নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শখের ব্লগার, ব্লগ লিখছি প্রায় বারো বছর হবে, তবে কোনো ব্লগে বেশীদিন থাকতে পারিনি, কেননা, লেখার কারণে হউক, বা ব্লগের নিয়ম কানুনের কারণে হউক, বার বার থেমে যেতে হয়েছে, ব্লগ লেখার বা হেল্প চাওয়ার কারণে সব কিছু হারিয়েছি।

সভ্য

আমি একজন ভালো মানুষ।

সভ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

কদর আলীর কদর।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬




(আজ যে গল্পটি লিখছি তা সম্পূর্ণ আমার আগের গল্পগুলোর চাইতে ভিন্ন। গল্পটির সমস্ত চরিত্রগুলো কাল্পনিক, ভাষার ব্যবহার আমি ঠিক মতো করতে পারি না, কখনো সাধু এবং কখনো সখনো চলিত ভাষা ব্যবহার করে ফেলি, যাই হউক, গল্পটি শুরু করছি, আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।)

কদর আলীর কদর

কদর আলি। নাম শুনলে মনে হবে মোটা সোটা কালো মতো কোনো এক কুলি মজুর টাইপের ব্যাক্তি, কিন্তু আমাদের কদর আলি রোগা-পাতলা, বারো মাস রোগে ভোগা, শ্যাম বর্ণের ক্লাস সিক্সে উঠা এক বালক। শরীর নিয়ে যতনা তার ক্ষোভ, তার চাইতে বেশী ক্ষোভ তার নাম নিয়ে, সে তার মাকে অনেক বার বলেছে তার নাম পরিবর্তন করে একটা ভালো নাম রাখার জন্য, মা যতবার বিষয়টি তার বাবাকে বলতে গেছে ততবারই ধমক খেয়েছে আর কদর আলীর কানে জুটেছে কানমলা, তার বাবা বিকট হুংকার দিয়ে তাকে বলেছে-

: তুই বলস কি? বাপের দেওয়া, আকিকা করা লোক খাওয়ানো এই সব ফালতু, আমি ফালতু মানুষ, আমি তর নাম রাখছি এমুন যেন্ তুই মাইনষের থেইক্কা কদর পাস, আর হারামজাদা তুই কস, নাম পাল্টাইতে, কত্ত বড় সাহস হইছে, না? বলার সাথে সাথে তার বাবা তার কান নিয়ে যেনো কুস্তি করা শুরু করে দিয়েছে, কথাটা মনে পড়লে তার কান এখনো ব্যাথা করে উঠে, যেমন এখন তার কান ঝিন ঝিন করছে। কদর কথাটা ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না।

তার বাবা একটা কথা ঠিক বলে নাই, মাইনষের বইয়া গেছে তারে কদর করবো, কই, স্কুলেও সে স্যারদের কাছে বিশেষ কদর পাই না, বন্ধু বান্ধবী যারা আছে তারা বরং তাকে এড়িয়ে চলে। একমাত্র রুপা কিছুটা কদর করে, রুপা এবার ফাষ্ট হয়ে তার ক্লাসের একই বিভাগে পড়েছে, সেকশান-বি, ক্লাস ফাইভ থেকে সিক্সে উঠার ঠেলা কম না, তার মধ্য ফাষ্ট হওয়াটা তো আরও বড়ো ঠেলা। কদর ভাবে, এই মেয়ে কি লেখে যে ফাষ্ট হয় আর সে কিনা এক সাবজেক্টে খারাপ করে স্যারদের গালাগালি খেয়ে কোনো রকমে ক্লাস সিক্সে উঠেছে, একদিন সে বলেই ফেলে

: আচ্ছা রুপা, তুমি কিভাবে ফাষ্ট হও একটু কও তো দেহি?

রুপা ঠোট দুটি ফুলিয়ে গাল বাকাঁ করে কিছুটা সেলফি স্টাইলে বলে, বাপে তিনটা মাষ্টারের কাছে পড়ায়, তাগো নোট পইড়া পইড়া আমার জিব শুকাইয়া গেছে, তার মধ্যে মুখস্ত লিখা তো হইবো না, নিজের থেকে কিছু ঘিলু ছাড়তে হয়, তারপর বাপেও পড়া ধরে, মা-তো সারাক্ষণ পিছন পিছন লাইগা থাকে, তুমি কি মনে করো আমার রুপ দেইখা মাষ্টার’রা আমারে নম্বর দেয়? কদর বলে, না-তা না, তবে এইটা ঠিক কইছো তুমি তো সুন্দরী, তোমার রুপ আছে, গুনও আছে, পড়ালেখায় ভালো, রান্না ও ভালো পারো....।

: সুন্দরী বলাতে রুপা একটু নরম হয়, বলে তুমিও ভালা করবা, মন খারাপ কইরো না, সবাই কি আর ফাষ্ট সেকেন্ড হয়? তয় মন দিয়া যদি একঘন্টা ও পড়ো, মনে রাখবা সেইটা বেশী কাম দিবো। সারাদিন বই লইয়া বইসা থাকা কোনো কামের কথা না।

