যা এটা পিতলের :-D "



' আমি সিউর ওটা পিতলের না -_- '



" অবশ্যই এটা পিতলের >_< "



' নাহ,ওটা কাঠের। উপরে পিতলের প্রলেপ :-) '



" নাহ। তুমি মিথ্যুক >_< "



'আচ্ছা আমার হাতে দাও ওটা আমি দেখাচ্ছি :-) '



পেহ্রিফেটিস মুগুরটি থেসাসের হাতে দিলো...



থেসাস পেহ্রিফেটিস কে মুগুরটির মাথা দ্বারা আঘাত করতে লাগলো এবং বললো," এটা আসলেই পিতলের এবং আমার এটা রেখে দেয়া উচিৎ...."



থেসাস তার যাত্রা চালাতে লাগলো। খুব বেশিদূর যেতে না যেতেই সে এক দৈত্য দেখতে পেলো যার হাতে বড় কুড়াল ছিলো। সে পথ আটকিয়ে বললো...



" আমি স্কিরন এবং এই গিরিপুঞ্জ আমার অধীনে।তোমাকে এটা পার হতে হলে টোল হিসেবে আমার পা ধুয়ে দিতে হবে।"



থেসাস জিজ্ঞেস করলো,"আমি তা না করলে কি হতে পারে? "



স্কিরন বললো,"আমি তোমার মাথা এই কুড়াল দিয়ে নামিয়ে দিবো। আর যদি ভাবো কেদে পার পাবে।তবে সেটা ভ্রান্ত ধারণা। "



উপায়ন্তর না দেখে থেসাস বসে পা ধুয়ে দিতে আরম্ভ করলো। থেসাস গিরিপুঞ্জের নিচের দিকে বড় সাইজের একটি কচ্ছপ দেখতে পেলো।সে বুঝতে পারলো কচ্ছপ টি মানুষখেকো। তাই পা ধুয়ে দেয়ার সময় পা তুলে সে স্কিরনকে কচ্ছপের কাছে নিক্ষেপ করলো...



থেসাস আবার চলতে শুরু করলো।কিছুদূর যাওয়ার পর থেসাস আবার স্কিরনের মতো কাউকে দেখতে পেলো।যে তাকে একটা পাইন গাছ নামিয়ে দিতে বলে।



থেসাস গাছ নামানোর সময় এমন ভাবে আঘাত করলো তার পিঠ ভেঙে গেলো এবং ভেতরে গাছ গেথে দিয়ে সে নিজের রাস্তায় চলতে লাগলো....



কিছু মাইল যাওয়ার পর সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসলো।সে বড় একটা বাসা দেখতে পেলো।সে সেই রাত ওই বাসায় থাকতে মন স্থির করলো...



সে দরজায় নক করলো।ভেতরের লোক বললো...



" স্বাগত।ভেতরে এসো।তোমাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে।আমার নাম প্রোক্রুস্টেস।আমার কাছে জাদুর খাট আছে।এটা ছয় ফিট লম্বা হলেও যে কারো সাইজের সাথে খাপ খাইয়ে যায়। "



থেসাসকে আগেই সতর্ক করে দেয়া হয়েছিলো এই লোকটির ব্যাপারে।এর এই খাটে কোনো খাটো মানুষ শুলে তার হাত পা শিকল দিয়ে বেধে টানা হয় লম্বা করার জন্য। আবার লম্বা মানুষ শুলে খাটো না হওয়া পর্যন্ত পায়ের দিক থেকে কাটা শুরু হয়....



থেসাস রুমে ঢুকেই প্রোক্রুস্টেস কে শিকল দিয়ে বেধে ফেললো এবং পুরো পা কেটে ফেললো।মাথার অংশ ও স্লাইস করে কেটে ফেললো...



থেসাসের ছক অনুযায়ী পরেরদিন সে এথেন্সে পৌছালো....



এটাই তার জীবনে দেখা সবচেয়ে বড় শহর।সে এজিউসের রাজপ্রাসাদে গেলো। এজিউস মিডিয়া কে বিয়ে করেছিলো।



মিডিয়া থেসাস কে চিনতে পারে প্রথম দেখায় এবং ষড়যন্ত্র করে রাজাকে বলে,থেসাস তাকে মারতে এসেছে।রাজা নিজের ছেলেকে চিনতে না পেরে মিডিয়াকে বিষযুক্ত ওয়াইন দিতে বলে থেসাসের জন্য...



এজিউস থেসাসকে ভোজে আমন্ত্রণ জানায়।থেসাস ঠিক যখনি ওয়াইন পান করতে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি এজিউস তার তলোয়ার আর স্যান্ডেল চিনতে পারলো এবং ওয়াইনের গ্লাস ভেঙে ফেললো...



