নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুইসাইড সাইলেন্স

আমার কিছু না করতে খুবই ভাল লাগে। মাঝে মাঝেই বৃষ্টিতে আটকা পড়ে থাকি। ভালই লাগে। আমার কোন তাড়া থাকে না কখনোই। জীবনের দৌড় টা হেটে হেটেই পার হয়ে যেতে চাই, যতদূর যাওয়া যায় আর কী! খুব বেশি দূর আমার ভাল লাগে নি কখনোই।

সুইসাইড সাইলেন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্নেরা ভেসে যায় , উড়ে যায় , দূরে যায় !

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:২৯

-বাসায় বিয়ের কথা চলছে ।
-হুঁ ।
-হুঁ মান কি , হ্যাঁ ? হুঁ মানে কি ?
-কি আবার ! পৃথিবীর সকল প্রেমিক-প্রেমিকার কমন প্রবলেম ।
-তুমি কি জীবনেও কোন ব্যাপারে সিরিয়াস ছিলা ? কই ? আমি তো দেখি নি কখনো ?
-কত্তবড় মিথ্যা কথা ! কত্তখানি সিরিয়াস হয়ে তোমাকে প্রপোজ করেছিলাম ! ভূলে গেছ সোনামণি ?
-ফরহাদ , প্লিজ কিছু একটা কর । একটা ছোটখাট চাকুরী হলেই চলবে ।
-তারপর ?
-আমার বাসায় প্রপোজাল পাঠাবা ।
-ছোট চাকুরী , যদি মেনে না নেয় ?
-সেটা তখন দেখা যাবে ।

***

-এই ছেলের জন্য তুই দুই টা ইঞ্জিনিয়ার , একটা বড় ব্যাবসায়ী ছেলেকে না করে দিলি ?
-বাবা , চাকুরী আর বেতন দিয়ে কি মানুষ বিচার করা যায় ?
-নীলু ! বাবার মুখের উপর কথা বলতে লজ্জা করে না ?
-স্যরি বাবা ।
-যা , ঘুমোতে যা । মাথা থেকে এসব চিন্তা ঝেড়ে ফেল মা । আমরা তোর ভাল চাই রে মা । কোন বাবা মা কি তার সন্তানের খারাপ চায় ?
-আমি ফরহাদকে খুব বেশি ভালবাসি বাবা ! খুব !
-অভাবে পড়লে ভালবাসা জানালা দিয়ে পালায় রে মা ! তুই ত এখনও ছোট বুঝবি না এসব ।

***

সারা টা দিন ফরহাদের ফোন অফ ছিল । নীলুর বাবা যে ওকে পছন্দ করেন নি তা খুব ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছে ফরহাদ । গত দু'মাস ধরে কত ঘোরাঘুরির পর এই চাকুরীটা পেয়েছে ও । স্যালারি টা একটু কম । মাসে বার হাজার টাকা । কি হবে আর এই চাকুরী দিয়ে ? মেসের বেলকনিতে বসে টেনশনগুলোকে ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ফরহাদ । কি মনে করে ফোন টা অন করতেই স্ক্রীনে নীলুর নামটা ভেসে উঠল ।
-ফরহাদ ! ফোন অফ ছিল কেন ?
-এমনি ।
-টেনশন করছ ?
-না ।
-সত্যি !
-হুঁ , যখনই টেনশন জমা হচ্ছে তখনই ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দিচ্ছি ।
-তুমি আবার সিগারেট খাচ্ছ !
-হুঁ ।
-ফরহাদ ? তোমার স্যালারী কত ?
-বার হাজার টাকা ।
-পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে একটা বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না ? দুইটা রুম হলে ভাল হয় । একটা হলেও চলবে । বাকি সাত হাজার টাকায় দুজনের দিন ভালই কেটে যাবে !
-কি বলছ এসব ।
-পালিয়ে বিয়ে করব । কালকে বাসা ঠিক করতে যাব । বিকেল চারটায় রেডি থাকবা ।
-ওকে !

***

ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক সাহেব তার প্রাইভেট কারে করে বউ নিয়ে যাচ্ছেন । পাত্রী দেখতে এসে হঠাৎ করেই বিয়ে । পরবর্তীতে বড় করে অনুষ্ঠান করবেন । ধীর গতিতে গাড়ি এগিয়ে চলছে । ইশতিয়াক সাহেবের বউ তার দিকে তাকাচ্ছেই না । গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে । চোখের জলে মেয়েটার চোখের কাজল লেপ্টে যাচ্ছে । ইশতিয়াক সাহেব ভাবছেন বাবা মা কে ছেড়ে যেতে হয়ত এতটা কষ্ট পাচ্ছে নীলুফার । ইশতিয়াক সাহেব জানেন না , বাবা মা কে খুশি করার জন্য এই মেয়েটা তার জীবনের সবচেয়ে কাংঙ্খিত স্বপ্নটা বিসর্জন দিয়েছে একটু আগেই !

***

"আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটিতে এই মূহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না । অনুগ্রহ পূর্বক কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন , ধন্যবাদ ।"

সেই বিকেল চারটা থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছে ফরহাদ । হয়ত একটা সময় ফরহাদ বুঝে যাবে ওর এই চেষ্টা কোনদিনও সফল হবে না । সেদিন থেকে হয়ত ফরহাদের ডায়ালড নাম্বারসে আর কখনো নীলুফার নাম টা দেখা যাবে না ।

***

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.