এর মাঝে রুপার কিছু বান্ধবী রুপাকে ডাক দেয়, ওই রুপা, তুই হের লগে কি কথা কস? আয়, আমরা আম গাছের নীচে বসবো, সখিনা কাচাঁ আমের ভর্তা আনছে, আয়, চইলা আয়, কদরের লগে এতো কদর কিসের? কথাটা কদরের শুনে বেশ মনকষ্ট হয়। সে মুখ কালো করে বসে থাকে।

টিফিন টাইমের এই সময়টা তার বেশ খারাপ লাগে, সে কারো সাথে তেমন মেলামেশা করে না, কেউ তারে তেমন পাত্তা দেয়না শুধু উজবুক খাইরুল ছাড়া, তার আবার ভালো ও লাগে, খাইরুল না থাকলে তার মনে হতো সেই মনে হয় ক্লাসের মধ্যে সব চাইতে খারাপ ছাত্র, কিন্তু খাইরুল আরও খারাপ, তার হাতের লেখা দেখলে বমি আসে এমন অবস্তা, খাইরুল কোন ফাকেঁ আইসা তার ঠিক পিছনে ‘ছর ছর’ করে প্যান্টের ফাকঁ দিয়ে ইয়েটা বের করে প্রসাব করছে আর গুন গুন করছে, কদর পিছনে খাইরুলকে দেখে মনে মনে খুশী হয়, তবে কপট রাগ দেখিয়ে বলে,

‘তর আর কান্ড জ্ঞান হইবো বইলা মনে হয় না’ স্কুলে এত সুন্দর বাথরুম থাকতে তুই এইখানেই ছাইড়া দিতেছোস কি মনে কইরা...ছিঃ
খাইরুল চিপা হাসি দিয়া প্যান্টের জিপার লাগাতে লাগাতে তার কাছে এসে বসে এবং বলে, দূর, এত কষ্ট কইরা কে আবার দুই তালায় উঠবো? তার মধ্যে স্যারগো লগে দেখা হওয়ার ঝামিলা আছে না, কি দরকার এত ঝামিলা কান্দে লওনের, তার চাইতে এইটাই ফেয়ার এন্ড লাভলি...হা হা করে সে বিকট হাসি দেয়। এরই মাঝে সে পিছনের পকেটের থেকে পলিথিন বের করে যার মধ্যে আছে সিগারেটের শুকা, পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে যা সিগারেটের কাগজ, আর বলে, বাপজানের পকেট থেকে কাল এটা ডেলিভারী নিসি, সে নিমিষে বানিয়ে ফেলে আস্ত সিগারেট, তারপর লাইটার বের করে সিগারেটে আগুন দিয়ে ভাটিয়ালী টান দেয়, এক গাল ধুয়া ছেড়ে বলে নে....একটা মারফতি টান দিয়া আমারে দে.........।

কদর আলী সিগারেট নিবে কি নিবে না ভাবছিলো, রুপা দেখলে খবর আছে আর স্যাররা দেখলে স্কুল থেকেই বের করে দিবে.....খাইরুল কয়, আরে বেটা টানলে ল, কেউ দেখলে স্কুল থেইকা বাইর কইরা দিবো, এইটা প্লাস পয়েন্ট, পড়াশুনাটা যে কে বানাইছিলো তারে যদি একবার কাছে পাইতাম....শালা, কথাটা কদরের বেশ মনে ধরে, আসলেইতো, কি হইবো পড়ালেখা দিয়া....তার গ্রামের যে কাউন্সিলার সে প্রতিবার বিনা ভোটে বছরের পর বছর চেয়ার ধইরা রাখছে, কেউ সাহস কইরা দাড়াঁয় না তার সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্য, অথচ ব্যাটা ক্লাস টু ও পড়ে নাই।

চেয়ারম্যান সার্টিফিকেড আনতে গেলে তার সই লাগে, হে সই দেখলে কাপড় আর শরীর দুইটাই নষ্ট হইয়া যাইবো, হে কিনা সার্টিফিকেড দেয়, দুনিয়াডা কোথায় যে গেলো....ভাবতে ভাবতে সে সত্যি সত্যি মারফতি টান দিয়া আবারও খাইরুলরে সিগারেট দেয়, সিগারেটে টান দিয়া তার মাথাটা চিলিক দিয়া উঠে.....কি ছিল এই সিগারেটে, আগেও সে কতবার সিগারেটে টান দিয়েছে কিন্তু এমুন হয় নাই, সে জিগায়, কি আছিলো রে, তোর শুকা ঠিক নাই রে খাইরুল, হি হি করে সে হাসে........খাইরুল কয়, আরে একটু গাজাঁ মিশাইছি, তয় বেশী না, এই একটুখানি.....। সে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় আর দুই বন্ধু হাসতে থাকে....হাসতে হাসতে দুইজনে গড়াগড়ি খায়...হা হা...হি হি...।

(প্রথম পর্বের সমাপ্তি)

চলবে.....।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৪০

ইসমাইলহোসেন০০৭ বলেছেন: শুভ কামনা রেখে গেলাম।

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

সভ্য বলেছেন: আপনাকেও শুভ কামনা, ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.