থেসাস আর এজিউস আনন্দোশ্রিত হয়ে গেলো।এজিউস এথেরাকে ড্রাগনের রথে নির্বাসনে দিলো।



এজিউস-থেসাসের দিন ভালোই যাচ্ছিলো কিন্তু যখন বসন্ত শুরু হলো এথেন্সিয়ানদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিলো যখন একটা কালো নোঙর আলা জাহাজ এসে পৌছালো...



এথেন্সিয়ানরা মন খারাপ করলো কিন্তু এজিউসরা কিছুই বললো না।



থেসাস পোতাশ্রয়ে গেলো এবং নাবিকদের জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে..



ক্যাপ্টেন বললেন কীভাবে কিং মিনোসের সবচেয়ে ছোটো ছেলে,ক্রেটের রাজা এন্ড্রোগেসকে এথেন্সে মারা হয়েছে...



মিনোস খুবই রাগী ছিলো এবং বললো প্রতিবছর এথেন্সিয়ানদেরকে মিনোটোর নামক দানবের খাবার স্বরূপ সাতজন পুরষ ও সাতজন নারীকে প্রদান করতে হবে ।



মিনোস অর্ধেক ষাড় আর অর্ধেক মানুষরূপী দানব। যে কিং মিনোসের রাজপ্রাসাদের নিচে ল্যাব্রিথ নামক জায়গায় বাস করে..



থেসাস এসব শুনে এজিউসের কাছে মিনোটারকে মারার জন্য ক্রেটোতে যাওয়ার অনুমতি চাইলো...



কিন্তু থেসাস যাওয়ার অনুমতি দিলো না।কারণ তার একটাই উত্তরাধিকার।



কিন্তু থেসাস বললো,"আমার যেতে হবে বাবা।কারণ আমাকে প্রুভ করতে হবে আমি একজন সাহসী যুবক "



শেষ পর্যন্ত এজিউস থেসাসকে যেতে দিলো। থেসাস খুব দ্রুতোই রওনা দিয়ে দিলো।



থেসাস যখন সেখানে পৌছালো তখন মিনোস তাকে স্বাগত জানালো...



মিনোস তাকে জিজ্ঞেস করলো,"তুমি কে? "



থেসাস বললো," আমি এথেন্সের রাজা পসেডনের ছেলে "



মিনোস বললো,"তুমি যদি এথেন্সের রাজাই হও, তবে ওল্ড এজিউসই তোমার বাবা হওয়া উচিৎ....



তুমি যে পসেডনের ছেলে তা প্রমাণের জন্য আমার এই রিংটা এনে দাও এবং সে রিংটা সাগরের মধ্যে ফেলে দিলো...



পসেডনের নামে প্রার্থনা করে সে পানিতে ডাইভ দিলো...



সে পানির নিচে জলপরী থেটিসকে দেখতে পেল যে তাকে একটি রিং এবং একটি পুরোনো মাথার মুকুট দিলো।থেসাস রিং আর মুকুট নিয়ে পাড়ে ফিরে গেলো...



মিনোস হাসল...



সেই রাতে থেসাসের কাছে মিনোসের কণ্যা আরিড্রিয়ান আসলো এবং বললো, " আমি চাই তুমি মিনোটোর কে হত্যা করো।এরপর আমাকে এথেন্সে নিয়ে যাও এবং আমাকে তোমার রাণী করে নাও "



থেসাস রাজি হলো এবং তাকে সিল্কের একটা বল দিল পুরো ল্যাব্রিথ ধরে পেচিয়ে ফেলার জন্য।



থেসাস পেচিয়ে ফেললো পুরো ল্যাব্রিথ। এবং ল্যাব্রিথের সেন্টারে গিয়ে মিনোটোর কে পেলো। যে ঘুমিয়ে ছিলো। থেসাস তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং তার একটা শিং ভেঙে ফেললো। থেসাস শিং দ্বারা খোঁচাতে শুরু করলো। থেসাস তাকে প্রচন্ড ভাবে ক্ষিপ্ত করে ফেললো...



এরপর থেসাস নিরাপদ দুরত্বে চলে গেলো এবং শিং বর্শার মতো ছুড়ে মারলো...



প্রচুর আঘাতের পর মারা পড়লো...



সবাই তখন থেসাস কে সাহসী বীর হিসেবে মেনে নিয়ে তালি দেয়া শুরু করলো...



থেসাস এথেন্সে ফিরে গেলো।



এক রাতে গড ডাইনিসাস থেসাসকে বললো, "তুমি প্রিন্সেস এড্রিয়াকে বিয়ে করোনা।আমি তাকে আমার স্ত্রী হিসেবে পছন্দ করেছি। তুমি তাকে নাক্সোস দ্বীপে রেখে আসো ..."

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

প্রথম ভালো লাগা। :)

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা বলেছেন: ধন্যবাদ :-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.