![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানব মন বুঝে, সাধ্য আছে কার ! কখনো আবেগী গাঁথুনিগুলো যেন নিরেট কনক্রিট কখনো আবার গভীরে সাজানো আবেগগুলো- সৌরভে সুবাসিত হয়ে আনন্দে লীন !
১)
প্যারিস অথবা নিউইয়র্কের কাঁচ ঘেরা কোন এক কফি শপ। বাহিরে পেঁজা তুলোর মতন গুচ্ছ গুচ্ছ শুভ্র তুষার বাতাসে খেলা করে। কফিশপের ওম ওম উত্তাপে ওলের সুয়েটার জড়িয়ে দুজন ধোঁয়া উঠা গরম কফি মগে ঠোঁট ছোঁয়ায়। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতি বৈশ্বিক উষ্ণতা আর ডনাল্ড ট্র্যাম্প কতটা বেয়াদব প্রেসিডেন্ট সেই বিতর্ক জুড়ে তাঁদের যত খুনসুটি । কথা বলতে বলতে চঞ্চল একজন অবাক হয়ে হঠাৎ বলে উঠে-- "লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও চল্লিশ পার করে ফেলেছে !
জীবন বয়ে যাচ্ছে সুকন্যা। চলো এবার ঘর বাঁধি " !
২)
"কাশিটা আবার খুব বেড়েছেতো । এ্যাই কফ সিরাপ ঠিকমতন খাওনা ক্যানো?”
রান্নাঘর থেকে ডালে ফোঁড়ন দিতে যেয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠে সুকন্যা ।
“আরে আজব তো কাশি আবার কোথায় দেখলে!! সকাল সকাল গলাটা একটু খুশ খুশ করে উঠলো এই যা “!
রান্না ঘরের সাথে লাগানো বারান্দায় বসে সকালের পেপারে চোখ রেখে উত্তর দেয় অনিকেত!
"সকালে ওষুধ খেয়েছিলে?” ভেজা হাত শাড়ীর আঁচলে মুছতে মুছতে রান্না ঘর থেকে বের হয়ে আসে সুকন্যা।
“ ওষুধগুলো কিভাবে খাবো, তুমি বোলনি তো কখনো?”
অনিকেতের দৃষ্টি সুকন্যার ঘামে ভিজে উঠা নাক আর চিবুকের প্রতি ।।
সুকন্যা হাসে প্রশ্রয়ের হাসি ।
আর অনিকেত ডুবে যায় সেই হাসির ঝর্ণাধারায়।
(জীবন সুন্দর সতত সুন্দর)
৩)
বাড়ীর পেছনের পাইন বন ধরে কিছুটা হেটে গেলে গাছগাছালি দিয়ে ঘেরা কাঠের একতলা বাড়িতে সে থাকে। এ বছর জানুয়ারী ফেব্রুয়ারী মাসে শীতের তীব্রতা এতো বেশী ছিলো যে পাইন বনের ভেতরের পিচঢালা মসৃন পথটি বরফে ঢাকা ছিলো। তুষারাবৃত পথটি মাইনাস ঠান্ডায় পিচ্ছিল হয়ে যাওয়াতে এই মৌসুমে সে আর এদিকটায় আসেনি । সেকারনে এবারের শীতে দেখা হয়নি তাঁর সাথে।
হিমাংকের নীচে তাপমাত্রায় বয়ে যাওয়া হু হু বাতাস নিজের ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে মোহ মুক্তির জন্য নির্লীপ্ত থেকে বুকের গভীরে কালশিটে কিছু দাগ জমিয়ে অনুভব করেছি। বাইরে বের হওয়ার সাহস আমারও হয়নি।
তার পছন্দের ফল চেরি। শীতের আগেই কিছু চেরি এনে রেখেছিলাম। সেই সাথে এক বোতল রেড ওয়াইন। রান্না বা ঘরকন্যাতে কখনোই মনোযোগী ছিলাম না। তারপরেও তাকে যত্ন করে খাওয়াবো বলে রান্না করেছিলাম মোৎজরলা চিজ ও টমেটো সসে সাদা পাস্তা।
