নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার অনুভুতির গল্পগুলো

জানি না কবে কোথায় , কিভাবে তোমাকে আবার দেখব। তবে তোমাকে হারানাটাই আমার অনেক বড় একটা বাজে অনুভুতি । ভাল থেকো বিবেকা। ভাল থেকো বিবেক। ভাল থেকো আমার কবিতাগুলো

সুদীপ্ত সজল খাঁ

প্রতিদিন সুদীপ্ত ডুবে যায় সজল চোখগুলো খুজে বেড়ায় সুখ। তার মাঝে আমিও বেচে থাকি শুধূ ভরে না আমার বুক ।।

সুদীপ্ত সজল খাঁ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাপ্রাচীর , একটি চীনা লোকগাঁথা

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

সময়টা তখন খ্রিস্টপূর্ব ২২০ , আজ থেকে প্রায় ২২০০ বছরের ও বেশি আগের। ছিন সাম্রাজ্য সাম্লাতে হিমশিম খাচ্ছন সম্রাট ছিন শ্রি হুয়াং। চীনের মহাপ্রাচীর তৈরিতে দরকার অনেক মানুষ। কিন্তু কেউ স্বেচ্ছায় যেতে রাজি নয় মৃত্যু হতে পারে জেনে । শুরু হল ধরপাকড়। যাকে যেখানে পাওয়া গেল ধরে এনে শ্রমিক হিসাবে লাগানো হল।খাবারের স্বল্পতা আর কঠিন শ্রমের কারনে বৈরি আবহাওয়াতে একে একে মারা যেতে লাগল শ্রমিকেরা। মৃতদের লাশ সেই প্রাচীরের পাশেই মাটিতে পুতে আবার কাজে যেতে বাধ্য করা হত বেঁচে থাকা শ্রমিকদের। ধরে আনা হত আরও শ্রমিক। সেই সময়ের এক লোককথা ।

লেডি মংচিয়াং, বা সুন্দরী নারী মংচিয়াং, চিনের দক্ষিণ অঞ্চলের এক কৃষক ঘরের মেয়ে। সুন্দরী, কর্মঠ, বুদ্ধিমতী। তার বিয়ে হয় ফান ছি লিয়াং নামের এক সুন্দর ও বিচক্ষণ যুবকের সাথে যে মংচিয়াং দের গ্রামে পালিয়ে এসেছিল সম্রাট ও তার অনুগত বাহিনীর ভয়ে। ধরে নিয়ে যেতে পারে প্রাচীর তৈরির কাজে। সুন্দর বুদ্ধিমান যুবক ছি লিয়াং, সুন্দরী মংচিয়াং এর পরিবারের নজরে পড়ে। বিয়ে হয় তাদের , দুজনের সম্মতিতে , কেননা তখন একজন আরেকজনের প্রেমে আবদ্ধ। সেই কালরাতে , ( মতান্তরে দুইদিন পরে) সম্রাটের লোকেরা ধরে নিয়ে যায় নববিবাহিত ছি লিয়াং কে ।



স্বামীকে হারিয়ে বিষণ্ণতা গ্রাস করে মংচিয়াংকে। উল আর পশমে বুনতে থাকে স্বামীর জন্য শীতের পোশাক, পরম মমতায়। পথ চেয়ে সময় কাটে তার । ছি লিয়াং আর আসেনা। একদিন স্বামীর জন্য বোনা শীতের পোশাক সাথে নিয়ে স্বামীর খোঁজে বের হয় মংচিয়াং। প্রাচীর এর কাজ তখন অনেকদুর এগিয়েছে। একদিন মংচিয়াং তার স্বামীর সহকর্মীদের দেখা পায় , তাদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে , তার স্বামী অনেক আগেই অনাহার, অত্যাচার আর কঠিন শ্রমের কারণে মারা গেছে । মংচিয়াং দুহাত ছুড়ে পাথরে মাথা ঠুকে কাঁদতে থাকে ভালবাসার মানুষ হারিয়ে। তার চিৎকারে আকাশ বাতাসে প্রতিদ্ধনি হয় , স্তম্ভিত হয় সাগরের জল। হঠাত এক বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে সদ্যগড়া প্রাচীর এর ২০০ মাইল । সম্রাট এর আদেশে ধরে আনা হয় মংচিয়াংকে । সম্রাট তার প্রাণদণ্ড ঘোষণা করতে চান কেননা মংচিয়াং এর অদ্ভুত কান্নার মায়াবী শক্তি প্রাচীর ধ্বংস করেছে । কিন্তু তিনি মংচিয়াং এর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব করেন । আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে , মংচিয়াং তাতে রাজি হয় । কিন্তু তিনটি সর্তে

১) মংচিয়াং এর মারা যাওয়া স্বামীর লাশ খুজে বের করতে হবে

২) মৃত স্বামীর জন্য স্মৃতিমিনার বানাতে হবে

৩) সেই স্মৃতি মিনারে সম্রাট নিজে সহ তার সভাসদরা শ্রদ্ধা জানাবে কাল পোশাক পরে।

সম্রাট মংচিয়াং কে পাবার আশায় তাতে রাজি হয় । সব সর্ত পুরন হবার পর সম্রাট যখন তাকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যেতে চায় তখন সবার চোখ ফাকি দিয়ে মংচিয়াং দৌড়ে সমুদ্রের পানিতে ঝাপ দিয়ে আত্মহনন করে । তার ভালবাসার প্রতি সম্মান জানাতে সমুদ্রের মধ্যে দুইটি পাথর উত্থিত হয়। একটি মংচিয়াং এর কবর , একটি তার ভালবাসার প্রতি সম্মান জানাচ্ছে । স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে এই লোকগাথা নানাভাবে ঘুরেফিরে রঙ পায় ।

আমি সমুদ্রের বুকে দুটি পাথর দেখেছি কিন্তু ক্যামেরাতে ধারন করতে পারিনি প্রযুক্তি সমস্যার কারণে। স্থানীয় এক বন্ধুর কাছ থেকে সংগ্রহ করা ছবি , সম্ভবত সেটিও ইন্টারনেট এর , দিলাম এই গল্পের সাথে। এখনও শীতের শুরুতে হাজার হাজার কপোত কপোতী সমুদ্রের তীরে এসে মংচিয়াং এর জন্য খাবার, ফলমূল, শীতের পোশাক, জুতা বিসর্জন দিয়ে পুজা করে সেই অদৃশ্য আত্মার পবিত্রতাকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:০৮

আহমেদ নিশো বলেছেন: ভাল লাগলো।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:১২

আমিনুর রহমান বলেছেন:




চীনের লোকগাথা ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.