নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিবেশ বন্ধু *** আমি কবি হতে আসিনি , কবি হয়েই জন্ম নিয়েছি । ।\n

পরিবেশ বন্ধু

আমি এক ঐতিহাসিক নব সৃষ্টি / মুক্ত লিখি দুর্বার দৃষ্টি

পরিবেশ বন্ধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈশাখী ভাঁটি বাংলার হাওর বাওর এর গল্প

০১ লা মে, ২০১৩ রাত ১২:৩৮

রচনায় মোঃ জিল্লুর রহমান মাসুদ মি য়া



গল্প এক* বাঁধভাঙ্গা

গাঁয়ের একটি কুঁড়েঘর , বৃদ্ধ করিম ছেলের পানে তাকায় ক বাপ ধান পাকল কিনা ,ক্ষেতের কি সমছার । এ বছর খুব ভালা ফলন, ক্ষেতের বায় চাইলে ঘরে আইবার

মন লয়না বাজান । এবার স্বস্তি বোধ করে করিম সব আল্লার ইচ্ছা বুঝলে গেলবছর

তো এক মুট ধান ঘরে আনবার পারিনাই , কি কষ্টে যে দিন গেল – কথা থামিয়ে

দেয় ছমিরন এমন দিনে হা হুতাশ বাদ দিয়া কামে যাও ,গেল বছরের দাদ অহনি তুলতে অইব, এইবার মাতবরের ট্যাঁয় বন্ধক জমি ছুডামু আর রাবেয়ার একটা বিহিত করমু ।ছোট ছেলে অনু আবদার করে বাজান আমাগো গাইডা আনবানা , আনমু। এবার হাত তালি দেয় অনু কি মজা কি মজা ,আচ্ছা বাজান

আমারে একটা লাল জামা কিইনা দিবানা । দিমু লগে বই দিমু স্কুলে ভর্তি কইরা

দিমু ঐ সবদর মাস্টরের পোলার মত বুঝলে । হাছা কইছ বাজান আমি ইশকুলে

যামু হুররে । পানের ডিব্বা লয়ে ছমিরন, ক্ষেতে গেলে কিষাণির বাও এই লও পান।



আকাশে ঘন কাল মেঘ বাতাসের জুড় ক্রমশ বাড়ে ,বিষণ্ণ মনে বাড়ী ফিরে করিম

কি গো গেদুর বাপ সয়াল সয়াল যে, হু বিবি খবর ভালা না হুনলাম জোয়ার আইছে

হাওরে পানি হু হু কইরা বারতাছে , দেত গামছাটা মতবর বাড়িত যাই দেহি কোন

বিহিত অয় কিনা । করিম হনহন ছুটে নছিমন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে উঠানে ।

অনু ধির ধিরে মায়ের কাছে ভিড়ে মা ক্ষিদা লাগছে খাওন দেও ।দূর হু অভাগা

মায়ের বকুনি খেয়ে রান্না ঘরে ছুটে সে । এই বুবু মার মন খারাপ কেন বাজানে

কি হেরে বকা দিল ।না তবে পানি তে তলাইয়া গেছে ধান বুঝলে এখন খাবি আয়

চোখ বড় বড় করে ভাত গিলতে থাকে অনু হঠাৎ প্রস্ন করে আপু এত পানি কই

থাইকা আইয়ে ,ঐ যে পাহাড় আছেনা ওইটার ওপাশে বিরাট একটা দেশ ।

হু অইহানে বুঝি খালি পানি আর পানি ।এবার রাবেয়া ধমকায় চুপ এত পণ্ডিতি

ভালা না।

খাইয়া বাজানের খুজ ল দেখ কই আছে । রাবেয়ার বুক থেকে একটা

রঙ্গিন সপ্ন মিলিয়ে যায় ।গত বছর তার বিয়ে ভেঙ্গে গেছিল পাত্রপক্ষকে যৌতুক

দিতে না পারায় ।

মাতবর জহিরুল্লা জনা কয়েক লোক নিয়ে শলা পরামর্শে রত। ঝরের বেগে করিম উপস্থিত মাতবর সাব বাধের গোঁড়ায় পানি ভাঙ্গলে সব শেষ অইয়া যাইব । একটা

হতাশা ছুখে মুখে তার । বহ মিয়া মাথা ঘরম কইরনা আল্লারে ডাহ দেহি হুগলে

মিইলা কিছু করবার পারি কিনা । মাতবর কাঁচা পাকা দাড়ি তে হাত বুলায় দ্রস্তে ছুটে আসে রবি চাষি সর্বনাশ আমাগো ঠগার বাধ ভাইংগা গেছে । খবর টা শুনেকরিমের মাথায় যেন বাজ পড়ল । পরক্ষনেই সংজ্ঞা হীন দেহটা কে ঘিরে একটা জটলা ।গ্রাম্য ডাক্তার নাড়ী পরিক্ষা করে হাসপাতালে পাটানোর পরামর্শ দেয়।তখন ছমিরনের মুখে বাধভাঙ্গা জোয়ারের মত বিলাপ সর্বনাশা পানি হায়রে আমাগো সব ভাসাইয়া লইয়া গেল ।বাতাসে একটা বিলাপ , আর অনেক মানুষের নিরব মিছিল ।

মাসুদ রানা , রচনা ৩/৩/২০১২ইং ।

গ্রাম বাংলার গল্প বিচিত্রা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.