![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-বাসায় বিয়ের কথা চলছে ।
-হুঁ ।
-হুঁ মান কি , হ্যাঁ ? হুঁ মানে কি ?
-কি আবার ! পৃথিবীর সকল প্রেমিক-প্রেমিকার কমন প্রবলেম ।
-তুমি কি জীবনেও কোন ব্যাপারে সিরিয়াস ছিলা ? কই ? আমি তো দেখি নি কখনো ?
-কত্তবড় মিথ্যা কথা ! কত্তখানি সিরিয়াস হয়ে তোমাকে প্রপোজ করেছিলাম ! ভূলে গেছ সোনামণি ?
-ফরহাদ , প্লিজ কিছু একটা কর । একটা ছোটখাট চাকুরী হলেই চলবে ।
-তারপর ?
-আমার বাসায় প্রপোজাল পাঠাবা ।
-ছোট চাকুরী , যদি মেনে না নেয় ?
-সেটা তখন দেখা যাবে ।
***
-এই ছেলের জন্য তুই দুই টা ইঞ্জিনিয়ার , একটা বড় ব্যাবসায়ী ছেলেকে না করে দিলি ?
-বাবা , চাকুরী আর বেতন দিয়ে কি মানুষ বিচার করা যায় ?
-নীলু ! বাবার মুখের উপর কথা বলতে লজ্জা করে না ?
-স্যরি বাবা ।
-যা , ঘুমোতে যা । মাথা থেকে এসব চিন্তা ঝেড়ে ফেল মা । আমরা তোর ভাল চাই রে মা । কোন বাবা মা কি তার সন্তানের খারাপ চায় ?
-আমি ফরহাদকে খুব বেশি ভালবাসি বাবা ! খুব !
-অভাবে পড়লে ভালবাসা জানালা দিয়ে পালায় রে মা ! তুই ত এখনও ছোট বুঝবি না এসব ।
***
সারা টা দিন ফরহাদের ফোন অফ ছিল । নীলুর বাবা যে ওকে পছন্দ করেন নি তা খুব ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছে ফরহাদ । গত দু'মাস ধরে কত ঘোরাঘুরির পর এই চাকুরীটা পেয়েছে ও । স্যালারি টা একটু কম । মাসে বার হাজার টাকা । কি হবে আর এই চাকুরী দিয়ে ? মেসের বেলকনিতে বসে টেনশনগুলোকে ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ফরহাদ । কি মনে করে ফোন টা অন করতেই স্ক্রীনে নীলুর নামটা ভেসে উঠল ।
-ফরহাদ ! ফোন অফ ছিল কেন ?
-এমনি ।
-টেনশন করছ ?
-না ।
-সত্যি !
-হুঁ , যখনই টেনশন জমা হচ্ছে তখনই ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দিচ্ছি ।
-তুমি আবার সিগারেট খাচ্ছ !
-হুঁ ।
-ফরহাদ ? তোমার স্যালারী কত ?
-বার হাজার টাকা ।
-পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে একটা বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না ? দুইটা রুম হলে ভাল হয় । একটা হলেও চলবে । বাকি সাত হাজার টাকায় দুজনের দিন ভালই কেটে যাবে !
-কি বলছ এসব ।
-পালিয়ে বিয়ে করব । কালকে বাসা ঠিক করতে যাব । বিকেল চারটায় রেডি থাকবা ।
-ওকে !
***
ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক সাহেব তার প্রাইভেট কারে করে বউ নিয়ে যাচ্ছেন । পাত্রী দেখতে এসে হঠাৎ করেই বিয়ে । পরবর্তীতে বড় করে অনুষ্ঠান করবেন । ধীর গতিতে গাড়ি এগিয়ে চলছে । ইশতিয়াক সাহেবের বউ তার দিকে তাকাচ্ছেই না । গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে । চোখের জলে মেয়েটার চোখের কাজল লেপ্টে যাচ্ছে । ইশতিয়াক সাহেব ভাবছেন বাবা মা কে ছেড়ে যেতে হয়ত এতটা কষ্ট পাচ্ছে নীলুফার । ইশতিয়াক সাহেব জানেন না , বাবা মা কে খুশি করার জন্য এই মেয়েটা তার জীবনের সবচেয়ে কাংঙ্খিত স্বপ্নটা বিসর্জন দিয়েছে একটু আগেই !
***
"আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটিতে এই মূহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না । অনুগ্রহ পূর্বক কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন , ধন্যবাদ ।"
সেই বিকেল চারটা থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছে ফরহাদ । হয়ত একটা সময় ফরহাদ বুঝে যাবে ওর এই চেষ্টা কোনদিনও সফল হবে না । সেদিন থেকে হয়ত ফরহাদের ডায়ালড নাম্বারসে আর কখনো নীলুফার নাম টা দেখা যাবে না ।
***
©somewhere in net ltd.