খুব সম্ভবত সে ছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে বেরসিক আর আবেগ বর্জিত পুরুষ।হুট করে এমন একটি পুরুষের প্রেমে অযাচিতভাবে পড়েছিলাম বলা যায়।
পরিচয়ের শুরুটা ছিলো বেশ অদ্ভুত । পাইন বনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা পাহাড়ী নদীটি আমাকে অদ্ভুত আকর্ষণ করতো। পাইনের পাতা ছুয়ে মৃদুমন্দ বাতাস নদীর বুকে জেগে উঠা তিরতির ঢেউ আমার হৃদয় মথিত করে কেমন যেন এক শিহরন শরীর জুডে খেলা করতো।
একদিন আনমনে নদীর পাড়ে বসে কবিতা পাঠে মগ্ন । হঠাৎ দৃষ্টি গেলো এক ছায়ামূর্তির দিকে । ছায়া মূর্তি বলছি এ কারনে যে, সে আমার থেকে বেশ কিছুটা দূরে থাকায় আমি তাকে খুব অস্পষ্ট দেখছিলাম। তাছাড়া সে দাডিয়ে ছিলো উঁচু এক চেরি গাছের নীচে কিছুটা ঢালু জায়গায়।চেরি গাছটি তাকে অনেকটা আড়াল করে রেখেছিলা। দূর থেকে আমার মনে হলো সে আত্মহত্যা করতে চাইছে ।
ঐ মূহূর্তে একটাই ভাবনা তাকে বাঁচাতে হবে।
কবিতার বই দ্রুত বন্ধ করে দৌড়ে তার পাশে যেয়ে দাঁড়ালাম। তাকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বললাম
“এ কি করছেন ? সরে আসুন “
সে ঘুরে দাঁড়ালো । মুচকি হাসলো । বললো “ভেবেছিলেন আমি আত্মহত্যা করছি “? উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো ।
আমি অপ্রস্তুত হলাম। নিজেকে কি ভীষণ বোকা বোকা মনে হলো!
সে বললো “আমি মাছ ধরছিলাম হুইল বড়শি দিয়ে। মনে হচছে মাছ বড়শি গিলেছে। বড়শি নিয়ে পালাচ্ছে । আমি ধরার চেষ্টা করছিলাম । আপনার হৈ চৈ তে আমার মাছ বড়শি দুই-ই চলে গেলো “।
এবার আমি ভীষণ লজ্জা পেলাম । দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে বললাম “সরি । ভীষণ দু:খিত“।
সে আবারও হাসলো । খেয়াল করলাম কি অদ্ভুত সে হাসি ! আমার খুব ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করলো সে হাসি । আমি তার প্রেমে পড়লাম ।
শুরুটা ছিলো এভাবে বেশ কয়েক বছর আগে।
একদিন সন্ধ্যায় কনিয়াক একটু বেশিই খেয়ে ফেলেছিল। তরল নেশায় তখন সে বুঁদ।হেসে উঠে নিজে থেকেই আমার প্রিয় রঙ জানতে চাইলো। একেবারেই বাস্তব কিছু অনুভব নিয়ে তখন বলতে চেয়েছিলাম তাকে যে ভালোবাসবে তার কাছে যেনো কখনো মিথ্যা না বলে। বা কিছু গোপন না করে। তবুও এই বাস্তব কথাটুকু সে সময় বলা হয়নি।
শোন, কেউ কিছু বললে তার উত্তর দিতে হয়। কথা প্যাচিয়ে অন্য কিছু বললে বিরক্ত লাগে। যদিও আমার বিরক্তি তোমার কাছে মূল্যহীন । তবুও বললাম।
কত কথাই তো বলেছি। কিছুই রাখোনা ।
নেশা কেটে যাওয়ার পর বল, "সব কী রাখা জরুরী"?
না সব জরুরী নয়।
আচ্ছা তুমি এমন কেন?
