নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শখের ব্লগার, ব্লগ লিখছি প্রায় বারো বছর হবে, তবে কোনো ব্লগে বেশীদিন থাকতে পারিনি, কেননা, লেখার কারণে হউক, বা ব্লগের নিয়ম কানুনের কারণে হউক, বার বার থেমে যেতে হয়েছে, ব্লগ লেখার বা হেল্প চাওয়ার কারণে সব কিছু হারিয়েছি।

সভ্য

আমি একজন ভালো মানুষ।

সভ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার আদরের সন্তান বা আত্মীয় স্বজন ফেইসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ছে না তো? কিছু উপর্সগ নীচে উল্লেখ করলাম যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার সন্তান ফেইসবুকে আসক্ত হয়ে পড়েছে, তা নিরাময় শুধু সময়ের ব্যাপার।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৯



আপনার আদরের সন্তান বা আত্মীয় স্বজন ফেইসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ছে না তো? কিছু উপর্সগ নীচে উল্লেখ করলাম যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার সন্তান ফেইসবুকে আসক্ত হয়ে পড়েছে, তা নিরাময় শুধু সময়ের ব্যাপার।

রাজুঃ স্কুলে তার পড়ালেখা ও খেলাধুলার কারণে সে ছিলো সকলের প্রিয় একজন ছাত্র এমনকি স্যার’রা ও তাকে বেশ আদর করতো, জিপি৫ পাওয়ার পর তার বাবা তাকে একটি ল্যাপটপ কিনে দেয়, প্রথম প্রথম তেমন দেখা না গেলেও মাস কয়েক ধরে রাজুকে আর খেলার মাঠে যেমন পাওয়া যায় না, তেমনি পড়ালেখায় ও তার কোনো আগ্রহ নেই, সারাদিন পড়ে থাকে সে ল্যাপটপকে নিয়ে, খাওয়ার টেবিল থেকে শুরু করে সব জায়গা, এমনকি বিকেলে যখন সবাই খেলতে যাই তখন রাজু বাসার ছাদে বসে ল্যাপটপে ব্যস্ত থাকে, কি করে আসলে সে ল্যাপটপে? একদিন সরেজমিনে দেখা গেলো রাজুর ফেইসবুকে বন্ধুর সংখ্যা প্রায় দু’হাজার, সে কিছু ছাপলেই সঙ্গে সঙ্গে লাইক আর কমেন্টের ফুলঝুরি, ফেইসবুকে সে যেনো একজন সেলিব্রিটিদের দলে, তা ছাড়া আছে বিভিন্ন গ্রুপে তার সরব উপস্হিত। সারাদিনে তার ধ্যান জ্ঞান হলো ফেইসবুক।

হোসনে আরাঃ একজন ছাত্রী, বিবিএ করছে, সারাক্ষণ তার মোবাইল বিজি, করছে কি এই মেয়েটা, তাকে লাইনে পাওয়ায় যাই না, দেখা গেলো সে তার প্রিয় মোবাইল দিয়ে ফেইসবুক অপারেট করছে, এতে তার পড়ালেখার যেমন ক্ষতি হচ্ছে পাশাপাশি প্রিয়জনদের সাথে ক্রমশই দুরত্ব তৈরী হচ্ছে। তাই সবাইকে বলতে শোনা যাচ্ছে হোসনে আরা আর আগের মতো নেই।

জনাব গোলাম হায়দারঃ একজন ব্যবসায়ী, ব্যবসায় সে বেশ উন্নতি করছিলো, কিন্তু তার সর্বনাশ নামিয়ে আনলো যখন থেকে সে ফেইসবুকে মজা পেয়ে গেছে, এখানে কেউ তাকে চিনে না আবার সবাইকে তার আপনজন। মিম নামে এক মেয়ে তো তার জন্য পাগল হয়ে মজে আছে। সে মিম ছাড়াও ঈশিতা, ঐশী, রীনা সাহা মেয়েদের যেনো হার্ট থ্রুব। প্রতি সপ্তাহে একেকটা আর্টিষ্টিক ছবি তুলে তা ফেইজবুকে ছাপিয়ে হাজার হাজার লাইকের মালিক। এতে তার ব্যবসার যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি তার কর্মচারীরা কাজে ফাকি দিচ্ছে দেদারসে, তার থেকে বাস্তব জগত ক্রমশই দূরে সরে যাচ্ছে।

উপরের তিনজন ব্যাক্তি আসলে ফেইসবুকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের এখনি কিছু করা না গেলে এই আসক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাবে, ক্ষতি ডেকে আনবে তাদের সংসারে। এই বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্যান্য আসক্তির মতো ফেসবুকে আসক্তিও ভালো নয়। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আসক্তি শব্দটাই তো খারাপ। শুধু লেখাপড়া ছাড়া আর কোনো আসক্তিই ভালো না। পৃথিবীতে সব ভালো জিনিসকে চাইলেই খারাপভাবে ব্যবহার করা যায়। আমরা জানি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উৎপত্তি কীভাবে আর কেন হয়েছে। বিশেষ করে হারানো বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া কিংবা চারপাশের বন্ধুদের সঙ্গে সংযোগে থাকা যায় সে জন্য। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে অপরিচিত মানুষদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে পরিবার কিংবা কাছের মানুষ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর থেকে খারাপ দিক আর কী হতে পারে। ফেসবুকে আসক্তির কারণে দেখা যায় চাকরিতে গেলে সময় দিতে চায় না, আচার-আচরণের পরিবর্তন আসে, ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন হয়। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে পরিবারকে কার্যকর সময় দিতে পারে না। কামাল উদ্দীন বলেন, বর্তমানে ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে যেটা হয়, ফেসবুকের মাধ্যমে বিপরীত লিঙ্গের অপরিচিত কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। যে কারণে ছেলেমেয়েরা সবসময় ওই ঘোরের মধ্যে থাকে। আর এটা এমন একটা মাধ্যম যেখানে বোঝার উপায় থাকে না যে আপনি কার সঙ্গে কথা বলছেন। যদিও অন্যান্য মাধ্যম আছে যেমন ভিডিওয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় তবুও ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড যেহেতু ঝুঁকি তো থেকেই যায়।

এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তির কিছু কারণও আছে। আপনি সারা দিন খাওয়া-দাওয়া করার পর সেই এনার্জিটা ব্যয় করতে হবে তো। কিন্তু ছেলেমেয়েরা সেটা ব্যয় করতে পারছে না। হাটেমাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না, বন্ধুদের সঙ্গে বাইরের খোলা পরিবেশে আড্ডায় মেতে উঠতে পারছে না। বন্ধু, আড্ডা, খেলাধুলা এমনকি পড়ালেখা থেকে শুরু করে সবকিছুই ঘরোয়াভাবে করতে হচ্ছে। অনেকাংশে রাষ্ট্র তাদের সেই পরিবেশ দিতে পারছে না। সেই সঙ্গে পরিবার এবং সমাজ থেকে যতটুকু পাওয়ার কথা সেটা পাচ্ছে না। আবার অনেকের ক্ষেত্রে যেটা হয় ছেলেমেয়েরাও নিতে পারে না। এটা একটা দ্বিপক্ষীয় বিষয়। তবে এক্ষেত্রে বৃহত্তর অর্থে সমাজ এবং পরিবারের সমস্যা এবং ব্যক্তিগত সমস্যাও আছে। আসক্তির আর একটা পারিবারিক কারণ যেটা বর্তমান সময়ে খুবই লক্ষণীয় সেটা হলো, পরিবারের সদস্যদের সময় না দেয়া। স্বামী অথবা স্ত্রী একে অপরকে সঠিকভাবে সময় না দিলে তখন তারা অন্য দিকে ঝুঁকে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যেটা দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা পরিচিত-অপরিচিত অনেক নতুন বন্ধু খুঁজে নেয়। তখন তারা স্বাভাবিক বিচার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যে কারণে নেগেটিভ জিনিসিটা বেশি হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেইসবুক ব্যবহারের সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে এটা সময়ের অপচয়। আমার মতে, এটা রিটায়ার্ড যারা তাদের জন্য ঠিক আছে। যদিও প্রতিটি মানুষের নিজ নিজ অভিরুচি কে কোন দিকে যাবে, কোন কাজটা করবে। তবুও আমার মনে হচ্ছে ছেলেমেয়েদের ফেসবুকে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। আসক্তি কোনো কিছুতেই ভালো না এটা সবসময়ই খারাপ। বর্তমান সময়ে ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় কাটানোর কারণে সংসার ভাঙছে, দাম্পত্য জীবনে কলহ বাড়ছে। অপরিচিত মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে যায়। নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর ভালো লাগা কাজ করে। যে কারণে পরিবারে ভাঙনের শুরু হয়। এছাড়া ফেইক আইডির মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ছেলেমেয়েদের জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করে। প্রচুর ছেলেমেয়ে আছে যারা রাতে, দিনে এমনকি ক্লাসে বসেও ফেইসবুক ব্যবহার করে।

বর্তমানে আমরা এমন একটা সিস্টেমের মধ্যে বাস করছি, যেটা স্বাভাবিক নয়। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা বাধ্য হচ্ছি নিজেদের সন্তানদের তালাবদ্ধ করে বড় করতে। ফেসবুক কিংবা অন্য মাধ্যমগুলোতে আসক্তি বাড়ার আরেকটা কারণ এটাই। সমাজে কিংবা রাষ্ট্রে যদি পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে এমনভাবে আনতে হবে যেন আমাদের নিজেদের কাজে লাগে সেই সঙ্গে অন্য দশজনের ও উপকারে আসে। শুধু ব্যক্তিস্বার্থ কিংবা কিছু মানুষের কথা চিন্তা করে পরিবর্তন আনলে সেটা অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে না। আমাদের কথা হলো এখনি ভাবার বিষয় ফেইসবুক আমাদের ভাল করছে না খারাপ করছে, যদি দেখা যায় ভালোর চাইতে খারাপের পরিমাণ বেশী হয় তবে অচিরেই ফেইসবুক বন্ধ করে দিতে হবে, এমন নয় যে ফেইসবুক ছাড়া আমাদের চলবে না। তাই আসক্তি দূর করার একমাত্র উপায় ফেইসবুক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন ইয়াহু, স্কাইপি মাধ্যমগুলো যেভাবে আমরা ব্যবহার করি তেমনি ব্যবহার করলে এই আসক্তি কমবে, আর তাও যদি না হয় তবে ফেইস বুক বন্ধ করেই দেওয়া উচিত

আমার সাথে যারা একমত তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজ এই পূর্যন্ত, ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫৯

এস নাহার বলেছেন: অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না? তবে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাল দিকটাকে গ্রহন করে অবশ্যই খারাপ কিংবা নেতিবাচক দিককে বর্জন করবো।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২৮

সভ্য বলেছেন: আপু নাহার, আপনার সাথে আমি একমত। তবে সন্তানদের বেলায় কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ তা বাছাই করার মানষিক প্রয়োগ যেহেতু গড়ে উঠার মতো বয়স হয় না সে ক্ষেত্রে পিতা মাতাকেই সেই দায়িত্ব নিতে হয়, তার আগে পিতা মাতাকে তো জানতে হবে তার সন্তান আসলে ফেইসবুকে কেন ঘন্টার পর ঘন্টা সময় দিবে, তাই নয় কি? যাই হউক কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.