নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

❑ কাব্য: সবুজ তাপস (২০১৫)\n— বিশ্ব-সাহিত্যের ইতিহাসে কবি ও কাব্যগ্রন্থের নাম একই — এটাই প্রথম ঘটনা।\n-\n❑ দর্শন: দৃষ্টান্তবাদ [Drishtantoism]\n-\n❑ সম্পাদনা: ঢেউ

কবি সবুজ তাপস

মাঝেমাঝে চিন্তা করতে-করতে আমি অনেকদূর চলে যাই, প্লুটো টপকেও অনেকদূর। যদি কখনো ফিরতে না পারি তোমাদের কাছে, শহিদ বলো না।

কবি সবুজ তাপস › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিনজন হিজড়া আমার বিপরীত দিকে যাচ্ছে...

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৭

||০৬.০২.২০০৬|| ক্যাম্পাসে গেলাম। বেশিরভাগ সময় কেটেছে আর্টস ফ্যাকাল্টির আন্ডারগ্রাউন্ডে। চারুকলার সাইফ উদ্দিন ও তার ক্লাসমেটরা আমার সাথে আড্ডা দিতে আসল। ওরা গান গেয়েছিল, আমি তাদের গানের সাথে বাঁশি বাজিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে আসার সময় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র রিয়াদের সাথে দেখা। সে ট্রেনে আমার সাথে বসল। বাঁশিসহ আমার কিছু ছবি তুলেছিল। প্রশ্ন করল, আপনার জীবনের এইম কী?
— কোনো এইম নেই।
— বিয়ে করবেন না?
— বিয়েকে মূখ্য কিছু মনে করছি না।
আমার রোগের ওষুধ বিয়ে নয়।
বটতলিতে নেমে কারেন্ট বুক সেন্টার হয়ে পাবলিক লাইব্রেরিতে গেলাম। হাত-মুখ ধু'য়ে সোনিয়া হোটেলে, খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার আসলাম লাইব্রেরিতে। কবি হাফিজ রশিদ খানের 'পুষ্পকরথ'র প্রকাশিতব্য সংখ্যার দু'পৃষ্ঠা প্রুফ করলাম।
সন্ধ্যায় ডিসিহিল হয়ে চেরাগী মোড় যাচ্ছিলাম, মূল সড়কের পাশছোঁয়া নার্সারির রাস্তা দিয়ে। প্রথম নার্সারি অতিক্রম করে দেখলাম, তিনজন হিজড়া আমার বিপরীত দিকে যাচ্ছে। আমাকে দেখে বলেছিল, 'বাবু, দাঁড়াও'। একথা শুনে না-দাঁড়িয়ে পেছনের দিকে দৌড় দিলাম। পেছন থেকে কানে ভেসে আসল, 'বাবু, দৌড়ছো কেন, দাঁড়াও, তোমার মাথার চুলগুলো লম্বা কেন?' দৌড়ে যে দরজা দিয়ে ডিসিহিলে ঢুকলাম, তা দিয়ে আবার বেরিয়ে গেলাম। ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। হাঁটার সময় ভাবলাম, দাঁড়িয়ে তাদের কথাটা শুনলে কী এমন হতো? এটাও ভাবলাম, কথা বলার সময় পকেট হাতড়ে মোবাইলটা নিয়ে গেলে আমার কী করার ছিলো?
চেরাগীতে আসলাম। ভয়ে গলা শুকিয়ে গেল। বাতিঘরে ঢুকে এক গ্লাস পানি খেলাম। ভেতরে গল্পকার কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও জাহেদ মোতালেব ছিলেন। তাদের ঘটনাটা বললাম। জাহাঙ্গীর ভাই বললেন, 'তোমাকে তারা হিজড়া মনে করল'। জাহাঙ্গীর ভাইয়ের কথাটা শুনে রাজু মজুমদার ও জাহেদ মোতালেব হাসলেন। রাজু মজুমদার তখন বাতিঘরের দায়িত্বে ছিলেন।
হিজড়ার উৎপাত থেকে নিজেকে সেভ করতে হবে। একটা চুলের ব্যান্ড কেনা দরকার। কালো ব্যান্ড। কিছুক্ষণ পর বাতিঘর হতে বেরিয়ে গেলাম। মোমিন রোডে দুটো দোকানে ব্যান্ড খুঁজলাম, পেলাম না। জামাল খান রোডে গেলাম, ব্যান্ডের কোনো দোকান পাইনি। নন্দন-কানন রোডেও পেলাম না। আবার এসে বাতিঘরের সামনে বসলাম। ক্লান্ত। বাতিঘরের সামনে ছোটভাইতুল্য সুজন ভট্টাচার্য বলল, 'সবুজ দা, 'পরস্পর'এ আপনার কবিতা পড়লাম, আপনার কবিতা বেশি ভালো লেগেছে।
— ধন্যবাদ।
মনিরুল মনির প্রকাশিতব্য 'খড়িমাটি'র সম্পাদকীয় দেখাল। পড়ে দেখলাম বেশি কথা লিখল। পাশে জিসানও ছিল। একটু পর সে প্রশ্ন করল, 'গাঁজা খাওয়া দরকার। কবি আবু মুসা চৌধুরীকে কোথায় পাব?' মুসাভাই তখন বড় গাঁজাখোর ছিলেন।
— মুসাভাইকে খুঁজতে হবে কেন, মেথরপট্টিতে গেলেই তো পাওয়া যাবে।
— মেথরপট্টির কোন পাশে বিক্রি হয়, সেটা তো জানি না।
জিসানের অস্থিরতা দেখে বললাম, 'আমার বাসায় যাবার পথে পড়ে, সাথে চলেন, দেখিয়ে দেব।'।
স্বরূপ ভট্টাচার্য্য কয়েকবার নিয়ে গেছেন বলেই জায়গাটা চিনতাম। স্বরূপও মাঝেমাঝে গাঁজা খেয়ে রাজা হয়ে যেতেন, হয়তো এখনও মাঝেমাঝে রাজা হচ্ছেন। জিসানকে নিয়ে গেলাম, সাথে ছিল রুদ্র শায়ক। দূর থেকে দেখিয়ে দিলাম। দুজন দু' পুরিয়া কিনলো। দ্রুত হাঁটছিলাম বলে বেরিয়ে আসার সময় তারা পিছিয়ে পড়ল। তাদের অপেক্ষায় গলির মোড়ে মূল রাস্তায় দাঁড়ালাম। আসতে দেরি হচ্ছে দেখে না-বলে আমি নিউ মার্কেট চলে আসলাম, বাসায় উদ্দেশ্যে গাড়ি ধরতে। তারা হয়তো ঐ-সময় মদ্যপান করতে গেল। ওখানে এটাও মেলে। এটা ২০০৪ সালের শেষের দিকে হাফিজ রশিদ খান ও কাফি কামালের সাথে একবার ওখানে গিয়ে দেখে আসলাম। তখন কাফি কামাল আমার মাধ্যমে হাফিজ রশিদ খানের ঘনিষ্ঠ হতে চাচ্ছিল। আমি এক চুমুকও নেইনি, তারা বেশ পান করল। আমার সামনে কেউ মদ্যপান করে মাতলামি করলে বেশ ইনজয় করি। হাফিজ ভাইয়ের কাছে মদের কদর বেশি, তবে কখনও তাকে আমি গাঁজা নিতে দেখিনি।
রেয়াজউদ্দিন মার্কেটে ঢুকে একজোড়া চুলের ব্যান্ড কিনে নিলাম। বাসায় আসার পথে, গাড়িতে, একটা চুলে লাগিয়ে দিয়েছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.