তারপরেও কেনো সুনশান পাইন বনের রাস্তায় তোমার পায়ের শব্দ শুনতে চাই!!
--রাবেয়া রাহীম
(টুকরো টুকরো ভাবনায় ছোট ছোট বর্ণনায় তিনটি অনুগল্প। পাঠকের পড়তে ভাল লাগ্লে আমারও ভাল লাগবে)
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রাজীব নূর
২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শ্রদ্ধেয়া আপু,
এক- লিওনার্দো দ্য ক্যাপ্রিও চল্লিশ পার করে ফেলেছেন, এটাই মধুর টাইম ঘর বাঁধার। কফি শপের মধ্যে হালকা ওমের মধ্যে হৃদয়কে উষ্ণ আবেশে ভরিয়ে তাতেই তো ঘর বাঁধার মাধুর্যতা ।
দুই- অনিকেত সুকন্যার খুনসুটি এভাবেই চলুক ছন্দময় জীবনে ।
তিন- নির্জন পাইন বনে পাহাড়ি নদীতে বরশি হুইল দিয়ে মাছ ধরা কালীন মাছ হুইল দিয়ে চলে গেলেও বিদ্ধ হয়ে গেল প্রেম, যে প্রেমের ফল্গুধারা চুপ চুড় করে ঝরে পরলো পাহাড়ি ঝরনা ধারাকে আঁকড়ে ধরে ।
টুকরো টুকরো অনুগল্পের ভালো লাগা ।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভকামনা জানবেন।
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০২
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনার ভালো লাগায় আপ্লুত হলাম
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৮
সোহানী বলেছেন: অসাধারন লাগলো রাবেয়া........
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ভালোবাসা সোহানী
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৫৬
আমি মুক্তা বলেছেন: অসাধারণ টুকরো গল্প!
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: ভালোবাসা প্রিয়
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৫৬
মা.হাসান বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৯
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আপনার ভালো লাগায় আনন্দ পেলাম অনেক ধন্যবাদ
৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:১৪
কানিজ রিনা বলেছেন: অনেক ভাললাগা রেখে গেলাম সুন্দর
জীবন কামনা করি।
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: আলোবাসা আপা
আপনি ভালো আছেন তো ?
৭| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি শ্রদ্ধেয় চাদগাজীকে ব্লক করেছেন?
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০১
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: তিনি এখন আর ব্লক লিসটে নাই ।
সেটা অনেক পুরনো কথা
৮| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ১,২,৩ পড়ে ভাল লাগলো খুব।
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০২
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৯| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সুন্দর তিনটি অনুগল্প
২৯ শে মার্চ, ২০১৯ ভোর ৬:২২
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
১০| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:০২
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাবেয়া রাহীম,
শেষেরটা ভালো হয়েছে।
পদাতিক চৌধুরি র মন্তব্যটি ভালো লেগেছে।
২৯ শে মার্চ, ২০১৯ ভোর ৬:২৩
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
১১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:০৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: Excellent
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৩:৪০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
১২| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৫৩
জাহিদ অনিক বলেছেন: বাহ! জীবনের সবগুলো মুহূর্ত'ই সুন্দর ও চমৎকার; যদি কেউ সেটা সূক্ষ্মভাবে দেখে। কবিদের এই দিকটা ভালোলাগে। তারা সবকিছুই নিজেদের মত অবজার্ব করে।
ভীষণ সুন্দর লেখা। প্রেমে পড়ে যাওয়ার মত---
২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:০৪
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: কবিরা এতো সূক্ষ্মভাবে দেখে বলেই কবিদের যত বিপদে পড়তে হয় ।
না দেখলে কি হয় !!
লেখার প্রেরণাই হোল অদেখা জিনিসগুলো নিজের মত্ন করে দেখে তার প্রেমে পড়া ।
অনেক ধন্যবাদ তোমাকে
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: পড়ে ভালো লেগেছে।
সহজ সরল ভাষা। সহজ সরল গল্প।